লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
৩য় মত
মন্ত্রণালয়গুলোর দরকার পারস্পরিক সমন্বয়
দেশ ও জনগণের সার্বিক উন্নতির জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান তথা সরকার বিভিন্ন মেকানিজম কর্মসূচি হাতে নেয়। বলা হয়ে থাকে, তৃতীয় বিশ্বের তথা অনুন্নত বিশ্বের দেশগুলোর সার্বিক উন্নতির পেছনে প্রধান নিয়ামকের ভূমিকা পালন করে থাকে সরকারের বিভিন্ন মেকানিজম। লক্ষণীয়, বিশ্বের প্রায় সব দেশের সরকারের বিভিন্ন মেকানিজমের মধ্যে থাকে পারস্পরিক সমন্বয়, যার ফলে গৃহীত প্রতিটি পদক্ষেপই সফলতার মুখ দেখে। কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ চিত্রটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে সরকারের বিভিন্ন মেকানিজমের মধ্যে নেই কোনো সমন্বয়। এর ফলে যেমন সময় অপচয় হয়, তেমনই অর্থের অপচয় হয় প্রচুর, যা অর্থনীতিতে এক বিরাট বিরূপ প্রতিক্রয়া সৃষ্টি হয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এমনই এক কর্মসূচি নিয়েছে, যেখানে সরকারের মেকানিজম বা মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার চিত্র প্রকট আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশ সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বাংলা ওসিআর ও বাংলা করপাস তৈরির প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ইওআই আহবান করেছে, যা গত ৬ আগস্ট পত্রিকায় প্রকাশ করা ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রচারিত হয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এই ইওআই আহবান করায় অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। কেননা, সরকারের এটুআই নামের সংস্থাটি বাংলা ওসিআর (সম্ভবত করপাস) তৈরির কাজটি প্রায় শেষ করে ফেলেছে। অথচ বেসরকারি খাতের ওসিআর ‘পুঁথি’ ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়ে গেছে। সুতরাং, এজন্য এটুআইয়ের উদ্যোগটি ছিল অনাবশ্যক। কেননা, এজন্য খরচ করতে হয়েছে ২৩ লাখ টাকা। সুতরাং এই একই কাজ মন্ত্রণালয় আবার কেনো করছে, তা সবার কাছে দুর্বোধ্য যেমন মনে হয়েছে, তেমনি অনাবশ্যক ও অর্থ অপচয় ছাড়া অন্য কিছুই নয়।
লক্ষণীয়, মন্ত্রণালয়কে চারটি কাজের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল আইসিটি সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে। এর মধ্যে বাংলা টেক্সট টু স্পিচ ও বাংলা স্পিচ টু টেক্সটও ছিল। মজার ব্যাপার, মন্ত্রণালয় এ দুটিতে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে এটুআই যে কাজটি করে ফেলেছে, সেটিতেই হাত দিয়েছে। এ দেশের আইসিটি-বোদ্ধা মহলের কাছে ব্যাপারটি তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়নে সমন্বয়হীনতার একটি প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়।
বাংলাদেশের আইসিটি সংগঠনগুলোর সাথে জড়িত শীর্ষস্থানীয় নেতাদের কেউ কেউ মনে করছেন মন্ত্রণালয়ের অন্তর্দ্বন্দ্ব, কোন্দল ও সমন্বয়হীনতার অন্যসব প্রকাশ্য রূপের সাথে আরও একটি যোগ হলো এটি।
লক্ষণীয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে এবং ভিশন ২০২১ পূরণ করতে হলে সরকারের বিভিন্ন কাজের মধ্যে অবশ্যই সমন্বয় থাকতে হবে। বিশেষ করে, বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন এবং অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে হলে অবশ্যই সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নানা অংশের বিরোধ মেটানো ছাড়াও সব মন্ত্রণালয়েরই সমন্বয় সাধন করা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়েরই দায়িত্ব। তবে বাস্তবতা হলো- মন্ত্রণালয় সে কাজটি করে না। মন্ত্রণালয়ের টেক্সট টু স্পিচ ও স্পিচ টু টেক্সটের ইওআই করলে সবচেয়ে ভালো হতো, কিন্তু তা হয়নি।
সুতরাং আমরা প্রত্যাশা করি, অন্তত আইসিটিসংশ্লিষ্ট কাজগুলো যেনো পারস্পরিক যোগাযোগের ভিত্তিতে অর্থাৎ পারস্পরিক সমন্বয়ের ভিত্তিতে হয়, সে ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে। কেননা, এটি একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাত, যা দেশের বেকার জনগোষ্ঠীকে কর্মীগোষ্ঠীতে পরিণত করতে পারে। আইসিটিসংশ্লিষ্ট কাজগুলো যদি পারস্পরিক সমন্বয়ের ভিত্তিতে করা হয়, তাহলে একদিকে যেমন সময়ের সাশ্রয় হবে, তেমনি কাজের গতিও ত্বরান্বিত হবে, যা প্রকারান্তরে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
ফিরোজ
সবুজবাগ, পটুয়াখালী
-----------------------------------------------------------------------------------------
নরেন্দ্র মোদির কাছে প্রস্তাবিত আইসিটি অ্যাকশন প্ল্যান ও আমাদের করণীয়
প্রতিবছর বাজেট প্রণয়নের আগে সরকার দেশের বিভিন্ন সংগঠন থেকে জেনে নেয়ার চেষ্টা করে কোন খাতে কেমন অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন রয়েছে এবং সে অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দের চেষ্টা করা হয়। সম্প্রতি ভারতের নির্বাচনের আগে মোদি তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার আগে জেনে নেয়ার চেষ্টা করেন দেশের অর্থনীতিতে কোন খাতের কেমন অবস্থা। এ ক্ষেত্রে ভারতে আইসিটি খাতের অবস্থা জানতেও তিনি ভুল করেননি।
আবার আইসিটি সংগঠনগুলো তাদের দাবি ও প্রত্যাশাগুলো নরেন্দ্র মোদির কাছে তুলে ধরে পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে। এ ক্ষেত্রে আইসিটি সংগঠনগুলোর নেতারাসহ আইটি সাংবাদিকেরা ছিলেন, যেখানে এরা তাদের সুচিন্তিত মতামত হবু প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এমন চিত্র দৃশ্যমান হতে দেখা যায় না সচরাচর। বাংলাদেশের আইসিটি সংগঠনগুলো প্রায় সময় স্বতন্ত্রভাবে তাদের দাবিগুলো অর্থমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। এর ফলে দাবিগুলোর মধ্যে যেমন থাকে না সামঞ্জ্য, তেমনি থাকে না পারস্পরিক সমন্বয়। আইসিটি সংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন দিক চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যদি তাদের দাবিগুলো সম্মিলিতভাবে অর্থমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরতেন প্রতিবছর, তাহলে আইসিটি খাতের বাজেট বরাদ্দ নিয়ে তেমনভাবে হা-হুতাশ করতে হতো না। শুধু তাই নয়, আইসিটি খাতের যৌক্তিক দাবিগুলো খুব সহজে আদায়ের পথ উন্মোচিত হতো বা বিবেচনায় আসত।
সুতরাং আমরা প্রত্যাশা করি, বাংলাদেশের আইসিটিসংশ্লিষ্ট খাত আগামীতে বাজেট প্রস্তাবনার কয়েক মাস আগে থেকে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনা অর্থমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরবে, যাতে বাজেটে আইসিটি খাত একটু ভালোভাবে বিবেচিত হয় এবং যৌক্তিক অর্থ বরাদ্দ পায়।
আমাদের দেশে আইসিটি খাতের উন্নয়নের জন্য দরকার সমন্বয়হীনতা পরিহার করে সমন্বিতভাবে প্রচেষ্টা চালানো, যাতে এ খাত অচিরেই সত্যিকার অর্থে একটি থ্রাস্ট সেক্টর হিসেবে বিবেচিত হয়।
পারভিন সুলতানা
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা
-----------------------------------------------------------------------------------------
বিটিসিএলের একের ভেতরে তিন সেবা : সফল বাস্তবায়ন কবে হবে?
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এক ক্যাবলেই ভয়েস, ইন্টারনেট এবং ডিশ সংযোগ সেবা দিতে যাচ্ছে। এক ক্যাবলে এ ধরনের সুবিধা দেয়ার কার্যক্রম বিশ্বের অনেক দেশে দেয়া হচ্ছে। আমরা এ ক্ষেত্রে একদম নতুন। বিটিসিএল এ প্রকল্পের নাম দিয়েছে ‘১৭১ কেএল’। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে এ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। অবশ্য শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৩ সালের জুনের মধ্যে। সময় মতো কোনো প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়া আমাদের দেশে এক স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।
বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ সময় মতো শেষ না হওয়ায় একদিকে যেমন আমাদেরকে বাড়তি খরচ বহন করতে হচ্ছে, অন্যদিকে তেমনি আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বিশ্ব থেকে দিন দিন পিছিয়ে পড়ছি। অথচ এসব ব্যাপারে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই।
সুতরাং আমরা চাই বিটিসিএলের ‘১৭১ কেএল’ প্রকল্পের কাজ আর যেনো কোনোভাবে হোঁচট না খায়। অর্থাৎ এর সুবিধা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে যেনো পাওয়া যায়- সে প্রত্যাশায় রইলাম।
আবুল হাসান
হরিরামপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ