• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > দ্য রান
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:১৪৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১১ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গেম
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
দ্য রান

নিড ফর স্পিড হট পারসুইটের পর আরেকটি চটকদার গেম বের হলো রেসিং গেম সিরিজে, যার নাম দ্য রান। শিফট ও শিফট ২ আনলিশড ট্র্যাক রেসিং গেম কিন্তু দ্য রানের জগত ট্র্যাকের গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। দ্য রানের জগত অনেক বিশাল, যা সান ফ্রান্সিসকো থেকে নিউইয়র্ক পর্যন্ত বিস্তৃত। এ গেমের রাস্তার ব্যাপ্তি হট পারসুইটের চেয়ে তিনগুণ বড়। গেমটির ডেভেলপমেন্টের কাজ চলছিল প্রায় তিন বছর ধরে। গেমটির বের হওয়ার আগেই এনএফএস সিরিজের আরো কয়েকটি গেম বাজারে চলে এসেছে। সবার সামনে চমক তুলে ধরার জন্য নির্মাতারা কিছুটা ধৈর্য নিয়েই এ গেমের কাজ সমাধা করেছেন। কথায় আছে সবুরে মেওয়া ফলে। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গেমটি বের হওয়ার পর বেশ প্রশংসিত হয়েছে এবং গেমপ্লে বেশ চ্যালেঞ্জিং হওয়ায় গেমার মহলে বেশ সাড়া পড়েছে। মোস্ট ওয়ান্টেডের পর এ গেম সিরিজের দাপট কিছুটা কমে গিয়েছিল। কিন্তু তৃতীয় যুগের গেমগুলো আবার তাদের হারানো সম্মান ফিরে পেতে সাহায্য করেছে। নতুন গেমগুলোতে গেম রিয়ালিটির সাথে সাথে গেমের গ্রাফিক্স, সাউন্ড ও গেমপ্লে আরো উন্নত করার ফলেই তা সম্ভব হয়েছে। গেম সিরিজটির নতুন করে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে গেমটির অটোলগ নামের অনলাইন গেমিং অপশন। মাইক্রোসফট উইন্ডোজ, প্লেস্টেশন ৩ ও এক্সবক্স ৩৬০-এর জন্য গেমটি ডেভেলপ করেছে ইএ ব্ল্যাকবক্স এবং উইই ও নিনটেনডো থ্রিডিএস কনসোলের জন্য গেমটি ডেভেলপ করেছে ফায়ারব্র্যান্ড গেমস। মূলত গেমটির পাবলিশার হচ্ছে ইলেকট্রনিক আর্টস, কিন্তু জাপানে পাবলিশ করেছে সেগা। গেমটিতে সিঙ্গেল ও মাল্টিপ্লেয়ার উভয় অপশনই রাখা হয়েছে।



গেমের মিউজিক কম্পোজ করেছেন বিখ্যাত কম্পোজার ব্রায়ান টেইলার। ইগল আই, দ্য এক্সপান্ডেবলস, ব্যাটল লস অ্যাঞ্জেলেস, দ্য ফাইনাল্ডেস্টিনেশন, র্যাইম্বো, ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস, ফাস্ট ফাইভ ইত্যাদি মুভির কম্পোজিশন ছাড়াও তিনি কল অব ডিউটি মর্ডান ওয়ারফেয়ার ৩ ও ফারক্রাই ৩ গেমের মিউজিক কম্পোজ করেছেন।

গেমটি বানানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ইএ ডিজিটালের ইল্যুশন সিই কোম্পানির বানানো ফ্রস্টবাইট ২ নামের ইঞ্জিন দিয়ে। এ গেম ইঞ্জিন দিয়ে ডেভেলপ করা কয়েকটি নামকরা গেমের মধ্যে রয়েছে- ব্যাটলফিল্ড ব্যাড কোম্পানি, ব্যাটলফিল্ড ১৯৪৩, ব্যাটলফিল্ড ব্যাড কোম্পানি ২, ব্যাটল ফিল্ড ব্যাড কোম্পানি ২- ভিয়েতনাম, ব্যাটলফিল্ড ৩ ও মেডেল অন অনার (মাল্টিপ্লেয়ার মোড)। এ গেম ইঞ্জিন দিয়ে এ গেমটি ডেভেলপ করা হয়েছে ডিরেক্টএক্স ১০ ও ১১ সাপোর্টসহ। এটি ডিরেক্টএক্স ৯ সাপোর্ট করবে না, তাই গেমটি এক্সপি সাপোর্ট করে না। এক্সপিতে ডিরেক্টএক্স ১০ ইনস্টল করে হয়তো খেলা যাবে, কিন্তু পারফরম্যান্স ভালো হবে না। এ গেম ইঞ্জিনটি এবারের মতো প্রথম নিড ফর স্পিড সিরিজের গেম বানানোর জন্য ব্যবহার করা হলো। শিফট ও শিফট ২ বানানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ম্যাডনেস এবং হট পারসুইট বানাতে ব্যবহার করা হয়েছিল চ্যামেলিওন। তাই যারা আগের গেমগুলো খেলেছেন তারা নতুন গেম ইঞ্জিনে বানানো এ গেমটি খেলে ভিন্ন স্বাদ পাবেন।

নিড ফর স্পিড সিরিজের গেমগুলোকে তিনটি যুগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম যুগের শুরু ১৯৯৪ সালে দ্য নিড ফর স্পিড নামের গেম দিয়ে। এ যুগের গেমগুলো হচ্ছে- নিড ফর স্পিড ২, হট পারসুইট, হাই স্টেকস, পোরশে আনলিশড, মোটর সিটি অনলাইন ও হট পারসুইট ২। দ্বিতীয় যুগের গেমগুলো হচ্ছে- আন্ডারগ্রাউন্ড, আন্ডারগ্রাউন্ড ২, মোস্ট ওয়ান্টেড, কার্বন, প্রোস্ট্রিট ও আন্ডারকভার। তৃতীয় বা নতুন যুগের গেমগুলো হচ্ছে- শিফট, নাইট্রো, ওয়ার্ল্ড, হট পারসুইট, শিফট ২ আনলিশড ও দ্য রান। তৃতীয় যুগের গেমগুলোর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গেমের অটোলগ ফিচার যাতে বিশ্বের বাঘা বাঘা নিড ফর স্পিড সিরিজের গেমাররা অনলাইনে নিজেদের মধ্যে মোকাবেলা করে নিজ যোগ্যতা জাহির করতে পারবেন।

গেমের শুরুতেই দেখা যাবে অজ্ঞান জ্যাক রাওর্কে লাল রঙের পোরশে গাড়ির স্পিয়ারিংয়ের সাথে বাঁধা অবস্থায়। শক্তিশালী ম্যাগনেটের সাহায্যে তাকে গাড়িসহ পুরনো গাড়ি পিষে ফেলার মেশিনের মধ্যে ফেলে দেয়া হচ্ছে। জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর তাকে গাড়ি থেকে বের হতে সাহায্য করতে হবে গেমারকে। এক সন্ত্রাসী চক্রের হাতে পড়ে তার এ দশা হতে চলেছিল। সেখান থেকে সে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যাবে এবং শত্রুপক্ষের গাড়ির সাথে যুদ্ধ করে তাদের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু তাকে সে শহর ছেড়ে যেতে হবে তা না হলে তার রক্ষে নেই। এমন সময় স্যাম হারপার নামের এক সুন্দরী তাকে একটি কাজ অফার করে। জ্যাকের ড্রাইভিং স্কিলের ওপর ভরসা করে স্যাম ইলিগ্যাল স্ট্রিট রেসিং প্রতিযোগিতায় খেলার জন্য সুযোগ করে দেয়, যার প্রাইজমানি পঁচিশ মিলিয়ন ডলার। রেসের শুরু সানফ্রান্সিসকো থেকে এবং গন্তব্য হচ্ছে নিউইয়র্ক, যা প্রায় ৩০০০ মাইল দূরে। তাকে মোকাবেলা করতে হবে ২০০ জন রেসারের সাথে, সেই সাথে সন্ত্রাসী চক্রের সদস্য এবং পুলিশের সাথে লড়াই করতে হবে। বিশাল এ রেসটিকে ভাগ করা হয়েছে ১০টি স্টেজে। কিছু স্থানে স্টপেজ রয়েছে যেমন- লাস ভেগাস, ডেনভার, ডেট্রয়েট ইত্যাদি। গেমারকে ড্রাইভ করতে হবে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার রাস্তা, যার মধ্যে রয়েছে শান্ত গ্রাম্য রাস্তা, কোলাহলপূর্ণ শহুরে রাস্তা, মরুভূমির মাঝের হাইওয়ে, তুষারাচ্ছন্ন পাহাড়ি রাস্তা ইত্যাদি। গেমের স্বাদ আরো বাড়িয়ে তোলার জন্য রাখা হয়েছে তুষারঝড়, বৃষ্টি, মরুভূমির ধুলোর ঝড়, পাহাড়ি ধস, শত্রুপক্ষের হেলিকপ্টারের গুলি, বেশ কড়া আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সযুক্ত পুলিশের গাড়ি ইত্যাদি।

এবারের মতোই প্রথম নিড ফর স্পিড সিরিজের কোনো গেমে ক্যারেক্টারকে নিয়ে খেলার অনশন রাখা হয়েছে। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তাদের হাত থেকে পালিয়ে বেঁচে আবার নতুন করে গাড়ি সংগ্রহ করা, ট্রেন লাইনের ওপর ট্রেনের সাথে পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালানো, গাড়ি দিয়ে হেলিকপ্টার ধ্বংস করার মুহূর্তগুলো দেখার সময় মনেই হবে না তা গেম, মনে হবে কোনো অ্যাকশন মুভির ট্রেইলার দেখছেন। গেমে অনেক গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে এবং এগুলোর মধ্যে তিনটি লিমিটেড এডিশন কার রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ল্যাম্বোরঘিনি অ্যাভেন্টেডর, পোরশে ৯১১ ক্যারারা এস ও শেভ্রলে কামারো জেডএলওয়ান। গেমের গাড়ির কন্ট্রোলিং কিছুটা কষ্টকর। তবে রাস্তা অনুযায়ী গাড়ি বাছাই করতে পারলে তেমন সমস্যা হবে না। গাড়ি বদল করার জন্য পথিমধ্যে ফিলিং স্টেশনে থামিয়ে তা বদল করা যাবে এবং সে সময় রেস পজ করা থাকবে। নিড ফর স্পিড এডিশন কারগুলো স্পেশাল টিউনিং করা, তাই সেগুলো নিয়ে ভালো পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে।

নিড ফর স্পিড সিরিজের গেমগুলোর ক্ষেত্রে সাধারণত মাঝারি মানের পিসি কনফিগারেশন চাওয়া হয়, কিন্তু দ্য রানের ক্ষেত্রে বেশ ভালো কনফিগারেশনের পিসি চাওয়া হয়েছে। গেমটির মিনিমাম সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টে চাওয়া হচ্ছে ইন্টেল কোর টু ডুয়ো ২.৪ গিগাহার্টজের প্রসেসর বা সমমানের এএমডি অথলন এক্স টু প্রসেসর, ৩ গিগাবাইট র্যা.ম, ১৮ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক স্পেস ও ডিরেক্টএক্স ১০ সাপোর্টেড ৫১২ মেগাবাইট মেমরির গ্রাফিক্স কার্ড (ন্যূনতম এনভিডিয়া জিফোর্স ৯৮০০ জিটি বা এটিআই রাডেওন এইচডি ৪৮৭০)। রিকমেন্ডেড কনফিগারেশন হিসেবে কোর আই ৫ সিরিজের ২.৬৬ গিগাহার্টজ গতির প্রসেসর বা সমমানের এএমডি ফেনম ২ এক্সফোর প্রসেসর, ৪ গিগাবাইট র্যাাম এবং জিফোর্স জিটিএক্স ৫৬০ বা রাডেওন এইচডি ৬৯৫০ গ্রাফিক্স কার্ড।


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস