লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
লেখার ধরণ:
ডিজিটাল বাংলাদেশ
তথ্যসূত্র:
প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
ডিজিটাল বাংলাদেশের এক বছর
২০২১ সালের মধ্যে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, ব্যবসায় ও পরিবেশের উন্নয়ন, পরিবারপ্রতি অন্তত একজনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দেশকে একটি মাঝারি আয়ের দেশে উন্নীত করে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার নিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে। ক্ষমতায় আসার পরপরই উন্নতির জন্য তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো এবং এর প্রয়োগ সহজ, সর্বব্যাপী ও সাশ্রয়ী করার জন্য সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে। প্রথমবারের মতো ডিজিটালবান্ধব সরকার পাওয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অন্যান্য স্টেকহোল্ডারের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়।
বছর শেষে মূল্যায়ন করে দেখা যাচ্ছে, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে দেশে ডিজিটালপ্রযুক্তি ব্যবহার ও প্রয়োগের নানা উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছে। তবে, কিছু কিছু উদ্যোগ যথাযথ মনোযোগের অভাবে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে যেতে পারেনি।
বিভ্রান্তির অবসান
মহাজোটের নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা প্রথম উল্লেখ করা হয়। ক্ষমতায় আসার পর প্রথম দিকে ডিজিটাল বাংলাদেশের সংজ্ঞা এবং এর বিস্তৃতি নিয়ে অনেকে ইচ্ছে করেই বিভ্রান্তি তৈরিরও চেষ্টা করেন। বেশ কিছু ভুল ধারণার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কথা চালু হয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ অর্থ সবার কাছে কমপিউটার থাকবে এবং সবাই কমপিউটারে কাজ করবে। প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের যে কথাটি বলা হয়েছে, তা গ্রহণ করার পরিবর্তে কমপিউটারের সর্বজনীনতা মুখ্য হয়ে ওঠে। যদিও এই বিষয়টি যে সত্য নয়, তা সরকারি নানা কর্মকান্ডের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। অবশ্য এর কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছিল না। প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ২০২১ সালে এমন একটি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কথা কল্পনা করা হয়েছে, যার স্বপ্ন আমরা দেখে আসছি অনাদিকাল থেকে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ স্বপ্নের নাম দিয়েছেন ‘সোনার বাংলা’। এ হলো খেয়ে পরে বাঁচা, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ও উন্নত চিন্তার লালনকারী হওয়া এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠা করা। পরিবারপিছু অন্তত একজনের কর্মসংস্থানের সুযোগ, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সঙ্কট মোকাবেলায় সক্ষমতর হওয়ার লক্ষ্যও রয়েছে তাদের। দ্রব্যমূল্য সেখানে স্থিতিশীল থাকবে, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে, বিশ্বসভায় সবাই আমাদের দেশকে সম্মান করবে আর জাতি হিসেবেও আমরা হবো উন্নত। এই উন্নতির একটি মাপকাঠি যদি হয় জনপ্রতি আয়, তাহলে সেটি হবে মধ্যম আয়ের দেশ। একুশ শতকে সোনার বাংলা অর্জনের রাস্তা কী?
বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল দেশের সবার কর্মসংস্থান কী সরকার করতে পারবে? শুধু কৃষির ওপর ভিত্তি করে কী একটি দেশ মধ্যম আয়ের দেশ হতে পারবে? উত্তর হলো না। কৃষির ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে সেবা খাতকে বিকশিত করতে হবে। বিগত কয়েক বছরে আমাদের সবচেয়ে বিকশিত খাতের মধ্যে অন্যতম খাত হলো মোবাইল ফোনের খাত। এটি একটি ডিজিটালপ্রযুক্তি খাত। ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির জন্য থাকা চাই এমন সুযোগ, যাতে দেশে বসে অন্য দেশের কাজ করা যায়। এ জন্য তথ্যপ্রযুক্তির কোনো বিকল্প নেই। আর সম্পদ সৃষ্টি? সম্পদ সৃষ্টিতে জ্ঞানভিত্তিক সেবা ও পণ্যের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। ১৯৮৪ সালে একটি পার্সোনাল কমপিউটারের দাম ছিল ৩০০০ ডলার। সেই পিসি চালাতে যে অপারেটিং সিস্টেম লাগত, তার দাম ছিল মাত্র ১ ডলার। এখন ১০০০ ডলারের চেয়ে কম দামে তখনকার চেয়ে উন্নতমানের পিসি পাওয়া যায়। কিন্তু এর অপারেটিং সিস্টেমের দাম কমপক্ষে ২০০ ডলার! কাজেই বোঝা যাচ্ছে, সম্পদ সৃষ্টি করতে হলে জ্ঞানের কোনো বিকল্প নেই। তাহলে মধ্যম আয়ের দেশের জন্য আমাদের দেশজ উৎপাদন বাড়াতে হবে। সেখানেও লাগবে তথ্যপ্রযুক্তি। কাজেই দেখা যাচ্ছে, একুশ শতকের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করতে হলে ডিজিটালপ্রযুক্তির কোনো বিকল্প নেই। সে জন্যই ‘রূপকল্প ২০২১ : ডিজিটাল বাংলাদেশ’। বর্তমান সরকারের প্রথম বাজেট ঘোষণার সময় অর্থমন্ত্রী বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন- ‘‘আমাদের রূপকল্প অনুযায়ী ২০২০-২১ সাল নাগাদ আমরা এমন এক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে অর্থনীতির চালিকাশক্তি হবে উন্নত প্রযুক্তি ও উচ্চতর প্রবৃদ্ধি। সেই সম্ভাব্য বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল থাকবে, আয়-দারিদ্র্য ও মানব-দারিদ্র্য নেমে আসবে ন্যূনতম পর্যায়ে, সবার জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত হবে, ব্যাপকভাবে বিকশিত হবে মানুষের সৃজনশীলতা এবং সমতা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে, কমবে সামাজিক বৈষম্য, প্রতিষ্ঠা পাবে অংশীদারিত্বমূলক গণতন্ত্র এবং অর্জিত হবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট বিপর্যয় মোকাবেলার সক্ষমতা। সেই বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে বিকশিত হয়ে পরিচিত হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে।’’
বাস্তবায়ন : প্রথম ধাপ
ডিজিটাল বাংলাদেশ নামের রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য পর্যায়ক্রমে কয়েকটি বিষয় নিয়ে অগ্রসর হওয়া দরকার। প্রথমত একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, দ্বিতীয়ত প্রয়োজনীয় আইনী কাঠামো ও সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করা, যাতে মানুষের সৃজনশীলতা ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়। এর পরের ধাপের কাজগুলোর প্রথম অংশটি হলো কিছু কার্যকর উদাহরণ সৃষ্টি করা। এর পর রয়েছে প্রয়োজনীয় চালক প্রকল্প ও সহায়ক প্রকল্পগুলো নিয়ে সেগুলো বাস্তবায়ন করা। আমাদের দেশে একটি সংস্কৃতি রয়েছে- সবকিছু নতুন করে শুরু করা। তবে, দিনবদলের সরকার এই কাজটি করেনি। অনেক কাজ যা পূর্বে শুরু হয়েছে, সেগুলোকে চালু রেখে এগিয়ে নেয়ার কাজ নিচ্ছে সরকার। সাধারণভাবে বলা যায়, প্রথম বছরের কাজের মধ্যে অগ্রাধিকার পাওয়া উচিৎ পরিকল্পনা, নীতি, মুখ্য আইনী কাঠামো এবং কার্যকর উদাহরণ সৃষ্টি; যাতে আগামী দিনগুলোতে বৃহত্তর পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা যায়।
সহায়ক আইনী কাঠামো ও নীতি
একটি ডিজিটাল সমাজের জন্য প্রয়োজন আইনী কাঠামো ও নীতিমালা। চারদলীয় জোট সরকার তাদের শাসনামলের একেবারে শেষ সময়ে দেশে ইলেকট্রনিক লেনদেন, কমপিউটার অপরাধের তদন্ত ও বিচার ইত্যাদি সংক্রান্ত তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন-২০০৬ প্রণয়ন ও জারি করে। কিন্তু আইন প্রণয়নের তিন মাস পরই আইনটি অকার্যকর হয়ে যায় এর একটি ধারার কারণে। ৯ জুলাই ২০০৯ তারিখে বিজ্ঞান ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জাতীয় সংসদে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে আইনটিকে কার্যকর করা হয়েছে। এতে আমাদের ডিজিটাল লেনদেন এবং সাইবার অপরাধের আইনী কাঠামো গড়ে উঠেছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে মোবাইল ব্যাংকিং এবং ইন্টারনেটে ক্রেডিটকার্ড লেনদেনের দুয়ার উন্মোচন করতে পেরেছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রবাসীদের আয় তাদের পরিজনের কাছে পাঠানো সহজ হবে। অক্টোবরের ৮ তারিখে সরকার এই আইনের আওতায় ডিজিটাল স্বাক্ষর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রককে নিয়োগ দিয়েছে। সেই কর্তৃপক্ষ দেশে ডিজিটাল স্বাক্ষর চালুর জন্য প্রয়োজনীয় সচেতনতা সৃষ্টির কাজ করছে।
তারও আগে এপ্রিল ২০০৯ সালে সরকার জাতীয় তথ্য ও প্রযুক্তি নীতিমালা ২০০৯ গ্রহণ করে। ২০০৮ সালের পুরো সময়ে এটি প্রণীত হয়েছে। সরকারের বড় কৃতিত্ব এবং দৃষ্টিভঙ্গি বদলের এটি একটি উদাহরণ। কারণ, আমাদের পুরনো সংস্কৃতি হিসেবে একে ফেলে দিয়ে নতুন করে করার কথা! কিন্তু সরকার তাদের নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে এটিকে পরিমার্জন করে গ্রহণ করেছে এবং এই পরিমার্জনের জন্য এমনকি ১০০ দিন সময়ও নেয়নি। এই নীতিমালার আওতায় ৩০৬টি কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছে। এই ৩০৬টি কর্মপরিকল্পনা বিন্যস্ত হয়েছে ১০টি উদ্দেশ্যকে ঘিরে। এগুলোর মধ্যে আবার রয়েছে ৫৬টি নীতিগত কৌশল। বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই ৩০৬টি কর্মপরিকল্পনাকে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা অনুসারে বিন্যস্ত করে একটি কর্মপুস্তক প্রকাশ করা হয়েছে। জনগণ এবং মিডিয়া যাতে এই কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়নে নজরদারি করতে পারে সেজন্য সংস্থা অনুসারে প্রণীত কর্মপুস্তকটি বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে (www.bcc.net.bd) প্রকাশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে অনুরূপ নীতিমালা প্রণীত হলেও সেটি ছিল অসম্পূর্ণ, সেখানে নীতিমালায় উল্লিখিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে কোনো কর্মপরিকল্পনা ছিল না। ফলে, নীতিমালাটি অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সফল হতে পারেনি। এ কারণে এবারের নীতিমালাটি স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে লক্ষ্য পূরণে কার্যকর করা হয়েছে।
এছাড়া ২০০৮ সালে গৃহীত সচিবালয় নির্দেশিকা অনুযায়ী সরকারের সব স্তরে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ই-মেইলসহ আধুনিক ব্যবস্থাদি ব্যবহারে প্রজাতন্ত্রের সব কর্মকর্তাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের ফাইলে আধুনিক পদ্ধতির নম্বর চালু করার জন্য সবাইকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়/বিভাগের পাশাপাশি মাঠ প্রশাসনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ই-মেইলের মাধ্যমে দাপ্তরিক যোগাযোগ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সাথে কেন্দ্রীয় সরকারের সর্বক্ষণিক যোগাযোগ নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে ইন্টারনেট সংযোগসহ ল্যাপটপ কমপিউটার সরবরাহ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
ডিজিটাল জগতে বাংলা ভাষা
দেশের সাধারণ জনগণকে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে একটি সংযুক্তির আওতায় আনতে হলে তার বাহন হতে হবে বাংলা ভাষা। দীর্ঘদিন ধরে কমপিউটিংয়ে বাংলা ভাষার ব্যবহারের নানা জটিলতা রয়েছে। ডিজিটালপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার ব্যবহার জোরদার করার জন্য এর প্রমিতায়ণ দরকার। এ লক্ষ্যে সরকার একটি প্রমিতকরণ কমিটি গঠন করেছে। কমিটি ইতোমধ্যে দুইটি সভায় মিলিত হয়েছে এবং ইউনিকোডকে বাংলা প্রমিত মান হিসেবে গ্রহণ করার সুপারিশ করেছে। ইতোমধ্যে দেশের জাতীয় পোর্টালসহ (www.bangladesh.gov.bd) বেশ কিছু ওয়েবসাইট ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাতেও প্রকাশ করা হয়েছে। আবার কোনো কোনো ওয়েবসাইট শুধু বাংলা ভাষায় (যেমন www.molwa.gov.bd) প্রকাশ করা হয়েছে। মোবাইল ফোনে বাংলা বার্তা আদান-প্রদানের বিষয়টি প্রমিতায়ণের জন্য প্রাথমিক একটি মান প্রস্তাব করা হয়েছে। বাংলা ওসিআরসহ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে গবেষণা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
টেলিযোগাযোগ ও অবকাঠামো
দায়িত্ব নেয়ার কয়েকদিনের মধ্যে দেশজুড়ে ফাইবার অপটিকের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য সরকার একটি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয়। শুধু তাই নয়, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির ফাইবার নেটওয়ার্ক যাতে অন্যরা ব্যবহার করতে পারে, তার জন্য তাও উন্মুক্ত করা হয়েছে। জনগণের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে টেলিযোগাযোগ সেবা যোগানোর সুবিধার্থে আইএসপি তথা ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠানগুলোর আইপি টেলিফোনি লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এর ফলে অপেক্ষাকৃত সাশ্রয়ী ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের কম খরচে দেশে ও বিদেশে টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ পাওয়ার কথা। দেশে ইন্টারনেট সেবার বিস্তৃতি ঘটানোর জন্য সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে প্রাপ্ত ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথের মূল্য ৩৩ শতাংশ কমানো হয়েছে। মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার উন্মুক্ত করা হয়েছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছয় মাসে ৩০ শতাংশ বলে অনুমান করা হচ্ছে। দেশে বর্তমানে ৫০ লাখেরও বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪৬ লাখ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। দুইটি ওয়াইম্যাক্স সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান তাদের সেবা যোগানো শুরু করেছে।
জনগণের দোরগোড়ায় সেবা
তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সরকারি ও নাগরিক সেবাগুলো জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়ার কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করা হয়েছে। ২০০৮ সালে শুধু চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎগ্রাহকরা তাদের বিদ্যুৎবিল ঘরে বসে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বা মোবাইল অপারেটরের নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে দিতে পারত। এই সরকার তার মেয়াদকালের মাত্র ৯ মাসের মধ্যে এই সেবাকে ঢাকা, সিলেট, পাবনা, রাজশাহীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সম্প্রসারিত করেছে। শুধু তাই নয়, বিদ্যুতের পাশাপাশি গ্যাস ও টেলিফোন বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে এই সেবাকে সম্প্রসারিত করা হয়েছে। ফলে, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে, হয়রানিমূলক ব্যবস্থায় পরিষেবা বিল পরিশোধের পরিবর্তে ভোক্তারা ঘরে বসে কিংবা কাছাকাছি যেকোনো কেন্দ্রে বিল পরিশোধের সুযোগ পাচ্ছেন। বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে অফিস সময়ের পর। অর্থাৎ সেবা পাওয়ার জন্য কাজের সময় নষ্ট হচ্ছে না।
বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেনের সময়সূচি, ভাড়া ও আসন পাওয়ার খবর এখন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে। সিরাজগঞ্জ ও কক্সবাজারে মোবাইল সম্প্রচারের মাধ্যমে দুর্যোগের আগাম খবর প্রচারের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সরকারি তথ্যসেবা জোরদার করার জন্য বিভিন্ন সংস্থার ওয়েবসাইট প্রকাশ ও তা নিয়মিত হালনাগাদ করার বিষয়ে কর্মতৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে (www.molwa.gov.bd)। ইতোমধ্যে ১৯টি জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইট চালু হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে পাসপোর্ট, ভূমি উন্নয়ন কর ইত্যাদি তথ্যপ্রাপ্তি সহজ হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬৪টি জেলা পোর্টালও তৈরি করা হয়েছে, যা শিগগির প্রকাশিত হবে। ভূমি ব্যবস্থাপনায় ডিজিটালপ্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ হিসেবে ডিজিটাল জরিপকাজ শুরু করা হয়েছে। আর ঢাকা জেলার জমির সব তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। নওগাঁ ও নাটোরের দুইটি চিনিকলে মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে পুঁজি ব্যবস্থাপনার সফল পাইলটিং সম্পন্ন করা হয়েছে।
শিক্ষা ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনা
শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। চলমান কার্যাবলি সম্প্রসারণ ও নতুন নতুন বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ২০০৯ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশে মোবাইল ও ওয়েবসাইটের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ই-মেইলে ফল পাঠানো হয়েছে। সব সরকারি কলেজে ইন্টারনেট সংযোগ ও ই-মেইল চালু করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। প্রাথমিক স্কুলে ইন্টারনেটের প্রসার ঘটানোর জন্য স্কুলে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সংযোগের বিধান করা হয়েছে।
একটি প্রতিষ্ঠানের উপাত্ত যাতে অন্য প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করতে পারে সেজন্য সব প্রতিষ্ঠানকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। শিক্ষাবোর্ডের তথ্য ব্যবহার করে মোবাইল ফোনে ভর্তি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। আরো ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের ভর্তি কার্যক্রমে আইসিটির ব্যবহার বাড়িয়েছে। আশা করা যায়, আগামী বছরের মধ্যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তি কার্যক্রমে আইসিটির সর্বোচ্চ ব্যবহার শিক্ষার্থীদের অহেতুক হয়রানি ও ভোগান্তির চির অবসান ঘটাতে সক্ষম হবে। এই প্রথমবারের মতো মেডিক্যাল কলেজের ভর্তিপরীক্ষা ও প্রাথমিক পরীক্ষার ফল মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।
দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি সমন্বিত নেটওয়ার্ক (বিডিরেন) গড়ে তোলার জন্য একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছে বিনামূল্যে ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়ার জন্য সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমিত পরিসরে ওয়াইফাই জোন স্থাপন করা হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষাকে তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা বেশ গতি পেয়েছে। বিজ্ঞান এবং আইসিটি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ইতোমধ্যে ৬৪ জেলায় ১২৮টি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূর্ণাঙ্গ কমপিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠিত এসব ল্যাবগুলো ব্যবহার করে কমপিউটার শিক্ষা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, জেলা পর্যায়ের সব সরকারি কর্মকর্তাদের কমপিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এ কার্যক্রম দেশের প্রতিটি উপজেলায় সম্প্রসারণ করা হবে। বিভিন্ন বেসরকারি উদ্যোগে স্কুলে কমপিউটার শিক্ষা কার্যক্রমও ব্যপ্তি পেয়েছে। এরই মধ্যে এ ধরনের স্কুলের সংখ্যা ১৫০টির বেশি হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠ্যপুস্তক পৌঁছানো নিশ্চিত করার জন্য সব পাঠ্যপুস্তক ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হচ্ছে (www.nctb.gov.bd)। শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে ইন্টারনেট থেকে পাঠ্যপুস্তক ডাউনলোড করে নিতে পারবে।
পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের হাইটেক পার্কে একটি আইসিটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও কৃষি
দেশের ৮০০ হেলথ সেন্টারে ইন্টারনেট ও মোবাইল সংযোগ দেয়া হয়েছে। উপজেলা স্থাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকদের মোবাইল ফোন দেয়া হয়েছে, যা ২৪ ঘণ্টা সেবা দেয়ার জন্য উন্মুক্ত থাকে। ফলে, বাজার দামে মোবাইল ফোনে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া শুরু হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে স্থাস্থ্যখাতের ব্যবস্থাপনায়ও আইসিটির প্রয়োগ নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এখন জেলা সদর বা মহাপরিচালকের দফতর থেকে থানা বা গ্রাম পর্যায়ের ৮০০ কেন্দ্রের চিকিৎসকদের সাথে ভিডিও কনফারেন্স করতে পারেন। ফলে, দায়িত্বরত চিকিৎসকের পক্ষে স্টেশনে না থাকার বিষয়টি অনেক বেশি নজরদারিতে আনা সম্ভব হয়েছে। ফরিদপুরসহ একাধিক স্থানে টেলিমেডিসিন সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে। বেসরকারি উদ্যোগে আমেরিকার সাথে একটি টেলিমেডিসিন চিকিৎসাকেন্দ্র চালু হয়েছে। দেশে বর্তমানে একাধিক মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা চালু হয়েছে। জনসাধারণ টেলিফোনে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে।
কৃষকদের কাছে কৃষি তথ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য গ্রাম পর্যায়ে কৃষি তথ্য ও যোগাযোগকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিভিন্ন মোবাইল অপারেট ও উদ্যোক্তাদের উদ্যোগে মোবাইলে স্বাস্থ্য ও কৃষিতথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
সর্বজনীন প্রবেশাধিকার
সর্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য এলাকাভিত্তিতে কমিউনিটি ই-সেন্টার/টেলিসেন্টার গড়ে তোলার কার্যক্রমে শরিক হয়েছে সরকার। চলতি বছরে ৫টি উপজেলা তথ্যকেন্দ্র, ৩০টি ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র, ২০টি মৎস্য তথ্য ও যোগাযোগকেন্দ্র ও ২০টি কৃষি তথ্য ও যোগাযোগকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদে তথ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। তথ্যকেন্দ্র গড়ে তোলার কাজে স্থানীয় ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। দেশে বর্তমানে ২৩০০টির বেশি তথ্যকেন্দ্র গড়ে উঠেছে।
ব্যবসায়বান্ধব পরিবেশ
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের পর ঢাকা কাস্টম হাউসে অনলাইন পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে। পাশাপাশি রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে কোম্পানি নিবন্ধন প্রক্রিয়া অনলাইন করা হয়েছে। ফলে, ব্যবসায় চালুর প্রথম ধাপের কাজটি হয়রানি ছাড়া করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকে অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউস চালুর কার্যক্রম নভেম্বর মাস থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে ।
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স যাতে উপকারভোগী তাৎক্ষিণকভাবে পেতে পারে সেজন্য সরকার পরীক্ষামূলকভাবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করার জন্য কয়েকটি বাণিজ্যিক ব্যাংককে অনুমতি দিয়েছে। এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রবাসীদের আয় তাদের পরিজনের কাছে পাঠানো সহজ হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইন্টারনেটে স্থানীয় মুদ্রার ক্রেডিট কার্ড লেনদেনের অনুমতি দিয়েছে।
কালিয়াকৈরে ২৩২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হাইটেক পার্কের কাজ এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে এই পার্কের জন্য আইনী কাঠামো হাইটেট পার্ক অথরিটি আইন ২০০৯ গত ২৪ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। দেশের আরো কয়েকটি স্থানে সফটওয়্যার পার্ক এবং মহাখালীতে একটি আইটি ভিলেজ স্থাপনের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। কারওয়ান বাজারে দেশের একমাত্র আইসিটি ইনকিউবেটরের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
আইসিটি খাতের মানবসম্পদ উন্নয়ন
দেশের আইটি খাতের বিকাশের জন্য প্রয়োজন দক্ষ মানবসম্পদ। দেখা গেছে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সদ্য পাস করা গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে ইন্ডাস্ট্রি চাহিদার কিছু ঘাটতি থাকে। এই অপূর্ণতা পূরণে চলমান আইসিটি ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামকে জোরদার করা হয়েছে। চলতি এই কার্যক্রমের আওতায় মোট ১০৪০ জন ইন্টার্নিকে বাছাই করা হয়েছে। এই ইন্টার্নিদের ভাতার একটি অংশ (৬০%) সরকার বহন করছে। এর পাশাপাশি গ্র্যাজুয়েটদের মান উন্নয়নের জন্য আইসিটি ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি (আইসিডিসি) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সরকারের পাশে
সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগও বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ডিজিটাল উৎসব, আইটি মেলা এমনকি বাগেরহাটে একটি জ্ঞান উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এসব আয়োজনে বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি (বিসিএস), বেসিস ও বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) কর্মকান্ড বিশেষভাবে নজরে এসেছে। বিসিএসের উদ্যোগে নভেম্বরে একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্মেলন হয়েছে। সরকারের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে বিসিএস। এসব কর্মকান্ড তৃণমূল পর্যায়ে কমপিউটারের প্রতি মানুষের আগ্রহ অনেকখানি বাড়িয়েছে। বিডিওএসএনের ওয়েবসাইট থেকে মাত্র একদিনে ওপেন অফিস ও উবুন্টুর বাংলা ভাষার সহায়িকা ১০ হাজারের বেশিবার ডাউনলোড হয়েছে, যা উন্মুক্ত সোর্সকোডভিত্তিক সফটওয়্যারের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ার কথা জানান দিয়েছে। নোকিয়ার পক্ষ থেকে ডিজিটাল সচেতনতা বাড়ানোর জন্য দুইটি আইটি বাস দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই বাসের মাধ্যমে জনগণ ইন্টারনেট সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারছে। পাশাপাশি ইন্টারনেটে নিজস্ব ই-মেইল অ্যাকাউন্ট তৈরির প্রাপ্যতা অনেক বেড়েছে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসের তুলনায় ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশী ই-মেইল অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়ে ওঠার হার ১৮০ শতাংশ। এর জন্য তিনটি বিশেষ প্রপঞ্চকে চিহ্নিত করা যায়। প্রথমত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চার্য নির্বাচনে কক্সবাজার ও সুন্দরবনকে ভোট দান। এ জন্য অনেকে নতুন ই-মেইল অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। এর পর রয়েছে সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুক (www.facebook.com)-এর উত্থান। ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য অনেকের ই-মেইল ঠিকানা আবশ্যক। এর বাইরে রয়েছে মোবাইল ফোন কোম্পানি নোকিয়ার অভি মেইলের উদ্যোগ। বছর শেষে প্রায় ২ লাখ অভি মেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়েছে।
আরো যা হতে পারত
অনেক ভালো উদ্যোগ থাকলেও বেশকিছু কাজ হতে পারত, যা হয়নি। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মতো ঢাকা কাস্টম হাউসের অটোমেশনের সব কিছু সম্পন্ন হওয়ার পর সেটি চালু না হওয়া। অথচ অর্থমন্ত্রী এই কার্যক্রমের উদ্বোধনও করেছেন। এই উদ্যোগটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের আরেকটি সফল উদাহরণ। কিন্তু কতিপয় সিএন্ডএফ এজেন্টের বিরোধিতায় ও কিছু সরকারি কর্মকর্তার মদদদানের ফলে এই সিস্টেমটি এখনো চালু হয়নি।
যথারীতি টেলিযোগাযোগ খাতের একটি বিশৃঙ্খল ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক দূর টেলিযোগাযোগ নীতিমালা-২০০৭ সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। ২০০৭ সালের এই নীতিমালায় ভয়েস ও ডাটার যে কৃত্রিম বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে, তা পৃথিবীতে বিরল। ফলে, বিদেশের সাথে টেলিযোগাযোগ সার্ভিসের তেমন একটা উন্নতি হয়নি। উন্মুক্ত হয়নি ভিওআইপি।
অন্যদিকে, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথের ওপর মনোপলিরও অবসান হয়নি। তাছাড়া জোট সরকারের আমলে Sea-Me-We4-এর সমঝোতা স্মারকে যুক্ত করা প্রতিযোগিতাবিরোধী বিশেষ ধারাটিও বাতিল করা হয়নি। ফলে, কনসোর্টিয়ামভুক্ত আন্তর্জাতিক অপারেটরদের দেশে বিনিয়োগের কোনো সুযোগ তৈরি হয়নি। একইভাবে, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথের বিকল্প উৎস না থাকায় আইএসপিদের চড়া দামের ভিস্যাট (V-Sat) অব্যাহত রাখতে হয়েছে। আইপি টেলিফোনি চালু হলেও এর সাথে একটি পুরনো প্রযুক্তিকে অহেতুক জুড়ে দেয়া হয়েছে।
চালু হয়নি সচিবালয়ের ব্যাকবোন নেটওয়ার্কটি। মাস তিনেকের মতো পিছিয়ে যাওয়ায় সরকারের নিজস্ব নেটওয়ার্ক ‘বাংলা গভনেট’-এর কাজ শুরু হয়নি। যেমনটি শুরু হয়নি জাতীয় উপাত্তকেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ। বছর শেষের একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, সরকারি ওয়েবসাইটগুলো এখনো অনেক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারিনি।
শেষের কথা
ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রথম বছর হিসেবে ২০০৯ সালকে অনেকখানি সফল বলা চলে। পরিকল্পনা, আইনী কাঠামো এবং উদাহরণ সৃষ্টির ব্যাপারে উদ্যোগগুলোকে সফল বলা চলে। কিন্তু, বড় আকারের কোনো উদ্যোগ চলতি বছরে শুরু হয়নি। তবে এই বছরে সরকারি তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন সম্ভবত এই খাতের সমন্বয়ক হিসেবে বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সামনে আসা। গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের ক্ষেত্রে এটি একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ২০০৯ সালের বাংলাদেশে উলে¬খযোগ্য ঘটনা বিসিএস ডিজিটাল এক্সপো ২০০৯
বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি ২৫ থেকে ২৮ মার্চ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজন করে বিসিএস ডিজিটাল এক্সপো ২০০৯। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে ডিজিটালপ্রযুক্তির কার্যকর প্রসার, ব্যবহার ও শিল্প বিকাশ এবং ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নির্মাণের সূচনা করতেই বিসিএস এ মেলার আয়োজন করে। মেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালের মাধ্যমিক স্তরে ও ২০১৫ সালের মধ্যে প্রাথমিক স্তরে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা বাধ্যতামূলক এছাড়া দেশে ই-টিকেট, ই-বিল, ই-টেন্ডারসহ ই-গভর্নেন্স চালু হবে।’
শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তি : ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি
শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় গত ২৭ মার্চ ২০০৯-এ। বিসিএস আয়োজিত গোলটেবিলে ইউএনডিপি বাংলাদেশ কৌশলগত সহযোগী হিসেবে সহায়তা দেয়।
ডবি¬উসিআইডি ২০০৯
‘উন্নয়নের জন্য আইসিটি’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে এই সম্মেলনের আয়োজন। বিশ্বের নামকরা কিছু গবেষকের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এই ‘ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস’ যেখানে জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের আইটি প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
ডব্লিউসিআইডি ২০০৯ সম্মেলনের মূল থিম ছিল আইসিটি ব্যবহার করে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে ১০ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় ওয়াল্ড কংগ্রেস অন আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট তথা ডবি¬উসিআইডি ২০০৯ সম্মেলনে অংশ নেয় বাংলাদেশ। এ সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে ১২টি থিমের ওপর ৩৪টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।
আইজেএফ সম্মেলনে বাংলাদেশ
১৫-১৮ নভেম্বর ২০০৯ মিসরের পর্যটন শহর শার্ম আল শেখে অনুষ্ঠিত হয় ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম তথা আইজিএফের চতুর্থ বার্ষিক সম্মেলন। জাতিসংঘের উদ্যোগে মিসরের যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আয়োজিত চারদিনব্যাপী এ সম্মেলনে পৃথিবীর ১১২টি দেশের ১৮০০ প্রতিনিধি অংশ নেন। বাংলাদেশ এ সম্মেলনে অংশ নেয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু’র নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেয়। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন- সংসদ সদস্য ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী; ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির একান্ত সচিব মো: মিজানুর রহমান; বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক অ্যান্ড রেডিও কমিউনিকেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম বজলুর রহমান এবং মাসিক কমপিউটার জগৎ-এর সহকারী সম্পাদক এম. এ. হক অনু। আইজেএফ সম্মেলনে আইকান প্রধানের সাথে টপলেভেল ডোমেইনে বাংলা বর্ণমালা অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
ডিজিটাল স্বাক্ষর ও বাংলাদেশ
ডিজিটাল সই বা ইলেক্ট্রনিক সই সম্পর্কে জনগণের মাঝে সচেতনতা তৈরির জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।
ইলেক্ট্রনিক সই ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় মান এবং অবকাঠামো নির্ধারণের জন্য কিছু বিধি দরকার। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সেই বিধি প্রণয়ন করা হয়ে থাকে। ২০০৬ সালের পাস হওয়া আইনে ৯০ দিনের সেই সীমারেখার ফাঁপরে পড়ে তখন ইলেক্ট্রনিক সই ব্যবস্থার কাজটি স্থগিত হয়ে যায়। এরপর জুলাই ২০০৯-এই আইনটি সংশোধন করা হয়।
জ্ঞান উৎসব ২০০৯
বেসরকারি সংস্থা ‘আমাদের গ্রাম’-এর আয়োজনে জেলা বাগেরহাট পালন করল তৃণমূল পর্যায়ের এ উৎসব। ‘বাগেরহাট হবে ডিজিটাল’-এই স্লোগানকে ভিত্তি করে গত ২-৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হলো জ্ঞান উৎসব ২০০৯। দুই দিনব্যাপী এ জ্ঞান উৎসবের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয় সেমিনার, সমাবেশ, শোভাযাত্রা, আলোচনা অনুষ্ঠান ও স্থানীয় সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী পরিচালিত ঐতিবাহী সাংস্কৃতিক পট।
বিসিএস আইসিটি ওয়ার্ল্ড ২০০৯
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ও ‘ওয়ে টু ডিজিটাল বাংলাদেশ’ স্লোগান নিয়ে রাজধানীর শেরেবাংলানগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো ‘বিসিএস আইসিটি ওয়ার্ল্ড ২০০৯’। বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি তথা বিসিএস আয়োজিত ৫ দিনব্যাপী এ মেলা শুরু ১৭ নভেম্বর। শেষ হয় ২১ নভেম্বর।
মেলা উদ্বোধনের সময় জাতীয় সংসদের স্পিকার আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট বলেন, প্রযুক্তিবান্ধব বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার ক্ষমতায় থাকার সময় কমপিউটারের ওপর থেকে শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারে পাশাপাশি ভেঙ্গে দিয়েছিলেন মোবাইল ফোনের মনোপলি ব্যবসা, তথ্যপ্রযুক্তিকে ঘোষণা করেন থ্রাস্ট সেক্টর হিসেবে এবং গঠিত হয়েছিল টাস্কফোর্স।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে প্রয়োজন শক্তিশালী বিসিসি
বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়তে প্রয়োজন ‘বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিল’ তথা বিসিসি’র কার্যকর ভূমিকা। এজন্য বিসিসি-কে দক্ষ জনবল, প্রয়োজনীয় অর্থ ও অবকাঠামোগত সুবিধা দিয়ে একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে হবে। রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। মাসিক কমপিউটার জগৎ গত ২৪ অক্টোবর এ বৈঠকের আয়োজন করে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ সামিট ২০০৯
বর্তমান বিশ্ব তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর এক আধুনিক বিশ্বে পরিণত হয়েছে। সে তুলনায় উন্নয়নশীল দেশগুলো পিছিয়ে আছে। এই খাতের উন্নয়ন দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও জনগণের কল্যাণ বয়ে আনবে। ২০০৯ সালের ২২ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি তথা বিসিএস আয়োজিত ডিজিটাল বাংলাদেশ সামিট ২০০৯ অনুষ্ঠিত হয়।
আইসিটি ওয়ার্ল্ডে সেরা আকর্ষণ ছিল কমপিউটার জগৎ-এর লাইভ ওয়েবকাস্ট। কমপিউটার জগৎ ডট কম ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ‘ইউ আর লাইভ’ সে¬াগানে প্রতিদিন মেলা এবং সেমিনারগুলো সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। ওয়েবসাইট : comjagat. com।
ফিন্যান্সিয়াল আইটি কেস প্রতিযোগিতা শুরু
সিটি ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বাংলাদেশে এই প্রথম ‘ফিন্যান্সিয়াল আইটি কেস প্রতিযোগিতা’র আয়োজন করেছে ডি.নেট। সিটি ফাউন্ডেশনের সহায়তায় আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীদের ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির সফল ব্যবহারের লক্ষ্যে জ্ঞান বৃদ্ধি করা। বিজয়ীরা পুরস্কার হিসেবে ৫ হাজার ডলার পায়।
১৭ জুন ইউল্যাব কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রোগ্রামটি উদ্বোধন হয় এবং ১০ নভেম্বর রাজধানীর এক হোটেলে প্রতিযোগিতার ফল ঘোষণা ও বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪টি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়, যার মধ্যে ৮টি সরকারি এবং ১২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
দ্বাদশ আন্তর্জাতিক কমপিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি কনফারেন্স ২০০৯ (আইসিসিআইটি)
পথের আলোর মতো তথ্যপ্রযুক্তি গ্লোবাল ভিলেজ ধারণাটি বৈশ্বিক উন্নতিতে রেখে চলেছে দৃপ্ত পদচারণা। এ চলা যত বেগবান হবে ততই বিকশিত হতে থাকবে মানুষের ক্রমবর্ধমান উন্নতি। এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে গত ২১ থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘দ্বাদশ আন্তর্জাতিক কমপিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি কনফারেন্স ২০০৯’ (আইসিসিআইটি) অনুষ্ঠিত হয়েছে আইইউবি’র নতুন ক্যাম্পাস বসুন্ধরা ঢাকায়। স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কমপিউটার সায়েন্স ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) এবং ডিপার্টমেন্ট অব কনফারেন্স কমপিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির যৌথ আয়োজনে এ কনফারেন্স ২০০৯ অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের আয়োজিত এ কনফারেন্সের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল কমপিউটার প্রযুক্তি বিষয়ক সমস্যার সমাধান ও তথ্যপ্রযুক্তি। এর ফলে সম্ভাবনার একটি নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে । দেশের ও বিদেশের প্রথিতযশা বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে তাদের সুস্পষ্ট মতামত ও সুপারিশ প্রদান করেন। এ জন্য ২৬টি দেশ থেকে ৪৭৩টি প্রবন্ধ জমা পড়ে প্রাথমিকভাবে এ জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক বাছাই কমিটিতে। ১৪ টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক বাছাই কমিটির মধ্য হতে ২১টি দেশের ১৫০টি প্রবন্ধ চূড়ান্ত করা হয়।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : munir.hasan@bdosn.org