লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
তথ্যসূত্র:
Interesting Math
গণিতের অলিগলি (পর্ব-১০০)
১৯৯৬ সংখ্যা নিয়ে কিছু মজা
১৯৯৬ একটি সংখ্যা। এতে রয়েছে চারটি অঙ্ক ১, ৯, ৯ ও ৬। এ অঙ্কগুলোর মাঝে ফাঁকে ফাঁকে যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ, বর্গমূল, শক্তিচিহ্ন (পাওয়ার) ও অন্যান্য গাণিতিক চিহ্ন বসিয়ে লেখা যায় অন্য অনেক সংখ্যা, যদিও এ প্রক্রিয়ায় ১৯৯৬ দিয়ে আমরা সব সংখ্যা প্রকাশ করতে বা লিখতে পারব না। কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি স্পষ্ট করি।
ধরুন আপনাকে বলা হলো, গাণিতিক চিহ্ন যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ কিংবা অন্য কোনো চিহ্ন ব্যবহার করে ১৯৯৬ সংখ্যাটি ব্যবহার করে ৬৩ সংখ্যাটি লিখুন। তখন এর উত্তর হবে : ৬৩ = ১ দ্ধ ৯ + ৯ দ্ধ ৬।
লক্ষ্য করুন, এখানে আমরা শুধু যোগ ও গুণ চিহ্ন ব্যবহার করেছি। এভাবে ১৯৯৬ থেকে যখন আমরা অন্য কোনো সংখ্যা লিখব, তখন এক বা একাধিক গাণিতিক চিহ্ন ব্যবহার করতে পারব। এখানে কয়েকটি সংখ্যা লেখার সমাধান উপস্থাপিত হলো :
২৭ = ১ দ্ধ ৯ + ৯ দ্ধ ৬
২৮ = ১ + ৯ + ৯ দ্ধ ৬
৩২ = (১ গু৯) দ্ধ ৯৬
৩৫ = ল ১৯ + (৯ দ্ধ ৬)
৩৮ = ১৯ গু (গু ৬)
৭২ = (১ + ৯) ক্ম ৯ ক্ম ৬
৭৩ = ১৯ + (৯ ক্ম ৬)
৭৬ = ১ + (৯ ক্ম ৯) ল ৬
৭৭ = ল ১৯ + ৯৬
১০০ = ১ + ৯ + ৯৬
১০০০ = (১ + ৯) (৯ ল ৬)
এভাবে আরও অনেক সংখ্যা লেখা সম্ভব। লক্ষ্যণীয়, ১৯৯৬ সংখ্যার অঙ্কগুলোর ধারাক্রম ব্যাহত না করেই নতুন নতুন সংখ্যাগুলো আমরা লিখেছি।
আটটি ৮ ব্যবহার করে
ধরুন, আপনাকে বলা হলো আটটি ৮ ও গাণিতিক যেকোনো চিহ্ন ব্যবহার করে ১০০০ সংখ্যাটি লিখতে হবে। তখন আপনি কী করবেন? হয়তো ভাবছেন এ কী করে সম্ভব? হ্যাঁ, সম্ভব। গণিতের মজা কিন্তু এখানেই। কয়েকটি সমাধান এখানে জানিয়ে দিই।
১০০০ = ৮৮৮ + ৮৮ + ৮ + ৮ + ৮
১০০০ = [৮ {৮ (৮ + ৮) - (৮ + ৮) গু ৮} - ৮]
১০০০ = ৮৮৮৮ গু ৮.৮৮৮
১০০০ = (৮৮৮ - ৮) + ৮ ক্ম (৮ + ৮) - ৮
১০০০ = [{৮ ক্ম (৮ + ৮)} - {(৮ + ৮ + ৮) গু ৮}] ক্ম ৮
১০০০ = [৮ + {(৮ + ৮) গু ৮}] (৮ + ৮ + ৮) গু ৮
১০০০ = [৮ +{(৮ + ৮) গু ৮}] (৮৮ গু ৮) - ৮
১০০০ = [{৮ ক্ম (৮ + ৮)} - {(৮৮ গু ৮) - ৮}] ক্ম ৮
১০০০ = (৮৮৮৮ - ৮৮৮) গু ৮
১০০০ = ৮ (৮ ক্ম ৮ + ৮ ক্ম ৮) - ৮ - ৮ - ৮
সুপ্রিয় পাঠক, একটু চেষ্টা করে দেখুন এমনই কোনো একটি সমাধান আপনি বের করতে পারেন কি না।
একটি মজার সংখ্যা ধাঁধা
প্রশ্ন হচ্ছে, এমন একটি সংখ্যা বলতে হবে, যা নিচের শর্তগুলো মেনে চলে।
সংখ্যাটিকে ২ দিয়ে ভাগ করলে ভাগশেষ হয় ১
সংখ্যাটিকে ৩ দিয়ে ভাগ করলে ভাগশেষ হয় ২
সংখ্যাটিকে ৪ দিয়ে ভাগ করলে ভাগশেষ হয় ৩
সংখ্যাটিকে ৫ দিয়ে ভাগ করলে ভাগশেষ হয় ৪
সংখ্যাটিকে ৬ দিয়ে ভাগ করলে ভাগশেষ হয় ৫
সংখ্যাটিকে ৭ দিয়ে ভাগ করলে ভাগশেষ হয় ৬
সংখ্যাটিকে ৮ দিয়ে ভাগ করলে ভাগশেষ হয় ৭
সংখ্যাটিকে ৯ দিয়ে ভাগ করলে ভাগশেষ হয় ৮
সংখ্যাটিকে ১০ দিয়ে ভাগ করলে ভাগশেষ হয় ৯
আরও জানিয়ে রাখি, সংখ্যাটি খুব বড় নয়, আবার একেবারে ছোটও নয়। সময় নিয়ে মাথা খাটিয়ে হয়তো অনেকেই কাঙ্ক্ষিত এ সংখ্যাটি বের করতে পারবেন। তবে এ সংখ্যাটি বের করার একটি সহজ সূত্র জানা হয়ে গেছে। সূত্রটি হচ্ছে, এ সংখ্যাটি হবে ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯ ও ১০-এর ল.সা.গু ও গ.সা.গু.র মধ্যকার পার্থক্য।
এসব সংখ্যার ল.সা.গু = ২৫২০ এবং গ.সা.গু = ১। অতএব নির্ণয় সংখ্যা = ২৫২০ - ১ = ২৫১৯। খুঁজেই দেখুন ২৫১৯ সংখ্যাটি উপরোল্লিখিত শর্তগুলো মেনে চলে কি না।
গণিতের একটি খেলা
একজন বন্ধুকে বলুন লুডু খেলার একটি ছক্কার গুটি নিয়ে আপনার নির্দেশ মতো তিনবার ছুড়ে মারতে। তাকে বলুন এই তিনবার ছুড়ে মারার সময় কোনোবার কত ভেসেছে তা আপনাকে না জানাতে। এবং বলুন, আপনার নির্দেশ মতো গাণিতিক কাজগুলো সম্পন্ন করতে। সে যদি তা ঠিকমতো করে, তবে আপনি তিনবার ছক্কার গুটি ছুড়ে মারার সময় কত ভেসেছিল, তা বলে দিতে পারবেন।
এবার বন্ধুকে তৈরি হতে বলে নিমণরূপ নির্দেশ দিন :
এক : ছক্কার গুটিটি প্রথমবারের মতো ছুড়ে মারতে বলুন। কত ভাসল, তা আপনাকে না জানাতে বলুন।
দুই : ছক্কার গুটিতে প্রথম যত ভাসল তাকে ২ দিয়ে গুণ করতে বলুন।
তিন : এই গুণফলের সাথে ৫ যোগ করতে বলুন।
চার : এ যোগফলকে ৫ দিয়ে গুণ করতে বলুন। গুণফলটি মনে রাখতে বলুন।
পাঁচ : এবার দ্বিতীয়বার ছক্কার গুটি ছুড়ে মারতে বলুন। ছক্কার গুটি এবার যত ভাসল তা আগে মনে রাখা গুণফলের সাথে যোগ করতে বলুন।
ছয় : এই যোগফলকে ১০ দিয়ে গুণ করে গুণফল মনে রাখতে বন্ধুটিকে বলুন।
সাত : এবার তৃতীয়বারের মতো ছক্কার গুটি ছুড়ে মেরে যত ভাসল তা আগের মনে রাখা গুণফলের সাথে যোগ করতে বলুন।
আট : এবার সর্বশেষ পাওয়া সংখ্যাটি আপনাকে জানাতে বলুন। আপনি মনে মনে এ সংখ্যা থেকে ২৫০ বিয়োগ করে যে সংখ্যাটি পাবেন, তা হবে একটি তিন অঙ্কের সংখ্যা। এই অঙ্ক তিনটি হবে যথাক্রমে প্রথমবার, দ্বিতীয়বার ও তৃতীয়বার ছক্কার গুটি ছুড়ে মারার সময় ভাসা নম্বর তিনটি।
উদাহরণ
ধরা যাক, প্রথমবার ছক্কার গুটিতে ভাসল ৪। এই ৪-কে ২ দিয়ে গুণ করলে হয় ৮। এই ৮-এর সাথে ৫ যোগ করলে হয় ১৩। এই ১৩-এর ৫ গুণ হয় ৬৫।
ধরি, দ্বিতীয় ছক্কার গুটিতে ভাসল ২। এই ২-এর সাথে ৬৫ যোগ করলে হয় ৬৭। এই ৬৭-কে ১০ দিয়ে গুণ করলে হয় ৬৭০।
ধরা যাক, তৃতীয়বার ছক্কার গুটিতে ভাসল ৬। এই ৬-এর সাথে আগে পাওয়া ৬৭০ যোগ করে পাই ৬৭৬। এখন ৬৭৬ - ২৫০ = ৪২৬।
তাহলে সর্বশেষ পাওয়া ৪২৬ সংখ্যা থেকে আপনি জাদুকরের মতো বলে দিন প্রথমবার, দ্বিতীয়বার ও তৃতীয়বার ছক্কার গুটিতে যথাক্রমে ভেসেছিল ৪, ২ ও ৬।
গণিতদাদু