আমাদের দেশে স্কুল-কলেজে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করা হোক
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে মোবাইল ফোন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। বিশ্বের কোনো কোনো জায়গায় মোবাইল ফোনের ব্যবহার শতভাগেরও অনেক ওপরে। আমাদের দেশের অবস্থা সে পর্যায়ে উন্নীত হয়নি। তবে এর ব্যবহার অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বাড়ছে। কিছু দিন আগেও আমাদের দেশে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ছিল মূলত আর্থিকভাবে সচ্ছল কর্মজীবীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু, বর্তমানে মোবাইল ফোন কলচার্জ ও সেটের দাম কমে যাওয়ায় এর ব্যবহার শুধু কর্মজীবীদের জন্য নয় বরং বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের গন্ডি পেরিয়ে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের মাঝেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
আমাদের দেশে স্কুল-কলেজে পড়ুয়া সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের হাতে অভিভাবকরা মোবাইল ফোন তুলে দেন মূলত তাদের সাথে সর্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখার জন্য। কেননা, আমাদের দেশের অভিভাবকরা মূলত বিভিন্ন কারণে সন্তানদের জন্য সবসময় থাকেন উৎকণ্ঠার মধ্যে, বিশেষ করে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত অভিভাবকরা। স্কুল-কলেজ ছাড়াও তাদের সন্তানরা সবসময় ছোটাছুটি করে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট শিক্ষকের বাসায়। আর এজন্যই তাদের দরকার হয় সন্তানদের সাথে সর্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা। এই যোগাযোগ রক্ষার জন্য দরকার মোবাইল ফোন, যদিও অনেকেই মনে করেন এটা একটা খোঁড়া যুক্তি, যার কোনো ভিত্তি নেই। সুতরাং এমন অবস্থায় ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরা মোবাইল ফোন তুলে দেন তাদের সন্তানদের হাতে অনেকটা নিজেদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থেকে মুক্তির জন্য। সুতরাং এক্ষেত্রে দ্বিমত পোষণ না করে বরং সমর্থন দেয়া উচিত প্রত্যেকেরই।
তবে স্কুল-কলেজ সময়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ছাত্রছাত্রীসহ শিক্ষকদের জন্য নিষিদ্ধ করা উচিৎ সম্পূর্ণ। কেননা ক্লাস চলাকালে ছাত্রছাত্রীসহ শিক্ষকদের অনেক সময় কথা বলতে দেখা যায়। এতে শুধু মনোযোগ বিঘ্নিত হয় তা নয়, বরং অন্যের পড়ার ক্ষতিও হয়। তাই প্রয়োজনে স্কুল-কলেজে মোবাইল ফোন আনা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হোক। এ আদেশ ছাত্রছাত্রীসহ শিক্ষকদের জন্য কার্যকর করা উচিত।
সম্প্রতি ভারতের গুজরাটে স্কুল-কলেজে মোবাইল ফোন আনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। আমি মনে করি ভারতের গুজরাটের মতো বাংলাদেশের স্কুল-কলেজে মোবাইল ফোন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা উচিত। আর এই নিষিদ্ধকরণ আদেশ শুধু ছাত্রছাত্রীদের জন্য না করে শিক্ষকদের জন্যও করা উচিত। কেননা স্কুল-কলেজ সময়ে শুধু ছাত্রছাত্রীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না, শিক্ষকরাও করে এবং সমভাবে অন্যের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটায়। এই আদেশ বাস্তবায়িত করা কঠিন হলেও করা উচিত আমাদের সন্তানদের স্বার্থে। অহেতুক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় না থেকে বাস্তবতার নিরিখে আমাদের সবাইকে চিন্তা করতে হবে- মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও অপব্যবহার, উপকার ও অপকার উভয়ই রয়েছে। আমাদের দেশে মোবাইলের অপব্যবহারও হতে দেখা যায় ব্যাপকভাবে, যা অভিভাবকদের জন্য বয়ে আনে নতুন উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ।
রতন বিশ্বাস
দিনাজপুর
............................................................................................................
সময়োপযোগী গোলটেবিল বৈঠক নিয়মিত হোক
আমি কমপিউটার জগৎ-এর একজন নিয়মিত পাঠক। দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি এ পত্রিকাটি জাতীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো নিয়ে বিশেষ করে আইসিটিসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো যথার্থ উপলব্ধি করে এর বাস্তব চিত্র দেশের সব মহলের মানুষকে অবহিত করাসহ সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞজনদের কাছ থেকে নানাধর্মী সমাধানের উপায় বের করে আনার লক্ষ্যে নানা বিষয়ে গোলটেবিল বৈঠক, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় কমপিউটার জগৎ এবার ‘আইসিটি খাতে দক্ষ জনশক্তির ঘাটতি’ শিরোনামে এক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।
এ গোলটেবিল বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশমালা উঠে এসেছে। আমার মতে এ গোলটেবিলের অভিজ্ঞজনদের আলোচনায় যে সুপারিশ উঠে এসেছে সেগুলো প্রতিটিই গুরুত্বপূর্ণ। তবে অন্যতম কয়েকটি হলো বিজ্ঞান সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করা, প্রতিটি কলেজে কমপিউটার বিভাগ খোলা, কমপিউটার সায়েন্সের সিলেবাস হালনাগাদ করা এবং ছাত্রছাত্রীদের অনার্স শেষ বর্ষের প্রকল্পগুলো বাস্তবমুখী করা।
এ গোলটেবিল বৈঠকে যেসব সুপারিশ উঠে এসেছে তার সবই হয়তো রাতারাতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় আমাদের দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে। তবে কঠিন কিছু নয়। এজন্য দরকার সময়, তবে অনন্তকাল নয়। চাই আন্তরিক প্রচেষ্টা, যার অভাব আমাদের মধ্যে রয়েছে প্রকটভাবে। আবেগতাড়িত না হয়ে বরং বাস্তবতার আলোকে বলা যায়, আমাদেরকে ধৈর্যধারণ করতে হবে, সময় দিতে হবে।
অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের প্রকল্পগুলো যেন হয় বাস্তবমুখী এবং নিত্যনতুন বিষয়ের ওপর। সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। দুঃখের বিষয়, এক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষকদের মাঝে দেখা যায় চরম অবহেলা এবং গাছাড়াভাব। অনেক শিক্ষক দায়সারাভাবে ছাত্রছাত্রীদের থিসিস পেপার তৈরির যে গাইডলাইন দেন, তা অনেক সময় সময়োপযোগী-বাস্তবসম্মত নয়। কখনো কখনো অন্য কোনো থিসিস পেপারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এবং ইন্ডাস্ট্রির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণও নয়। ফলে এসব থিসিস পেপার মূলত দেশ ও জাতির কোনো কাজে আসে না। সহজ কথায় বলা যায়, এগুলো দেশের ও ছাত্রছাত্রীদের সময় এবং অর্থের অপচয় ঘটানো ছাড়া তেমন কোনো ভূমিকা রাখে না। থিসিস পেপার তৈরিতে যারা গাইড হিসেবে থাকবেন, তাদেরকে সবসময় ইন্ডাস্ট্রির সাথে আপডেট থাকতে হবে। তাদের মধ্যে কোনোপ্রকার দায়সারাভাব থাকা উচিত নয়।
সময়োপযোগী এ ধরনের গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজনের জন্য কমপিউটার জগৎ কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এবং প্রত্যাশা করি এ ধরনের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুভিত্তিক আরো গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করবে কমপিউটার জগৎ। আমি আশা করি, অন্য আইসিটিভিত্তিক মাগ্যাজিনগুলো অনুরূপভাবে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর গুরুত্ব অনুধাবন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং প্রয়োজনে জনমত সৃষ্টির জন্য কমপিউটার জগৎ-এর মতো গোলটেবিল বৈঠক করবে। ধন্যবাদ কমপিউটার জগৎ পরিবারের সবাইকে।
এম. জামান
কোনাপাড়া, ঢাকা
............................................................................................................
দেশী ও প্রবাসী বাংলাদেশী প্রোগ্রামারদের উৎসাহিত করা হোক
অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া প্রাদেশিক সরকারের আয়োজনে সৃজনশীল সফটওয়্যার তৈরির প্রতিযোগিতায় সেরা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসী ৬ বাংলাদেশী প্রোগ্রামার। ‘অ্যাপ মাই স্ট্যাট’ নামের এ প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য ছিল সরকারি তথ্যভান্ডার কাজে লাগিয়ে জনসাধারণের কর্মকান্ডের সহযোগী ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার সহায়ক সফটওয়্যার তৈরি করা। যাই হোক, প্রবাসী বাংলাদেশী প্রোগ্রামারদের কৃতিত্বে আমরা গর্বিত। আমরা এসব প্রবাসী বাংলাদেশীকে জানাই আমাদের আন্তরিক অভিনন্দন।
আমরা ইতোপূর্বে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশীদের বিভিন্ন গৌরবোজ্জ্বল কৃতিত্বের কথা। বর্তমানে ইন্টেল, মাইক্রোসফট, ডেল, আইবিএমসহ বিভিন্ন আইসিটিভিত্তিক কোম্পানিতে কর্মরত বাংলাদেশীরা বেশ সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন। আমরা চাই মাসিক কমপিউটার জগৎ অতীতের মতো আগামীতেও এ প্রবাসী বাংলাদেশী কৃতী সন্তানদের কৃতিত্বের কথা কমপিউটার জগৎ পত্রিকায় খবর আকারে প্রকাশ না করে রিপোর্ট বা প্রতিবেদন আকারে বিস্তারিত তুলে ধরবে। তাদের এ কৃতিত্বে অনুপ্রাণিত হয়ে এদেশে বসবাসরত বাংলাদেশীরা যেন অনুরূপ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখতে অনুপ্রাণিত হন বা চেষ্টা করেন। ধন্যবাদ কমপিউটার জগৎ পরিবারের সবাইকে।
আবুল কালাম
শেখঘাট, সিলেট
কজ ওয়েব