লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
তথ্যসূত্র:
বাজেট ও আইসিটি
ভালো-মন্দের তথ্যপ্রযুক্তি বাজেট
প্রতি বছর জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে জুলাই মাস জুড়ে দেশের বেশিরভাগ মানুষ ভাবিত বাজেট নিয়ে। বাজেট ঘোষিত হলেই বাজারে শুরু হয় পণ্যমূল্যের উলস্নম্ফন। ব্যক্তি আয় বাড়বে কি না, অর্জিত আয় দিয়ে কতটা স্বাচ্ছন্দ্যে চলা যাবে, ব্যবসায়-বাণিজ্য কতটা এগিয়ে নেয়া যাবে, সে ভাবনা থেকে শুরু করে দেশজ উন্নয়নে কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য আর প্রতিরক্ষা খাত কতটা সুবিধা পাবে তার চুলচেরা বিশেস্নষণে সরগরম হয়ে ওঠে চারপাশ। তবে গত কয়েক বছর হলো এসব চিন্তায় যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা। এখন সে ভাবনায় বড় আকার নিয়ে আসছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিষয়টিও। টিভি, ফ্রিজ, সিম, সেলফোন, কমপিউটার, ওয়েবক্যাম, ইন্টারনেট এসবের দাম বাড়বে না কমবে সে ভাবনাও আসে আমাদের বাজেট ভাবনায়।
সদ্য পাস হওয়া ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে কিছুটা হোঁচট খেতে দেখা গেছে তথ্যপ্রযুক্তি বোদ্ধাদের। বিশেস্নষকেরা মনে করছেন, শুধু গোটাকয় শুল্ক কিংবা কর রেয়াত সুবিধার বিষয়টিও বারবার বাজেটে ফোকাস করা হয়েছে। কিন্তু ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে সরকারের প্রতিটি খাতেই তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে আলাদা আলাদা বরাদ্দ থাকার প্রতি বেশি নজর দেয়া উচিত ছিল। আর নতুন এ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে অবিমিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে সব মহলেই। প্রস্তাবিত বাজেটে ইন্টারনেট ও ই-কমার্সের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার না করায় একদিকে যেমন হতাশা ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। অপরদিকে প্রযুক্তিপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে অগ্রিম ট্রেড ভ্যাটকেই চূড়ান্ত ভ্যাট হিসেবে বিবেচনা করা, অগ্রিম আয়কর তিন ভাগে নামিয়ে আনা, টার্নওভার ট্যাক্স মওকুফ করা ও খুচরা স্তরে দোকানপ্রতি ভ্যাট ৪২০০ টাকা রাখার দাবি পূরণ না হওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি।
বাজেটে বেসিসের প্রত্যাশার প্রতিফলন
জাতীয় বাজেট ২০১৩-১৪ অনুমোদনের আগে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবার জন্য ধার্য করা বিগত অর্থবছরের মূসক ৪.৫ শতাংশ থেকে শূন্য শতাংশে করা, বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ানো অব্যাহত রাখতে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর থেকে ১৫ শতাংশ মূসক প্রত্যাহার, ই-কমার্স উৎসাহিত করতে ই-কমার্স লেনদেনের ওপর থেকে অন্তত আগামী ৩-৫ বছরের জন্য ভ্যাট প্রত্যাহার এবং জাতীয় আইসিটি নীতিমালা ২০০৯ অনুযায়ী আইটি ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট ফান্ড ও অথরিটি গঠনের জন্য অর্থ বরাদ্দ এবং বড় করদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভ্যাট অটোমেশনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছিল বেসিস।
কিন্তু বাজেটে তার প্রতিফলন না ঘটায় হতাশা ব্যক্ত করে বেসিস সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, বাজেট ঘোষণার আগেই অর্থমন্ত্রী ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে আলাদাভাবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের পক্ষ থেকে দুটি প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা আশাহত, অর্থমন্ত্রী যে বাজেট পেশ করেছেন তাতে বেসিসের প্রস্তাবের কোনো প্রতিফলন ঘটেনি।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ খাতে বিগত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। বিশেষত সফটওয়্যার ও আইটি সেবা রফতানি প্রবৃদ্ধি দেশের শীর্ষ ১৫টি রফতানি পণ্যের অন্যতম হিসেবে ইতোমধ্যেই পরিগণিত হয়েছে।
বিগত ২০১১-১২ অর্থবছরে রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল ৫৬ শতাংশ এবং ২০১২-১৩ অর্থবছরেও এই প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সম্প্রতি এ খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগও বেড়েছে অন্যান্য খাতের তুলনায় অনেক বেশি বলেও উল্লেখ করেন বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শামীম আহসান।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার সাথে সাথে ২০২১ সাল নাগাদ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে রূপকল্প তৈরি করেছে তা বাস্তবায়নে তথ্যপ্রযুক্তিবান্ধব একটি বাজেট খুবই অপরিহার্য ছিল। এছাড়া এটি বর্তমান সরকারের আমলে সর্বশেষ বাজেট হওয়ায় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার জন্য এ বাজেটে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া দরকার ছিল।
এদিকে ইন্টারনেট ও ই-কমার্সের ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার না করায় হতাশা ব্যক্ত করেছে বেসিস। এবারের বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় বেসিস সভাপতি একেএম ফাহিম মাশরুর বলেন, ই-কমার্স ও ইন্টারনেটের ওপর থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার না করায় হতাশা বাড়ল। তিনি আরও বলেন, জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি নীতিমালা ২০০৯-এ ৭০০ কোটি টাকার জাতীয় আইসিটি উন্নয়ন তহবিল গঠনের প্রস্তাব থাকলেও বাজেট বক্তৃতায় সে ব্যাপারেও কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা আসেনি।
বেসিস সভাপতি আরও বলেন, নবগঠিত আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বাজেট প্রায় ৩ গুণ করা হয়েছে। তবে ৫৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও এর ব্যয়-বিন্যাস করা হয়নি। আইসিটি খাতের উন্নয়নে আগামী অর্থবছরে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। এ অর্থ কোন কোন খাতে ব্যয় করা হবে তার কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা নেই। তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি নীতিমালা ২০০৯ অনুযায়ী ৭০০ কোটি টাকার জাতীয় আইসিটি উন্নয়ন তহবিল গঠনের প্রস্তাব থাকলেও বাজেট বক্তৃতায় সে ব্যাপারেও কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা আসেনি। তবে দেশের ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্ক সংযোগ বাড়াতে ফাইবার অপটিক ক্যাবলের ওপর থেকে শুল্ক কমানোর ঘোষণা ইতিবাচক। এ ছাড়া নবগঠিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বিগত বছরের তুলনায় তিন গুণেরও বেশি বাড়ানো সমেত্মাষজনক।
প্রসঙ্গত, বিগত বছরে মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিল মাত্র ১৩৭ কোটি টাকা। এবার এ খাতে ৫৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সার্বিক বরাদ্দ ৩ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতির মিশ্র প্রতিক্রিয়া
বাজেটে সফটওয়্যার ও সেবা খাতের কর অব্যাহতি ২০১৩-এর জুন থেকে ২০১৫-এর জুন পর্যন্ত বাড়ানোয় সংশ্লিষ্ট খাত প্রবৃদ্ধির পথে আরও দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে যেতে পারবে বলে মন্তব্য করে বিসিএস। এ খাতকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতির আওতায় আনার প্রস্তাব করেছেন বিসিসি সভাপতি মোস্তাফা জববার।
আলাপকালে বাজেটে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ৬৩৩ কোটি টাকায় উন্নীত করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে আইসিটি নীতিমালা অনুসারে ৭০০ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন তহবিল এখনও গঠন না করার বিষয়টি সরকারের নজরে আনেন তিনি।
বাজেটে বিভিন্ন আইটিপণ্যের ওপর আরোপিত শুল্কের পরিমাণ কমানোয় সরকারকে ধন্যবাদ জানালেও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, বড় ডিসপ্লে প্রভৃতি পণ্যে শুল্ক না কমানোয় হতাশা ব্যক্ত করেন মোস্তাফা জববার। এতে ডিজিটাল ক্লাসরুম তৈরির উদ্যোগ ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। এ ছাড়া অগ্রিম ট্রেড ভ্যাটকেই চূড়ান্ত ভ্যাট হিসেবে বিবেচনা করা, অগ্রিম আয়কর তিন ভাগে নামিয়ে আনা, টার্নওভার ট্যাক্স মওকুফ করা ও খুচরা স্তরে দোকানপ্রতি ভ্যাট ৪২০০ টাকা রাখার দাবি জানান।
মোস্তাফা জববার বলেন, সরকারের শেষ বাজেট ইতিবাচক। আইসিটি খাতে আমাদের দাবি অনুযায়ী কিছু কিছু পণ্যের দাম কমানো হয়েছে। সফটওয়্যার উন্নয়নে ইতিবাচক অনেক দিক রয়েছে। এতে অনেক বেকার সমস্যা দূর হবে। ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য। এবারের বাজেটে সেই দিকটি বড় করে দেখা হয়েছে। বাজেটে ২০১৪ সালের মধ্যে ই-গভর্ন্যান্স হবে। এ বিষয়টি বাস্তবায়ন করতে পারলে সমাজ থেকে দুর্নীতি বহুগুণে কমে যাবে। তবে বাজেটে ইন্টারনেট থেকে ভ্যাট তুলে নেয়া হয়নি। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ইন্টারনেটের ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য ভ্যাট কমানো হয়নি। সাধারণ মানুষের জন্য শতকরা সাড়ে ৪ ভাগ ভ্যাট আরোপ করলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়বে। ইন্টারনেটভিত্তিক জাতীয় অর্থনীতির অনেক কিছু নির্ভর করে।
বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতির সাবেক সভাপতি ফয়েজ উলস্নাহ খান বলেন, বাজেটে ব্রডব্যান্ড সম্প্রসারণের জন্য মাত্র ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হোক। এর থেকে মাত্র ৩০ কোটি টাকা খরচ করে দেশের কমপক্ষে ২০০টি স্থানে ৫ মেগাবিটের উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই জোন তৈরি করা যায়। এগুলোতে মাত্র এক থেকে দুই বছরের ব্যান্ডউইডথের খরচ সরকার দেবে। এখনও যে শহরগুলোতে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া কঠিন সেখানে সে অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। সঠিক নেতৃত্ব ও যথার্থ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ কাজ কয়েক মাস সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব।
ভিশন ২০২১ ও বাজেটে আইসিটি খাত
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসীন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নির্বাচনী প্রতিশ্রম্নতি নিয়ে। সরকার এরই মধ্যে প্রণয়ন করেছে জাতীয় আইসিটি নীতিমালা ২০০৯। এই আইসিটি নীতিমালাসহ সরকার প্রণয়ন করেছে একটি রূপকল্প। এই রূপকল্প ভিশন ২০২১ বা রূপকল্প ২০২১ নামেই সমধিক পরিচিত। আমাদের আইসিটি নীতিমালায় আছে ১০টি উদ্দেশ্য, ৫৬টি কৌশলগত বিষয়বস্ত্ত ও ৩০৬টি করণীয়।
কিন্তু সরকারের মেয়াদপূর্তির শেষ বাজেটেও এ আইসিটি নীতিমালা ও রূপকল্প এবং সর্বোপরি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথের অনেক প্রত্যাশা ছিল দেশের আইসিটি খাতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি, মহল ও তথ্যপ্রযুক্তিপ্রেমী সাধারণ মানুষের। এবারের বাজেটে সার্বিক বরাদ্দ বাড়ানো হলেও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে তা আশার সঞ্চার করেনি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ২০০৯ সাল থেকে মহাপরিকল্পনার শতকরা ১০ ভাগও বাস্তবায়ন হয়নি। আইসিটি খাতে সার্বিক বাজেট ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা। বাজেট বক্তব্যে গত চার বছরে আইসিটি খাতের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হলেও আদতে এ খাতে যে পরিমাণ উন্নয়ন হওয়ার কথা তা আসলে হয়নি।
অবশ্য এবার বাজেটে বরাদ্দ বাড়িয়ে দিয়ে একটা চমক দেয়া হয়েছে। এই বরাদ্দ সরকারের মেয়াদে বাস্তবায়ন করা অসম্ভব। যদিও বাজেটে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যয় ও ব্যান্ডউইডথের দাম আরও কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে, কিন্তু ইন্টারনেটের ওপর থেকে ভ্যাট উঠিয়ে দেয়া হয়নি।
বাজেট বক্তৃতায় ই-গভর্ন্যান্স আইসিটি স্কিল ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। একই সাথে আইসিটি খাতের উন্নয়নে আগামী অর্থবছরে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে আইসিটি প্রশিক্ষণের জন্য। তবে বেসিস বলেছে, এ টাকা কোন কোন খাতে ব্যয় করা হবে তার কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা আসেনি।
ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে অগ্রযাত্রা
হালচিত্র ২০১৩
গত ৬ জুন বৃহস্পতিবার বাজেট প্রস্তাবনায় আইসিটি খাতের উন্নয়নের তালিকাসহ প্রকাশিত ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে অগ্রযাত্রা : হালচিত্র ২০১৩ বইয়ে এ সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সেন্টারগুলোর জন্য উচ্চগতির ইন্টারনেট ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের সুপারিশও করা হয় এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে। সব ধরনের সরকারি দফতরে সিস্টেম অ্যানালিস্ট ও প্রোগ্রামার পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে, ইন্টারনেট সেবা বাড়ানোর জন্য দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল লিঙ্ক সিমিউই-৫ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়ার কথা। অভ্যন্তরীণ সংযোগ উপশিরোনামে বলা হয়েছে, দেশের সব জেলা ও উপজেলার সরকারি অফিসকে একটি কমন নেটওয়ার্কের আওতায় আনার বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে ইন্টারনেট সেবা বাড়ানোর জন্য দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল লিঙ্ক প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ নেয়ার বিষয়।
ভারত ও চীনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, এ দুই দেশ বিশ্বে আইসিটি মার্কেটের উচ্চ শিখরে আরোহণের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। এটি বাংলাদেশেরও জন্য একটি সুযোগ আইটি খাতে দক্ষ জনবলের অভাব, সফটওয়্যার শিল্পে কমসংখ্যক প্রতিষ্ঠান, অবকাঠামোগত অসুবিধা, উচ্চগতির ইন্টারনেট ও সংযোগ এখনও ব্যয়বহুল হওয়ায় গ্রামে ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক প্রতিবন্ধকতা আইটি খাতের জন্য বড় বাধা হিসেবে কাজ করায় বাজেটে ফাইবার অপটিকের দাম কমানোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল সরবরাহের লক্ষ্যে আমদানিতে প্রযোজ্য শুল্ক হার ১২ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে এবং এর উৎপাদনে ব্যবহার্য উপকরণের ওপর প্রযোজ্য শুল্কহার ২৫ ও ১২ থেকে শুল্কহার শূন্য শতাংশ করারও প্রস্তাব করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার বিবেচনায় এ কাজে যাতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে সে কারণে কয়েকটি কমপিউটার বা প্রযুক্তিপণ্যে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ওয়েবক্যাম ও ডিজিটাল ক্যামেরায় বর্তমানে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বিদ্যমান রয়েছে। তা কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। দেশীয় মোবাইল ফোন সিমকার্ডের আমদানি পর্যায়ে ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ধার্য করা ছিল, তা ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
দেশী আইসিটি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি, ব্যাংকগুলোকে আইসিটি খাতে বিনিয়োগে উৎসাহ দেয়ার ইঙ্গিত রয়েছে এবারের বাজেটে। বাজেট বক্তব্যে টেলিযোগাযোগ, কমপিউটারে বাংলাভাষা সম্প্রসারণ, ইউনিকোড বাস্তবায়ন, ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি, বাংলা কিপ্যাড, পোস্ট, ই-সেন্টার, হাইটেক পার্ক বাস্তবায়ন, আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল শক্তিশালী করা, ডিজিটাল উদ্ভাবনী প্রদর্শনী, ই-গভর্ন্যান্স, ই-কমার্স, অনলাইন কেনাকাটা, ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, আইসিটি খাতের মানোন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির কথা বিশেষভাবে বলা হয়েছে
ফিডব্যাক : netdut@gmail.com