• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > স্ট্রিট ফাইটার ৪
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:১৪৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - সেপ্টেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেমস
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
স্ট্রিট ফাইটার ৪




ফাইটিং গেমগুলোর মাঝে অন্যতম একটি নাম হচ্ছে স্ট্রিট ফাইটার। ১৯৮৭ সাল থেকে বিখ্যাত আর্কেড গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্যাপকমের হাত ধরে এ গেমের যাত্রা শুরু। এ গেমের অনেক সিক্যুয়াল বের হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটির নাম হচ্ছে- সুপার স্ট্রিট ফাইটার ২, টারবো এইচডি রিমিক্স, স্ট্রিট ফাইটার আলফা ১, ২, ৩, স্ট্রিট ফাইটার ৩, স্ট্রিট ফাইটার ৪। মূল সিরিজের বাইরেও কিছু গেম বের হয়েছে- যার মধ্যে স্ট্রিট ফাইটার ইএক্স, স্ট্রিট ফাইটার-দ্য মুভি, সুপার পাজল ফাইটার ২ টারবো, সুপার জেম ফাইটার মিনি মিক্স, স্ট্রিট ফাইটার ২০১০ ইত্যাদি অন্যতম। এছাড়াও এ গেম সিরিজের ওপরে নির্মিত হয়েছে ২টি মুভি, বের হয়েছে অসংখ্য কমিকস, কার্টুন, অ্যানিমেশন ফিল্ম।



আজকে আমাদের আলোচনায় যে গেমটির নাম উঠে আসবে তা হচ্ছে স্ট্রিট ফাইটার গেম সিরিজের এক অভূতপূর্ব সংযোজন স্ট্রিট ফাইটার ৪। এটি পুরনো দিবমাত্রিক ধারা থেকে বের হয়ে নতুন রূপে সবার সামনে চোখ ধাঁধানো ত্রিমাত্রিক গ্রাফিক্সের বাহারে সাজিয়ে বাজারে এনেছে ক্যাপকম। গেমটি ডেভেলপ করা হয়েছে ডিম্পস ও ক্যাপকমের যৌথ উদ্যোগে। গেমটি বানানোর মূল মন্ত্রদাতা হচ্ছেন ইয়োশিনোরি ওনো। গেমের চরিত্রগুলোর ডিজাইন করেছেন ডাইগো ইকেনো এবং মিউজিক ও শব্দশৈলীর কাজের তদারকিতে ছিলেন হিডেইয়ুকি ফুকাসাওয়া। গেমটি আর্কেড, প্লেস্টেশন ৩, এক্সবক্স ৩৬০ ও উইন্ডোজ প্লাটফর্মে অবমুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু তা একযোগে অবমুক্ত করা হয়নি। আর্কিড প্লাটফর্মের জন্য গেমটি ২০০৮ সালের জুলাইয়ে বের হয়েছিলো। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে তা প্লেস্টেশন ও এক্সবক্সের জন্য এবং আর্কেডে মুক্ত হবার এক বছর পর গত জুলাইয়ে উইন্ডোজ প্লাটফর্মের জন্য তা বের হয়েছে। পিসি ভার্সন বের হবার আগেই গত মার্চে গেমটির প্রায় আড়াই মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে।

স্ট্রিট ফাইটার সিরিজের গেমগুলো বেশিরভাগ দেখা যায় রাস্তার পাশের গেমের দোকানগুলোতে ও গেমিং জোনগুলোতে। পিসিতে এসব গেমের প্রচলন তুলনামূলকভাবে কম। এর কারণ হচ্ছে গেমটি খেলার ধরন। এ ধরনের ফাইটিং গেমগুলো খেলার জন্য কন্ট্রোলের প্রয়োজন পড়ে। পিসিতে কীবোর্ডের সাহায্যে খেলা যায়, কিন্তু তা নিয়ন্ত্রণ করা ততটা সাবলীল নয় যতটা কন্ট্রোলে করা যায়। পিসিতে গেমপ্যাড ব্যবহার করে এ সমস্যা কিছুটা দূর করা যায় বটে, তবে আর্কেড গেমিংয়ের মজা অন্যরকম। নতুন এ গেম যাতে সুন্দরভাবে পিসিতে কীবোর্ড দিয়ে খেলা সহজ হয়, সেদিকে লক্ষ রেখে গেমের কন্ট্রোল সেটিংয়ে কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। গেম খেলার মাঝে মেনু থেকে যেকোনো চরিত্রের মারামারি করার কৌশল দেখে নেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।



গেমের কাহিনীতে সেথ নামের এক অজ্ঞাত ব্যক্তি একটি মারামারির প্রতিযোগিতার আয়োজন করে এবং পৃথিবীর আনাচেকানাচে লুকিয়ে থাকা বিখ্যাত সব যোদ্ধাকে আমন্ত্রণ করে। একে একে সব যোদ্ধা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ঠিকই কিন্তু তারা কি ভয়ঙ্কর এক জালে জড়িয়ে পড়ছে তা জানে না। নতুন এই গেমে স্ট্রিট ফাইটার ২-এর আবহ ধরে রাখা হয়েছে। এতে রয়েছে পুরনো সব চরিত্র ও সেই সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে নতুন কিছু চরিত্র। পুরনো চরিত্রগুলোর মাঝে রয়েছে- রিয়ু, কেন, চান লি, ই. হোন্ডা, ব্লাঙ্কা, জানগিফ, ডালসিম, বালরগ, সাগাত, ভেগা, গোয়েল, মি. বাইসন। এতে দেয়া হয়েছে চারটি নতুন চরিত্র, তারা হচ্ছে- আবেল, ক্রিমসন ভাইপার, রুফুস ও এল ফুয়েরতে। আবেল হচ্ছে ফ্রান্সের মিক্স মার্শাল আর্টে পারদর্শী এবং সে তার অতীতের কিছু মনে করতে পারে না। তার একটাই লক্ষ্য শ্যাডোলু সংগঠনের সদস্যদের খুঁজে বের করে তাদের মোকাবেলা করা। শ্যাডোলু হচ্ছে মি. বাইসনের পরিচালিত এক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, যাতে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের ভালো ভালো কিছু যোদ্ধা রয়েছে। ক্রিমসন ভাইপার হচ্ছে আমেরিকান গুপ্তচর এবং তার ক্ষমতা তার অত্যাধুনিক পোশাকের মাঝে সঞ্চিত। তার এ স্পেশাল স্যুট তাকে গেমের এক শক্তিশালী নারী চরিত্রের ভূমিকায় স্থান দিয়েছে। রুফুস হচ্ছে মোটাসোটা এক উচ্চাভিলাষী বাইকার। কুংফুতে পারদর্শী হওয়ায় সে নিজেকে খুব ভালো যোদ্ধা মনে করে। কিন্তু ইউনাইটেড স্টেটসের সেরা লড়াকু বীর হচ্ছে কেন মাস্টারস। তাই তার পণ হচ্ছে কেনকে হারিয়ে তার জয়ের মুকুট ছিনিয়ে নেয়া। মেক্সিকান বাবুর্চি এল ফুয়েরতে গেমটির এক হাস্যকর চরিত্র। রেসলিংয়ের রে মাস্টেরিওয়ের আদলে বানানো এ মুখোশধারী চরিত্র শখের বশে ফাইটিং টুর্নামেন্টে ভাগ নেয়।

গেমে বস চরিত্রে রাখা হয়েছে তিনজনকে- সেথ, আকুমা ও গোওকেন। সেথ হচ্ছে পুরোপুরি নতুন এক চরিত্র। সে এসআইএন নামের এক অস্ত্র বানানোর কোম্পানির চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার। সে নিজের শরীরকে অত্যাধুনিক টেকনোলজির সাহায্যে বদলে অনেক ক্ষমতাবান হয়ে ওঠে এবং অন্যের শক্তি শুষে নিয়ে তা নিজের কাজে ব্যবহার করতে পারে। আকুমা হচ্ছে গোওকেনের ছোট ভাই এবং রিয়ুর প্রধান শত্রু। রিয়ু ও কেনের গুরু গোওকেন অসীম ক্ষমতার অধিকারী। এই তিনটি চরিত্রই লুকানো থাকবে, আনলক করার পর তাদের নিয়ে খেলা যাবে। গেমের আরো কয়েকটি চরিত্রের মাঝে রয়েছে ড্যান, ফেই-লং, সাকুরা, ক্যামি, গেন ও রোজ।

এতে আর্কিড, ভারসেস, চ্যালেঞ্জ ও ট্রেনিং মোডে খেলার পাশাপাশি অনলাইন (লাইভ ব্যাটল) গেমিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। গেমের গ্রাফিক্সে বৈচিত্র্য আনার জন্য ইঙ্ক, প্যাস্টেল ও ওয়াটার কালার ইফেক্ট দেয়া হয়েছে। গেমে সুপার কম্বোর পাশাপাশি আলট্রা কম্বোর ব্যবহার বেশ কার্যকর। কম্বো মারার সময় কিছু ক্ষেত্রে গেমের স্টেজকে ত্রিমাত্রিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং সেই সাথে রয়েছে অসাধারণ আলোকসজ্জা। খেলার সময় নানারকম জিনিস আনলক করা যাবে, যেমন- পোশাকের রঙ, মুভি, পোস্টার, আর্ট গ্যালারি ইত্যাদি। প্রতিটি চরিত্রের জন্য রয়েছে আলাদা মুভি যা তাকে নিয়ে খেলার আগে এবং তাকে নিয়ে গেম ওভার করার পর দেখানো হবে। গেমের গ্রাফিক্সের সাথে শব্দশৈলী দারুণ মানানসই। এ গেম খেলার সময় এনে দেবে পুরনো স্ট্রিট ফাইটার ২-এর স্বাদ, তবে তা আসবে নতুন এক আমেজে। এক বাক্যে বলা যায় এই গেম সবার পিসিতে সর্বক্ষণ ইনস্টল করে রাখার মতো একটি গেম।

গেমটি খেলার জন্য মাঝারি কনফিগারেশনের কমপিউটারের প্রয়োজন পড়বে। প্রসেসরের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ২ গিগাহার্টজ গতির পেন্টিয়াম ৪ হলেই গেমটি চালানো যাবে। মেমরির ক্ষেত্রে ১ গিগাবাইট রযায় ম, হার্ডডিস্কে ৪.৫ গিগাবাইট জায়গা, পিক্সেল শ্রেডার ৩.০ যুক্ত গ্রাফিক্স কার্ড (ন্যূনতম এনভিডিয়া জিফোর্স ৬৬০০ বা এটিআই রাডেওন এক্স ১৬০০) এবং ডিরেক্ট এক্স ৯.০সি সাপোর্টেড সাউন্ড কার্ড লাগবে। তবে এই কনফিগারেশনে গেমের গ্রাফিক্সের সব অপশন বাড়িয়ে খেলা যাবে না, এতে গেম খুব ধীরে চলতে পারে। তাই গ্রাফিক্স অপশন বাড়িয়ে গেমের পুরো স্বাদ উপভোগ করার জন্য প্রয়োজন হবে কোর টু ডুয়ো প্রসেসর, ২ গিগাবাইট মেমরির র্যা ম, জিফোর্স ৮ সিরিজ বা তার চেয়ে উঁচুমানের রাডেওন এক্স ১৯০০ সিরিজ বা আরো উঁচুমানের গ্রাফিক্স কার্ডের প্রয়োজন পড়বে। গেমটি উইন্ডোজ এক্সপি, ভিসতা ও সেভেন সমর্থন করে।


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস