• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > যেভাবে পিসি রেসকিউ করা যায়
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: তাসনীম মাহ্‌মুদ
মোট লেখা:১২৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১০ - নভেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সফটওয়্যার->গাইড
তথ্যসূত্র:
ব্যবহারকারীর পাতা
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
যেভাবে পিসি রেসকিউ করা যায়

কখনো কখনো পিসি স্বাভাবিকভাবে স্টার্ট হয় না বিভিন্ন সমস্যার কারণে। সমস্যাগুলোর মধ্যে আছে প্রোগ্রাম যথাযথভাবে রান না করা বা ইন্টারনেট সংযোগ নিরবচ্ছিন্ন না হওয়া এবং বিরক্তিকর হওয়া। উইন্ডোজ লোড না হলে নিজেকে অসহায় মনে হতে পারে। যদি পিসি স্টার্ট না হয় কোনো কিছু পরিবর্তন করার জন্য, তাহলে কিভাবে পিসির সমস্যা দূর করা সম্ভব? এমন প্রশ্নের উত্তরের সন্ধানে আমাদেরকে সবসময় ছোটাছুটি করতে হয় অভিজ্ঞদের কাছে। যদিও সবকিছু স্বাভাবিকভাবে ফিরে পাবার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সহায়ক টুল। এবারের ব্যবহারকারীর পাতায় পিসির সমস্যা নিরূপণসহ হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমস্যা ফিক্স করার কৌশল দেখানো হয়েছে। এছাড়াও ব্যবহারকারীর উদ্দেশে দুটি ফ্লোচার্ট উপস্থাপন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে আপনি ধাপে ধাপে উইন্ডোজ এক্সপি ও ভিস্তা স্টার্ট করতে পারবেন খুব সহজেই।

প্রথম ধাপ

উইন্ডোজ লোড না হলে প্রথমেই আপনাকে দেখতে হবে সমস্যাটি কি হার্ডওয়্যার নাকি সফটওয়্যারসংশ্লিষ্ট কি না। উইন্ডোজ লোড হবার সময় যদি উইন্ডোজ লোগো প্রদর্শিত হয়, তাহলে বুঝতে হবে সমস্যাটি সফটওয়্যারসংশ্লিষ্ট। আর যদি মনিটরে উইন্ডোজ লোগো প্রদর্শিত হবার আগেই কমপিউটার ক্র্যাশ করে, তাহলে বুঝে নিতে হবে সমস্যাটি হার্ডওয়্যারসংশ্লিষ্ট।

যদি সমস্যাটি হার্ডওয়্যারসংশ্লিষ্ট হয়, তাহলে সমস্যা নিরূপণে পদ্ধতিগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এ লেখায় ফ্লোচার্ট দুটি সমস্যা নিরূপণের প্রথম ধাপ হিসেবে কাজ করতে পারে, যা নির্ভর করে মনিটর কিছু প্রদর্শন করলে। যদি কমপিউটার স্টার্ট হয়, অথচ মনিটর ব্ল্যাঙ্ক থাকে, তাহলে চেক করে দেখুন সব ক্যাবল যথাযথভাবে কানেকটেড কি না এবং মনিটর সঠিক ইনপুটে কানেকটেড কি না। সব ইনপুট চেক করে দেখুন কাজ করতে পারে।

দ্বিতীয় ধাপ

যদি স্ক্রিনে কোনো কিছু না আসে, তাহলে পিসি থেকে আসা শব্দ শোনার চেষ্টা করুন। যদি হার্ডডিস্ক স্বাভাবিকভাবে শোঁ শোঁ শব্দ করে তাহলে ধরে নিতে পারেন সমস্যাটি সম্ভবত মনিটরের। যদি হার্ডডিস্ক বিস্ময়কর গ্রাইন্ডিং শব্দ করে তাহলে ধরে নিতে পারেন খুব শিগগির গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।

যদি পিসি ইন্টারনাল স্পিকারযুক্ত হয়, তাহলে পিসির সুইচ অন করার সাথে সাথে একটি বিপ শব্দ শোনা যাবে। কিন্তু এর পরিবর্তে অস্বাভাবিক ধারাবাহিক বিপ শব্দ শোনা গেলে বুঝে নিতে হবে পিসি আপনাকে কোনো সমস্যার জন্য সতর্ক করছে। এক্ষেত্রে মাদারবোর্ড ম্যানুয়াল দেখে জেনে নেয়া উচিত বিভিন্ন ধরনের বিপ কোড কি ইঙ্গিত করে। সাধারণ সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে ত্রুটিপূর্ণ প্রসেসর বা মেমরি মডিউলসংশ্লিষ্ট এবং বিপ কোড সাধারণত নির্দেশ করে সুনির্দিষ্ট ফিক্সের প্রতি।

পাওয়ার বাটন চাপার পর যদি কোনো কিছু না ঘটে, তাহলে মোটামুটি কম খরচে সমস্যা ফিক্স করা যেতে পারে। সব পিসিতেই পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট (পিএসইউ) থাকে। এটি মূল বিদ্যুৎকে কম ভোল্টেজে পরিণত করে, যা কমপিউটার কম্পোনেন্টের জন্য দরকার হয়। এগুলো দৈবক্রমে অচল হয়ে যেতে পারে।



যদি পিএসইউ অচল হয়ে যায়, তাহলে পিসি কাজ করবে না। এ অবস্থায় পিএসইউকে বদলিয়ে ফেলা উচিত। পিএসইউ তুলনামূলকভাবে বেশ সস্তা হলেও নতুন পিএসইউ কেনার আগে কিছু কিছু বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। যেমন ভিন্ন কোনো পাওয়ার ক্যাবল ব্যবহারের কারণে ফিউজ নষ্ট হয়ে গেছে কি না। কোনো পিসিতে একাধিক পাওয়ার সুইচ থাকে। এক্ষেত্রে একটি থাকে পেছনে। পেছনের সুইচটি অফ হয়ে গেছে কি না তা চেক করে দেখুন।

তৃতীয় ধাপ- সাম্প্রতিক আপগ্রেড

সম্প্রতি পিসিতে নতুন কোনো হার্ডওয়্যার ইনস্টল করে থাকলে সেটি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে এবং উইন্ডোজ লোডিংয়ের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং এ ক্ষেত্রে নতুন ইনস্টল করা এ হার্ডওয়্যারকে অপসারণ করে চেষ্টা করা উচিত।

একইভাবে আপনার পিসি যদি হঠাৎ কোনো বড় ধরনের ঝাঁকুনি খায় বা এক জায়গা থেকে অন্য কোনো জায়গায় স্থানান্তর করানো হয়, তাহলে পিসির অভ্যন্তরীণ কম্পোনেন্টগুলো নড়ে যেতে পারে।

যদি পিসি স্টার্ট না হয়, তাহলে পিসির জন্য অত্যাবশ্যকীয় নয়, এমন সব হার্ডওয়্যার যেমন- প্রিন্টার, স্ক্যানার, ইউএসবি, মডেম, ওয়্যারলেস, কিবোর্ড বা মাউস রিসিভার প্রভৃতি একটি একটি করে অপসারণ করে দেখুন পিসি স্টার্ট হয় কি না। এরপরও যদি পিসি স্টার্ট না হয়, তাহলে পিসির জন্য অত্যাবশ্যকীয় নয় এমন ইন্টারনাল কম্পোনেন্ট যেমন- সাউন্ডকার্ড এবং টিভি টিউনার প্রভৃতি অপসারণ করে চেষ্টা করে দেখুন। এভাবে প্রতিবার একের পর এক পিসির কম্পোনেন্ট অপসারণ ও স্টার্ট করে দেখুন কোন কম্পোনেন্ট সমস্যা সৃষ্টি করছে।

পিসি ওপেন করার পর এর প্রতিটি কম্পোনেন্ট ও ক্যাবল চেক করে দেখা উচিত। এসব কম্পোনেন্ট ও ক্যাবল যেনো নিরাপদভাবে যুক্ত থাকে, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। যদি কম্পোনেন্ট সংযোগ ঢিলা বা লুজ থাকে তাহলে সতর্কতার সাথে চাপ দিয়ে সংযোগকে সুদৃঢ় করুন। এছাড়া কেসের ভেতরে কোনো স্ক্রু যেন লুজ বা ঢিলা না থাকে এবং কোনো ফ্যানে যেন জ্যামিং তার না থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। পিসি কেসের ভেতর ধূলাবালি পূর্ণ হলে এয়ার ব্লো ব্যবহার করে তা দূর করুন।

চতুর্থ ধাপ- বায়োস

উইন্ডোজ লোগো প্রদর্শিত হবার আগেই যদি কমপিউটার ফ্রিজ বা স্থির হয়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে এ সমস্যাটি মূলত বায়োস (BIOS) সংশ্লিষ্ট। কমপিউটার বায়োসের জন্য সেটিং স্টোর করে মেমরি চিপে, যাকে CMOS বলা হয়। এই মেমরি চিপ রিসেটিংয়ের মাধ্যমে সমস্যা ফিক্স করা সম্ভব হতে পারে।

CMOS কিভাবে রিসেট হবে, তা নির্ভর করে মাদারবোর্ডের মডেলের ওপর। সুতরাং এক্ষেত্রে মাদারবোর্ডের ম্যানুয়ালের সহায়তা নেয়া উচিত। সাধারণত এ কাজটি অস্থায়ীভাবে করা হয় মাদারবোর্ডের জাম্পার সরিয়ে বা ব্যাটারি সরিয়ে। এতে হার্ডডিস্কে স্টোর করা ডাটার কোনো ক্ষতি হয় না, তবে সব বায়োস সেটিং হারিয়ে যায়। সুতরাং আপনাকে ডেট এবং টাইম রিসেট করতে হবে। ব্যবহারকারীকে প্রসেসরের স্পিডও পুনঃসেট করতে হয়। এ কাজটি সাধারণত ‘Optimised defaults’ অপশন বেছে নিয়ে করতে হয়।

পঞ্চম ধাপ- সফটওয়্যার

কমপিউটারের সুইচ অন করার পর কয়েক সেকেন্ডের জন্য উইন্ডোজ লোগোসম্বলিত স্ক্রিন আবির্ভূত হলে ধরে নিতে পারেন, এ সমস্যাটি মূলত সফটওয়্যারসংশ্লিষ্ট। এ ধরনের সমস্যা দূর করার জন্য বাড়তি কোনো খরচ করতে হয় না। তবে সমস্যাটি কী কারণে সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরূপণ করা বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। হার্ডওয়্যারের সমস্যা নিরূপণের মতো সফটওয়্যারের সমস্যা নিরূপণের জন্য প্রথমেই বিবেচনায় আনতে হয় অতিসম্প্রতি নতুন কোনো প্রোগ্রাম ইনস্টল বা আপডেট করা হয়েছে কি না। যদি ইনস্টল করে থাকেন, তাহলে ধরে নিতে পারেন, সম্ভবত এই প্রোগ্রামটিই সমস্যার কারণ। সুতরাং এই প্রোগ্রামটি আনইনস্টল করে দেখুন সমস্যা সমাধান হয় কি না।

এ সময় কোনো অ্যাপ্লিকেশন আনইনস্টল করতে গিয়ে ঝামেলায় পড়তে পারেন। তখন উইন্ডোজ লোড করা সম্ভব হবে না। এ অবস্থায় ব্যবহারকারীকে Safe Mode ব্যবহার করতে হয়। সেইফ মোড উইন্ডোজ এক্সপি ও ভিস্তা উভয় অপারেটিং সিস্টেমের জন্য উপযোগী। সেইফ মোডে উইন্ডোজ ন্যূনতমসংখ্যক সফটওয়্যার ও ড্রাইভারগুলো লোড করে। উইন্ডোজ শুধু স্টার্ট হবার জন্য প্রয়োজনীয়, যা তাই লোড করে বাকি সব এড়িয়ে যায়, যাতে প্রোগ্রাম আনইনস্টল করার মতো কাজ করা যায়।

Safe Mode-এ অ্যাক্সেস করার জন্য পিসি রিস্টার্ট করে F8 চাপুন উইন্ডোজ লোডিং কার্যক্রম শুরু করার আগে। এবারও যদি উইন্ডোজ লোগো আবির্ভূত হয় তাহলে আবার F8 চেপে আপনাকে চেষ্টা করতে হবে। যখন মেনু আবির্ভূত হয় তখন ‘Select Safe Mode’ অপশন সিলেক্ট করতে হবে অ্যারো কি ব্যবহার করে এবং মেনু সিলেক্ট করতে হবে এন্টার চেপে। সেইফ মোড আসার পর উইন্ডোজ কন্ট্রোল প্যানেলে অ্যাক্সেস করা যাবে।



F8 বুট অপশন মেনুতে অন্যান্য অপশন সম্পৃক্ত থাকে, যা সহায়ক হতে পারে। এতে ‘Safe Mode With Networking’ অপশন রয়েছে। এই অপশন ইন্টারনেট অ্যাক্সেসের জন্য প্রয়োজনীয় ড্রাইভার ইনস্টল করে। এগুলো সহায়ক হতে পারে যদি আপনি ডাউনলোড করেন আপডেট ফিক্স বা ড্রাইভার। এক্ষেত্রে ভালো হয় ‘Last Known Good Configuration’ অপশন দিয়ে চেষ্টা করা। কেননা, এই অপশন উইন্ডোজকে আগের সেই অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে চেষ্টা করে যে অবস্থায় উইন্ডোজ সর্বশেষ ভালো অবস্থায় অর্থাৎ যথাযথভাবে কাজ করছিল।

যদি এ কৌশলে ব্যর্থ হন, তাহলে ব্যবহার করুন ‘Enable Boot Logging’ অপশন। এটি প্রত্যেকটি ড্রাইভারের লগ তৈরি করে, যা উইন্ডোজ মেসেজ লোড করে। এটি ব্যর্থ হলে এবং ক্র্যাশ করলে Safe Mode রান করুন এবং উইন্ডোজ ফোল্ডারে লক্ষ করুন। এটি ড্রাইভার লিস্ট দিয়ে পূর্ণ থাকে nbnlog.tXt বলে। এবার ‘Safe Mode with Networking’ অপশনে গিয়ে দেখুন কোন প্রোগ্রাম বা পণ্যে এটি দরকার। এরপর সেটি অনইনস্টল করুন।

ষষ্ঠ ধাপ- এরর মেসেজ

আমরা কেউই এরর মেসেজ প্রত্যাশা করি না। তবে এরর মেসেজ প্রদর্শিত হয় যখন পিসি ক্র্যাশ করে। সার্চ ওয়েবসাইটে এরর মেসেজ টাইপ করলে কেন উইন্ডোজ স্টার্ট হচ্ছে না এ সংশ্লিষ্ট বেশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে অনলাইনে অ্যাক্সেস করার জন্য ‘Safe Mode with Networking’ অপশন ব্যবহার করুন।

উইন্ডোজ এক্সপি ও ভিস্তায় রিপেয়ার টুল সম্পৃক্ত করা হয়েছে। উইন্ডোজ এক্সপি ও ভিস্তায় ইনস্টলেশন ডিস্ক রয়েছে এটি ব্যবহার করার জন্য। আপনি উইন্ডোজ বুটিংয়ের সময় F8 ফাংশনকি চেপে রিপেয়ার অপশন পেতে পারেন। প্রয়োজনে পিসির ম্যানুয়ালের সহায়তা নিতে পারেন।

এক্সপির রিপেয়ার অপশনে রয়েছে এক্সপি রিইনস্টলের সুবিধা। রিইনস্টলেশন এড়িয়ে যাবার জন্য R চাপুন। এর ফলে উইন্ডোজ প্রম্পট করে উইন্ডোজ ইনস্টলেশনের জন্য। এতে রিপেয়ার টুল ইনস্টলেশনে ডিস্ক স্ক্যান করবে এরর চেক করার জন্য।

ভিস্তার সিস্টেম রিকভারি অপশন টুল ইউজার ফ্রেন্ডলি এবং এতে রয়েছে বেশ কিছু অপশন। প্রথমটি হলো স্টার্টআপ রিপেয়ার টুল। এটি ‘System Restore’ অপশনযুক্ত, যা সিস্টেমকে উইন্ডোজ সেইফ মোড ব্যবহার না করেই আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আনতে পারে।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : mahmood_sw@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস