• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ফার্মক্রাফট
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:৫৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - সেপ্টেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেমস
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ফার্মক্রাফট




অনেকেরই বাগান করার শখ থাকে, কিন্তু বর্তমানের শহরায়নের যুগে বাগান করার জায়গা পাওয়া খুবই দুঃসাধ্যের কাজ। তাই যদি কমপিউটারের গেমে ঘরে বসেই বাগান তৈরি করা যায় তাহলে কি মজাই না হবে তা একবার ভেবে দেখেছেন। গেমারদের সে রকম মজার একটি গেমের কথাই আজ জানানো হবে। অনেকেই থ্রিডি গেম খেলতে অভ্যস্ত নয়, কারণ এখনকার গেমগুলোতে থাকে কীবোর্ডের বাটনের ও মাউসের বিভিন্ন ব্যবহার। কিন্তু আজকের আলোচিত এই গেমটি যদিও দিবমাত্রিক তবুও এটি খেলতে কারো খারাপ লাগার কথা নয়, কারণ গেমের আর্ট, স্টোরি লাইন, সাউন্ড কোয়ালিটি ও কন্ট্রোল খুবই আকর্ষণীয়। শুধু মাউস ব্যবহার করেই পুরো গেম খেলা যাবে, কীবোর্ড ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়বে না।

গেমটিতে গেমারকে জিঞ্জার নামের একটি ছোট মেয়ের ভূমিকায় খেলতে হবে। সে দাদা-দাদির কাছে বড় হয়েছে। তার দাদা হচ্ছে এক ছোট গ্রামের মধ্যবিত্ত ফার্মার এবং তাদের একটা ছোট ফার্ম রয়েছে। জিঞ্জারের দাদির খুব আশা জিঞ্জার বড় হয়ে গ্রামের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও সফল ফার্মার হবে। এদিকে ছোটকাল থেকেই জিঞ্জারের বাগান করার প্রবল আগ্রহ তার দাদা-দাদির নজর এড়ায় না, ফলে মাত্র ছয় বছর বয়সেই সে তার দাদার কাছ থেকে বাগান ও খামারের বিভিন্ন কাজ সুনিপুণভাবে শিখে নেয় এবং নিজেদের ফার্মে কাজে লেগে যায়। গেমে জিঞ্জারকে নিয়ে গেমারকে বাগান বানাতে হবে ও নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্য পূরণ করে সেই মিশন শেষ করতে হবে। সাধারণত প্রতি মিশনেই তাকে নিয়ে মাটি খুঁড়তে হবে, তারপর সেখানে গাছের চারা লাগাতে হবে, চারাগাছ বড় হয়ে তাতে ফসল ফললে তা স্টোর হাউসে জমা করতে হবে, সেগুলো বিক্রি করে টাকা জমাতে হবে অন্য ফসলের চারা বা বীজ কেনার জন্য, গাছে পানি দিতে হবে, বার বার একই জমিতে ফসল ফলানোয় মাটির উর্বরতা কমে যাবে, তখন সার দিতে হবে, এছাড়া আরো নানা ধরনের কাজ করতে হবে। আস্তে আস্তে মিশনগুলোয় বেশ পরিবর্তন আসবে এবং তখন নানা রকম ফল ও শাকসবজি উৎপাদন করতে হবে। ফলের মধ্যে রয়েছে- চেরি, আপেল, কলা, পিচফল, স্ট্রবেরি ইত্যাদি। আর সবজি ও অন্যান্য ফসলের মধ্যে রয়েছে- গাজর, বাঁধাকপি, বিট, ঝিঙ্গে, মিষ্টি কুমড়া, মাশরুম, টমেটো, বেগুন, তরমুজ, গম ইত্যাদি। এছাড়া কিছু স্টেজে ফুলের চাষও করতে হবে, তাদের মধ্যে সূর্যমুখী, ডালিয়া, অর্কিড ইত্যাদি অন্যতম। তবে যখন ফুলের চাষ করা হবে তখন ফুল স্টোর হাউসে সংরক্ষণ করা যাবে না, তার জন্য আবার গ্রিন হাউস বানিয়ে নিতে হবে। এছাড়া বাড়তি লাভের জন্য ফুলের বাগানের পাশে মৌমাছির চাষও করা যাবে এবং মধু সংগ্রহ করে আবার তা রাখার জন্য কোল্ড স্টোরেজ বা হিমাগার বানিয়ে নিতে হবে।

যখন বাগান অনেক বড় হয়ে যাবে তখন একা সব কাজ করা বেশ কঠিন হয়ে যাবে, তখন ঠিকমতো গাছে পানি দিতে না পারলে গাছ মরে যাবার আশঙ্কা থাকবে, তাই তখন একটু টাকা খরচ হলেও ক্ষেতের মাঝে ফাঁকা স্থানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি দেয়ার জন্য ফোয়ারা লাগাতে হবে। এছাড়া একা একা এত বড় খামারের ফসল তুলে স্টোর হাউসে সংগ্রহ করা ও জমিতে সার দেয়াও কম কষ্টের কাজ নয়, তাই ইচ্ছে করলে এক বা একাধিক গার্ডেনার ভাড়া করা যাবে, যারা জমিতে সার দেয়া ও ফসল তোলার কাজে জিঞ্জারকে সহায়তা করবে। যখন ফার্মের আয় আরো বেড়ে যাবে তখন ফার্মকে শুধু ফসলের উৎপাদনের দিক দিয়ে সীমাবদ্ধ না রেখে বিভিন্ন প্রাণী পালন করা যাবে। তখন দুধের জন্য গরু, মাংসের জন্য শূকর, পশমের জন্য ভেড়া, ডিমের জন্য মুরগি ইত্যাদিও পালন করা যাবে, তবে আগে তাদের জন্য বাসস্থানের ও নির্দিষ্ট খাবারের ব্যবস্থা করে নিতে হবে। কারণ একেক পোষা জন্তুর খাবার তালিকাও আলাদা। গরু ও ভেড়া শুধু বাঁধাকপি ও গাজর খায়, কিন্তু শূকরের খাবারের তালিকায় রয়েছে বিট ও টমেটো, আবার মুরগির জন্য দরকার গমের। তাই যে প্রাণী পুষতে চান তার খাবারের জন্য সেই ফসল থাকতে হবে আপনার ফার্মে, তা না হলে প্রাণীগুলো থেকে দুধ, ডিম, মাংস বা পশম পাওয়া যাবে না। এভাবে খেলতে থাকলেই বিভিন্ন মিশনে জিঞ্জার পুরস্কার পেতে থাকবে, এক সময় গ্রামের কৃষিমেলায় শ্রেষ্ঠ কৃষকের পুরস্কার পাবে। কিন্তু শহরায়নের পরিধি বেড়ে তা গ্রামেও প্রভাব বিস্তার করবে এবং দেশের সবচেয়ে বড়লোক ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট গ্রামেও বিভিন্ন কলকারখানা স্থাপন করবে। যার ফলে পরিবেশ দূষণ বেড়ে যাবে, তখন জিঞ্জারকে নিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ গাছ লাগিয়ে পরিবেশকে ঝুঁকির হাত থেকে বাঁচাতে হবে। এছাড়া একসময় গ্রামের অধিকাংশ ফসলি জমি কোম্পানি কিনে নেবে কারখানা বানানোর জন্য, কিন্তু জিঞ্জাররা তাদের জমি বেচতে অস্বীকার করবে, এতে করে কোম্পানির মালিক বেশ রেগে যান এবং জিঞ্জাররা যাতে করে কোনো দোকান থেকে ফসলের বীজ ও ফল গাছের চারা কিনতে না পারে সে ব্যবস্থা নেন। কিন্তু জিঞ্জার তবুও দমে থাকার মেয়ে নয়, সে তাদের সংগ্রহে থাকা চারা ও বীজ ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করে অর্জিত অর্থে গ্রামের বাইরে থেকে বেশি টাকা খরচ করেই বীজ ও চারা সংগ্রহ করে ফার্ম চালাতে থাকে। ওদিকে কোম্পানির মালিক দুজন গোয়েন্দা ঠিক করে জিঞ্জারের সম্পর্কে নানা তথ্য যোগাড় করার জন্য ও তাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু ভাগ্যক্রমে দেখা যায় জিঞ্জার সেই কোম্পানির মালিকের মেয়ে, জন্মের কিছুদিন পরেই সে হারিয়ে যায় এবং জিঞ্জারের বর্তমান দাদা-দাদি তাকে খুঁজে পেয়ে নিজেদের নাতনির মতো করে মানুষ করে। এভাবেই গেমের কাহিনী এগিয়ে যায় বিভিন্ন নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে। তাই গেমটি খেলে মজা পাওয়ার পাশাপাশি গেমের কাহিনীও গেমারকে বেশ আনন্দ প্রদানে সহায়তা করবে। এছাড়া প্রতি মিশনের আগে স্থিরচিত্র ও ক্যাপশনের দবারা গেমের কাহিনীর সচিত্র বর্ণনাও বেশ আকর্ষণীয়। তাই ভার্চুয়াল ফার্মিংয়ের মজা নিতে আজই গেমটি ডাউনলোড করে বা সংগ্রহ করে খেলা শুরু করে দিন।



গেমটির আকার মাত্র ২৫-৩০ মেগাবাইট এবং ইনস্টল করার পর হার্ডডিস্কে মাত্র ৭০ মেগাবাইটের মতো জায়গা দখল করবে। গেমটি খেলার জন্য তেমন হাই কনফিগারেশনের পিসির দরকার পড়বে না। পেন্টিয়াম টু বা থ্রি মানের পিসি বা ৬০০ মেগাহার্টজের প্রসেসর, ২৫৬ মেগাবাইটের র্যা্ম যুক্ত যেকোনো পিসিতে অনায়াসে গেমটি খেলা যাবে। গেমটির ট্রায়াল ভার্সনটি http://www.bigfishgames.com/download-games/4507/farm-craft/index.html এই লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন, তবে সেক্ষেত্রে আপনি শুধু ১ ঘণ্টার জন্য গেমটি খেলতে পারবেন। আর ফুল ভার্সন গেম ডাউনলোড করার জন্য কিছু টাকা খরচ করতে হবে।


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : shmt_15@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস