লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
সবার জন্য চাই স্মার্টফোন ও জ্ঞান ভাণ্ডারের চাবি
পুরনো দিনের সায়েন্স ফিকশনগুলোতে একবিংশ শতাব্দী বা তৃতীয় সহস্রাব্দ ছিল এক বিস্ময়কর সময়। ২০০০ সাল এবং পরবর্তী বছরগুলোকে নিয়ে কল্পনার জাল বুনেছিলেন বাঘা বাঘা সব সায়েন্স ফিকশন লেখক ও বিজ্ঞান লেখকেরা। গত শতাব্দীর পঞ্চাশ, ষাট ও সত্তর দশক ছিল সায়েন্স ফিকশন লেখকদের স্বর্ণযুগ। মহাকাশ বিজ্ঞান আর রোবটিক্স নিয়ে মানুষের কল্পনার জগতে তুমুল আলোড়ন তুলেছিলেন এরা। কিন্তু তবুও একটা ঘাটতি ছিল। ঘাটতিটা হলো যোগাযোগ প্রযুক্তি নিয়ে। সাইবারনেটিক্স বা কমপিউটারের ‘আজব ’ক্ষমতা নিয়ে অনেক রহস্য সৃষ্টি করতে পারলেও তথ্য প্রক্রিয়াজাত করার পদ্ধতির সাথে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে যুক্ত করে বাস্তবতার কাছাকাছি গল্প ফাঁদতে পারলেও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাধারণীকরণের বিষয়টা যেনো ছিল কল্পনারও বাইরে। অথচ একবিংশ শতাব্দী আসার আগেই বিস্ময়কর এই প্রযুক্তিটাই এখন দুনিয়া মাতিয়ে তুলেছে- যার কাছে ম্লান হয়ে গেছে সাইবারনেটিক্স, রোবটিক্স, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও স্টারওয়ার ধরনের কল্পনাগুলো। আসলে যোগাযোগ প্রযুক্তির বাস্তবতা কল্পনাকে প্রচ- আঘাত করেছিল গত শতাব্দীর নববইয়ের দশকেই। এর ফলে কল্পবিজ্ঞানের জগৎ আকাশ থেকে নেমে এসেছিল মাটিতে অর্থাৎ কমপিউটারে-অভিধানের কল্পনা কমিকস বুক থেকে অ্যানিমেটেড গেমে পরিণত হতে শুরু করেছিল। গণিত, তথ্য ও কল্পনার মিথস্ক্রিয়া সৃজনশীল মানুষের সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছিল এবং তাদের জন্য একটা লাভজনক বাজারও উপহার দিয়েছিল। আর যোগাযোগ প্রযুক্তি যে ডাক ব্যবস্থাকেই লোপাট করে দেবে, তা আশির দশকেও কেউ ভাবেনি। অথচ ২০০০ সালের পর তাই হয়েছে। নীরবে হারিয়ে গেছে টেলিগ্রাফ, টেলেক্স, টাইপরাইটার। মুদ্রণ শিল্পকে বদলে দিয়েছে ডিটিপি।
এই বদলে যাওয়া বিষয়গুলো মানুষের সভ্যতায় অবদান রেখেছে তা যেমন সত্যি, তেমনি বদলে দিয়েছে মানুষের অভ্যাসকেও। শুধু কি অভ্যাসই বদলেছে? মানুষের স্বভাব কি বদলেছে? কিংবা বিবর্তনের ধারায় মানুষের মানসিক কাঠামোয়-মূল্যবোধের ক্ষেত্রে কি কোনো পরিবর্তন এসেছে? বছর পঞ্চাশেক আগে এইচ জি ওয়েলস একবিংশ শতাব্দী নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন এই বলে যে, মানুষ হয়ে যাবে দুই ধরনের। একদল হবে অনেক লম্বা আর একদল হবে খর্বাকৃতি। বিষয়টি কি সত্যি হতে চলেছে? চিকিৎসা বিজ্ঞানী বা সাধারণ নৃবিজ্ঞানীরাও এখন পর্যন্ত এ ধরনের আলামতের কথা বলেননি। তবে বিশ্বমানবের সমাজজীবনে যে পরিবর্তনের ঘনঘটা চলছে, তাতে সন্দেহ নেই মোটেই।
তথ্য প্রক্রিয়াজাত করা আর তথ্য দেয়া-নেয়ার দ্রুততর প্রযুক্তি অবশ্যই সামাজিক মানুষকে অপেক্ষা থাকা থেকে মুক্তি দিয়েছে। বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত ও লেনদেনে গতি বেড়েছে ডিজিটাল যুগের আগের তুলনায় কয়েকশ’ গুণ। ব্যক্তিগত যোগাযোগ, কুশল বিনিময় থেকে ভাব বিনিময় ইত্যাদিতে মানুষ আর সময়ক্ষেপণ করতে চায় না শুধু নয়, এর প্রয়োজনও পড়ে না। কমপিউটার ছাড়াও হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইসভিত্তিক যোগাযোগই এখন নতুন অভ্যসস্ততা। আর এ ক্ষেত্রে বিস্ময়কর তথ্য হলো, পশ্চিমা উন্নত দেশগুলোর তুলনার উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানুষ নতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো ব্যবহার করছে বেশি। মার্কিন গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চ সম্প্রতি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ১৭টি উন্নয়নশীল দেশের মানুষ ফেসবুক ও টুইটার ব্যবহার করছে বেশি। এদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা দেশটি হচ্ছে মিসর, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফিলিপিন্স। এছাড়া তুরস্ক, তিউনিশিয়া, জর্দান, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, মালয়েশিয়া, কেনিয়া, ভেনেজুয়েলা, মেক্সিকো, চিলি, আর্জেন্টিনা ও সেনেগাল রয়েছে এগিয়ে।
এই তালিকায় জনসংখ্যার অনুপাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এবং সে কারণেই তালিকায় ভারত, চীন ও ব্রাজিলের মতো বড় এবং উন্নয়নশীল দেশ নেই। নেই বাংলাদেশের নামও। কেন নেই, সে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। কারণ, এতদিন আমরা জেনে এসেছি মোবাইল ফোনসেট বিক্রির ক্ষেত্রে চীন ও ভারত রয়েছে বিশ্বের মধ্যে প্রথম সারিতে। আবার আয়তনের তুলনায় বাংলাদেশে সিম ও সেট বিক্রির পরিমাণ অন্য দেশের তুলনায় বেশি। কিন্তু সমস্যা যেটা দেখা দিয়েছে তা হচ্ছে সামাজিক সাইট ব্যবহারের ক্ষেত্রে। চীন, ভারত ও বাংলাদেশে মানুষ মোবাইল সেট যে হারে ব্যবহার করছে, সে হারে মোবাইল সেটে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে না। এসব দেশে অফিসের কাজে বা শিক্ষার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার হচ্ছে বেশি। ভাষার সমস্যা, উপযোগিতার উপলব্ধিতে ঘাটতি, সংস্কৃতিগত পশ্চাৎপদতা বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল এই দেশগুলোকে পিছিয়ে রেখেছে। পক্ষান্তরে মিসর বা তুরস্কের মতো দেশগুলোতে শিক্ষা ও সংস্কৃতিগত উন্নয়ন যতটা যুগোপযোগী হয়েছে ততটা এসব দেশে হয়নি। হয়তো সংগ্রামশীলতা ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সম্ভাবনাকে সামনে রেখে ওইসব দেশের মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করছে। তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া কিংবা ফিলিপিন্সে দেখা যায় অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সামাজিক সাইটগুলোকে ব্যবহার করছে (বাংলাদেশে এ সংখ্যা হাতেগোনা), অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে শুধু বন্ধুত্ব, মজা করা আর কুশল বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে রাখেনি তারা, বরং একে নতুন উপযোগিতায় ব্যবহার করছে।
এটা নিঃসন্দেহে একটা সুখবর, তবে তা বিশ্ব সভ্যতার জন্য, আমাদের জন্য নয়। কারণ এর ফলে একটা নতুন ডিজিটাল ডিভাইড তৈরি হচ্ছে। আর বছর দুয়েকের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার বেশি হবে ফেসবুকে। এখনও এ ক্ষেত্রে পিসি এবং ল্যাপটপ এগিয়ে থাকলেও স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট পিসির বিক্রি যে হারে বাড়ছে, তাতে করে এগিয়ে যাবে নতুন প্রজন্মের ব্যবহারকারীরাই। আরও একটি খবর নিশ্চয়ই অনেকে এতদিনে জেনে গেছেন, সারা বিশ্বেই গত বছর পিসির বিক্রি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। এর কারণটা দ্বিবিধ। প্রথমত : যারা একটি পিসি বা ল্যাপটপ এবং একটি মোবাইল ফোন কেনা ও ব্যবহারের সামর্থ্য রাখতেন না, তারা এখন একটি স্মার্টফোন কিনেই সবকিছুর উপযোগিতা পাচ্ছেন। দ্বিতীয়ত : স্মার্টফোনের দাম অনেক কমে যাওয়া। তৃতীয় আরও একটি কারণকে এর সাথে যুক্ত করা যায়। আর তা হলো ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো ব্যবহারের জন্য সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন সুযোগ।
ফেসবুকের কথাই ধরা যাক। ফেসবুক প্রতিষ্ঠার পর থেকে সবচেয়ে বড় অ্যাকুইজিশনটি করতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। অতি সম্প্রতি মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটস অ্যাপ কেনার চূড়ান্ত চুক্তি করে ফেলেছে ফেসবুক। এতদিন ইন্টারনেটের মাধ্যমে হোয়াটস অ্যাপ ব্যবহার করত বিশ্ববাসী। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নতুন প্রজন্মের ক্রেজই হয়ে উঠেছে হোয়াটস অ্যাপ। যার গ্রাহকসংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে ১০ লাখ করে। আর গত বছরই ৪৫ কোটি মানুষ ব্যবহার করেছে এই মেসেজিং সাইটটি। এই অ্যাকুইজিশন প্রসঙ্গে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ বলেছেন, এটি মেসেজ আদান-প্রদানকারীদের জন্য আদর্শ এবং জনপ্রিয়। তাই নগদ ৪০০ কোটি ডলার আর ১২০০ কোটি ডলারের শেয়ারের বিনিময়ে ফেসবুক কিনে নিচ্ছে হোয়াটস অ্যাপকে। এখানেই শেষ নয়। আরও ৩০০ কোটি ডলার পাচ্ছেন হোয়াটস অ্যাপের প্রতিষ্ঠাতা ও কর্মীরা।
আবার গুগলের নতুন খবরটাও লক্ষ্য করার মতো। সেকেন্ডে ১০ গিগাবাইট গতির সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে জোর প্রযুক্তি উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এখন কিন্তু গুগলের তথ্য দেয়া-নেয়ার গতি অনেক কম। যুক্তরাষ্ট্রের কানসাসে ১ গিগাবাইট গতির সেবা দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এখন গুগল যদি ১০ গিগাবাইট ডাটা লেনদেনের গতি অর্জন করতে পারে আর সে সেবা তাদের গ্রাহকদের দেয়, তাহলে অন্য অনেক সফটওয়্যার ব্যবহারের ঝামেলামুক্ত হবেন ব্যবহারকারীরা। বিশেষ করে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ঘটে যাবে বিপ্লব।
অথবা চিন্তা করুন স্মার্টফোন পিসির বদলে সব ধরনের তথ্য দেয়া-নেয়ার জন্য ব্যবহার হচ্ছে আর মানুষ যেখানেই থাকুক সেখানেই তার বাণিজ্য আছে, অফিস আছে আর আছে বিনোদন বা প্রিয়জন সান্নিধ্যের সুযোগ। মানুষের শক্তি কতটা বাড়বে সেটা হয়তো এখনই চিন্তা করা যাচ্ছে না। এখন তাই প্রয়োজন নতুন যুগের কল্পনাবিজ্ঞান লেখকের। তবে হয়তো আগামী পাঁচ বছর পর যে বাস্তবতা আসছে, তা সব কল্পনা আর ধারণাকে ধূলিসাৎ করে দেবে।
এই সময়টাতেও আসলে দরকার ডিজিটাল ডিভাইড দূর করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নেয়া। কারণ, এবার আরও মাইক্রো লেভেলে চলে যাচ্ছে সমস্যাটা। সেই সাইবারনেটিক্সের প্রথম যুগটাকে স্মরণ করুন, যখন বলা হয়েছিল ‘সবার হাতে একটি প্যানেল’। আসলে ওটা কথার কথা নয়, ছিল প্রত্যয় এবং যদিও তথ্যের এত অমিত শক্তির ধারণা প্রায় পৌনে একশ’ বছর আগে ছিল না কিন্তু ধারণটা তো ছিল। এখন সময় এসেছে যে প্রত্যয় বাস্তবায়নের। বাস্তবায়নটা না হলে ওই মানুষের ছোট-বড় ব্যবধানটা হয়েই যাবে। দেহে বা আকৃতিকে না হলেও সামাজিকতায় কর্মোদ্যোগে ছোট-বড় হয়ে যাবে মানবজাতি।
আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পের আসলে এখন একটা উলস্ফন দরকার। এটা শুধু প্রযুক্তি এনে দেয়ার ব্যাপার নয় এবং এখন আর সরকারের ব্যাপারও নয়। নতুন বদলে যেতে থাকা প্রযুক্তি বিশ্বটাকে সবার কাছে সবারই উন্মোচন করার কৌশল নিতে হবে। যেমন ধরা যাক, বাংলায় ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাগুলো এবং সেগুলোকে স্মার্টফোনে ব্যবহারোপযোগী করে তোলার কাজ। আমরা জানি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক উদ্যোগ চলছে, অ্যাপস নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতাও করছে তরুণ প্রজন্মের অনেকে। এগুলোর সমন্বয়-পৃষ্ঠপোষকতা খুবই প্রয়োজন।
কমপিউটার-ইন্টারনেট প্রচলনের প্রথম পর্বে যেমন ক্যাম্পেইন হয়েছিল নববই দশক জুড়ে, সেরকমই স্মার্ট ডিভাইস নিয়ে এখন একটা ব্যাপক প্রচার প্রয়োজন। সরকারের দিক থেকে একটাই ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে স্মার্টফোন এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সেবাগুলোর মূল্যমান বানানোর চেষ্টা করা। চেষ্টা নয়, আসলে ইন্টারনেট ব্যবহারের দাম কমানো খুবই জরুরি। নতুন প্রজন্মের প্রয়োজনটা বোঝাই হচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালকদের প্রধান কর্তব্য। এদেরকে শক্তিমান করে তুলতে পারে এখন একটিই প্রযুক্তিপণ্য, সেটা স্মার্টফোন। আর স্মার্টফোনে যা যা ব্যবহার করা যায় তার সুবিধাটা যেনো সুলভ হয়। তবে সবচেয়ে বেশি রাখতে হবে- যে সুযোগগুলো আসছে সেগুলোর প্রতি যেনো দ্রুততম সময়ে আধুনিক বিষয়গুলো সবার কাছে পৌঁছায়।
পৌঁছানোটা খুবই জুরুরি, কেননা অভাবিত মাত্রায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি যেমন উন্নত হচ্ছে, তেমনি বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখাও পঞ্চাশ বছর আগের সায়েন্স ফিকশনকে অতিক্রম করে গেছে। সুপার কমপিউটারের যে ধারণা আইফাই লেখকেরা কিংবা বিজ্ঞানীরাই দিয়েছিলেন তার চেয়ে অনেক অনেক গুণ বেশি এখনকার সুপার কমপিউটার। এই প্রতিযোগিতাটাও বেশ দুর্মরই বলা যায়। এছাড়া আছে রোবটিক্স এবং আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের উন্নয়ন। এসবই হচ্ছে কমপিউটার প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নয়নের ফলে। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি বিজ্ঞানের আরও যে শাখাগুলোকে পরিপুষ্টি জোগাচ্ছে তার মধ্যে আছে লাইফ সায়েন্স, অ্যাপলাইড ফিজিক্স এবং ফিজিক্যাল কেমিস্ট্রি। এ কারণেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সর্বশেষ উদ্ভাবনটির সাথে পরিচয় এবং ব্যবহারের সুযোগ থাকা চাই আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের। এরা মেধা বিকাশের সুযোগ কম পায় বলেই দেশকে ও বিশ্বকে দিতে পারে খুব কম। এর মধ্যে থেকেও যারা সুযোগ পেয়েছে, তারা দেশে থেকে না হোক বিদেশে গিয়ে দিতে পেরেছে, দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সাধারণভাবে সবার জন্য অবাধ তথ্যের দুয়ার উন্মুক্ত হতে পারছে না অনেকটাই অর্থের জন্য আর কিছুটা অবকাঠামোর জন্য। ভিত্তিমূলক শিক্ষা জ্ঞানভিত্তিক না হওয়াটাও একটা বড় বাধা, যা চেতনা ও উপলব্ধিকে জাগ্রত করে না।
আমাদের যে অবাধ তথ্যপ্রবাহটা চাই, তা আসলে রাজনীতির জন্য নয়, জ্ঞানের জন্য। আর সেটা কূপম-বাদের জন্যও নয়- নতুন প্রজন্মের জন্য। যাতে তারা অযুত প্রশ্ন তুলতে পারে এবং তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করতে পারে। এখন তাই আমরা দাবি জানাতে পারি- সবার জন্য চাই স্মার্টফোন এবং তার জন্য উপযুক্ত অবকাঠামো। দৈনন্দিন বিষয়ের সেবার পাশাপাশি চাই জ্ঞানের ভারে ঢোকার চাবিটাও।
ফিডব্যাক : abir59@gmail.com