• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ই-কমার্স সফলতার ৫ কাস্টোমার রিটেনশন টুল
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: আনোয়ার হোসেন
মোট লেখা:৭৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৬ - জানুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ই-কমার্স
তথ্যসূত্র:
ই-কমার্স
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ই-কমার্স সফলতার ৫ কাস্টোমার রিটেনশন টুল
হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউয়ের (https://hbr.org/2000/07/e-loyalty-your-secret-weapon-on-the-web) এক জরিপে দেখা গেছে, ৫ শতাংশ কাস্টোমার রিটেনশন বৃদ্ধি ২৫ থেকে ৯৫ শতাংশ মুনাফা বাড়াতে পারে। কিন্তু কাস্টোমার রিটেনশন কী জিনিস এবং এটি কীভাবে ৫ শতাংশ বাড়ানো যায়?
কাস্টোমার রিটেনশন হচ্ছে এমন কিছু কাজ, যার মাধ্যমে কাস্টোমারেরা আপনার ব্র্যান্ড বা বিজনেসের প্রতি অনুগত থাকবে। একটি সফল কাস্টোমার রিটেনশন কৌশল একজন প্রথমবার আসা সার্ফারকেলয়াল কাস্টোমারে পরিণত করে, আর রিপিট কাস্টোমারেরা বেশি বেশি কেনাকাটা করে। কাস্টোমার রিটেনশন কৌশল আপনার মুনাফার পরিমাণকে বাড়িয়ে দেবে। একই সাথে বাড়িয়ে দেবে রিপিট কাস্টোমারের সংখ্যা, যারা বেশি পরিমাণে কিনবে। যার ফলে গড়ে উঠবে একটি স্থিতিশীল দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায় মডেল।এখানে ৫রিটেনশন টুল নিয়ে আলোচনা করা হলো, যেগুলো আপনার ই-কমার্স সাইটে ব্যবহার করতে পারেন।
০১.লয়ালিটি কর্মসূচি
স্টোর থেকে বারবার কেনার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে লয়ালিটি কর্মসূচি,যা কাস্টোমার রিটেনশন বুস্ট করার এক দারুণ উপায়। যখন একজন ক্রেতাকে আপনার স্টোরে কেনাকাটা করার জন্য বাড়তি কিছু দেয়া হয় (যেমন পয়েন্টস), তখন পরবর্তী কেনাকাটার জন্য আপনার কোনো প্রতিযোগীকে বাছাই করা তার পক্ষে অনেক বেশি কঠিন হয়ে পড়ে। নতুন সাইটকে কেনাকাটার জন্য বেছে নেয়া পয়েন্ট সুইসিং খরচ তৈরি করে। যখন একজন ক্রেতা তার পরের কেনাকাটার জন্য আপনার কোনো প্রতিযোগীকে বেছে নেন, তখন তাকে টেবিলে অর্থ (পয়েন্টস) ফেলে আসতে হয়। আমরা ফ্রি-তে কোনো কিছু পেলে তা হারাতে চাই না আর কোনো কিছুর বিনিময়ে কিছু পেতে হলে সেটা হারানোর কথা ভাবা তখন আরও কঠিন।
তাই আপনার সাইট থেকে কেনাকাটার জন্য পয়েন্ট পেয়ে পরের কেনাকাটার জন্য নতুন কোনো সাইট বেছে নিলে সে ক্রেতা সম্ভাব্য পয়েন্ট থেকে বঞ্চিত হবে, যেটা তার জন্য সুইচিং ব্যয়। ই-কমার্স লয়ালিটি কর্মসূচি লয়ালিটি পাওয়ার চেয়েও বেশি কিছু করে। কেনাকাটা ছাড়াও আপনি অন্য সব লাভজনক কাজের জন্যও পুরস্কারস্বরূপ পয়েন্ট দিতে পারেন, যেমন- রিভিউ, রেফারেল এবং সোশ্যাল শেয়ারিং। যেহেতু নির্দিষ্ট কোনো পরিমাপক দিয়ে পয়েন্ট মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়, তাই পয়েন্ট আপনি কী পুরস্কার দিচ্ছেন তার ওপর একটি মুখোশ পরিয়ে দেয়।
যেমন আপনি একবার ফেসবুক শেয়ারিংয়ের জন্য ৫০ পয়সা দিতে ইচ্ছুক। কিন্তু ৫০ পয়েন্ট হচ্ছে ৫০ পয়সার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং উৎসাহব্যঞ্জক। আপনার কাস্টোমারেরা ৫০ পয়েন্ট পেয়ে অনেক ক্ষেত্রেই ৫০ পয়সার চেয়ে অনেক বেশি খুশি হবে। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই যা কিনা তার পরের কেনাকাটায় প্রভাব ফেলবে।
কাদের এটি ব্যবহার করা উচিত
সাধারণত যেসব খুচরা ব্যবসায়ী ১০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি মুনাফার মার্জিনে সেল করে থাকেন, তারা সুইট টুথ (https://www.sweettoothrewards.com/) ধরনের লয়ালিটি কর্মসূচি ব্যবহার করতে পারেন। কর্মসূচিটি সেসব খুচরা ব্যবসায়ীর জন্য ভালো, যারা নিয়মিত পণ্যকিনে থাকেন (বছওে কমপক্ষে কয়েকবার)। যেমন- ফ্যাশন, সাপ্লিমেন্ট এবং পোষা প্রাণী সাপস্নাইয়ের কথা।
০২. গেমিফিকেশন
তরুণ অডিয়েন্সকে লক্ষ করা হলো এই টুলটির মূল উদ্দেশ্য।গেম মেকানিক্স অ্যাপ্লিকেশন এখন আর মোবাইল অ্যাপ এবং ভিডিও গেমে সীমাবদ্ধ নেই। আপনি এই গেমিফিকেশনসের শক্তি কাস্টোমার এক্সপেরিয়েন্স এবং কেনাকাটার প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করতে পারেন। গেমিফিকেশনের মাধ্যমে আপনি সার্ফারদেরকে কমপ্লিট অ্যাকশনের জন্য উৎসাহ দিতে পারেন এবং অ্যাকশন কমপ্লিটকে আনন্দদায়ক বা উপভোগ্য কিছুতে পরিণত করতে পারেন। যারা তাদের সাইটে গেমিফিকেশন অপশনটি বসিয়ে থাকে, তারা সাধারণত তাদের ক্রেতাদেরকে লেডারবোর্ডস, স্ট্যাটাস এবং ব্যাজ প্রদান করেথাকে যাতে ক্রেতারা অন্যদের তুলনায় নিজের অবস্থানটা দেখে নিতে পারে। গেমিফিকেশন দারুণ একটি উপায়। কারণ, এটি প্রমোশন এবং লয়ালিটি কর্মসূচিকে একীভূত করে থাকে। তার মানে আপনি একই টুল দিয়ে আপনার সাইটের প্রমোশন যেমন চালাতে পারবেন, তেমনি কাস্টোমার লয়ালিটিও বাড়াতে পারবেন।
কাদের এটি ব্যবহার করা উচিত
যেসব সাইটের ডেমোগ্রাফিক (ভিজিটর বা ক্রেতা বা সম্ভাব্য ক্রেতার সমষ্টি) গেমিং মেকানিকসের সাথে পরিচিত (সাধারণত যুবা ডেমোগ্রাফিক) তাদের জন্য গেমিফিকেশন ভালো কাজ করে। এটি অবশ্যই লয়ালিটি কর্মসূচির জন্যও ভালো কাজ করে।
০৩. পার্সোনালাইজেশন
পার্সোনালাইজেশন সব মার্চেন্টের ব্যবহার করা উচিত।আপনার ব্র্যান্ডের সাথে যায় এমন এবং উপযোগী অভিজ্ঞতার সাথে সাথে কাস্টোমার রিটেনশন বাড়াতে সাহায্য করে। পার্সোনালাইজের দরকার হবে কাস্টোমারদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য, যা আপনি পরে সুপারিশ বানাতে এবং প্রত্যেক ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী প্রমোশন বানাতে ব্যবহার করতে পারেন। পার্সোনালাইজেশন ব্যবহারের কিছু উপায় রয়েছে। একটি উদাহরণ হতে পারে বডিবিল্ডিং ডটকম (http://www.bodybuilding.com/)। তারা যে কাজটি করে, সেটি হলো তাদের সাইটের সব ক্রেতার অতীত রেকর্ড সংগ্রহ করে, সেসব ক্রেতা কী ধরনের পণ্য পছন্দ করে ইত্যাদি সব তথ্য থেকে প্রোডাক্ট সুপারিশ বানিয়ে থাকে। আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে ইউএস প্যাট্রিয়ট ট্র্যাক্টিকাল (http://uspatriottactical.com/)। তারা তাদের হোম পেজটিকে স্মার্ট করে বানিয়েছে, যা কাস্টোমারদের কন্ট্রাক্ট থেকে তথ্য নিয়ে তার ভিত্তিতে তাদেরকে প্রাসঙ্গিক অফার করে থাকে। ই-মেইলের মাধ্যমে পার্সোনাইলজ করে কাস্টোমাইজড রিটেনশন বাড়ানো যায়। অনেক ই-মেইল সার্ভিস প্রোভাইডার আছে যারা আপনাকে নাম, কোম্পানিরনাম ইত্যাদির ভিত্তিতে ই-মেইল মার্ক করে রাখার সুযোগ দেয়। ক্রেতাদেরকে যদি তাদের নিজেদের নামে ডাকা যায়, তাহলে তারা খুশি হয়ে থাকে।সে ক্ষেত্রে তারা সাইটের প্রতি বেশি লয়াল হয়ে থাকে।
কাদের এটি ব্যবহার করা উচিত
সম্পূর্ণ পার্সোনালাইজেশন কৌশল অ্যাডভান্স ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করবেন, কিন্তু কিছু সাধারণ কৌশল যেমন ই-মেইল পার্সোনালাইজেশন প্রত্যেক স্টোর মালিক ব্যবহার করতে পারেন।
০৪. সাপোর্ট সিস্টেমস
টেকনিক্যাল প্রোডাক্টের জন্য খুবই উপকারী। সাপোর্ট সিস্টেম হচ্ছে কাস্টোমার সার্ভিস এবং সন্তুষ্টি বাড়াতে যা কিছু আপনার সাইটে যোগ করা হয় তাদের সমষ্টি। এই সিস্টেম হতে পারে হেল্প ডেস্ক সফটওয়্যার, যেমন- জেনডেস্ক (https://www.zendesk.com/), ফ্রেশডেস্ক (http://freshdesk.com/) অথবা লাইভ চ্যাট সফটওয়্যার, যেমন- ওলারক (https://www.olark.com/) অথবা জোপিম (https://www.zopim.com/)। এসব সাপোর্ট সিস্টেম কাস্টোমার ইস্যু এবং কনফ্লিক্ট দ্রুত এবং কার্যকরভাবে সমাধানে সাহায্য করে। এগুলো কিছু প্রধান প্রধান সুবিধা দিয়ে থাকে।
সাপোর্টের প্রথম সুবিধা হচ্ছে, এটি আপনাকে ওয়ান অন ওয়ান এক্সপেরিয়েন্স দেবে। আপনি খুব সহজেই কাস্টোমারদেরকে অ্যাড্রেস করতে এবং খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। খুব দ্রুত কোনো সংঘাত বা সমস্যার সমাধান মূলত একজন ক্রেতাকে লাইফটাইম ক্রেতা বানিয়ে থাকে। দ্বিতীয়ত, লাইভ চ্যাট সফটওয়্যার আপনাকে আপনার ক্রেতাদের সাথে তাৎক্ষণিকভাবে এনগেজড থাকতে সাহায্য করে। আর কাস্টোমার কানেকশন কাস্টোমার রিটেনশনের জন্য খুবই জরুরি।
কাদের এটি ব্যবহার করা উচিত
যেসব খুচরা ব্যবসায়ীর টেকনিক্যাল প্রোডাক্ট রয়েছে, কাস্টোমারদের কাছে সেগুলোর কিছু ব্যাখ্যার প্রয়োজন। অথবা এমন খুচরা ব্যবসায়ীযাদের পণ্য ইনস্টল করার দরকার হয়বা আপনার ক্রেতাদের যদি অতিরিক্ত তথ্য বা নির্দেশনার প্রয়োজন পড়ে।
০৫. সিআরএম
সাবস্ক্রিপশন মডেল ব্যবসায়ের জন্য একজন ক্রেতার পুরো সাইট ভিজিটের ট্র্যাক রেখে তার সন্তুষ্টি বাড়ানোর একটি টুল হলো সিআরএম। টোটাল কাস্টোমার রিটেনশন কৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সিআরএম টুল এই লিস্টের অন্যান্য টুলের সাথেই ব্যবহার করা হয়। আপনার সিআরএম ব্যবহার করে ট্র্যাক করতে পারেন কোন কাস্টোমার আপনার গেমিফিকেশনে কোন ব্যাজ পেয়েছেন, আপনার কাস্টোমার লয়ালিটি কর্মসূচিতে কোন কাস্টমার কত পয়েন্ট পেয়েছেন ইত্যাদি। একটি সিআরএমের অনেক অপারেশনাল সুবিধা রয়েছে। একই সাথেএটি কাস্টোমার রিটেনশনেও সাহায্য করে থাকে। যখন সব কাস্টোমারের তথ্য ওকথাবার্তা এক জায়গায় সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়, তখন চমৎকার কাস্টোমার এক্সপেরিয়েন্স দেয়া অনেক সহজ হয়ে যায় (এটিকে বলা যায় পুরো রিটেনশন কৌশলের মেরুদ-)।
কাদের এটি ব্যবহার করা উচিত
যেসব খুচরা ব্যবসায়ীর ইতোমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত কাস্টোমার বাড়ানোর প্রসেস রয়েছে এবং প্রতি কাস্টোমারের সাথে একাধিক কথোপকথন হিস্ট্রি রয়েছে। উচ্চ কাস্টোমার লাইফটাইম ভ্যালুর জন্য একটি সিআরএম খুব ভালো কাজ করে এবং বিশেষ করে সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক ই-কমার্সের জন্য বিশেষভাবে কার্যকর।একটি কাস্টোমার রিটেনশন কৌশলসব ই-কমার্স ব্যবসায়ীর জন্য লাভজনক। কাস্টোমার রিটেনশন হচ্ছে ভবিষৎতের ই-কমার্স! যেহেতু প্রতিনিয়তই অনেক অনেক ব্যবসায়ী অনলাইনে বিক্রি শুরু করছেন, তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই নতুন কাস্টোমার পাওয়া অনেক কঠিন এবং ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। তাই দিনে দিনে কাস্টোমার রিটেনশনের গুরুত্ব আরও বেড়ে যাবে।

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৬ - জানুয়ারী সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস