• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ডাউন অব ওয়ার- সোউলস্ট্রম
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:১৪৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - জুলাই
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেম
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ডাউন অব ওয়ার- সোউলস্ট্রম



স্ট্র্যাটেজি গেমগুলো খেলার জন্য গেমারকে ভালো ধৈর্যর অধিকারী হতে হয় এবং সেই সাথে থাকতে হয় ভালো বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতা। এধরনের গেম খেলার সময় বিপরীতপক্ষকে আঘাত করার আগে বেশ ভেবেচিন্তে করতে হয় এবং সেই সাথে নিজের দলের বা ঘাঁটির সুরক্ষার ব্যবস্থা অটুট রাখতে হয়। স্ট্র্যাটেজি গেমগুলো অনেক ধরনের হয়ে থাকে, যেমন : রিয়েল টাইম স্ট্র্যাটেজি, টার্ন বেইজড ইত্যাদি। বেশ কিছু ভালোমানের স্ট্র্যাটেজি গেমের মাঝে রয়েছে-ওয়্যারক্রাফটস, ওয়্যারহ্যামার ৪০,০০০, স্পেলফোর্স, নেভার উইন্টার নাইটস, এম্পায়ারস আর্থ, এজ অব এম্পায়ার, সিভিলাইজেশন, জেনারেলস, টাইবেরিয়াম ওয়ারস, রেড এলার্ট ইত্যাদি আরো অনেক গেম। এসব সিরিজের গেম গেমারদের মাঝে বেশ জনপ্রিয় তাই প্রতিনিয়ত এসব গেমের নতুন পর্ব বের হবার পাশাপাশি এক্সপানশন প্যাকও বের হয়।



ওয়্যারহ্যামার ৪০,০০০ সিরিজের ডাউন অব ওয়ার-সোউলস্ট্রম নামের গেমটির প্রকাশকাল হচ্ছে ২০০৮। আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে এটি তো নতুন গেম, একে কেনো পুরনো গেমের তালিকায় ফেলা হলো? গেমটি পুরানো নয় ঠিকই, কিন্তু গেম খেলার জন্য সিস্টেম রিকোয়েরমেন্ট খুবই কম এখনকার গেমগুলোর তুলনায়। যাদের লো কনফিগারেশন পিসি তাদের জন্য নতুন গেমগুলো খেলা হয়ে ওঠে না, তারা অনেক পুরনো কিছু গেম নিয়ে সময় কাটান। অনেক সময় তাদের কাছে সেইসব গেম একঘেয়ে লাগে এবং নতুন কোনো গেম খেলার ইচ্ছে জাগে। নতুন এ গেমটির পুরনো পিসিতে খেলার সুযোগ থাকায় তা অনেকের জন্য বেশ উপকারি হবে।



সোউলস্ট্রম নামের এ গেমটি মূল গেম ডাউন অব ওয়ারের তৃতীয় এক্সপানশন। তবে এটি খেলার জন্য আগের ভার্সন ইনস্টল করার প্রয়োজন পড়ে না। আগের এক্সপানশন দুটি হচ্ছে- উইন্টার এ্যাসাল্ট ও ডার্ক ক্রুসেড। গেমটি টার্নভিত্তিক রিয়েল টাইম স্ট্র্যাটেজি গেম। প্রত্যেক মিশন শেষে আপনাকে চাল সমাপ্ত করার নির্দেশ দিতে হবে। গেমটি অনেকটা দাবা খেলার মতো অনেক ভেবে চিন্তে খেলতে হবে। ওয়ার হ্যামার সিরিজের অন্য গেমগুলোর মধ্যে রয়েছে- Space Crusade, Space Hulk, Vengeance of the Blood Angels, Final Liberation, Chaos Gate, Rites of War, Fire Warrior, Squad Command, Dawn of War II, Space Marine ইত্যাদি। গেমটি পাবলিশ করেছে THQ ও ডেভেলপ করেছে Iron Lore Entertainment ও Relic Entertainment। রেলিক এন্টারটেইনমেন্টের বানানো আরো কয়েকটি বিখ্যাত গেম সিরিজের মধ্যে Company of Heroes ও Homeland বেশ আলোচিত।

গেমে আগের পর্বগুলোর চেয়ে কিছু নতুনত্ব আনা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্রতিটি জাতির সাথে যুক্ত হয়েছে এরিয়াল ইউনিট বা আকাশ থেকে আক্রমণ করতে সক্ষম ইউনিট এবং দেয়া হয়েছে নতুন কিছু ক্যাম্পেইন গেমপ্লে ফিচার। এতে প্রায় নয়টি জাতি রয়েছে। তারা হচ্ছে : Chaos Space Marines, Eldar, Imperial Guard, Necron, Orks, Space Marines, Tau, Dark Eldar ও Sisters of Battle। প্রতিটি ইউনিটের সাথে দেয়া নতুন এরিয়াল ইউনিটগুলো পর্যায়ক্রমে দেয়া হলো- হেল ট্যালন, নাইটউইং, মারাউডার বোম্বার, স্ক্যারাব, ফাইটা বোম্বা, ল্যান্ড স্পিড টেমপেস্ট, ব্যারাকুডা, র‌্যাভেন ও লাইটনিং অ্যাটাক ফাইটার। প্রতিটি জাতির রয়েছে আলাদা ক্ষমতা, ভিন্নধর্মী ইউনিট এবং সুযোগসুবিধা। প্রতিটি জাতি নিয়ে খেলার মধ্যে রয়েছে পুরোপুরি আলাদা স্বাদ। গেমে রয়েছে চারটি গ্রহ ও তিনটি উপগ্রহ। সব গ্রহের কিছু কিছু অংশ বিভিন্ন জাতির দখলে থাকবে। গেমারকে শুরু করতে হবে যেকোনো গ্রহের মাত্র একটি অংশ থেকে। অন্য জাতিগুলোর সাথে যুদ্ধ করে তাদের হটিয়ে দিয়ে দখল করতে হবে গ্রহের পুরোটা এবং গেমের শেষ পর্যন্ত সব জাতিকে হারিয়ে দখল করে নিতে হবে সব গ্রহ।

গেমারের দখল করা অংশে অন্য জাতি হামলা চালাবে, তাদেরকে শক্ত হাতে পরাস্ত করতে হবে এবং প্রতিটি এলাকা দখলের পর সেস্থানে সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে সহজে অন্য কেউ তা দখল করতে না পারে। কিছু ক্ষেত্রে নিজে মিশন না খেলে অটো-রিসলভ করার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি মিশনে ভালো খেলতে পারলে বোনাস দেয়া হবে কিছু স্পেশ্যাল ইউনিট ও হিরোর জন্য কিছু স্পেশ্যাল এবিলিটি ও আপগ্রেড। নানারকম আপগ্রেডের মাধ্যমে হিরোর ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি করা যায় এবং শুধু হিরোকে দিয়েই অনেক ইউনিটের সাথে মোকাবেলা করা যায়। গেমে কোনো রিসোর্স পয়েন্ট দখল করার পর তা আপগ্রেড করে তাতে সুরক্ষা ব্যবস্থা দেয়া যায়। রিসোর্স পয়েন্ট থেকে শত্রুকে দূরে রাখার জন্য সেই পয়েন্টে স্থাপন করা যায় উচ্চ ক্ষমতার অস্ত্র। প্রতিটি জাতির বিল্ডিংয়ের আকার-আকৃতি ও বানানোর কৌশল আলাদা রকমের। কোনো জাতির রিসোর্স সংগ্রহ করার ক্ষমতা বেশি আবার কারো কম, কারো ইউনিটের শক্তি অন্যদের চেয়ে বেশি, কারো চলাচলের গতি অনেক বেশি, কারো আছে স্টিলথ টেকনোলজি তো কারো আছে শক্তিশালী ট্যাঙ্ক। মোট কথা কোনো গেমেই জাতিগুলোর ইউনিটের মাঝে এতটা বৈচিত্র দেখা যায় না যতটা এ গেমে আছে।

ডাউন অব ওয়ার ২ যারা খেলেছেন তাদের কাছে এ গেমের গ্রাফিক্স নিম্নমানের মনে হতে পারে। কিন্তু আসলে গেমের গ্রাফিক্সের মান খুব একটা খারাপ নয়। অন্যান্য স্ট্র্যাটেজি গেমের সাথে তুলনা করলে বুঝতে পারবেন গেমের গ্রাফিক্স কোয়ালিটির মান কতটুকু ভালো। গেমের প্রতিটি মডেলের ডিজাইন করার কাজে ডিজাইনারদের কঠোর পরিশ্রম আন্দাজ করতে পারবেন যখন কোনো ইউনিটকে জুম করে দেখবেন। গেমের সাউন্ড কোয়ালিটি, মিউজিক, ক্যারেক্টারের কণ্ঠস্বর ও গোলাগুলির শব্দ বেশ নিখুঁত করে তোলা হয়েছে। গেমের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অন্যান্য গেমের তুলনায় অসাধারণ। শত্রুপক্ষের বুদ্ধিমত্তা এতটাই উন্নত যে সবচেয়ে সহজ মোডে খেলার সময়ও আপনার ঘাম বের হয়ে যাবে শত্রুপক্ষকে হারাতে। আর কঠিন মোডে খেলার সময় আপনার কি হাল হবে তা আর না-ই বললাম। গেমে প্রতিটি চাল খুবই বিচক্ষণতার সাথে দিতে হবে। ঘাঁটির সুরক্ষা ঠিকমতো না দিতে পারলে খেলা শুরু করার কিছুক্ষণের মাঝেই পরাজিত হতে হবে। গেমটির কোনো কনসোল ভার্সন নেই, এটি শুধু পিসির জন্য বের করা হয়েছে।

গেমটি খেলার জন্য পেন্টিয়াম ৪, ২.০ গিগাহার্টজের প্রসেসরই যথেষ্ট। সেই সাথে লাগবে ২৫৬ মেগাবাইট র‌্যাম (৫১২ হলে ভালো হয়), ডিরেক্ট এক্স ৯.০ সি সমর্থিত ৬৪ মেগাবাইটের গ্রাফিক্স কার্ড ও হার্ডডিস্কে ৫.৫ গিগাবাইট ফাঁকা স্থান। নতুন বের হওয়া গেমগুলোর তুলনায় এ গেমের পিসি কনফিগারেশনের চাহিদা বেশ কমই বলা চলে। তাই মোটামুটি মানের যেকোনো পিসিতে খুব সহজেই এই গেম খেলা যাবে।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস