২০০৭ সালে বের হওয়া পোর্টাল গেমটির ব্যাপক সাড়া ও সমালোচনার প্রেক্ষিতে এ বছর রিলিজ দেয়া হলো এ সিরিজের দ্বিতীয় গেম পোর্টাল ২। নতুন ধরনের গেমপ্লে এবং অধিকতর বাস্তবসম্মত মুভমেন্টের কারণে গেমটি অনেক ফাস্ট পারসন শুটার গেম ভক্তদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে। গেমটি ডেভেলপ করেছে জনপ্রিয় হাফ লাইফ ও কাউন্টার স্ট্রাইক গেম সিরিজের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভাল্ব কর্পোরেশন। গেমটি যৌথভাবে পাবলিশ করেছে ভাল্ব কর্পোরেশন এবং মাইক্রোসফট গেম স্টুডিও। গেমটি বাজারজাত করছে ইলেকট্রনিক আর্টস এবং অনলাইনে ডিস্ট্রিবিউট করছে স্টিম। গেমটি মাইক্রোসফট উইন্ডোজ, ম্যাক ওএস এক্স, প্লেস্টেশন ৩ ও এক্সবক্স ৩৬০ প্লাটফর্মের জন্য বানানো হয়েছে। যারা এখনো এ সিরিজের গেম খেলেননি তারা অবশ্যই খেলে দেখুন কারণ, ভাল্ব কর্পোরেশনের বানানো গেমগুলো অন্যান্য গেমের চেয়ে আলাদা। গেম খেলার স্বাদ পরিবর্তন করতে ইচ্ছে করলে হাফ লাইফ, কাউন্টার স্ট্রাইক, ডে অব ডিফিট, টিম ফোর্ট্রেস, পোর্টাল, লেফট ফর ডেড সিরিজের গেমগুলো থেকে বাছাই করে নিতে পারেন আপনার পছন্দের গেম। এছাড়াও আরো কয়েকটি গেমের মধ্যে রয়েছে- এলিয়েন সোয়ার্ম, ডেথম্যাচ ক্লাসিক, ডটা ২, রিকোচেট, দ্য অরেঞ্জ বক্স ইত্যাদি।
পোর্টাল গেমটি একটি সায়েন্স ফিকশন ধাঁচের ফাস্ট পারসন শুটিং এবং পাজল গেম। গেমে জেনেটিক লাইফ ফর্ম এন্ড ডিস্ক অপারেটিং সিস্টেম বা সংক্ষেপে গ্লাডস নামের এক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন কমপিউটারের বিরুদ্ধে এবং মানব জাতির সভ্যতা রক্ষা করার লড়াইয়ে চেল নামের এক মানব চরিত্রে গেমারকে গেমে আবির্ভূত করা হবে। গেমারকে পোর্টাল গান নিয়ে খেলতে হবে। পোর্টাল গান ছাড়াও নতুন এ গেমে যুক্ত হয়েছে আরো কিছু অস্ত্র, এগুলো হচ্ছে- ট্র্যাক্টর বীম, লেজার রিডাইরেকশন, পেইন্ট-জেল ইত্যাদি। নানা রকমের পোর্টালের ভেতর দিয়ে এক প্লাটফর্ম থেকে আরেক প্লাটফর্মে যাতায়াত করতে হবে এবং সেই সাথে সমাধান করতে হবে বিভিন্ন ধরনের পাজল। সিঙ্গেল প্লেয়ার ক্যাম্পেইন বা কো-অপারেটিভ মোডে বা দুটি রোবটের যেকোনো একটিকে নিয়ে খেলতে হবে। রোবট দুটির নাম হচ্ছে অ্যাটলাস ও পি-বডি। গেমটিতে লড়াইয়ের চেয়ে বেশি বুদ্ধি খাটানোর কাজ করতে হবে। কোন পথে এবং কীভাবে গেলে সবচেয়ে সহজে গন্তব্যে পৌঁছানো যায় তাই গেমের মূল প্রতিপাদ্য।
২০১০ সালের ইথ্রি শোতে গেমটি উত্থাপন করার পর ব্যাপক হইচই পড়ে যায়। গেম ক্রিটিক আওয়ার্ডসের পক্ষ থেকে অনেক সমালোচক ও সাংবাদিকের বিবেচনায় গেমটি সেরা পিসি গেম এবং সেরা অ্যাকশন/অ্যাডভেঞ্চার গেম হিসেবে পুরস্কার পায়। এরপরে তা আবারো পুরস্কার পায় ইথ্রি শো’র সেরা গেম এবং সেরা কনসোল গেম হিসেবে। আইজিএন ও গেমস্পাই গেমটিকে সেরা পাজল গেম এবং সবদিক থেকে সেরা গেম বলে ঘোষণা দেয়। গেমটি স্পাইক ভিজিএ অ্যাওয়ার্ড পোর্টাল ২ গেমটিকে ২০১০ সালের বহুল প্রতীক্ষিত গেম হিসেবে আখ্যায়িত করে। পিসি গেমার গেমটিকে ১০০ তে ৯৪ পয়েন্ট দিয়ে দিয়েছে এবং গেমটি এডিটর’স চয়েস অ্যাওয়ার্ড লাভ করার গৌরব অর্জন করেছে। গেমটি কেমন হয়েছে তার সম্পর্কে এর চেয়ে বেশি আর কী বলার আছে?
গেমটি যাতে সবাই চালাতে পারে সেজন্য গেমটি চালানোর জন্য পিসি কনফিগারেশন তেমন একটা বেশি চাওয়া হয়নি। ৩ গিগাহার্টজের পেন্টিয়াম মানের প্রসেসর, ১ গিগাবাইট র্যা ম, ৭.৬ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক এবং ডিরেক্টএক্স ৯ সাপোর্টেড ১২৮ মেগাবাইট মেমরির গ্রাফিক্স কার্ড হলেই গেমটি অনায়াসে চালানো যাবে। অসাধারণ এবং ব্যতিক্রমধর্মী এ গেমটি খেলে দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে না চাইলে এখনই গেমটি সংগ্রহ করে খেলে দেখুন।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com