• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > গণিতের অলিগলি
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: গণিতদাদু
মোট লেখা:১৩৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১২ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গণিত
তথ্যসূত্র:
গণিতের অলিগলি
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
গণিতের অলিগলি
জুতার নম্বর বলে দেবে বয়স
আপনার জুতার নম্বর থেকে আপনি জেনে যাবেন আপনার বয়স কত? এ ক্ষেত্রে নিচের ধারাগুলো অনুসরণ করতে হবে আপনাকে।
এক : আপনার জুতার নম্বর একটি কাগজে লিখুন।
দুই : একে ৫ দিয়ে গুণ করুন।
তিন : এ গুণফলের সাথে ৫০ যোগ করুন।
চার : এ যোগফলকে ২০ দিয়ে গুণ করুন।
পাঁচ : এ গুণফলের সাথে ১০১২ যোগ করুন।
ছয় : এ যোগফল থেকে আপনার জন্মসাল বিয়োগ করুন।
সাত : সর্বশেষ বিয়োগফল হবে তিন অঙ্কের একটি সংখ্যা। এর প্রথম অঙ্কটি হবে আপনার জুতার নম্বর। আর পরের দুটি অঙ্ক হবে আপনার বয়স।

উদাহরণ
এক : ধরুন, আপনার জুতার নম্বর ৭।
দুই : ওই ৭-কে ৫ দিয়ে গুণ করুন : ৭ দ্ধ ৫ = ৩৫।
তিন : ওই গুণফলের সাথে ৫০ যোগ করুন : ৩৫ + ৫০ = ৮৫।
চার : এই যোগফলকে ২০ দিয়ে গুণ করুন : ৮৫ দ্ধ ২০ = ১৭০০
পাঁচ : এই গুণফলের সাথে ১০১২ যোগ করুন : ১৭০০ + ১০১২ = ২৭১২
ছয় : এ যোগফল থেকে আপনার জন্মসাল বিয়োগ করুন : ২৭১২ - ১৯৫২ = ৭৬০
সাত : সর্বশেষ বিয়োগফল হচ্ছে ৭৬০। এখানে ৭ হচ্ছে আপনার জুতার নম্বর এবং ৬০ হচ্ছে আপনার বয়স।

পাই (ঢ়) আবিষ্কারের আগে
উপরে ছোট-বড় তিনটি বৃত্ত রয়েছে। প্রতিটি বৃত্তের রয়েছে সুনির্দিষ্ট ব্যাসার্ধ ও পরিধি। এ ধরনের হাজারো-লাখো-কোটি ছোট-বড় বৃত্ত আমরা আকঁতে পারব। তবে মজার ব্যাপার হলো এসব ছোট-বড় যেকোনো বৃত্ত নিয়ে এর পরিধির দৈর্ঘ্যকে এর ব্যাসের দৈর্ঘ্য দিয়ে ভাগ করলে আমরা সব সময় একই সংখ্যা পাই। সে সংখ্যাটি হচ্ছে ২২ গু ৭। দশমিকে লিখলে ৩.১৪ (প্রায়)। অতএব যেকোনো বৃত্তে পরিধি গু ব্যাসার্ধ = ২২ গু ৭ বা ৩.১৪ (একটি ধ্রুবক সংখ্যা)। এই ধ্রুবক সংখ্যাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বৃত্তের ক্ষেত্রফল, বৃত্তের আয়তন, সিলিন্ডারের আয়তন ও উপরিভাগের ক্ষেত্রফল বের করার সূত্রসহ নানা ধরনের বৈজ্ঞানিক সূত্রে এই ধ্রুবকের ব্যবহার রয়েছে। এর নাম দেয়া হয়েছে ঢ়।

একটি বৃত্তের ব্যাসার্ধ্য যদি ৎ হয়, তবে ওই বৃত্তের ক্ষেত্রফল = ঢ়ৎ২ অর্থাৎ বৃত্তের ব্যাসার্ধের বর্গফলকে ঢ় (২২ গু ৭ বা ৩.১৪) দিয়ে গুণ করলে বৃত্তের ক্ষেত্রফল আমরা পেয়ে যাব সহজেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে পাই (ঢ়) আবিষ্কার হওয়ার আগে একটি বৃত্তের ক্ষেত্রফল কী করে বের করা হতো? পাই (ঢ়) আবিষ্কার হওয়ার আগে মিসরীয়রা একটি পদ্ধতিতে বৃত্তের ক্ষেত্রফল বের করতেন বলে জানা গেছে। সে পদ্ধতিটি কী ছিল, তা-ই আমরা এখানে জানব।

ধরা যাক, ওপরের বৃত্তটির ব্যাসার্ধ = ২ সেমি। অতএব এর ক্ষেত্রফল = ঢ় ক্ম ব্যাসার্ধ২ = (২২ গু ৭), ক্ম (২ সেমি)২ = (২২ ক্ম ৪) গু ৭ বর্গ সেমি = ৮৮ গু ৭ বর্গ সেমি। ঢ়-এর মান ব্যবহার করে বৃত্তটির ক্ষেত্রফল আমরা সহজেই জেনে গেলাম। কিন্তু ঢ় আবিষ্কার হওয়ার আগে মিসরীয়রা তা কিভাবে করত। উপরে বৃত্তটির ব্যাসার্ধ ২ সেমি। তাহলে এর ব্যাস = ৪ সেমি। নিচের বড় বর্গক্ষেত্রটির উপরের বাহুর দৈর্ঘ্য = ৪ সেমি। বর্গটি বৃত্তটির ওপর প্রতিস্থাপন করলে নিচের রূপ ধারণ করবে।

এখানে বর্গক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফল = ৪২ বর্গ সেমি = ১৬ বর্গ সেমি। এই বর্গক্ষেত্রটির ভেতরেই অবস্থান করছে আমাদের বৃত্তটি, যার ব্যাসার্ধ = ২ সেমি। এখন আমরা যদি বৃত্তটি বর্গক্ষেত্রের কত অংশ জুড়ে অবস্থান করছে, তা জানতে পারি, তবে সহজেই বৃত্তের ক্ষেত্রফল জানতে পারব। তা করতে আমাদের কিছু অঙ্কনের সাহার্য নিতে হবে। এজন্য বর্গক্ষেত্রটিকে আমাদের সমান ৯টি সমান বর্গক্ষেত্রে ভাগ করতে হবে। লক্ষ করি, বর্গক্ষেত্রটিকে সমান ৯টি বর্গক্ষেত্রে ভাগ করার পর ১, ২, ৩, ৪, ৫ নম্বর ছোট বর্গক্ষেত্রগুলো মোটামুটিভাবে বৃত্তের ভেতরে পড়েছে এবং এর প্রতিটি ছোট বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল মূল বর্গক্ষেত্রটির ৯ ভাগের ১ ভাগ অর্থাৎ ১৬ গু ৯ বর্গ সেমি। অতএব বৃত্তের ভেতরের ওই ৫টি বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল = (১৬ ক্ম ৫) গু ৯ বর্গ সেমি = ৮০ গু ৯ বর্গ সেমি। এছাড়া ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ছোট বর্গের প্রতিটির মোটামুটি অর্ধেক বৃত্তটির মধ্যে পড়েছে, যার ক্ষেত্রফল ২টি ছোট বর্গক্ষেত্রের সমান অর্থাৎ (১৬ ক্ম ২) গু ৯ = ৩২ গু ৯ বর্গ সেমি। তাহলে বৃত্তটির মোট ক্ষেত্রফল সমান = (৮০ গু ৯ + ৩২ গু ৯) বর্গ সেমি = (৮০ + ৩২) গু ৯ বর্গ সেমি = ১১২ গু ৯ বর্গ সেমি।

এভাবে মিসরীয়রা ঢ় আবিষ্কার হওয়ার আগে বৃত্তের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের একটি পদ্ধতি জানতে পেরেছিলেন। এরা যে বৃত্তটির ক্ষেত্রফল বের করতেন, তার চারপাশে একটি বর্গক্ষেত্র এঁকে নিতেন। বর্গক্ষেত্রটিকে ৯ ভাগ করে একেকটি ছোট বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল জেনে নিতেন। এমনি ৭টি ছোট বর্গক্ষেত্রের আয়তনের সমান হতো বর্গক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফল। সোজা কোনো বৃত্তের চারপাশের আকাঁ বর্গক্ষেত্রের আয়তনের ৯ ভাগের ৭ ভাগের সমান হবে ওই বৃত্তের ক্ষেত্রফল। তবে এই ক্ষেত্রফল আজকের মতো এতটা সঠিক ছিল না।

এ থেকে অনুমান করা যায় মিসয়ীরা গণিত ও বিজ্ঞানচর্চায় কতটা অগ্রসর ছিলেন। প্রসঙ্গত, পিথাগোরাসের বিখ্যাত উপপাদ্যটি (সমকোণী ত্রিভুজের দুই বাহুর বর্গের সমষ্টি এর অভিভূজের বর্গের সমান) কিন্তু পিথাগোরাস আবিষ্কার করেননি। তিনি এটি জানতে পেরেছিলেন মিসরীয়দের কাছ থেকে। পিথাগোরাস এই উপপাদ্যটি জনপ্রিয় করে তোলায় বড় ধরনের ভূমিকা পালন করেছিলেন মাত্র।
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস