• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ব্যাটারি চার্জিংয়ে কিছু বিস্ময়!
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: তুহিন মাহমুদ
মোট লেখা:২৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৩ - জুলাই
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ফিচার
তথ্যসূত্র:
দশদিগন্ত
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ব্যাটারি চার্জিংয়ে কিছু বিস্ময়!

দৈনন্দিন জীবন বিদ্যুৎ ছাড়া যেমন অসম্ভব হয়ে পড়েছে, ঠিক তেমনি প্রায় সব ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্র চালাতে ব্যাটারি ও চার্জারের বিকল্প নেই। আর চার্জারের মাধ্যমে সংযুক্ত করে ব্যাটারি শক্তিশালী করাই হলো চার্জিং বা চার্জ দেয়া। তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় চার্জিংয়ে এসেছে নানা বিস্ময়।

শরীরের উত্তাপেই স্মার্টফোন চার্জ

লোডশেডিংয়ের এই চরম মুহূর্তে ফোন চার্জ করা নিয়ে আমাদের পড়তে হয় নানা ঝামেলায়। আর ফোনটি যদি হয় স্মার্টফোন তাহলে তো ভোগান্তির শেষ নেই। এই ভোগান্তি কমাতে মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ভোডাফোন নিয়ে এলো এক বিশেষ ধরনের প্রযুক্তি। এদের এই প্রযুক্তিটি হলো শরীরের উত্তাপে স্মার্টফোনটি চার্জ করা! ভোডাফোন এবারের সামার ফেস্টিভালে প্রদর্শন করে এদের এই বিশেষ চার্জার। এরা মূলত দুটো পণ্য অবমুক্ত করে। একটি হচ্ছে সিলপিং ব্যাগ এবং অপরটি পকেট পাওয়ার। এগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ ধরনের ফেব্রিক, যা শরীরের উত্তাপকে ধারণ করতে সক্ষম। সিলপিং ব্যাগ পরা অবস্থায় অথবা পরে ঘুমানোর সময় এটি আপনার শরীরের উত্তাপ কাজে লাগিয়ে ব্যাগটির সাথে সংযুক্ত মোবাইল ফোনটি চার্জ করবে। অন্যদিকে এক বিশেষ ধরনের শর্টস পরে আপনি হাঁটাচলা করলে অথবা দৌড়ানোর সময় শরীরের তাপ কাজে লাগিয়ে পকেটে থাকা মোবাইল ফোন চার্জ করবে।

রাস্তায় চললে গাড়ি চার্জ

বৈদ্যুতিক যানবাহনে তার ছাড়াই চার্জ দেয়ার সাম্প্রতিক কিছু আবিষ্কার সবাইকে চমকে দিয়েছে। একটি সুইডিশ প্রজেক্টে পরীক্ষা করা হয়েছে হাইওয়ে দিয়ে চলার সময় গাড়ি চার্জ হওয়ার ক্ষমতা।

এই মেথডটি ডেভেলপ করেছে ভলভো গ্রম্নপ এবং সুইডিশ পাওয়ার কোম্পানি অ্যালস্টম, যাদের সাথে সহযোগিতা করেছে সুইডিশ এনার্জি এজেন্সি। এই প্রজেক্টে হাইওয়েতে রাস্তার ওপর দুটো পাওয়ার লাইন বসানো হয়েছে। এই লাইন দুটোর ওপর দিয়ে চলার সময় গাড়ি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হবে। রাস্তায় এ ধরনের ইলেকট্রিক লাইনের ওপর গাড়ি চলার মানে হচ্ছে গাড়িটি কোনো ধরনের ব্যাটারির সহায়তা ছাড়াই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে।

পানিতে চার্জ হবে স্মার্টফোন

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, পানি দিয়েই স্মার্টফোন চার্জ হবে। সম্প্রতি এ ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় এসেছেন সুইডেনের গবেষকেরা। প্রায় ১৫ বছরের গবেষণায় বিদ্যুৎহীন, অবয়বে পাতলা ও শক্তিশালী চার্জার তৈরির এ ঘোষণা দিয়েছে পাওয়ারট্রেক নামে প্রতিষ্ঠান। সুইডেনের কেটিএইচ রয়েল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকেরা এ চার্জারের সফল পরীক্ষা করেছেন। এটি স্মার্টফোনের ব্যাটারি ৩ ওয়াট পর্যন্ত চার্জ করতে সক্ষম। গবেষকেরা বলেন, আইফোনের ২৫ ভাগ চার্জ থাকলে এ চার্জার শতভাগ চার্জ দিতে পারবে। যেকোনো ধরনের পানি দিয়েই চার্জ করা সম্ভব। এমনকি নোনা কিংবা ঝরনার পানি দিয়েই এ চার্জ গ্রহণ করা যাবে। মাইক্রো এবং স্মল প্রোটন এক্সচেঞ্জ মেমব্রেন ফুয়েল সেল প্রযুক্তিতে পানি থেকে একটি বিশেষ বক্সে চার্জ তৈরি করে এ স্বয়ংক্রিয় ব্যাটারি। এটি ইউএসবি পয়েন্টের মাধ্যমে বক্স থেকে স্মার্টফোনে চার্জ সরবরাহ করে। পানি থেকে অক্সিজেনকে কেমিক্যাল এনার্জি তৈরি করে ব্যাটারিতে শক্তি সঞ্চালন করে।

২০ সেকেন্ডেই চার্জ হবে মোবাইল

আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা নয়, সুপারক্যাপাসিটর থাকলে ফোন চার্জ দিতে সময় লাগবে মাত্র ২০ সেকেন্ড। এমনই এক প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার এষা। এখনও হাই স্কুলের গ-ী পেরোননি। বয়স মাত্র ১৮। তার সুপারক্যাপাসিটরের বদৌলতে ইন্টেল ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পুরস্কারও তার হাতে। এই সুপারক্যাপাসিটরের অসীম সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে এষার সাথে যোগাযোগ রাখছে গুগলও। যেসব ইলেকট্রনিক জিনিসের ব্যাটারি চার্জ দেয়া যায়, এ প্রযুক্তি ব্যবহার করলে তা হয়ে যাবে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই। চার্জ বেশিক্ষণ ধরেও রাখতে পারবে নতুন এই প্রযুক্তি। সাধারণ ব্যাটারিতে যতবার চার্জ দেয়া যায়, ছোট সুপারক্যাপাসিটরে তার চেয়ে বেশিবার। ছোট একটা চিপের মধ্যেই কীভাবে অসাধ্য সাধন করা যায়, ন্যানোকেমিস্ট্রিতে পড়তে গিয়ে এ ইচ্ছাই তৈরি হয়েছিল ওই অষ্টাদশীর। এখনও শুধু এলইডিতেই সুপারক্যাপাসিটর ব্যবহার করেছেন এষা। শিগগির ফোন থেকে গাড়ি, সব কিছুতেই এ নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে বলে আশা তার।

ক্ষুদে বার্তাতেই চার্জ হবে মুঠোফোন!

আপনার স্মার্টফোনের ব্যাটারি শেষ! তাহলে একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠান। মুহূর্তের মধ্যেই চার্জ হয়ে যাবে আপনার ফোন! ইনোভেটিভ বা উদ্ভাবনীমূলক প্রতিষ্ঠান বাফেলো গ্রিড সম্প্রতি এমনই এক সোলার-পাওয়ার বা সৌরশক্তির মুঠোফোন চার্জিং স্টেশন আবিষ্কার করেছে, যার ফলে ক্ষুদে বার্তা পাওয়ার পরপরই চার্জ হয়ে যাবে মুঠোফোন। এ জন্য কোন তারের সংযোগেরও প্রয়োজন হবে না।
ইতোমধ্যেই উগান্ডায় নতুন এই চার্জিং প্রযুক্তির সফল প্রয়োগ করা হয়েছে। সম্পূর্ণ পদ্ধতির এই প্রযুক্তিটিকে বলা হচ্ছে ম্যাক্সিমাম পাওয়ার পয়েন্ট ট্র্যাকিং (এমপিপিটি)। এ পদ্ধতিতে মুঠোফোনের ব্যাটারিটি চার্জ হবে সৌরশক্তিতে। আর এতে ৬০ ওয়াটের শক্তিতে ব্যাটারি চার্জ হবে। মুঠোফোনে একটি বার্তা পাঠানোর পরপরই এর চার্জিং ইউনিটে নির্দিষ্ট মুঠোফোনের জন্য একটি এলইডি ব্যাটারির সকেটটির ওপর চালু হয়ে যাবে। উগান্ডাতে প্রতিটি ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে দেড় ঘণ্টার মধ্যেই পূর্ণ চার্জ করে নেয়া যাচ্ছে মুঠোফোন

ফিডব্যাক : bmtuhin@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস