লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
৩য় মত
ফ্রিল্যান্সারদের অর্থ উত্তোলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হোক
বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে প্রত্যয় ঘোষণা করে, তা এ দেশের তরুণ প্রজন্মকে ব্যাপকভাবে উদ্বেলিত করেছে- এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এ কথা যেমনি সত্য, তেমনি সত্য- ডিজিটাল বাংলাদেশ পদবাচ্যটি নিয়ে বুঝে না বুঝে অনেক ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ হয়েছে, অনেক সমালোচনার ঝড়ও বয়ে গেছে। সরকারি দলের সমর্থকেরা অনেকে বুঝে না বুঝে ডিজিটাল বাংলাদেশ পদবাচ্যটিকে যেনতেনভাবে ব্যবহার করে হাস্য-রসের খোড়াক সৃষ্টিও করেছে প্রচুর। তবে যাই হোক, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ঘোষিত হওয়ার অনেক পরে, প্রায় দুই বছর পর হঠাৎ করেই বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ফ্রিল্যান্সিং বা মুক্তপেশা, যেখানে নেই কোনো সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা।
বর্তমানে বাংলাদেশের হাজার হাজার তরম্নণ ফ্রিল্যান্সিংয়ে সম্পৃক্ত হয়ে একদিকে যেমনি নিজেদেরকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে, তেমনি নিজেদের ভাগ্যের চাকাও ঘোরাতে সক্ষম হয়েছে। অর্থাৎ নিজেদেরকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি একটি ভালো পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থানও তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। ফ্রিল্যান্সারেরা প্রতিদিন বাংলাদেশের অর্থভা-ারে যোগ করছে হাজার হাজার ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা।
লক্ষণীয়, এ ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে বেশিরভাগই অর্থ উপার্জন করছে গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে। যেগুলোর চেক সরাসরি আসে আমেরিকা থেকে। এসব চেকের মধ্যে আমেরিকান সিটি ব্যাংকের চেক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যে চেকগুলোর বেশিরভাগই আগে ভাঙানো হতো ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ইসলামী ব্যাংক এ চেকগুলো সবচেয়ে কম খরচে, মাত্র ৩৪৫ টাকায় ক্যাশ করে দিত। এছাড়া ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংকসহ কিছু ব্যাংকও চেকগুলো ভাঙাতো। হঠাৎ করে গত ২১ আগস্ট থেকে সব ব্যাংক চেক ভাঙানো বন্ধ করে দেয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সব ব্যাংকই চেক ভাঙাতো স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মাধ্যমে।
সম্প্রতি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক চেক গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করায় কোনো ব্যাংক আর চেক ভাঙাতে পারছে না। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, হঠাৎ করে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ চেকগুলো ভাঙাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় তারা আর চেক ভাঙাতে পারছে না। প্রতিদিনই মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আয় করা হাজার হাজার ডলারের চেকগুলো জমা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সারদের অ্যাকাউন্টে। কিন্তু চেকগুলো ভাঙাতে না পারায় তারা বেশ বিপাকে পড়েছে।
আমরা জানি, বর্তমান সরকার ফ্রিল্যান্সারদের উৎসাহিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যেমন সফটওয়্যার শিল্পের সংগঠনগুলোর সাথে যৌথভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, ফ্রিল্যান্সারদের কষ্টার্জিত অর্থ উত্তোলনের জটিলতাকে দূর করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া ইত্যাদি। ঠিক সেই সময় ফ্রিল্যান্সারদের কষ্টার্জিত অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি শুধু অনাকাঙিক্ষত নয়ই, বরং দেশের তরম্নণ প্রজন্মকে ভবিষ্যতে ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে এক বিরাট প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করবে।
আমরা আশা করি, বাংলাদেশ ব্যাংক ফ্রিল্যান্সারদের কষ্টার্জিত অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা খুব শিগগিরই প্রত্যাহার করে নেবে, যাতে ফ্রিল্যান্সারেরা আগের মতো সহজে চেক ভাঙাতে পারে।
জাফর আহমেদ
ব্যাংক কলোনি, সাভার
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
মাইক্রোসফটের ইনোভেশন সেন্টার ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা
কমপিউটার জগৎ পত্রিকার ‘কমপিউটার জগতের খবর’ বিভাগে অক্টোবর ২০১৩ সংখ্যায় প্রকাশিত এক খবর থেকে জানতে পারলাম, অপারেটিং সিস্টেমের জগতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট ঢাকায় একটি ইনোভেশন সেন্টার স্থাপন করবে। এ ইনোভেশন সেন্টারটি হবে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) ভবনে।
এ ইনোভেশন সেন্টারটি স্থাপনের লক্ষে সম্প্রতি বিসিসি সভাকক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং মাইক্রোসফটের মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ ও মাইক্রোসফটের চিফ অপারেটিং অফিসার পুবুদ বাসানায়েক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুযায়ী মাইক্রোসফট বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন সেন্টার, ড্রিম স্পার্ক, বিজ স্পার্কের মাধ্যমে আইটি সেক্টরে দক্ষজনবল তৈরিতে সহায়তা করবে।
মাইক্রোসফট দেশে আইটি একাডেমি স্থাপন, হাইটেক এবং সফটওয়্যার পার্কের আইটি অবকাঠামো সৃষ্টিতে সহায়তা দেবে। মাইক্রোসফট ইমাজিন কাপ আয়োজনও এ চুক্তি অনুযায়ী অব্যাহত থাকবে।
ঢাকায় ইনোভেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং মাইক্রোসফটের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি স্বাক্ষর শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ না রেখে বাসত্মবায়ন করার উদ্যোগে সচেষ্ট থাকবে সংশিস্নষ্ট সবাই তা যেমন আমরা প্রত্যাশা করি, তেমনি আমরা এও প্রত্যাশা করি না যে মাইক্রোসফট ইমাজিন কাপ ২০১৩-এর বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের স্পন্সরশিপ নিয়ে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি হোক। কেননা এ ধরনের উদ্ভূত সমস্যা শুধু সমস্যাই সৃষ্টি করে না, বরং দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ করে এবং পরবর্তী পর্যায়ে এ দেশে বিদেশীদের সাহায্য-সহযোগিতা ও বিনিয়োগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
শামসুর রহমান
বহদ্দারহাট, চট্টগ্রাম
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপমেন্টে
আরো উদ্যোগী হওয়া দরকার
স্মার্টফোনের বর্তমানে তরম্নণ প্রজন্মের ক্রেজ বলা যায় উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তরম্নণ প্রজন্মের পাশাপাশি বাংলাদেশের অনেক তরম্নণদের হাতে বর্তমানে শোভা পেতে দেখা যায় এই ছোট স্মার্ট ডিভাইসটিকে। স্মার্টফোনগুলোতে প্রতিদিনই যুক্ত হচ্ছে নিত্যনতুন ফিচার এবং অ্যাপস। অনেকের মতে এসব অ্যাপসই স্মার্টফোনের ব্যাপক বিসত্মারের পেছনে প্রধান নিয়ামকগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি।
মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপমেন্টের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়া পরিপ্রেক্ষেতে সম্প্রতি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর মধ্যে এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির অধীনে দেশব্যাপী মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন উন্নয়নের মাধ্যমে বেসিস নাগরিক সেবা সংশিষ্ট মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের আইডিয়া ও ডিজাইন উদ্ভাবনের জন্য বিভিন্ন উদ্ভাবনী ক্যাম্প আয়োজন করবে এবং সেই আইডিয়া ডিজাইন নিয়ে মোবাইল অ্যাপস তৈরির জন্য বিভিন্ন কোম্পানিকে মনোনীত করবে। একই সাথে এ উদ্ভাবনী ক্যাম্পে মোবাইল অ্যাপস বিষয়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য দক্ষ প্রশিক্ষক মনেনীত করা হবে।
এটি নিঃসন্দেহ এক মহৎ উদ্যোগ। তবে লক্ষ রাখতে হবে, মোবাইল অ্যাপস তৈরির জন্য বিভিন্ন কোম্পানী মনোনয় করার ক্ষেত্রে অবশ্য। এর ব্যতিক্রম হলে লক্ষ উদ্দেশ্য যতই মহৎ হউক না যেন তা বিফল হতে বাধ্য। বেসিস এ এটুআইয়ের মধ্যকার চুক্তি যেনো স্বচ্ছতা থাকে বাসত্মবায়িত সফলতার মুখ দেখুক তা আমার প্রত্যাশা করি।
আজাদ
শমেশপুর গোপালপুল