প্রযুক্তির ক্ষেত্রে পুরোধা নারী এক ব্যতিক্রমধর্মী লেখা
আমি কমপিউটার জগৎ-এর নিয়মিত পাঠক। এ পত্রিকার আলোচনাধর্মী প্রায় সব লেখাই আমি পড়ার চেষ্টা করি। মার্চ ২০১১ কমপিউটার জগৎ-এ প্রকাশিত লেখা ‘প্রযুক্তির ক্ষেত্রে পুরোধা নারী’ আমাকে অভিহিত করেছে এ কারণেই যে, এটি ছিল কমপিউটার জগৎ-এ প্রকাশিত বিভিন্ন ধরনের লেখাগুলোর মধ্য থেকে একটি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী লেখা। কেননা আমরা যারা দীর্ঘদিন ধরে কমপিউটার জগৎ পড়ছি তারা সবাই মোটামুটি বুঝতে পেড়েছে যে কমপিউটার জগৎ কখনই কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কৃত্বিত্বের ওপর লেখা প্রকাশ না করে বরং শিক্ষার্থী ও জাতীয় ইস্যুভিত্তিক লেখাই বেশি ছাপায়। কিন্তু এটি সে ধরনের বিষয় নয়।
প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নারীদের কত বড় অবদান রয়েছে তা আমার জানা ছিল না। আমার দৃঢ়বিশ্বাস, আমার মতো বেশিরভাগ পাঠকই এ ব্যাপারে তেমন কোনো তথ্যই রাখেন না। সত্যি কথা কী, আমি মনে করতাম বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের বিরাট ভূমিকা থাকলেও এই একটি ক্ষেত্রে অর্থাৎ তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে নারীদের তেমন কোনো ভূমিকাই নেই। শুধু তাই নয়, আমি মনে করতাম কমপিউটার সায়েন্সে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য নারীই নেই যাদেরকে মানুষ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। আমার এ ধারণা ভেঙ্গে দিল কমপিউটার জগৎ-এ প্রকাশিত এ লেখাটি।
কমপিউটার সায়েন্স ছাড়াও কমপিউটার ও কমপিউটার সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্ণধারও যে নারী ব্যক্তিত্ব থাকতে পারেন, যিনি কমপিউটারবিদ না হয়েও যে এ খাতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারেন তাও এ লেখার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে সুকৌশলে। আমরা আগামীতে এ ধরনের ব্যতিক্রমধর্মী লেখা আরো বেশি করে আশা করি কমপিউটার জগৎ-এর কাছ থেকে। সেই সাথে আশা করি, বাংলাদেশের নারী কমপিউটারবিদ ও এ সংশ্লিষ্ট সফল নারী ব্যবসায়ীদের ওপর ভিত্তি করে লেখা প্রকাশ করবে কমপিউটার জগৎ। কেননা যেদেশের সরকারপ্রধান নারী, প্রধান বিরোধীদলের নেতৃত্বও নারীর হাতে, সেদেশের নারী প্রযুক্তিবিদ ও নারী প্রযুক্তিপণ্য সফল ব্যবসায়ীদের কৃতিত্বের কথা এদেশের সাধারণ জনগণ জানবে না, তা তো হতে পারে না। সুতরাং আমার এ বিষয়টি কমপিউটার জগৎ কর্তৃপক্ষ সুবিবেচনা করবেন তা সবাই প্রত্যাশা করে।
পারুল আক্তার
পল্লবী, ঢাকা
............................................................................................................
আইবিএমের বিনিয়োগ এবং কিছু সংশয়
বেশ কিছু দিন ধরে জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে আইসিটিতে বিনিয়োগ করবে। তাছাড়া আইসিটিতে বাংলাদেশে বিনিয়োগে বিদেশীদের উৎসাহিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম গ্রহণের উদ্যোগের কথাও শোনা গিয়েছিল বেশ। কিন্তু সে ধরনের প্রত্যাশিত কোনো বিনিয়োগের দেখা পাওয়া যায়নি আজ পর্যন্ত, তেমনি কোনো খবরও শোনা যায়নি। এজন্য অবশ্য অনেকেই অভিযোগ করেন- বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ যেমন নেই, তেমনি নেই প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন ধরনের আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ এখানে রয়েছে অনেক কমিশনভোগী। তারপরও এতসব অভিযোগ সত্ত্বেও বাংলাদেশের আইসিটিতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিদেশীদের বিনিয়োগের কথা শোনা যায়, যা আমাদের কাছে আশার বাণী। গত মাসে এমনই এক খবর পেলাম কমপিউটার জগতের খবরের পাতায়। আইবিএম বাংলাদেশে প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করবে। আইবিএমের মতো একটি জগৎখ্যাত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে প্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগ করবে এটা নিঃসন্দেহে আশার কথা এবং খুশির খবর।
বাংলাদেশে আইবিএম বিনিয়োগ করবে বিভিন্ন সফটওয়্যার যাতে সহজে এ দেশের মানুষ ব্যবহার করতে পারে। এ জন্য তারা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে বিনামূল্যে সফটওয়্যারগুলো ব্যবহারে প্রশিক্ষণ দেবে। একই সাথে প্রশিক্ষণ শেষে সনদপত্রও দেবে আইবিএম। এটি মূলত বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আইবিএমের নিজেদের ব্যবসায় বাড়ানোর কৌশল। এখানে উল্লেখ্য, আইবিএস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাংকিং, টেলিযোগাযোগ, ইন্স্যুরেন্সসহ প্রায় ৩৫টি খাতে সফটওয়্যার সহায়তার কাজ করছে।
আমি আইসিটিতে বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ হোক তা মনেপ্রাণে চাই। তবে এক্ষেত্রে আমার সংশয়-এ ধরনের বিনিয়োগ বিশেষ করে আইবিএম যে ধরনের বিনিয়োগ করতে আগ্রহী তা আমাদের জন্য সুফল বয়ে আনবে না বরং কুফল বয়ে আনবে। কেননা এতে বাংলাদেশে যে সফটওয়্যার শিল্পটি গড়ে উঠছে তা ধ্বংসের মুখে পড়বে, হতে পারে আমার সংশয় অমূলক ও ভ্রান্ত। আমার ধারণা এখানে যদি অবাধে বিদেশী সফটওয়্যার আমদানি ও তার ব্যাপক ব্যবহার হতে থাকে তাহলে এদেশে যে সফটওয়্যার শিল্পটি বিকশিত হতে শুরু করছে তা হয়তো অঙ্কুরেই নষ্ট হয়ে যাবে।
সুতরাং আমার মতে এ ধরনের আত্মঘাতী বিনিয়োগে সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন সতর্ক থাকে তা আমাদের সবার প্রত্যাশা। কমপিউটার জগৎ-এর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
রায়হান রহমান
সবুজবাগ, পটুয়াখালী
............................................................................................................
বেসিস সফটএক্সপো ২০১১-এ আইটি জব ফেয়ার
বাংলাদেশের আইটি সেক্টরটি মূলত দুটি সংগঠনের হাত ধরেই ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। এই সংগঠন দুটি হলো বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি তথা বিসিএস এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস তথা বেসিস।
গত ৯-১০ বছর ধরে বেসিস বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিতভাবে সফটওয়্যার মেলা আয়োজন করে আসছে। বলা হয়ে থাকে বেসিস আয়োজিত এ মেলার মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের সফটওয়্যার শিল্পকে বিকশিত করা এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যকলাপ গ্রহণ করা। যদিও তার বাস্তব প্রতিফলন খুব একটা দেখা যায়নি মেলার আয়োজন ছাড়া। অবশ্য এ জন্য এ সংগঠনকে দায়ী করা ঠিক হবে না, কেননা সফটওয়্যার শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো আমাদের দেশে নেই বললেই চলে। তাছাড়া সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার অভাব রয়েছে যথেষ্ট। এমন অবস্থার মধ্য দিয়েই বেসিস ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে ঠিকই, তবে প্রত্যাশিত মাত্রায় নয়। বেসিস মেলা নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা উঠলেও আমি এর ইতিবাচক দিকটিকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। হোক না তা খুব কম। এ শিল্প খাতকে এগিয়ে নেয়ার জন্য যা দরকার তা আমাদের নেই এটাতো আমাদের সবাইকে মানতে হবে।
বেসিস আয়োজিত বেসিস সফটএক্সপো ২০১১-এর উল্লেখযোগ্য দিকগুলোর মধ্যে আমার দৃষ্টিতে অন্যতম আকর্ষণীয় একটি দিক ছিল আইটি জব ফেয়ার। এই আইটি জব ফেয়ারে ২০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান মেলায় চাকরি প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ ও সরাসরি মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থী বাছাইয়ের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ করে। যাদের মধ্যে অনেকেই পরে চাকরি পায়। যদিও সে সংখ্যা বেসিস প্রকাশ করেনি। করলেও আমার জানা নেই। তাই আমি বেসিসের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। বেসিস আগামীতে এ ধরনের উদ্যোগ আরো বর্ধিত আকারে করবে তা আমরা সবাই প্রত্যাশা করি। এতে আইসিটিতে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার আগ্রহ বাড়বে।
আজাদ
কজ ওয়েব