সংসদ সদস্যরা নিচ্ছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ সরকার ব্যাপক জনসমর্থন লাভ করে ক্ষমতায় আসে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মকান্ড হাতে নিয়ে কাজ করছে ঠিকই, তবে প্রত্যাশিত গতিতে নয় বা কাঙ্কিত গতি পাচ্ছে না।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা পূরণে কাঙ্ক্ষিত গতি না আসার পেছনে যেমন রয়েছে সরকারের গাফিলতি, তেমনি রয়েছে সরকারের বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের আইসিটি বিষয় সম্পর্কে অজ্ঞতা বা উদাসীনতা।
আমরা জানি বা মানি, অপর কাউকে কোনো কাজে উদ্বুদ্ধ করতে হলে নিজেকে প্রথমে সেই কাজ বা বিষয় সম্পর্কে মোটামুটি জানতে হবে বা ন্যূনতম প্রাথমিক কিছু ধারণা রাখতে হবে। কেননা যাদেরকে দিয়ে কাজ করাবেন তাদেরকে বোঝাতে হবে এবং সেই কাজ সম্পর্কে তাদেরকে উৎসাহিত করতে হবে। আর যদি তা না হয় তাহলে অপরকে দিয়ে কোনো কাজ করিয়ে নেয়া তেমন সহজ হবে না। বোধহয় এ সহজ ধারণা থেকে সরকার এবার উদ্যোগী হয়েছে সংসদ সদস্যদের হাতেকলমে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণের কার্যক্রম গ্রহণ করতে। সরকারের এ উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানাই। সেই সাথে প্রত্যাশা করি প্রশিক্ষণ শেষে সংশ্লিষ্টজনেরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমে যথাযথভাবে তৎপর হবেন। তা না হলে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সময় ও অর্থের অপচয় করা ছাড়া আর কিছুই হবে না।
তাহের
মানিকগঞ্জ
....................................................................................................................................................................................................................................
পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ চাই
সম্প্রতি অনুমোদিত পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ঘরে ঘরে ইন্টারনেট পৌঁছানো আর বাধ্যতামূলক কমপিউটার শিক্ষা প্রসারের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। এই পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সাতটি অগ্রাধিকার চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এসব অগ্রাধিকারে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিও রয়েছে, যা আমাদের দেশের আইসিটিপ্রেমীদের কাছে একটি সুখের সংবাদ।
বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের হার ৩০ শতাংশে উন্নীত করা, টেলিঘনত্বের হার ৭০ শতাংশে উন্নীত করা, সব ইউনিয়নে ইন্টারনেট সুবিধাসহ টেলিসেন্টার স্থাপন, সব ডাকঘরে কলসেন্টার স্থাপন, দ্বাদশ শ্রেণীতে কমপিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার যে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় তার কিছুটা হলেও ছাপ থাকায় সরকারকে অভিনন্দন।
বাংলাদেশের ব্রডব্যান্ড নীতিমালা অনুসারে ১২৮ কেবিপিএস গতিকে ব্রডব্যান্ড বলা হয়, যা বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় নগণ্য।
আজকের দুনিয়াতে একটি দেশ কতটা উন্নত, তার প্রধান মাপকাঠি হিসেবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবহারকে বিবেচনা করা হয়। আর তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নিজেদের ভূখন্ডে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়াতে তৎপর। আর আমরা সেখানে বলছি ২০১৫ সালের মধ্যে শতকরা ৩০ ভাগ মানুষকে ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্কের আওতায় আনার কথা।
আমাদের দেশের অর্থনীতি ও সার্বিক অবস্থার কথা বিবেচনা করলে এ লক্ষ্যমাত্রাকে গ্রহণ করা যায় ঠিকই। তবে সে লক্ষ্য অর্জনে এখন থেকে যদি তৎপর না হই, তাহলে উল্লিখিত লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হবে না সঙ্গত কারণেই। তাই সংশ্লিষ্ট সবাইকে এখন থেকে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হতে হবে। তা না হলে ব্যর্থ হবে এ পরিকল্পনা এবং আমরা আরো পিছিয়ে যাব উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের কাতার থেকে।
জাভেদ
মিরপুর
....................................................................................................................................................................................................................................
দক্ষিণ এশিয়ায় আইটি খাতের কেন্দ্র হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ
কমপিউটার জগৎ-এর খবরের পাতায় মাঝেমধ্যে এমন সব খবর প্রকাশিত হয়, যা আমাকে যেমন বিস্ময়ে অভিভূত করে তেমনই দেখায় আশার আলো। দেয় প্রেরণা ও উৎসাহ। এমনই এক খবর প্রকাশিত হয় ডিসেম্বর ১১-এ, যার শিরোনাম ছিল দক্ষিণ এশিয়ায় আইসিটি খাতের কেন্দ্র হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সত্যি কথা বলতে কি, আমরা জানি তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বের অনেক দেশ উন্নতির শিখরে পৌঁছে গেছে। আবার অনেক দেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে পৌঁছতে পেরেছে বা সেই পথে আছে এমন দৃষ্টান্ত আছে অনেক। এশিয়ার চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা প্রভৃতি দেশের আইসিটি খাতের অবস্থা আমাদের চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে। চীন ও ভারত ছাড়া এখানে উল্লিখিত অন্য দেশগুলো আমাদের চেয়ে যতদূর এগিয়েছে অর্থাৎ এসব দেশের আইসিটির অবস্থার সাথে আমাদের দেশের আইসিটির অবস্থার ব্যবধানটা বেড়েছে আমাদের দেশের নীতিনির্ধারণী মহলের অদূরদর্শিতার কারণে। আমাদের দেশের নীতিনির্ধারণী মহল যদি দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হতো, তাহলে আমাদের দেশের অবস্থা অনেক দূর এগিয়ে থাকত অন্তত শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামের চেয়ে।
ভারত, চীন প্রভৃতি দেশের পর পরবর্তী কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশকে দেখছেন বিখ্যাত মার্কিন আইটি বিশেষজ্ঞ অ্যাড ফ্রাঙ্কলিন। সম্প্রতি নিউইয়র্কে বাংলা নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
অ্যাড ফ্রাঙ্কলিন বাস্তব পরিস্থিতির ভিত্তিতে বাংলাদেশকে ভারতের চেয়ে সম্ভাবনাময় বলে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের আইটি খাতের সম্ভাবনার বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন তিনি।
আমরা পাঠকেরা কমপিউটার জগৎ-এ প্রকাশিত এ খবরকে বিশ্বাস করতে চাই। কেননা আমিও মনে করি, এটি অসম্ভব নয়। ভিয়েতনাম ও শ্রীলঙ্কা যদি পারে, তাহলে আমরা কেনো পারব না। আমরা অবশ্যই পারব। কেননা আমাদের রয়েছে মেধাবী ও পরিশ্রমী প্রচুর শিক্ষিত তরুণ। শুধু চাই আইসিটিসংশ্লিষ্ট সময়োপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত ও নীতিমালা। মূলত আইসিটি খাতের উন্নয়ন নির্ভর করছে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ওপর। যার দেখা আমাদের দেশে সহসা পাওয়া যায় না। আর পাওয়া গেলেও অনেক দেরিতে। ততদিনে আমরা যেমন প্রতিযোগিতা থেকে আরো অনেক পিছিয়ে পড়ি, তেমনি আমাদেরকে মুখোমুখি হতে হয় আরো কঠিন প্রতিযোগিতার।
সুতরাং আমরা চাই মার্কিন আইটি বিশেষজ্ঞ অ্যাড ফ্রাঙ্কলিনের পর্যালোচনাকে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল ও আইসিটিসংশ্লিষ্ট আমাদের দেশের সংগঠনগুলো যথাযথভাবে গুরুত্ব দেবে এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, যাতে বাংলাদেশ সত্যি সত্যি চীন ও ভারতের পর পরবর্তী কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।
আজাদ
স্টেশন রোড, রাজবাড়ী