রেসিং গেমের দুনিয়ায় কোডমাস্টারস একটি অনন্য নাম। বাজারের অন্যান্য রেসিং গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সাথে দারুণ টক্কর দিয়ে খুব অল্পসময়েই এ প্রতিষ্ঠানটি রেসিং গেমারদের মন জয় করে নিয়েছে রেস ড্রাইভার-গ্রিড, কলিন ম্যাকরে র্যা লি, কলিন ম্যাকরে ডার্ট, এফওয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ইত্যাদি রেসিং গেম উপহার দিয়ে। সম্প্রতি বের হয়েছে কলিন ম্যাকরে ডার্ট-এর দিবতীয় পর্ব ডার্ট-২। এ গেমে দেখা মিলবে চারজন বিখ্যাত র্যা লি রেসারের-কেন ব্লক, ট্রাভিস পাসট্রানা, টাননার ফউস্ট ও ডেভ মিররার। গেমটিতে গেমারকে চারটি মহাদেশ ভ্রমণ করতে হবে। এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে রেসে অংশ নিতে হবে গেমারকে। গেমারের বাসস্থান হবে আরভি বা রিক্রিয়েশন ভেহিকলে। এটি একটি ভ্রাম্যমাণ বাসস্থান যাতে রয়েছে বেডরুম, লিভিংরুম, কিচেন ও বাথরুম। রেসিং ইভেন্টের স্থানে এটি পার্ক করা থাকবে এবং গেমার এর ভেতরে লিভিংরুমে থাকা ম্যাপে রেসিং ইভেন্টগুলো দেখতে পারবেন, সেই সাথে টিভিতে মুভি দেখে রেসিং ইভেন্টগুলোর সাথে পরিচিত হতে পারবেন।
বিখ্যাত র্যা লি রেসার কলিন ম্যাকরের নামানুসারে গেমের নামকরণ করা হয়েছে। স্কটিশ এ রেসারের বাবা জেমস ম্যাকরে ও ভাই অ্যালিস্টারও ছিলেন র্যা লি রেসার। কলিনের প্রথম সাফল্য ছিল একজন ব্রিটিশ হিসেবে ১৯৯৯ সালে প্রথম ওয়ার্ল্ড র্যাযলি চ্যাম্পিয়নশিপ ড্রাইভারের খেতাব জেতা ও সেই সাথে ইংল্যান্ডের রানীর তরফ থেকে মেম্বার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ারের সম্মান অর্জন করা। ২০০৭ সালে হেলিকপ্টার ক্র্যাশে তার মৃত্যু হয়। তার সম্মানে সে বছরই বের করা হয়েছিল এ গেম সিরিজের প্রথম পর্ব। তার জীবনের বেশিরভাগ সাফল্যগাথা জড়িয়ে ছিল সুবারু ওয়ার্ল্ড র্যা লি টিমের সাথে। তাই সুবারুর গাড়িগুলো গেমে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। কলিনের ডিজাইন করা বেশ কিছু ম্যাকরে গাড়িও দেখা যাবে এ গেমে। গেমের চিফ ডিজাইনার ম্যাথিউ হর্সম্যান নতুন এ গেমটি আগের পর্বের চেয়ে আরো ভালো করে বানানোর চেষ্টা করেছেন। এতে ব্যবহার করা হয়েছে ইগো ইঞ্জিনের আরো উন্নত রূপ, যা প্লে স্টেশনের প্রসেসিং ইউনিট ও মাল্টিকোরের প্রসেসরের জন্য বেশ ভালো কাজ করতে সক্ষম এবং সেই সাথে গেমে গাড়ি টিউন করার সময় বেশ কার্যকরী ফল ও বাস্তবসম্মত পরিবেশ পাওয়া সম্ভব হয়েছে। এ ইঞ্জিন রেস ড্রাইভার-গ্রিড বানানোর কাজেও ব্যবহার করা হয়েছিল। গ্রিডে দেয়া বিশেষ সুবিধা ফ্ল্যাশব্যাক অ্যাবিলিটি অর্থাৎ গেমের মাঝখানে গেমকে রিওয়াইন্ড করার ব্যবস্থাটি সবার নজর কেড়েছিল। তাই এ অপশনটিও রাখা হয়েছে ডার্ট-২-এ। গেমটির রেসগুলোর মধ্যে রয়েছে- র্যা লি, র্যা লিক্রস, ট্রেইলব্লাজার, ল্যান্ডরাস ও রেইড।
রালি রেস খেলার সময় গাড়ি চালাতে হবে কাঁচা-পাকা রাস্তায়। রাস্তা অনেক সরুও হবে কিছু কিছু স্থানে ও সেই সাথে আকাঁবাঁকা বন্ধুর পথ তো রয়েছেই। এ রেসের রাস্তাগুলো প্রায় ৬ কিলোমিটারের মতো লম্বা হতে পারে। মজার ব্যাপার হচ্ছে- পাশে থাকবে কো-ড্রাইভার, যার কাজ হচ্ছে পেসনোট দেখে রাস্তার বর্ণনা দেয়া। তার বলা পথ ও দিক অনুযায়ী ড্রাইভারকে গাড়ি চালাতে হবে। কো-ড্রাইভারই বলে দেবে সামনে কতটুকু বাঁক নিতে হবে, গাড়ির গতি কমাতে হবে কি না, সামনে কোনো প্রতিবন্ধক থাকলে তাও বলবে, রাস্তায় পানি জমে থাকলে সে ব্যাপারেও সতর্ক করে দেবে, সামনে রাস্তা চওড়া না সরু সে সম্পর্কেও ধারণা দেবে।
র্যা লিক্রস সত্যিকারের র্যাচলি রেসের মতো করে বানানো হয়েছে। এতে আটজন রেসে অংশ নেবে এবং গাড়ি চালাতে হবে স্টেডিয়ামের চারপাশে। এ রেসের পথ এক থেকে দেড় কিলোমিটার লম্বা।
ট্রেইলব্লাজার টাইপের রেসগুলো অনেকটা হিল ক্লাইম্ব ধাঁচের। এতে উঁচু-নিচু রাস্তা থাকবে যা পার করার জন্য লাগবে বিশেষ ধরনের গাড়ি, যাদের বলা হয় ট্রেইলব্লাজার কারস। এ গাড়িগুলোর গড়নের সাথে সাধারণ গাড়ির বেশ পার্থক্য রয়েছে। এ গাড়িগুলোর অ্যারোডায়নামিক এইডগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্পয়লার, ডিফিউসার ও স্পিলটোর। এগুলো উচ্চগতির সময় গাড়ির ট্র্যাকশন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, উঁচু স্থান থেকে লাফিয়ে পড়ার পর ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে, পাথুরে উঁচু-নিচু পথে গাড়ি সাবলীলভাবে চলতে সাহায্য করে ইত্যাদি।
রেইড রেসে অংশ নিতে হবে বাগি বা ট্রফি ট্রাক নামের বড় আকারের গাড়ি নিয়ে। এ রেসগুলো প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের মতো লম্বা।
ল্যান্ডরাস রেসগুলোও রেইড রেসের মতোই, কিন্তু তা খেলতে হবে সারকুইট মোডে। এতে আটজন রেসার একাধিক ল্যাপের রেসে অংশ নেবে।
পাঁচ ধরনের গেমের পাশাপাশি এতে যুক্ত করা হয়েছে আরো তিন ধরনের রেস। এগুলো হচ্ছে- গেটক্র্যাশার, ডোমিনেশন ও লাস্টম্যান স্ট্যান্ডিং। গেটক্র্যাশার রেসে রেসিং ট্র্যাকের মাঝে ও বাঁকে কিছুদূর পর পর দেয়া থাকবে হলুদ রঙের প্রতিবন্ধক বা গেট। রেসারকে সেগুলো ভেঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। প্রতিটি গেট ভাঙ্গার পর মূল রেসিং সময়ের সাথে কিছু সময় যোগ হবে। যে সর্বাধিক গেট