লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
গণিতের অলিগলি পর্ব-৮৫
কাপরেকার অপারেশন ও কার্নেল : প্রথম পর্ব
আমরা কমপিউটার জগৎ, এপ্রিল ২০১২ সংখ্যায় কাপরেকার নাম্বার ৬১৭৪ তত্ত্ব সম্পর্কে জেনেছিলাম। সেখানে আমরা দেখেছি কাপরেকার নাম্বার ৬১৭৪-এর একটি মজার অপরিবর্তনীয় রহস্য রয়েছে। কী সেই মজার রহস্য, তা জানতে আমাদের এমন যেকোনো চার অঙ্কের একটি সংখ্যা নিতে হবে, যার চার অঙ্কের সব অঙ্ক একই হতে পারবে না। সোজা কথায় চার অঙ্কের সংখ্যাটি কখনো হবে না ১১১১, ২২২২, ৩৩৩৩, ৪৪৪৪, ৫৫৫৫, ৬৬৬৬, ৭৭৭৭, ৮৮৮৮ বা ৯৯৯৯। এই নয়টি চার অঙ্কবিশিষ্ট সংখ্যা ছাড়া বাকি সব চার অঙ্কের সংখ্যা নেয়া যাবে। এই সংখ্যাটি নেয়ার পর এর ওপর চালাতে হবে কাপরেকার অপারেশন।
কাপরেকার অপারেশন বলতে আমরা বুঝব নেয়া সংখ্যাটির অঙ্কগুলো ওলট-পালট করে চার অঙ্কের বৃহত্তম ও ক্ষুদ্রতম সংখ্যা লিখব। এরপর বৃহত্তম সংখ্যাটি থেকে ক্ষুদ্রতম সংখ্যাটির বিয়োগফল বের করব। এবার দেখব বিয়োগফল কাপরেকার সংখ্যা ৬১৭৪ হয় কি না। যদি তা না হয়, তবে বিয়োগফল হিসেবে পাওয়া চার অঙ্কের সংখ্যাটি দিয়ে আবার চার অঙ্কের বৃহত্তম ও ক্ষুদ্রতম সংখ্যা নিয়ে এর বিয়োগফল বের করব। এই বিয়োগফলও যদি ৬১৭৪ না হয়, তবে সর্বশেষ পাওয়া বিয়োগফল নিয়ে চার অঙ্কের ক্ষুদ্রতম ও বৃহত্তম সংখ্যা নিয়ে এই বিয়োগ প্রক্রিয়া বারবার চালিয়ে যেতে হবে। মজার ব্যাপার হলো, এই প্রক্রিয়া অব্যাহতভাবে চালিয়ে গেলে এক সময় আমরা যে বিয়োগফল পাব, তা হবে ৬১৭৪। এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত বলতে পারি। আর এটাই হচ্ছে কাপরেকার অপারেশন কিংবা কাপরেকার সংখ্যার একটি অবাক করা মজা।
চলুন একটি চার অঙ্কের সংখ্যা নিয়ে সংখ্যাটির ওপর কাপরেকার অপারেশন চালিয়ে দেখা যাক। আবারো মনে করিয়ে দিই, চার অঙ্কের সব অঙ্ক যেনো কখনো একই না হয়। ধরা যাক আমাদের নেয়া সংখ্যাটি ৫৬০২। এ সংখ্যার অঙ্কগুলো দিয়ে চার অঙ্কের বৃহত্তম ও ক্ষুদ্রতম সংখ্যা হয় যথাক্রমে ৬৫২০ এবং ০২৫৬। সংখ্যা দুটির বিয়োগ ৬৫২০-০২৫৬ = ৬২৬৪। লক্ষণীয়, এখানে বিয়োগফলটি কাপরেকার সংখ্যা ৬১৭৪ নয়। অতএব পাওয়া বিয়োগফল ৬২৬৪ নিয়ে চার অঙ্কের বৃহত্তম ও ক্ষুদ্রতম সংখ্যা গঠন করে আবার এগুলোর বিয়োগফল বের করতে হবে। যতক্ষণ না বিয়োগফল দাঁড়াবে ৬১৭৪। উপরে পাওয়া প্রথম বিয়োগফল ৬২৬৪ নিয়ে কাপরেকার অপারেশন বারবার চালালে কাঙিক্ষত বিয়োগফল ৬১৭৪ পেতে ধাপগুলো দাঁড়াবে এমন :
৬২৬৪ : ৬৬৪২ - ২৪৬৬ = ৪১৭৬
৪১৭৬ : ৭৬৪১ - ১৪৬৭ = ৬১৭৪
৬১৭৪ : ৭৬৪১ - ১৪৬৭ = ৬১৭৪
দেখা যাক নতুন এমনি আরেকটি চার অঙ্কের সংখ্যা নিয়ে কাপরেকার অপারেশন চালালে কী দাঁড়ায়? ধরি, এবারের নেয়া চার অঙ্কের সংখ্যাটি ০০৫২। এ সংখ্যাটি থেকে চার অঙ্কের বৃহত্তম সংখ্যা ৫২০০ এবং ক্ষুদ্রতম সংখ্যা ০০২৫ নিলে অপারেশনের ধাপগুলো দাঁড়াবে এরূপ :
০০৫২ : ৫২০০ - ০০২৫ = ৫১৭৫
৫১৭৫ : ৭৫৫১ - ১৫৫৭ = ৫৯৯৪
৫৯৯৪ : ৯৯৫৪ - ৪৫৯৯ = ৫৩৫৫
৫৩৫৫ : ৫৫৫৩ - ৩৫৫৫ = ১৯৯৮
১৯৯৮ : ৯৯৮১ - ১৮৯৯ = ৮০৮২
৮০৮২ : ৮৮২০ - ০২৮৮ = ৮৫৩২
৮৫৩২ : ৮৫৩২ - ২৩৫৮ = ৬১৭৪
৬১৭৪ : ৭৬৪১ - ১৪৬৭ = ৬১৭৪
এবারো দেখা গেল, কাপরেকার অপারেশনের সাতটি ধাপ পেরিয়ে আমরা পেলাম সেই মজার সংখ্যা ৬১৭৪।
এখানে বলে নেই, এই মজার অপারেশনটির কথা আমাদের জানান ভারতের দেবলালি’র গণিতবিদ ডি.আর. কাপরেকার। সেজন্য এই প্রক্রিয়াটির নাম দেয়া হয়েছে কাপরেকার অপারেশন। মজার সংখ্যা ৬১৭৪-কে বলা হচ্ছে কাপরেকার সংখ্যা। খুব বেশিদিনের আগের কথা নয়। ১৯৪৯ সালে এই গণিতবিদ চার অঙ্কের সংখ্যার এই মজার ব্যাপারটি আমাদের জানান। এই নাম্বার অপারেশন বা প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ। শুধু বিয়োগ করতে জানলেই সংখ্যার এই মজাটিতে যেকেউ অংশ নিতে পারেন। সহজেই বুঝতে পারবেন, এটি আসলে মজার এক রহস্যজগৎ। এখানে যে দুটি সংখ্যা নিয়ে কাপরেকার অপারেশন দেখানো হলো, এর বাইরে তৃতীয় কোনো চার অঙ্কের সংখ্যা নিয়ে অপারেশনটি নিজে নিজে চালিয়ে দেখুন, অন্যরকম মজা পাবেন। গণিতের প্রতি আগ্রহ বাড়বে। বড়রা পারলে এ ধরনের সংখ্যার মজাটা ছোটদের কাছে উপস্থাপন করুন। অঙ্কের প্রতি ভয় কাটবে।
চলুন না কাপরেকার অপারেশনের এই ধারণা তিন অঙ্কের সংখ্যার ওপর প্রয়োগ করলে কী দাঁড়ায়, তা দেখা যাক। ধরা যাক, আমরা তিন অঙ্কের সংখ্যাটি নিলাম ৫৩৭। এ সংখ্যাটির ওপর কাপরেকার অপারেশন চালালে ধাপগুলো দাঁড়াবে এমন :
৫৩৭ : ৭৫৩ - ৩৫৭ = ৩৯৬
৩৯৬ : ৯৬৩ - ৩৬৯ = ৫৯৪
৫৯৪ : ৯৫৪ - ৪৫৯ = ৪৯৫
৪৯৫ : ৯৫৪ - ৪৫৯ = ৪৯৫
এক্ষেত্রে সর্বশেষ বিয়োগফল ৪৯৫-এ পৌঁছলে এরপর একই অপারেশন বারবার আসে। যেমনটি এর আগে আমরা দেখেছি চার অঙ্কের সংখ্যার বেলায় সর্বশেষ বিয়োগফল ৬১৭৪-এ পৌঁছলে এরপর একই অপারেশন বারবার আসে।
আরেকটি তিন অঙ্কের সংখ্যা নিই। ধরি, সংখ্যাটি ০৩২। তাহলে দেখা যাক এক্ষেত্রে কী দাঁড়ায়?
০৩২ : ৩২০ - ০৩২ = ২৮৮
২৮৮ : ৮৮২ - ২৮৮ = ৫৯৪
৫৯৪ : ৯৫৪ - ৪৫৯ = ৪৯৫
৪৯৫ : ৯৫৪ - ৪৫৯ = ৪৯৫
আবার সর্বশেষ বিয়োগ ৫৯৪ এলে পরবর্তী ধাপগুলো একই হয়। তাহলে তিন অঙ্কের সংখ্যার বেলায় মজার সংখ্যা হচ্ছে ৪৯৫।
এখানে আমরা আরেকটি বিষয় জেনে নেই। কাপরেকার অপারেশনে চার অঙ্কের সংখ্যার বেলায় ৬১৭৪ সংখ্যাটি এবং তিন অঙ্কের সংখ্যার বেলায় ৪৯৫ সংখ্যাটিকে বলা হয় কার্নেল। শাব্দিক অর্থে Kernel হচ্ছে কোনো কিছুর কেন্দ্রস্থল বা মর্মস্থল। অন্য কথায় শাঁস।
জাপানের ওসাকা ইউনিভার্সিটি অব ইকোনমিকসের অধ্যাপক Yutaka Nishigama কিওটো বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত নিয়ে পড়াশোনার পর জাপানে আইবিএমে কাজ করেন ১৪ বছর। প্রতিদিনের জীবনের সাথে সংশ্লিষ্ট গণিত বিষয়ে তার বেশ আগ্রহ। এ বিষয়ে তিনি সাতটি বই লিখেছেন। তার সর্বশেষ বইয়ের নাম ‘দ্য মিস্টেরি অব ফাইভ ইন নেচার’।
তিনি অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে অনুসন্ধান করে দেখেছেন কেনো অনেক ফুলের পাঁচটি পাপড়ি থাকে। তিনি তার বন্ধুর কাছ থেকে ১৯৭৫ সালে এই মজার সংখ্যা ৬১৭৪ সম্পর্কে জানতে পারেন। বিষয়টি জেনে তিনি খুবই মজা পান। তিনি ভাবলেন কাপরেকার অপারেশনের মাধ্যমে এক সময় ৬১৭৪ সংখ্যায় পৌঁছার বিষয়টি সহজ, কিন্তু কেনো এমনটি ঘটে এর কারণ বুঝতে পারছিলেন না। তখন তিনি একটি কমপিউটার ব্যবহার করে পরীক্ষা করে দেখেন, সব চার অঙ্কের সংখ্যা কাপরেকার অপারেশনের ফলে সীমিতসংখ্যক ধাপ পেরিয়ে ৬১৭৪ কার্নেলে পৌঁছায় কি না। ভিজ্যুয়াল বেসিক প্রোগ্রাম ব্যবহার করে তিনি ১০০০ থেকে ৯৯৯৯ পর্যন্ত ৪৯৯১টি সংখ্যা (যেগুলোর কোনোটিরই সব অঙ্ক একই নয়) পরীক্ষা করে দেখেন প্রতিটি সংখ্যাই কাপরেকার প্রক্রিয়ার ধাপগুলোর শেষে ৬১৭৪-এ পৌঁছে এবং এগুলো ৬১৭৪-এ পৌঁছতে সর্বোচ্চ সাতটি ধাপ প্রয়োজন হয়। তাহলে আমরা ধরে নিতে পারি, চার অঙ্কের কোনো সংখ্যা নিয়ে কাপরেকার অপারেশন চালিয়ে যদি সাত ধাপের মধ্যে ৬১৭৪-এ পৌঁছতে না পারি, তবে কোথাও বিয়োগ কিংবা বৃহত্তম সংখ্যা ও ক্ষুদ্রতম সংখ্যা গঠনে ভুল হচ্ছে। অতএব প্রক্রিয়াটি নতুন করে শুরু করতে হবে। প্রক্রিয়ায় কোনো ভুল না থাকলে নিশ্চয়ই সর্বোচ্চ সাত ধাপেই ৬১৭৪-এ পৌঁছতে পারব।
নিচের চিত্র লক্ষ করুন্ উলিস্নখিত ৩০টি সংখ্যা কিভাবে ৬১৭৪ সংখ্যাটিতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত পৌঁছে। সর্বশেষ লক্ষণীয় এর একটি সংখ্যার ক্ষেত্রেও কাপরেকার অপারেশন সাত ধাপের বেশি চালাতে হয়নি।
এবার আমরা আমাদের এ ভাবনাকে আরো সম্প্রসারিত করি দুই অঙ্কের সংখ্যা, পাঁচ অঙ্কের সংখ্যা, ছয় অঙ্কের সংখ্যা কিংবা আরো বেশি অঙ্কের সংখ্যার ক্ষেত্রে। দেখা যাক, ঘটনা এসব ক্ষেত্রে কী ঘটে। চার অঙ্কের সংখ্যা ও তিন অঙ্কের সংখ্যার ক্ষেত্রে কাপরেকার অপারেশন কী ফল শেষ পর্যন্ত দাঁড় করায় তা তো ইতোমধ্যেই আমরা জানলাম।
প্রথমে নিই একটি দুই অঙ্কের সংখ্যা। ধরা যাক সংখ্যাটি ২৮। তবে এক্ষেত্রে অপারেশনের ধাপগুলো হবে এমন :
২৮ : ৮২ - ২৮ = ৫৪
৫৪ : ৫৪ - ৪৫ = ০৯
০৯ : ৯০ - ০৯ = ৮১
৮১ : ৮১ - ১৮ = ৬৩
৬৩ : ৬৩ - ৩৬ = ২৭
২৭ : ৭২ - ২৭ = ৪৫
৪৫ : ৫৪ - ৪৫ = ০৯
আমরা যদি আরো সামনে যাই, তবে দেখা যাবে বিয়োগফলগুলো ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি সংখ্যার মধ্যেই ঘুরপাক খেতে থাকবে। এক্ষেত্রে ০৯ ৮১ ৬৩ ২৭ ৪৫ ০৯ ইত্যাদি সংখ্যা ঘুরেফিরে এসেছে। এক্ষেত্রে চার অঙ্কের কিংবা তিন অঙ্কের সংখ্যার মতো একটি মাত্র কার্নেল (৬১৭৪ কিংবা ৪৯৫) পাইনি। বরং এক্ষেত্রে আমরা পাই ০৯, ৮১, ৬, ২৭ ও ৪৫ এই পাঁচটি সংখ্যার একটি লুপ। অর্থাৎ বিয়োগফলগুলো ধারাবাহিকভাবে এ সংখ্যাগুলোর মধ্যে ঘুরতে থাকে। সংখ্যাটি নিয়ে অপারেশন শুরু করে আমরা তাই দেখলাম। নিচে দুই অঙ্কের অন্য আরেকটি সংখ্যা নিয়ে এই অপারেশন দেখুন কী ঘটনা ঘটে। ৫৭ ও ৩২ সংখ্যাটি দুটি নিয়ে অপারেশন চালালে বিয়োগফলগুলো হবে :
৫৭ : ১৮ ৬৩ ২৭ ৪৫ ০৯ ৮১ ৬৩
৩২ : ০৯ ৮১ ৬৩ ২৭ ৪৫ ০৯
তাহলে দুই অঙ্কের সংখ্যার ক্ষেত্রে কোনো একক কার্নেল পাওয়া যায় না। আরেকটি মজার বিষয় হলো দুই অঙ্কের ক্ষেত্রে বৃহত্তম ও ক্ষুদ্রতম সংখ্যার প্রতিটি বিয়োগফলের অঙ্ক দুটির যোগফল সবসময় ৯ হয়।
এবার প্রশ্ন, পাঁচ অঙ্কের ক্ষেত্রে এই অপারেশন কী ফল বয়ে আনে? সেখানে কী ৬১৭৪ কিংবা ৪৯৫-এর মতো কোনো অনন্য একক কার্নেল পাওয়া যাবে? পাঁচ অঙ্কের ক্ষেত্রে কমপিউটার ব্যবহার করে হিসাব-নিকাশ করে দেখা গেছে, এক্ষেত্রে কাপরেকার অপারেশন চালিয়ে কোনো কার্নেল পাওয়া যায় না। বরং এর পরিবর্তে প্রতিটি পাঁচ অঙ্কের বেলায় ধাপগুলো নিচের তিনটি লুপের যেকোনো একটিতে পড়ে। অর্থাৎ বিয়োগফল নিমণরূপে বারবার ঘুরেফিরে আসে।
প্রথম লুপ : ৭১৯৭৩ ৮৩৯৫২ ৭৪৯৪৩ ৬২৯৬৪ ৭১৯৭৩
দ্বিতীয় লুপ : ৭৫৯৩৩ ৬৩৯৫৪ ৬১৯৭৪ ৮২৯৬২ ৭৫৯৩৩
তৃতীয় লুপ : ৫৯৯৯৪ ৯৩৯৫৫ ৫৯৯৯৪
Malcolm Lines নামের জনৈক গণিতামুদে ব্যক্তিত্ব তার এক লেখায় উল্লেখ করেছেন, ছয় অঙ্কের সংখ্যা কিংবা তার চেয়েও বেশি অঙ্কের সংখ্যা নিয়ে কাপরেকার অপারেশন চালিয়ে কী ঘটে, তা পরীক্ষা করে দেখতে হলে প্রচুর সময়ের প্রয়োজন হবে। বিষয়টি করতে গেলে ধৈর্যহারা হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আপনাকে সে পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার আগেই দুই অঙ্কের সংখ্যা থেকে দশ অঙ্কের সংখ্যার ক্ষেত্রে কোনটির কার্নেল কী, তা নিচের ছকের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে চাই।
কয় অঙ্কের সংখ্যা....................কার্নেল
দুই অঙ্কের.............................কার্নেল নেই
তিন অঙ্কের............................৪৯৫
চার অঙ্কের............................৬১৭৪
পাঁচ অঙ্কের............................কার্নেল নেই
ছয় অঙ্কের.............................৫৪৯৯৪৫, ৬৩১৭৬৪
সাত অঙ্কের............................কার্নেল নেই
আট অঙ্কের.............................৬৩৩১৭৬৬৪, ৯৭৫০৮৪২১
নয় অঙ্কের..............................৫৫৪৯৯৯৪৪৫, ৮৬৪১৯৭৫৩২
দশ অঙ্কের..............................৬৩৩৩১৭৬৬৬৪, ৯৭৫৩০৮৬৪২১, ৯৯৭৫০৮৪২০১
তাহলে আমরা দেখলাম চার অঙ্কের সংখ্যার ক্ষেত্রে কার্নেল ৬১৭৪ এবং তিন অঙ্কের সংখ্যার কার্নেল ৪৯৫। দুই অঙ্কের, পাঁচ অঙ্কের ও সাত অঙ্কের সংখ্যার ক্ষেত্রে কোনো কার্নেল নেই। আবার আট অঙ্কের ও নয় অঙ্কের সংখ্যার বেলায় কার্নেল রয়েছে দুটি করে এবং দশ অঙ্কের সংখ্যার বেলায় কার্নেল তিনটি; কিন্তু এখানে জানলাম না কেনো এই মজার ব্যাপারটি ঘটে, তার কোনো ব্যাখ্যা। এর কী কোনো গভীর গানিতিক ব্যাখ্যা আছে? না এমনটি দৈবাৎ কোনো ঘটনার মতো কোনো অনুগামী ঘটনা? এ প্রশ্নের জবাব সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা বা দেয়া কঠিন। এর জবাব যদি কোনো থাকে, তবে দেবেন গণিত গবেষকেরা। তবে কাপরেকার অপারেশন, কাপরেকার সংখ্যা ৬১৭৪ এবং বিভিন্ন অঙ্কের সংখ্যার কার্নেল যে একটি মজার বিষয় তা আমরা সাধারণ মানুষও বুঝতে পারি। এটি মজার গণিতের এক সুন্দর ক্ষেত্র। যেকেউ চাইলে এ লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে সেই মজাটুকু পাওয়া মোটেও কঠিন নয়।
কজ
গণিতদাদু