লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
ঈদ কেনাকাটায় প্রযুক্তির ছোঁয়া
মুসলমানদের জন্য ঈদ হলো সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। ঈদের আনন্দকে আরও রঙিন করে দেয় নতুন পোশাকসহ ঈদের নতুন উপকরণগুলো। ঈদের এ সময় পোশাকসহ নানা জিনিস কেনার জন্য ঝক্কি-ঝামেলার কিন্তু শেষ নেই। বিভিন্ন বাজার খুঁজে নিজের পোশাকটি পছন্দ করার সময় যানজটসহ নানা সমস্যা আপনার নিত্যসঙ্গী। ঈদের কেনাকাটা নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখা দেয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ দুঃস্বপ্ন থেকে মুক্তি দিয়ে ঈদের কেনাকাটায় এখন নতুন মাত্রা এনেছে ই-কমার্স সাইট। বর্তমানে বাংলাদেশেও চালু হয়েছে অনলাইন দোকান বা কেনাকাটার ওয়েবসাইট। হরেক রকমের পণ্যে সাজানো এ সাইটগুলোতে এখন ঈদের হাওয়া লাগায় অনলাইনেই পাবেন প্রয়োজনীয় সবকিছু।
ঈদ কেনাকাটায় ই-কমার্স সাইটগুলোর পরিচয় করিয়ে দেয়ার আগে জেনে নেয়া দরকার ই-কমার্স সম্পর্কে?
ই-কমার্স কী
ইলেকট্রনিক কমার্সকে সংক্ষেপে ই-কমার্স বলা হয়। এটি একটি আধুনিক ব্যবসায় পদ্ধতি। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এ ব্যবসায় ও লেনদেন পরিচালিত হয়ে থাকে। বস্ত্তত ইলেকট্রনিক কমার্স হচ্ছে ডিজিটাল ডাটা প্রসেসিং এবং ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় সংক্রান্ত আদান-প্রদান। সাধারণত এ কাজটি সম্পাদন করা হয় সবার জন্য উন্মুক্ত একটি নেটওয়ার্ক তথা ইন্টারনেটের মাধ্যমে। তাই বলা যায়, ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় সংক্রান্ত আদান-প্রদান বা লেনদেন করার প্রক্রিয়াই হলো ই-কমার্স।
ই-কমার্স প্রক্রিয়াটি যেভাবে কাজ করে
ই-কমার্স সিস্টেমে একটি ওয়েবসাইট থাকে। উক্ত সাইটকে বলা হয় ই-কমার্স সাইট। ই-কমার্স সাইটে বিভিন্ন ধরনের পণ্য এবং এদের দামসহ অন্যান্য বিবরণ দেয়া থাকে। ক্রেতা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কোনো পণ্যের অর্ডার দেন। অর্ডার গ্রহণ করার জন্য ওয়েবসাইটে শপিং কার্টের ব্যবস্থা থাকে। তাতে ক্লিক করলে ক্রেতার কাছে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে বলা হয়। ক্রেতা ক্রেডিট কার্ডের প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সরবরাহ করে ওই পরিমাণ অর্থ দেন। আর্থিক লেনদেনের এ বিষয়টি অত্যন্ত সুরক্ষিত উপায়ে সম্পন্ন হয়ে থাকে। অর্থপ্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ার পর অর্ডার ফরমটির যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। এ সংক্রান্ত তথ্য একই সাথে ই-মেইল আকারে ক্রেতা, বিক্রেতা এবং ওয়্যারহাউসে পাঠানো হয়। প্রয়োজনীয় অর্ডার ফরমটি পৌঁছালে ক্রেতাকে ওই পণ্য সরবরাহের উদ্দেশ্যে পণ্য পরিবহন সংস্থায় পৌঁছে দেয়া হয়। নির্দিষ্ট ক্যারিয়ার ওই শিপমেন্টকে নির্দিষ্ট সময়ে ক্রেতার বাড়িতে পৌঁছে দেয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিববহনের জন্য কোনো ফি নেয়া হয় না। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিবহনের জন্য অতিরিক্ত ফি নেয়া হয়। এটি নির্ভর করে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর।
ঈদের এ সময় অনলাইন কেনাকাটা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সব শ্রেণীর মানুষের কাছে। খুব সহজে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সারা যাবে অনলাইনে, যদি সাথে থাকে কমপিউটার আর ইন্টারনেট সংযোগ। একটা সময় ছিল যখন শুধু আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটা করা যেত ইন্টারনেটে। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক অনলাইনে কেনাকাটার অনুমতি দেয়ায় বিভিন্ন ব্যাংক অনলাইনের মাধ্যমে কেনাকাটার সুবিধা দিচ্ছে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এ সুবিধা চালু করে। পরে এ সুবিধা দেয় ব্র্যাক ব্যাংকসহ আরও কিছু ব্যাংক। এ সেবা ভোক্তাদের যেকোনো ধরনের পণ্য কেনার ক্ষেত্রে যেমন সময় ও অর্থ বাঁচায়, তেমনি ঝক্কি-ঝামেলাও কমাবে বলে আশা করা যায়।
অনলাইন বাজারে ঈদ কেনাকাটা
অনলাইনে কেনাকাটার সেবা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ও আমার দেশ ই-শপ। শুরুর পর থেকে আশাব্যঞ্জক সাড়া পেয়েছে সাইট দুটি। একই সাথে দেশে ও বিদেশে যাত্রা শুরু করার প্রথম দিনই বিদেশের চেয়ে দেশে বেশি অর্ডার পেয়েছে সাইট দুটি। ঈদের সময় এ সাইটগুলোর অনলাইনে বিক্রি আরও বেড়েছে।
এখনই ডটকম
ঈদের সময় অনলাইনে কেনাকাটার করা যায় এখনই ডটকমে (www.akhoni.com)। অনলাইনে বেচাকেনার এ সাইটটির মাধ্যমে ছবি দেখে অর্ডার করা যাবে। এক দিনেই পণ্য বাসায় পৌঁছে যাবে। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, শার্ট-প্যান্ট, ফতুয়া, পাঞ্জাবিসহ সব ধরনের ঈদ কেনাকাটা করার সুযোগ আছে। শোরুমের চেয়েও কম দামে পণ্য সরবরাহ করছে সাইটটি। এবার কিছু ওয়েবসাইট পূর্ণোদ্যমে কাজ শুরু করেছে বলে অনলাইন বেচাকেনাতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এখনই ডটকমের নিজস্ব কোনো পণ্য নেই। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য অনলাইনে বিক্রি করে থাকে।
আজকেরডিল ডটকম
আজকেরডিল ডটকমের মাধ্যমে ঈদের পোশাকটি কিনতে পারবেন। অনলাইন জব পোর্টাল বিডিজবস ডটকমের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বাজারে আসে আজকেরডিল ডটকম (www.ajkerdeal.com)। ঈদের সময় এ অনলাইন কেনাকাটার সাইটটি আপনার পছন্দের পণ্য পৌঁছে দেবে। সাইটটিতে নিজস্ব কোনো পণ্য বিক্রি হয় না। নির্দিষ্ট কিছু ব্র্যান্ডের পণ্য বাজারমূল্যের চেয়েও কম দামে ক্রেতাদের সরবরাহ করে থাকে।
ঢাকাশাড়ি ডটকম
আমাদের দেশে ঈদে মেয়েদের পছন্দের প্রথম তালিকাতেই থাকে শাড়ি। সেই শাড়ির ঈদের বাজার নিয়েই এসেছে ঢাকাশাড়ি ডটকম (www.dhakasharee.com)। মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের পোশাকের সমন্বয়ে এ অনলাইন শপিং সাইটটি গড়ে উঠেছে। মেয়েদের পোশাকের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া। এছাড়া রয়েছে জুয়েলারি, কসমেটিক্স, কেক, ফুল। এরা বিভিন্ন পণ্যে ডিসকাউন্ট দিয়ে থাকে। সারাদেশে এরা হোম ডেলিভারি সার্ভিস দিয়ে থাকে। ঢাকা সিটির মধ্যে কোনো ডেলিভারি চার্জ লাগে না।
বিডিহাট ডটকম
বাংলাদেশের অন্যান্য অনলাইন শপিং সাইটের চেয়ে বিডিহাট ডটকম (www.bdhaat. com) সাইটে প্রাপ্ত পণ্যের সংখ্যা অনেক বেশি। গিফট, অ্যাপারেল, বিউটি, মিডিয়া, এডুকেশন, ইলেকট্রনিক্স, ফুড, হেলথ, স্পোর্টস, ডেকোরেশন, ট্রাভেল প্রভৃতি প্রধান ক্যাটাগরির অধীনে বেশ কিছু সাব-ক্যাটাগরিতে ভাগ করে পণ্যগুলো সাজানো হয়েছে। এ সাইট থেকে কেনা পণ্য ঢাকার মধ্যে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফ্রি হোম ডেলিভারি দেয়া হয়।
বাংলাদেশব্র্যান্ডস ডটকম
ঈদের এ সময় ক্রেতাদের কাছে দেশীয় পোশাকের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। ঈদ উপলক্ষে দেশীয় ব্র্যান্ডের পোশাকগুলো অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। ইন্টারনেটে বাংলাদেশ ব্র্যান্ডস ডটকম (www.bangladeshbrands. com) ঠিকানার ওয়েবসাইটে যেতে হবে। সাইটটিতে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের পণ্যই পাওয়া যাচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে একেবারে নতুন করে সাজানো হয়েছে সাইটটির হোমপেজ। আপলোড করা হয়েছে নতুন নতুন পণ্যের ছবি। সাইটটিতে অহং, এক্সটেসি, ল্যাভেন্ডার, বিবিয়ানা, স্মার্টেক্স, রং, প্রবর্তনা এবং মেনজ ক্লাবসহ বেশ কিছু শীর্ষ ব্র্যান্ডের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। শোরুমের দামেই অনলাইনে সাইটটি থেকে কেনাকাটা করা যায়।
আমারদেশশপ ডটকম
ঈদের নতুন জামা-কাপড় ছাড়াও অনলাইনের মাধ্যমে মংলার ঘেরের চিংড়ি, তেলাপিয়া, কোরাল মাছ, পদ্মার ইলিশ, নরসিংদীর সবজি, সুন্দরবনের মধু, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়িও পাওয়া যাবে আমারদেশশপ ডটকমে (www.amardeshshop.com)। এখানে অর্ডার দিলে পণ্য কুরিয়ারে আপনার ঠিকানায় পৌঁছে দেবে। টাকা পরিশোধ করা যাবে ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে।
হাটবাজার ডটকম
ঈদ সামনে রেখে বিভিন্ন ছাড় ও উপহারের সুবিধা দিচ্ছে অনলাইন বাজার হাটবাজার ডটকম (www.hutbazar.com)। এতে আছে এ বাজারে বিভিন্ন দিবস অনুযায়ী আলাদাভাবে তৈরি পণ্যসামগ্রী। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ডের সাথে নিজস্ব চুক্তি রয়েছে এ সাইটের এবং সে অনুযায়ী পণ্য প্রদর্শন করে থাকে। প্রবাসীরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী পণ্য কিনে প্রিয়জনকে পাঠাতে পারবেন।
দেশিগ্রিটিংস ডটকম
অনলাইন বাজার দেশিগ্রিটিংস ডটকমে (www.deshigreetings.com) পাওয়া যাচ্ছে প্রয়োজনীয় সবকিছুই। এ সাইটটিতে রয়েছে মেয়েদের পোশাক, ছেলেদের পোশাক, বাচ্চাদের পোশাক, বছরের বিভিন্ন বিশেষ দিবসের উপহার সামগ্রী, ফুডস, গ্রোসারিজ, হাউসহোল্ড, খেলাধুলার সামগ্রী, বাচ্চাদের খেলনা, ছেলে ও মেয়েদের কসমেটিক্স, জুয়েলারি, মোবাইল ফোন, বইসহ অনেক ধরনের পণ্য।
গিফটজহাট ডটকম
একই অবস্থা গিফটজহাট ডটকম (www.giftzhaat.com) ই-শপে। এতে পোশাক, খাবারসহ নানা পণ্যের পাশাপাশি রয়েছে ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন ছাড় বা উপহারের খবর। মেয়েদের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, হ্যান্ড ব্যাগ, জুয়েলারি ও কসমেটিক্স সামগ্রী; ছেলেদের পাঞ্জাবি, শার্ট, ফতুয়া, অফিস ব্যাগ, কসমেটিক্স; ছোটদের খেলনা, পোশাক; হোম ডেকোরেশন সামগ্রী, বই, জায়নামাজ, অডিও সিডি, প্যাকেজ গিফট, মোবাইল রিচার্জসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার অনলাইনে কেনার ব্যবস্থা রয়েছে। ভিসা, মাস্টার ও আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ডের মাধ্যমে দাম পরিশোধের ব্যবস্থা রয়েছে।
সামগ্রী ডটকম
অনলাইন শপিংভিত্তিক সামগ্রী ডটকম (www.samogree.com) সাইটটিতে কমপিউটার এক্সেসরিজ, পুরুষ ও মহিলাদের কসমেটিক্স, বাচ্চাদের পোশাক, মহিলাদের জুতা, প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন পণ্য, মহিলাদের ভ্যানিটি ব্যাগ, গৃহস্থালির বিভিন্ন পণ্য, ছেলেদের ইউরোপের বিভিন্ন ক্লাবের স্পোর্টস জার্সি, বিভিন্ন ধরনের বই পাওয়া যায়। এতে রয়েছে কেনাকাটার বিশাল সম্ভার। এ বাজারে শিশুদের পণ্য, ঈদের ফ্যাশনসহ নানা পণ্য পাওয়া যাবে। খুব সহজে পছন্দের কেনাকাটা সারা যাবে এতে।
মুক্তবাজার ডটকম
মুক্তবাজার ডটকম (www.muktobazaar. com) হলো একটি অনলাইন বাজার, যেখানে জন্মদিন, বিরিয়ানি, বড়দিনের উৎসব, দেশী ফতুয়া, ঢাকাইয়া জামদানি, ঈদ উপহার, ঈদের কেনাকাটা, ঈদুল আযহা, আইসক্রিম, কাচ্চি বিরিয়ানি, মসলিন শাড়ি, শাড়ি, কেনাকাটা, খেলাধুলা, গার্মেন্ট, কেক, ফুল, ক্রীড়া, পণ্য, হোম যন্ত্রপাতি, ফ্যাশনেবল অনুষঙ্গ, খেলনা, বই, গৃহস্থালি সামগ্রী, কমপিউটার যন্ত্রপাতি, সফটওয়্যারসহ অন্যান্য আইটেমের পণ্য সম্ভারে সজ্জিত এ ওয়েবসাইটটি।
উৎসব ডটকম
রমজান উপলক্ষে আলাদাভাবে ইফতারের পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে উৎসব ডটকম (www.utshob.com) সাইটে। এখানে প্রতিটি বিষয়ের সাথে আলাদা ওয়েবপেজ আছে। ঈদের বিশেষ পণ্য, ইফতারের বিশেষ পণ্য, উপহার, বই, শিশুদের জিনিসপত্রসহ রয়েছে ঈদের বিভিন্ন খাবার, পোশাকের খবর। এখান থেকে খুব সহজে পছন্দ অনুযায়ী পণ্য কেনা যাবে। এখানে রয়েছে গৃহস্থালি সামগ্রী, ছেলেমেয়েদের পোশাক, কসমেটিক্স, জুয়েলারি, বছরের বিভিন্ন বিশেষ দিবসের উপহার, বিভিন্ন ধরনের খাবার, ফল, মিষ্টি, গ্রোসারি সামগ্রী, মোবাইল ও ইন্টারনেট সামগ্রী, প্রি-পেইড কার্ড রিচার্জ, খেলা, ট্রাভেলিং প্যাকেজ, বই, হ্যান্ডিক্রাফট, জুতা, শুভেচ্ছা কার্ড, ওষুধ, জায়নামাজ, তসবি, টুপিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য।
এসব প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ঈদে কেনাকাটার জন্য রয়েছে আমাদের ই-শপ, সূর্যমুখী, একুশে, কেনাকাটা, সিটিশপ, বেস্টওয়ে বাজারসহ বিভিন্ন সাইট। এখানে পাওয়া যাবে ঈদের সব উপকরণসহ আধুনিক জীবনধারা থেকে শুরু করে কাঁচাবাজার ও গৃহস্থালি সামগ্রী। এসবের পাশাপাশি রয়েছে বইপত্র, বাচ্চাদের অনলাইন স্কুল, বিমানের টিকেটসহ প্রয়োজনীয় সেবা কেনার সুবিধা।
বাংলাদেশ থেকে অনলাইনে কেনাকাটা করার জন্য এখন বেশ কয়েকটি ই-কমার্স সাইট রয়েছে। নওরিনস, দেশিগ্রিটিংস, গিফটদুনিয়া, হাটবাজার, গিফটজহাট, ডায়মন্ডওয়ার্ল্ড এবং একুশে ডটকম ডটবিডি, মুক্তবাজার সাইটগুলো থেকে অনলাইনে কেনাকাটা করা যাবে। এছাড়া মিনাবাজার, আগোরার সাইট তো রয়েছেই।
এফএসবি ডটকম ডটবিডি
এফএসবি ডটকম ডটবিডি (www.fsb.com. bd)। এটা হচ্ছে অন্য রকমের একটা সাইট। তারা সরাসরি পণ্য বিক্রি করছে না, কিন্তু ঈদ উপলক্ষে ই-কমার্স সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট বানিয়ে দিচ্ছে তারা। এদের ক্লায়েন্টের মধ্যে আছে- বাংলাদেশব্র্যান্ডস.কম, আমারদেশশপ.কম, ডোরস, আরটিস্টি, এক্সটাসি, বিবিয়ানা, অ্যাড্রয়েট, নগরদোলা, রঙ, সাদাকালো, প্রবর্তনা, মেনয ক্লাব, ফিট এলিগেন্স, আহং ইত্যাদি।
এই প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ঈদের কেনাকাটার জন্য রয়েছে আমাদের ই-শপ, সূর্যমুখী, একুশে, কেনাকাটা, সিটিশপ, বেস্টওয়ে বাজারসহ বিভিন্ন সাইট। এখানে পাওয়া যাবে ঈদের সব উপকরণসহ আধুনিক জীবনধারা থেকে শুরু করে কাঁচাবাজার ও ঘর-গৃহস্থালির সামগ্রী। শুধু আপনি অর্ডার দেয়া মাত্র যত দ্রম্নত সম্ভব সবকিছু পৌঁছে দেয়া হবে আপনার দোরগোড়ায়। এসবের পাশাপাশি রয়েছে বইপত্র, বাচ্চাদের অনলাইন স্কুল, বিমানের টিকেটসহ প্রয়োজনীয় সেবা কেনার সুবিধা।
ঈদের এই সময় ঘরে বসেই হাতের কাছে পেয়ে যাচ্ছেন সব পণ্য। ঘরে বসে আরামে সব কেনাকাটা করুন কিংবা প্রিয়জনদের উপহার দিন। অর্ডার দেয়া মাত্র প্রিয়জনদের হাতে পৌঁছে দেয়া হবে আপনার ঈদের উপহারটি।
বাংলাদেশ থেকে অনলাইনে কেনাকাটা করার জন্য এখন বেশ কয়েকটি ই-কমার্স সাইট রয়েছে। নওরিনস, দেশিগ্রিন্টিংস, গিফটদুনিয়া, হাটবাজার, গিফটজহাট, ডায়মন্ডওয়ার্ল্ড এবং একুশে.কম.বিডি, মুক্তবাজার সাইটগুলো থেকে অনলাইনে কেনাকাটা করা যাবে। এছাড়া মিনাবাজার, আগোরার সাইটতো রয়েছেই। ঈদ উপলক্ষে অধিকাংশ সাইটেই নতুন পণ্যের পসরা সাজানো হয়েছে। কোনো কোনো সাইটকে নতুনভাবে রাঙানোও হয়েছে।
দেশে অনলাইনে বেচাকেনা দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। তবে কিছু অবকাঠামোগত সমস্যাও রয়েছে। ই-কমার্সের সাথে ক্রেডিট কার্ডের সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অনলাইন ট্রেডিংয়ের একমাত্র বাহন হচ্ছে ক্রেডিট কার্ড। ই-কমার্সের কাঠামোর পেমেন্ট সিস্টেমের জন্য ক্রেডিট কার্ডই ভরসা। বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ডের সার্ভিস বিশ্বমানের নয়। বিশেষ লোকাল সার্ভিসের জন্য যেসব ক্রেডিট কার্ড ইস্যু হয় তা দিয়ে দেশের বাইরে ই-কমার্স সাইট থেকে বাণিজ্য করা সম্ভব নয়। সারা বিশ্বের অনলাইন বাজারের সম্প্রসারণের সাথে সাথে আমাদের দেশেও এগিয়ে চলছে এ বাজার। তবে পরিপূর্ণ অনলাইন বাজার সুবিধা চালু না থাকায় দেশে থেকে এ সুবিধা গ্রহণ করতে পারছেন না অনেকেই। প্রবাসী বাঙালিরা নিজেদের পছন্দের জিনিস অনলাইন বাজারের মাধ্যমে দেশে প্রিয়জনদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন খুব সহজে। সবার কাছে এ সুবিধা পৌঁছে দিতে দরকার ই-কমার্সের সব ধরনের বিষয়ের আইনগত অনুমোদন। তবেই প্রযুক্তির সাথে এগিয়ে চলা পরিপূর্ণ হবে
ইসুফিয়ানা ডটকম
ঈদে মেয়েদের কেনাকাটা নিয়েই সবচেয়ে বেশি মাতামাতি হয়। আর এই ঈদ সামনে রেখে বিভিন্ন ধরনের সালোয়ার-কামিজ, শাড়ির সম্ভার নিয়ে এসেছে ইসুফিয়ানা ডটকম (www.esufiana.com)। এতে আছে এ বাজারে বিভিন্ন দিবস অনুযায়ী আলাদাভাবে তৈরি পণ্যসামগ্রী। এছাড়া ঈদ উপলক্ষে তারা নিয়ে এসেছে মেগা অফার, যেখানে প্রতি ৫০০ টাকার পণ্য ক্রয়ে আপনি পাবেন ১টি করে কুপন এবং ঈদ শেষে লটারিতে পাবেন নানা ধরনের পুরস্কার।
উপহারবিডি ডটকম
ঈদ সামনে রেখে বিভিন্ন ছাড় ও উপহারের সুবিধা দিচ্ছে এ অনলাইন বাজার। উপহারবিডির (www.upoharbd.com) অনলাইনে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে অর্ডার করা যায়। এ প্রতিষ্ঠান বাজারের সর্বোচ্চ মানের পণ্য সরবরাহ করে থাকে। বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি ছাড়া দেশের যেকোনো স্থানে আপনার উল্লেখ করা সময়ের মধ্যে পছন্দের উপহারটি প্রিয়জনের কাছে পৌঁছে দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। ঢাকার ভেতরে যেকোনো ডেলিভারির জন্য কোনো অতিরিক্ত চার্জ দিতে হয় না। এছাড়া দেশের যেকোনো স্থানে মোবাইল রিচার্জ পাঠানোর জন্য কোনো অতিরিক্ত চার্জ প্রযোজ্য নয়।
ঈদের কেনাকাটা ফেসবুকে
বর্তমানে ঈদের সময় প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘরে বসেই ফেসবুকের মাধ্যমে মিলবে হাল ফ্যাশনের খবরাখবর। শুধু খবর নিলেই তো হবে না, কিনতেও পারবেন পছন্দের পোশাক। ফেসবুকে থাকা গয়নার ছবি দেখে ঘরে বসে থেকেই চলতে পারে কেনাকাটা। পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ফেসবুকে গড়ে উঠেছে অনেকগুলো ফ্যাশন পেজ।
দেশী তাঁতের ও সুতির সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, টপ, শাড়ি মিলবে রং-এর ফ্যাশন পাতায়। রং-এর ফেসবুক পেজ (www.facebook.com/ rangfanclub) দেখে পেয়ে যেতে পারেন আপনার পছন্দের পোশাকটি।
অঞ্জনসের ফ্যাশন পাতায় উঁকি দিলে সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি আর শাড়ির পাশাপাশি দেখতে পাবেন রুপার তৈরি চমৎকার সব গয়না।
ধানম--তে অবস্থিত গস্ন্যামগার্ল ডিজাইনার ক্রিয়েশন অ্যান্ড জুয়েলারিতে পাবেন দেশীয় ডিজাইনারের তৈরি লম্বা কামিজ, শাড়ি ও জুয়েলারি। গস্ন্যামগার্লের নতুন নতুন সংগ্রহগুলো দেখতে তাদের ফেসবুক পেজে (www.facebook. com/glamgrlbd) চোখ রাখতে পারেন।
হাল ফ্যাশনের জুতা ও ব্যাগ মিলবে শিমার ফেসবুক পেজের (www.facebook.com/ ShimmerShoes) মাধ্যমে। বিভিন্ন নকশায় স্যান্ডেল, পাম্প সু, চটি জুতা এবং বাহারি সব ডিজাইনের কাচ ব্যাগ আছে তাদের সংগ্রহে বলে জানান শিমার স্বত্বাধিকারী মাহজাবিন সায়েদ। তাদের বনানীর দোকানেও গিয়ে দেখে আসতে পারেন।
বাহারি কারুকাজের বালা, কানপাশাসহ বিভিন্ন জুয়েলারির খোঁজ যারা করছেন তাদের জন্য আছে আবরণের ফেসবুক পেজটি (www.facebook.com/ pages/AbORon/222414067804319)। এবারের ঈদ সামনে রেখে স্বর্ণের ওপর কাটাই কাজ আর নবরত পাথরের গয়না এনেছে তারা। এ ছাড়া সালোয়ার-কামিজ পাবেন এখানে এবারের ঈদে।
জারিফ ফ্যাশনের ফেসবুক পেজে (www. facebook.com/zariffashion) পাবেন জামদানি ও মসলিন কাপড়ে নকশা করা শাড়ি ও সালোয়ার-কামিজ। এছাড়া হাল আমলের নানা ধরনের কাপড়ের এক সম্ভার পাবেন ধূপছায়া বুটিকের ফ্যান পেজ (www.facebook.com/ Dhoopchayaboutique) থেকে।
যারা একটু ভিন্ন ধরনের সালোয়ার-কামিজের খোঁজ করছেন, তারা ঘুরে দেখতে পারেন অ্যাডাম অ্যান্ড ইভের ফেসবুক পেজে (www.facebook.com/ adameve.collection)। লম্বা কামিজে ফুলের নকশা চোখে পড়বে আপনার। সালোয়ার-কামিজের পাশাপাশি শাড়ি, পাঞ্জাবি, কাফতানও রয়েছে তাদের ঈদ সংগ্রহে।
যারা পাকিস্তানি লন পছন্দ করেন তারা এবারের ঈদের হাল ফ্যাশন লনের বিভিন্ন কাপড় দেখে নিতে পারেন লন ওয়ার্ল্ড বিডির ফেসবুক পেজ (www. facebook.com/lwbd2013) থেকে। এছাড়া নানা ধরনের লন দেখে নিতে পারেন সোলমেটের (www. facebook.com/ soulma8) ফেসবুক ফ্যান পেজ থেকে।
যারা একটু জমকালো শাড়ির খোঁজে আছেন তারা ঘুরে দেখতে পারেন স্টাইল ওয়ার্ল্ডের পেজটি। জর্জেট, তসর, সিল্কসহ বিভিন্ন ডিজাইনারের করা শাড়ি পাবেন এখানে। যারা সেলাইবিহীন সালোয়ার-কামিজ চাচ্ছেন তারা আই বস্নকের পেজে একবার ঢুঁ মেরে আসতে পারেন। ছেলেদের পোশাকের জন্য বিখ্যাত ক্যাটস আই। ক্যাটস আইয়ের ফেসবুক পেজে আপনি পছন্দ করে নিতে পারেন জামা, ফতুয়া, পাঞ্জাবিসহ ছেলেদের বিভিন্ন ধরনের পোশাক। এছাড়া মেয়েদের পোশাকও দেখতে পাবেন ফেসবুক পেজে।
ফেসবুক পেজের মাধ্যমে হরেক রকম শাড়ির পসরা সাজিয়েছে বেরং। মসলিন, জামদানি, তাঁত, সিল্ক, নেটসহ বিভিন্ন কাপড়ে অ্যামব্রয়ডারি, বস্নক, হাতের কাজ করা এসব শাড়ি অনলাইনে দেখে অর্ডার করা যাবে।
লেস, ইয়োক, প্যাচওয়াক, অ্যামব্রয়ডারি, বোতাম ইত্যাদির সালোয়ার-কামিজ ও ফতুয়া তৈরি করেছে আরুশা। এ ছাড়া ফ্যাশন হাউস চৈতি, যাত্রা, ক্যাটস আই, বাটন অ্যান্ড বোজ, ডিলাইটেড, কিনারা, ড্রিমস অ্যাক্সেসরিজের পেজগুলোও দেখে নিতে পারেন।
তবে কেনাকাটার আগে অবশ্যই পেজগুলো নির্ভরযোগ্য কি না, তা আগে ভেবে নিন। তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে নিন। বিভিন্ন পেজের কেনাকাটার প্রক্রিয়ার মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। সঠিক প্রক্রিয়াটি জেনে নিন। প্রয়োজন হলে ফোনে খবরাখবর নিয়ে নিন। আপনি যে পোশাকটি পছন্দ করেছেন তার কোড নম্বরটি সঠিকভাবে দেখে নিন।
কজ
ফিডব্যাক : faisalb01@gmail.com