• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > লিনআক্সে ওয়ার্ড প্রসেসর ও ওপেন অফিস
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: প্রকৌশলী মর্তুজা আশীষ আহমেদ
মোট লেখা:২২
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১১ - জুলাই
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
লিনআক্স
তথ্যসূত্র:
লিনআক্স
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
লিনআক্সে ওয়ার্ড প্রসেসর ও ওপেন অফিস

কমপিউটারে সবচেয়ে বেশি করা হয় ওয়ার্ড প্রসেসিং। আগে ওয়ার্ড পারফেক্ট বা এ জাতীয় ওয়ার্ড প্রসেসর খুব বেশি ব্যবহার হতো। কালের পরিক্রমায় সে স্থান এখন দখল করেছে মাইক্রোসফট অফিস। লিনআক্সে মাইক্রোসফট অফিস ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু এর বিকল্প আছে। লিনআক্সে বেশ কিছু টেক্সট এডিটর আছে। বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউশনে এর নির্মাতারা তাদের ইচ্ছে ও সুবিধা অনুযায়ী এসব এডিটর সংযোজন করে থাকেন। তবে সাধারণত Vi এডিটর এবং Emacs টেক্সট এডিটর দুটি থাকেই। তবে এই এডিটর সাধারণ কাজে ব্যবহারের জন্য উপযোগী হলেও বড় কাজের জন্য ওপেন অফিসের বিকল্প তেমন একটা নেই।

Vi এডিটর

প্রায় সব লিনআক্সেই এই এডিটর দেখা যায়। কমান্ড লাইনে সরাসরি একে কাজে লাগানো যায়। এর পুরো নাম হচ্ছে ভিজ্যুয়াল এডিটর। অনেক ডিস্ট্রিবিউশনে এটি Vim নামে পরিচিত। Vim হচ্ছে Vi এডিটরের আধুনিক সংস্করণ। তবে বিষয় একই। গ্রাফিক্যালি এই এডিটর স্টার্ট মেনু থেকে চালাতে পারেন। ইচ্ছে করলে কমান্ড লাইন থেকেও একে চালানো যায়| যদি এক্স উইন্ডোজ কনফিগার করে না থাকেন তাহলেও এই এডিটর চালাতে পারবেন। কমান্ড লাইন থেকে এই এডিটর চালানোর কোড হচ্ছে মারস। মারস লিখে এন্টার চাপলে এই টেক্সট এডিটর চালু হবে। এডিটর চালু হলে কিছু গারবেজ ভ্যালু দেখতে পাবেন। প্রত্যেকটি ভ্যালু একেকটি অর্থ বহন করে। যেমন- ক্যারেক্টারটি ব্যবহার করা হয়েছে ফাঁকা লাইন বুঝানোর জন্য। কিছু লিখতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে i চেপে এডিটরকে সক্রিয় করে এডিটরে লেখা যাবে। লেখা হয়ে গেলে এস্কেপ (Esc) চেপে কমান্ড মোডে ফেরত আসতে পারবেন। সেভ করার জন্য কমান্ড লাইনে টাইপ করতে হবে :wq। এর মানে হচ্ছে রাইট অ্যান্ড কুইট। ফাইলের নাম দেয়ার জন্য টাইপ করতে হবে w x। এখানে x-এর স্থানে ফাইলের নাম লিখতে হবে। এডিটর থেকে বের হওয়ার জন্য লিখতে হবে :q!।



এই এডিটরের কিছু বিল্ট-ইন কমান্ড

i-এডিটর সক্রিয় করা এবং ইনসার্ট মোড চালু করা। x-কার্সর যেখানে থাকবে তার নিচের ক্যারেক্টার মুছে যাবে। dw-ওয়ার্ডের যেখানে কার্সর আছে সেখান থেকে ওয়ার্ডের শেষ পর্যন্ত মুছে যাবে। d$-কার্সর থেকে লাইনের শেষ পর্যন্ত মুছে যাবে। dd-পুরো লাইনটিই মুছে ফেলা যায় এই কমান্ডের মাধ্যমে। 2dd-একসাথে দুই লাইন মুছে দেয়া যায় এই কমান্ডের মাধ্যমে। u-কমান্ড আনডু করার কমান্ড। U-লাইন আনডু করার কমান্ড। Ctrl+R-wi Wy করার কমান্ড। Esc-এডিটর থেকে কমান্ড মোডে ফেরত যাওয়ার জন্য এই কমান্ড ব্যবহার করা যায়। l-কীবোর্ডের রাইট অ্যারো কী ব্যবহার করার জন্য বা কার্সরকে পরের ক্যারেক্টারে নিয়ে যাওয়ার জন্য। h-কীবোর্ডের লেফট অ্যারো ব্যবহার করার জন্য বা কার্সরকে আগের ক্যারেক্টারে নিয়ে যাওযার জন্য। j-কীবোর্ডের আপ অ্যারো কী ব্যবহার করার জন্য বা কার্সরকে এক লাইন উপরের ক্যারেক্টারে নিয়ে যাওয়ার জন্য। k-কীবোর্ডের ডাউন অ্যারো কী ব্যবহার করার জন্য বা কার্সরকে এক লাইন নিচের ক্যারেক্টারে নিয়ে যাওয়ার জন্য। w-পরের ওয়ার্ডে কার্সর নিয়ে যাওয়ার জন্য। b-আগের ওয়ার্ডে কার্সর নিয়ে যাওয়ার জন্য। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই এডিটরে বসেও কমান্ড লাইনের যেকোনো কমান্ড দিয়ে সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এজন্য :! লিখে কোনো স্পেস না দিয়ে কাঙ্ক্ষিত কমান্ড লিখে এন্টার দিলেই কমান্ডটি কাজ করবে।

এমাকস

এই টেক্সট এডিটর ও কমান্ড লাইনে খুব সহজেই কাজ করা যায়। লিনআক্সের খুব শক্তিশালী একটি টেক্সট এডিটর হচ্ছে এমাকস। অনেক ডিস্ট্রিবিউশনে এটি এক্স এমাকস বলেও পরিচিত। এমাকস খুব জনপ্রিয়, এর কারণ এর ব্যবহার খুব সহজ। উইন্ডোজের নোটপ্যাডের মতো খুব সহজেই একে ব্যবহার করা যায়। এই এডিটর এতটাই শক্তিশালী যে এর সাহায্যে ইন্টারনেট ব্রাউজিং থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রোগ্রাম চালানো সম্ভব। এখানেই শেষ নয়। এ এডিটর দিয়ে সিস্টেম কনফিগারেশনও অনায়াসে পরিবর্তন করা যায়। লিনআক্স ডিবাগিং করার সবচেয়ে জনপ্রিয় এডিটর হচ্ছে এ এমাকস। স্টার্ট মেনু থেকে সরাসরি এটিকে চালানো যায়। কমান্ড লাইন থেকে emacs ev xemacs লিখলেই এই এডিটর চালু করা যাবে। নোটপ্যাডের সাথে এর ব্যবহারের মিল থাকায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হলো না। এমাকস এডিটর বন্ধ করে কমান্ড লাইনে ফিরে যাবার কমান্ড হচ্ছে Ctrl+c Ctrl+x।



ওপেন অফিস

মাইক্রোসফট অফিসের খুব শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ওপেন অফিস এরই মধ্যে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। আর এটি উইন্ডোজ এবং লিনআক্স- দুটিতেই চলে। প্রত্যেকটি অপারেটিং সিস্টেমের অপরিহার্য সফটওয়্যার হচ্ছে অফিস স্যুট। অফিস স্যুট হচ্ছে কয়েকটি এডিটরের সমন্বয়, যেখানে কোনো ডকুমেন্ট লেখা বা সম্পাদনা করা, প্রেজেন্টেশন তৈরি করা, ছোট থেকে মাঝারি মানের ডাটাবেজ তৈরি এবং পরিচালনা করা প্রভৃতির এডিটর থাকে। এরকম খুব জনপ্রিয় একটি অফিস স্যুট সফটওয়্যার হচ্ছে মাইক্রোসফট অফিস। এই সফটওয়্যারের বিকল্প কোনো সফটওয়্যার নেই তা কিন্তু নয়। বিশ্বব্যাপী উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জনপ্রিয়তার সাথে সাথে মাইক্রোসফটের এই অফিস স্যুট জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বলা বাহুল্য, এখন অফিস স্যুট সফটওয়্যার ছাড়া কমপিউটিং চিন্তাই করা যায় না।

যারা একটু লিনআক্স চালানো শিখে গেছেন তারা জানেন, উইন্ডোজের মতো লিনআক্স ইনস্টল করার পর আলাদাভাবে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার ইনস্টল করার প্রয়োজন নেই। লিনআক্স ইনস্টল হওয়ার সময় অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারসহ ইনস্টল হয়। যেমন- গান শোনার সফটওয়্যার, ভিডিও, মিডিয়া রাইটিং (সিডি, ডিভিডি), টিভি দেখার সফটওয়্যার, অফিস স্যুট সফটওয়্যার প্রভৃতি লিনআক্সে আলাদাভাবে ইনস্টল করতে হয় না। লিনআক্সে যে অফিস স্যুট দেয়া হয় তা হচ্ছে সান মাইক্রোসিস্টেমসের তৈরি করা ওপেন অফিস। ওপেন অফিস ইচ্ছে করলে উইন্ডোজেও চালানো যায়। ইন্টারনেট থেকেও এর উইন্ডোজ ভার্সন ডাউনলোড করা যায়। ভিজিট করুন www.openoffice.org। লিনআক্সে অফিস স্যুট ব্যবহার করার সাথে উইন্ডোজের অফিস স্যুট ব্যবহার করার তেমন কোনো পার্থক্য নেই। শুধু ফাইল সেভ করার সময় ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে .doc বা .rtf, প্রেজেন্টেশন বা পাওয়ার পয়েন্ট অ্যাপ্লিকেশনের জন্য .ppt এবং ডাটাবেজ অ্যাপ্লিকেশনের জন্য সফল এক্সটেনশন সহকারে সেভ করা হয়। তাহলে ওই ফাইল উইন্ডোজে পড়তে বা চালাতে কোনো সমস্যা হবে না। ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে .rtf-এ সেভ করলে মেশিনও সেই ডকুমেন্ট ফাইল পড়তে এবং এডিট করতে পারবে। এখন থেকে আমরা ডকুমেন্ট, প্রেজেন্টেশন, ডাটাবেজ তৈরি এবং সম্পাদন লিনআক্সেই করতে পারব আশা করি।



কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : mortuzacsepm@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস