• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > কল অব জোরেজ
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:৫৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - সেপ্টেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেমস
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
কল অব জোরেজ




ওয়েস্টার্ন মুভি কার না ভালো লাগে। মুভি দেখতে দেখতে মনে হয় যেন নিজেই সেই বুনো পশ্চিমে বিচরণ করছি। বর্তমানে মুভির মতো সব অসাধারণ কাহিনীর গেমও তৈরি হচ্ছে, যার ফলে গেমার গেম খেলার মজা উপভোগের সাথে সাথে চমৎকার কাহিনীও অবলোকন করতে পারবেন। এ ধরনেরই একটি গেম হচ্ছে কল অব জোরেজ। এই সিরিজের গেমগুলোর নির্মাতা কোম্পানি হচ্ছে টেকল্যান্ড ও পাবলিশার হচ্ছে বিখ্যাত কোম্পানি ইউবিসফট।

এই সিরিজের প্রথম গেম কল অব জোরেজ ২০০৬ সালে অবমুক্ত হয়েছিলো এবং এটি ব্যাপক সাফল্য পায়। গেমটি প্রায় সব প্রধান প্লাটফর্মেই (পিসি, প্লে-স্টেশন, এক্স-বক্স ৩৬০) মুক্তি পেয়েছিলো। গেমটি ফার্স্ট পারসন শূটিং গেম, তবে সেখানে ব্যাপক বৈচিত্র্য লক্ষণীয় এবং কাহিনীও বেশ চমৎকার হওয়ায় গেমটি গেমারদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছিলো। সেই সাফল্যের ধারাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে ২০০৯ সালে গেমটির পূর্ববর্তী কাহিনীর ওপর ভিত্তি করে কল অব জোরেজ ব্লাড ইন বাউন্ড নির্মাণ করা হয়েছে। এই গেমে প্রথম গেমটির নায়ক রে ম্যাকলের যুবক বয়সের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। এই গেমে আরো যুক্ত হয়েছে তার দুই ছোট ভাই থমাস ম্যাকল ও উইলিয়াম ম্যাকল এবং তাদের পরিবারের কথা।



গেমের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রতি চ্যাপ্টারের শুরুতে স্থিরচিত্রের সাথে গেমের কাহিনীর সুনিপুণ বর্ণনা প্রদান এবং সেই সাথে নিজেদের অর্থাৎ তিন ভাইয়ের জীবনের ইতিহাস শোনানো। এই বর্ণনা গেমারকে শোনাবে রে ম্যাকলের ছোট ভাই উইলিয়াম ম্যাকল। তাই গেম খেলার সময় মনে হবে যেন কেউ গল্পের বই থেকে কোনো কাহিনী পড়ে শোনাচ্ছে। গেমের শুরুতেই দেখা যাবে আমেরিকান সিভিল ওয়ার চলছে এবং রে সৈনিকের বেশে যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ করছে। তারপর রে-কে কন্ট্রোল করার ভার গেমারের ওপর ছেড়ে দেয়া হবে। সেখানে রে জানতে পারবে তার ভাই থমাস ম্যাকল যে স্থানে যুদ্ধ করছে সেখানকার সুরক্ষা ব্যবস্থা বেশ নাজুক এবং সেখানে শত্রুপক্ষ বেশ বড় ধরনের আক্রমণ চালাতে যাচ্ছে। এ খবর শুনে রে ভাইকে বাঁচানোর তাগিদে দ্রুত নিজের অবস্থান ত্যাগ করে তার ভাইয়ের অবস্থানে যাবে তাকে সাহায্য করার জন্য। সেখানে নদীর উপরের ব্রিজ দিয়ে অগণিত সৈন্য তাদের এলাকায় প্রবেশ করতে থাকবে যখন, তখন রে ও থমসন মিলে গ্যাটারিং গান দিয়ে যথাসাধ্য প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করবে, কিন্তু শত্রুপক্ষের সৈন্যের যেন কোনো শেষ নেই, তাই বাধ্য হয়ে রে-কে নিয়ে গেমারকে দু’পারের যোগাযোগ রক্ষাকারী ব্রিজটি উড়িয়ে দিতে হবে। যার ফলে সাময়িকভাবে শত্রুপক্ষের আক্রমণ প্রতিহত হবে। শত্রুপক্ষের দিক থেকে আরো তীব্র আক্রমণের আশঙ্কা থাকায় ক্যাপ্টেন রে ও থমাসকে অন্য সৈন্যদের সাথে পিছু হটতে বলে। কিন্তু রে ও থমাস সেই প্রস্তাবে রাজি হয় না, কারণ তারা যেখানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে আছে, সেটি তাদের হোমটাউনকে রক্ষা করার জন্য সর্বশেষ প্রতিবন্ধকতা। যদি তারা পিছু হটে যায় তাহলে তাদের শহরে হামলা হতে পারে। শহরে তাদের বিশাল বাংলোতে ছোট ভাই উইলিয়াম ও তাদের মা থাকে, তাই তারা ক্যাপ্টেনের আদেশ না মেনে নিজেদের শহরের দিকে ঘোড়া ছোটায়। এদিকে ক্যাপ্টেন তাদের এই আদেশ অমান্য করার ব্যাপার ভালোভাবে নেন না এবং তাদের ওয়ান্টেড ঘোষণা করেন। ওদিকে থমাসরা নিজেদের বাড়ি গিয়ে দেখে তাদের বাড়িতে শত্রু সৈন্যরা আক্রমণ করেছে এবং নিজেদের এলাকা শত্রুমুক্ত করার জন্য তারা প্রাণপণ লড়াই করবে। তারপরও শেষ রক্ষা হবে না, তাদের ছোট ভাই উইলিয়াম বেঁচে থাকলেও তাদের মা মারা যাবে ও তাদের সব সম্পত্তি বিনষ্ট হয়ে যাবে। রে তার মাকে ছুঁয়ে শপথ করে তারা তিন ভাই মিলে আবার নতুন করে বসতি স্থাপন করবে, কিন্তু সেই এলাকায় তাদের ওয়ান্টেড ঘোষণা করায় তারা পালিয়ে অন্য শহরে চলে যায়। তারপরে গেমের মুভিতে দেখা যায় কয়েক বছরের পরের কাহিনী। তখনো থমাসরা তেমন টাকাপয়সা জমাতে পারেনি নতুন করে বাড়ি বানানোর জন্য। রে ও থমাস দুজনেই ছন্নছাড়া জীবনযাপন করছে এবং উইলিয়ামকে লেখাপড়া করার জন্য ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে দিয়েছে। এর মধ্যেই থমাস মদ্যপ অবস্থায় সেই শহরের শেরিফের মেয়ের সাথে অপ্রীতিকর ব্যবহার করায় শেরিফ তাদের দুজনকে ডুয়াল ফাইটে আহবান করে। এসময় গেমারকে যেকোনো একজনকে সিলেক্ট করে নিতে হবে শেরিফের সাথে ডুয়াল ফাইটে অংশ নেয়ার জন্য। ডুয়ালে শেরিফ মারা যাবার পর শেরিফের লোকদের তাড়া খেয়ে তারা শহর থেকে পালিয়ে মেক্সিকোতে যেতে বাধ্য হয়। সেখানে যেয়ে তারা অনেক পুরনো গুপ্তধনের খবর পায় এবং রে ঠিক করে সেই গুপ্তধন উদ্ধার করে সেই অর্থ দিয়ে তারা আবার তাদের নিজেদের বাড়ি বানাবে। কিন্তু চাইলেই তো আর গুপ্তধন পাওয়া যাবে না, সেই জন্য তাদের লড়াই করতে হবে স্থানীয় রেড ইন্ডিয়ান গোত্রের সাথে, আউট-লদের সাথে এবং সেই সাথে অন্যান্য গুপ্তধন শিকারিরা তো আছেই। এর মধ্যে আবার সুন্দরী এক লাতিন আমেরিকান মেয়ে আসবে শহরে, যাকে দেখে রে ও থমাস দুজনেই প্রেমে পড়বে, কিন্তু মেয়েটি থমাসকে বেশি প্রশ্রয় দেয়ায় দুই ভাইয়ের সাথে রেষারেষি শুরু হয়ে যায়। এভাবেই নানা ঘটনা, ঘাত-প্রতিঘাত, বিশ্বাসঘাতকতা, প্রেম-বিরহ নিয়ে গেমটির মূল কাহিনী এগিয়ে গেছে, যা যেকোনো গেমারকেই মুগ্ধ করতে বাধ্য। গেমে রে ও থমাসের আইনবিরোধী কার্যকলাপ দেখে মুগ্ধ হয়ে সেই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় আউটু-ল জোরেজ তাদের তার দলে যোগ দিতে বলে। এজন্য গেমের নামকরণ করা হয়েছে কল অব জোরেজ।




গেমে রে ও থমাস দুজনকে নিয়েই খেলার সুবিধা দেয়া আছে। তবে প্রথম চ্যাপ্টারে শুধু রে-কে নিয়ে খেলা যাবে এবং পরবর্তী চ্যাপ্টারে শুধু থমাসকে নিয়ে খেলা যাবে। কিন্তু তৃতীয় চ্যাপ্টার থেকে দুজনের যেকোনো একজনকে নিয়ে খেলা যাবে। গেমে দুজনকে নিয়ে খেলার মজাও বেশ আলাদা, কারণ রে আর থমাসের অস্ত্র ও মারামারির কৌশল ভিন্ন। রে একসাথে দুটো পিস্তল ব্যবহার করতে পারে, কিন্তু থমাস মাত্র একটি পিস্তল ব্যবহার করে। এছাড়া রে-কে নিয়ে রাইফেল, ডিনামাইটও ব্যবহার করা যাবে। থমাসও রাইফেল ব্যবহার করতে পারে। এছাড়াও যখন শব্দ না করে মারামারি করতে হবে তখন আবার থমাস ছুরি ব্যবহার করতে পারে এবং উঁচু কোনো স্থানে ওঠার দরকার হলে ল্যাসো ব্যবহার করে উপরে উঠতে পারে। এই দুটি সুবিধা রে-কে নিয়ে খেললে পাওয়া যাবে না। তাই একই মিশন ভিন্নভাবে ও ভিন্ন স্বাদের আমেজ পেতে ইচ্ছে করলে গেমার দুবার খেলতে পারবেন, যাতে করে একবার রে-কে নিয়ে ও অন্যবার থমাসকে নিয়ে খেলতে হবে।


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : shmt_15@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস