• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > রিটার্ন টু দ্য মিস্টেরিয়াস আইল্যান্ড
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:৫৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেমস
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
রিটার্ন টু দ্য মিস্টেরিয়াস আইল্যান্ড



জুল ভার্নের বিশ্বখ্যাত উপন্যাস ‘মিস্টেরিয়াস আইল্যান্ড’ বা ‘রহস্যের দবীপ’ কমবেশি সবাই পড়েছেন বা নাম শুনেছেন। উপন্যাসের কাহিনীর সময়কাল ছিল ১৮৬৫ সালের ২৪ মার্চ। সে সময় প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় পাঁচজন অভিযাত্রী ও একটি কুকুর নিয়ে একটি আমেরিকান বেলুন ঝড়ের কবলে পড়ে ও নাম না জানা একটি নির্জন দবীপে বিধ্বস্ত হয়। অভিযাত্রীরা এধরনের অবস্থায় পতিত হয়ে ভীষণ বেকায়দায় পড়ে যায়, কেননা তাদের কাছে বাড়তি খাবার, কাপড়, অস্ত্র ও গোলাবারুদ কিছুই ছিল না। তবুও তারা হাল ছেড়ে দেয়নি। সবাই মিলে ক্যাপ্টেন সাইরাস হার্ডিংয়ের নেতৃত্বে দবীপের প্রতিকূল পরিবেশের সাথে আস্তে আস্তে খাপ খাইয়ে নেয়। কিন্তু ধীরে ধীরে তারা টের পায় দবীপে তারা একা নয়, কেউ একজন সবার অলক্ষ্যে তাদের সাহায্য করছে নানাভাবে। তারা সেই রহস্যময় ব্যক্তির পরিচয় বের করার জন্য উঠেপড়ে লাগে এবং পরবর্তীতে তারা আবিষ্কার করে যে রহস্যময় ব্যক্তিটি হচ্ছে ক্যাপ্টেন নিমো, এক বিশালাকার সাবমেরিন নটিলাসের ক্যাপ্টেন। তার সাবমেরিনটি দবীপের নিচে পাথরে আটকে গিয়েছিল এবং ক্যাপ্টেনের সব সাথী একে একে মারা যাওয়ার পর পুরো দবীপে শুধু ক্যাপ্টেন একাই বেঁচে ছিল। তারপর নতুন অভিযাত্রীদের আগমন ঘটে দবীপে এবং নিমো তার পরিচয় গোপন রেখে তাদের যথাসাধ্য সাহায্য করে যায়। কাহিনীর শেষে ক্যাপ্টেন নিমো মারা যায় এবং তার সলিল সমাধি হয় তার প্রিয় সাবমেরিন নটিলাসের অভ্যন্তরে। আর অভিযাত্রীরা একটি উদ্ধারকারী জাহাজে করে দেশে ফেরত যায়। এ তো গেল উপন্যাসের কাহিনী। এখন আসা যাক গেমটির কথায়।

জুল ভার্নির অসাধারণ এই উপন্যাসের কাহিনীর রেশ ধরে বানানো হয়েছে একটি দারুণ অ্যাডভেঞ্চার গেম, যার নাম রিটার্ন টু দ্য মিস্টেরিয়াস আইল্যান্ড। গেমটি মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ও ম্যাকিনটোশ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য বের করেছে Microdios স্টুডিও যথাক্রমে ২০০৪ ও ২০০৮ সালে। গেমটির পাবলিশার দ্য অ্যাডভেঞ্চার কোম্পানি।



জুল ভার্নের উপন্যাসের কাহিনীর ওপরে আরো কয়েকটি রোমাঞ্চকর গেম উপহার দিতে যাচ্ছে এ কোম্পানি। তারা অ্যাপল আইফোনের জন্যও গেম বানানোর কাজ করে। তাদের বানানো কিছু গেমের মধ্যে উলে­খযোগ্য কয়েকটির নাম হচ্ছে-ডেসটিনেশন ট্রেজার আইল্যান্ড, ইকো-সিক্রেট অব দ্য লস্ট ক্যারাভান ইত্যাদি।

গেমের মূলে রয়েছে মিনা নামের এক শক্তসামর্থ্য তরুণী। যার অভিযাত্রার অভিজ্ঞতার আলোকে গড়ে উঠেছে গেমের কাহিনী। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় এ তরুণীর শখ হচ্ছে দেশ থেকে দেশে ঘুরে বেড়ানো, অপরূপ প্রকৃতির অন্তেরালে হারিয়ে যাওয়া ও অজানাকে জানা। নতুন অভিযানের নেশায় সে বেরিয়ে পড়ে সমুদ্রযাত্রায়, কিন্তু প্রবল ঝড়ের কবলে পড়ে তার বোট ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যায়। সে ভেসে চলে ঢেউয়ের দোলায় অজানার উদ্দেশ্যে। জ্ঞান ফেরার পর সে নিজেকে আবিষ্কার করে অজানা এক দবীপে। সে খোঁজ করে বুঝতে পারে এ বিশাল দবীপে সে ছাড়া আর কেউ নেই। একাকিত্ব তাকে ঘিরে ধরে, কিন্তু বাঁচার তাগিদে মিনা দবীপ থেকে মুক্তি পাবার উপায় খুঁজে ফেরে। কিন্তু তা কি এতই সহজ? হঠাৎ সে আবিষ্কার করে তার আগে এ দবীপে লোকজন ছিল। তাদের ফেলে যাওয়া নানা জিনিস ও চিহ্ন প্রমাণ করে দেয় তাদের অস্তিত্ব। রহস্যভরা এ দবীপে সে খুঁজে পায় কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি, যা থেকে সে বুঝতে পারে আশপাশেই কোনো জাহাজ ডুবেছে বা তাকে গোপনে অবলোকন করছে। জীবনধারণের জন্য সে দবীপের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়াবে, সংগ্রহ করবে নানা প্রয়োজনীয় জিনিস এবং তা নিজের কাজে লাগাবে। সে পাবে ডুবন্ত নটিলাসের সন্ধান এবং সেই সাথে জানবে ক্যাপ্টেন নিমোর ইতিহাস। দেখতে পাবে ক্যাপ্টেন নিমোর অতৃপ্ত আত্মার আনাগোনা। লড়বে প্রতিকূল পরিবেশের সাথে ও সেই সাথে নিজেকে রক্ষা করবে জংলী-জানোয়ারের হাত থেকে। গেমের শেষ পর্যন্তে তার আবাসস্থলে ফিরে যাওয়াটা হবে কিনা তা দেখার জন্য গেমটি খেলে শেষ করতে হবে দারুণ ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার মধ্য দিয়ে।



গেমে গেমারকে ফাস্ট পারসন ভিউতে মিনাকে নিয়ে খেলতে হবে। পুরনো অধিবাসীদের রেখে যাওয়া জিনিসপত্র ও ঘরের কাঠামো মজবুত করে তা ব্যবহারের উপযোগী করতে হবে। সমাধান করতে হবে নানা ধাঁধার। বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে পরিচয় দিতে হবে বিচক্ষণতার। খুঁজে পাওয়া জিনিসগুলো মিলিয়ে তা দিয়ে অন্য কিছু বানানো যাবে এবং তা দ্রুত মেলাতে পারাটা গেমারের বুদ্ধিমত্তার ওপরে নির্ভর করবে। গেমারের কাজ হবে মিনাকে প্রতিকূল পরিবেশের হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখা এবং সে যাতে মৃত্যুর করাল থাবায় পিষ্ট না হয় সেদিকে নজর রাখা। ক্যাপ্টেন নিমোর আত্মাকে মুক্ত করার কাজও করতে হবে গেমারকে। এজন্য ক্যাপ্টেনের মৃতদেহের উপযুক্ত সৎকারের ব্যবস্থা করতে হবে। সবশেষে বের করতে হবে ঘরে ফেরার পথ। কিন্তু তার আর ঘরে ফেরা হবে না। সে আবার আটকা পড়বে সেই দবীপে। তারপর কি হবে? সে আরেক কাহিনী। এ কাহিনী নিয়ে গেমটির দিবতীয় পর্ব বাজারে এসেছে। সামনের সংখ্যায় সেই গেমের বর্ণনা তুলে ধরা হবে।

গেমের গ্রাফিক্সের কথা বলতে গেলে এককথায় বলতে হয় অসাধারণ। গেমের পরিবেশের মধ্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে দারুণ বাস্তবতা, যা গেমারকে খেলার সময় দেবে দারুণ এক অভিজ্ঞতা। গেমের শব্দশৈলীও চমৎকার। গেম-পে­ অন্যান্য গেমের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন এবং সেই সাথে দারুণ উপভোগ্য। খেলার সময় মাঝে মাঝে মনে হতে পারে নিজেই বুঝি দবীপে হারিয়ে গেছেন এবং পথ খুঁজে বেড়াচ্ছেন তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার। একা একটি দবীপে কিভাবে বেঁচে থাকার জন্য যুদ্ধ করতে হয় তা এ গেমটি খেলার মধ্য দিয়ে অনুধাবন করতে পারবেন খুব সহজেই। গেমের মেনুগুলো বেশ সুন্দর ও অন্যান্য কারুকাজও বেশ নজরকাড়া।

গেমটি খেলার জন্য ইন্টেলের পেন্টিয়াম ৩, ৮০০ মেগাহার্টজের প্রসেসর বা সমমানের এএমডি অথলন প্রসেসর। আরো প্রয়োজন হবে ৬৪ মেগাবাইট র্যারম, ৬৪ মেগাবাইটের ডিরেক্ট এক্স ৯.০ সমর্থিত গ্রাফিক্স কার্ড ও ১ গিগাবাইট ফাঁকা স্থান।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : shmt_15@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস