লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৪ - ফেব্রুয়ারী
গণিতের অলিগলি
নয়টি অঙ্ক একটি মজা
আমরা কোনো সংখ্যা বা নম্বর লিখতে দশটি অঙ্কের বা ডিজিটের মধ্য থেকে এক বা একাধিক ডিজিট ব্যবহার করে থাকি। এই ডিজিট বা অঙ্ক দশটি হলো- ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯। যেমন একশ’ সংখ্যা লিখতে লিখি ১০০। আর এই ১০০ সংখ্যাটি লিখতে আমাদের প্রয়োজন হয়েছে একটি ১ এবং দুইটি ০। এখন যদি কাউকে বলা হয় একশ’ (১০০) সংখ্যাটি লিখতে হবে শূন্য (০) বাদে অবশিষ্ট নয়টি অঙ্ক অর্থাৎ ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯ দিয়ে এবং এতে এই অঙ্ক নয়টির সব ক’টি একবার করে মানের ধারাক্রম বা সিকুয়েন্স বজায় রেখে লিখতে হবে। দেখা গেছে, এই শর্ত মেনে ০ বাদে বাকি নয়টি অঙ্ক একবার করে ব্যবহার করে একশ’ (১০০) সংখ্যাটি লেখা সম্ভব। এটি যে সম্ভব তাই এখানে দেখানো হলো। প্রথমে অঙ্ক নয়টির মানের ঊর্ধ্বক্রম ধারাবাহিক
সাজিয়ে ১০০ লেখার উদাহরণগুলো দেয়া হলো :
১০০ = ১২ + ৩ - ৪ + ৫ + ৬৭ + ৮ + ৯
১০০ = ১২৩ + ৪ - ৫ + ৬৭ - ৮৯
১০০ = ১ + ২ + ৩৪ - ৫ + ৬৭ - ৮ + ৯
১০০ = ১২ + ৩ - ৪ + ৫ + ৬৭ + ৮ + ৯
১০০ = ১২৩ - ৪ - ৫ - ৬ -৭ + ৮ + ৯
১০০ = ১২৩ + ৪ - ৫ + ৬৭ -৮৯
১০০ = ১২৩ + ৪৫ - ৬৭ + ৮ - ৯
১০০ = ১২৩ - ৪৫ - ৬৭ + ৮৯
১০০ = ১২ - ৩ - ৪ + ৫ - ৬ + ৭ + ৮৯
১০০ = ১২ + ৩ + ৪ + ৫ - ৬ -৭ + ৮৯
১০০ = ১ + ২৩ - ৪ + ৫ + ৬ + ৭৮ - ৯
১০০ = ১ + ২৩ - ৪ + ৫৬ + ৭ + ৮ + ৯
১০০ = ১ + ২ + ৩ - ৪ + ৫ + ৬ + ৭৮ + ৯
১০০ = - ১ + ২ - ৩ + ৪ + ৫ + ৬ + ৭৮ + ৯
১০০ = ১ + ২.৩ -৪ + ৫ + ৬.৭ + ৮৯
ওপরের সবগুলো সমাধানে আমরা অঙ্ক নয়টি মানের ঊর্ধ্বক্রমে সাজিয়ে লিখেছি। এবার আমরা শূন্য ছাড়া বাকি নয়টি অঙ্ককে মানের অধোক্রম ধারাক্রমে সাজিয়ে লিখে নিচের সমাধানগুলো পেতে পারি।
১০০ = ৯৮ - ৭৬ + ৫৪ + ৩ + ২১
১০০ = ৯ - ৮ + ৭৬ + ৫৪ - ৩২ + ১
১০০ = ৯৮ + ৭ +৬ - ৫ - ৪ - ৩ + ২ - ১
১০০ = ৯৮ - ৭ - ৬ - ৫ - ৪ + ৩ +২১
১০০ = ৯ - ৮ + ৭৬ - ৫ + ৪ + ৩ + ২১
১০০ = ৯৮ - ৭ + ৬ + ৫ + ৪ - ৩ - ২ - ১
১০০ = ৯৮ + ৭ - ৬ + ৫ - ৪ + ৩ - ২ - ১
১০০ = ৯৮ + ৭ - ৬ + ৫ - ৪ + ৩ + ২ + ১
১০০ = ৯৮ - ৭ + ৬ + ৫ - ৪ + ৩ - ২ + ১
১০০ = ৯৮ - ৭ + ৬ - ৫ + ৪ + ৩ + ২ - ১
১০০ = ৯৮+ ৭ - ৬ - ৫ + ৪ + ৩ - ২ -১
১০০ = ৯৮ - ৭ - ৬ + ৫ + ৪ + ৩ + ২ + ১
১০০ = ৯ + ৮ + ৭৬ + ৫ + ৪ - ৩ + ২ + ১
১০০ = ৯৮ + ৮ + ৭৬ + ৫ - ৪ + ৩ + ২ + ১
১০০ = ৯ - ৮ + ৭ + ৬৫ - ৪ + ৩২ - ১
১০০ = - ৯ + ৮ + ৭৬ + ৫ - ৪ + ৩ + ২১
১০০ = - ৯ + ৮ + ৭ + ৬৫ - ৪ + ৩২ + ১
১০০ = - ৯ - ৮ + ৭৬ - ৫ + ৪৩ + ২ + ১
১০০ = ৯ + ৮৭.৬ + ৫.৩২ - ৪
এখন যদি আমরা অঙ্ক নয়টি ঊর্ধ্বক্রম বা নিমণক্রমে না সাজিয়ে এলোমেলোভাবে সাজাই, তবে সেভাবেও এই অঙ্ক নয়টি দিয়ে দশমিক সংখ্যা তৈরি করে এগুলোতে যোগ, বিয়োগ ও এমনকি গুণ চিহ্ন ব্যবহার করে নানাভাবে ১০০ সংখ্যাটি লিখতে পারি।
তেমন কয়েকটি উদাহরণ নিচে দেয়া হলো :
১০০ = ৯১ + ৭.৬৮ + ৫.৩২ - ৪
১০০ = ৯৮.৩ + ৬.৪ - ৫.৭ + ২ - ১
১০০ = ৫৩৮ + ৭ - ৪২৯ - ১৩
১০০ = ৮ ক্ম ৯.১২৫ + ৩৭ - ৬ - ৪ ইত্যাদি।
লক্ষণীয়, শেষ চারটি সমাধানের প্রত্যেকটিতে অঙ্ক নয়টির সব ক’টি এলোমেলোভাবে হলেও একবার করে রয়েছে। কোনো অঙ্কই একাধিকবার ব্যবহার হয়নি। এসব সমাধান বিভিন্নজন বিভিন্ন সময়ে আমাদের জানিয়েছেন। হতে পারে, আপনিও চেষ্টা করে দেখলে কয়েকটি এমন সমাধান পেয়ে যেতে পারেন। এজন্য বড় গণিতবিদ হতে হবে, তা কিন্তু নয়। চেষ্টা করেই দেখুন না, পারলে আনন্দটা কিন্তু কম হবে না। কারণ, আবিষ্কার- উদ্ভাবনার আনন্দটাই আলাদা।
গণিতের একটি ধাঁধা
এ ধাঁধার জন্য একটি ক্যালকুলেটর হাতের কাছে রাখলে ভালো হয়। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।
০১. আপনি সপ্তাহে কয়দিন বাজারে যান, সেই সংখ্যা নিন।
০২. এ সংখ্যাটিকে ২ দিয়ে গুণ করুন।
০৩. এ গুণফলের সাথে ৫ যোগ করুন।
০৪. এ যোগফলকে ৫০ দিয়ে গুণ করুন।
০৫. চলতি বছরে আপনার জন্মদিন পার হয়ে গেলে এই গুণফলের সাথে ১৭৬১ যোগ করুন। আর জন্মদিন পার হয়ে না গেলে যোগ করুন ১৭৬০।
০৬. এ যোগফল থেকে আপনার জন্মসাল বিয়োগ করুন (যেমন ১৯৫০, ১৯৬৫ কিংবা ১৯৭০)। সবশেষে পাওয়া সংখ্যাটিতে তিনটি অঙ্ক থাকবে প্রথম সংখ্যাটি বলে দেবে আপনি সপ্তাহে কতদিন বাজারে যান।
সংখ্যার একটি মজা
৯ ক্ম ৯ + ৭ = ৮৮
৯৮ ক্ম ৯ + ৬ = ৮৮৮
৯৮৭ ক্ম ৯ + ৫ = ৮৮৮৮
৯৮৭৬ ক্ম ৯ + ৪ = ৮৮৮৮৮
৯৮৭৬৫ ক্ম ৯ + ৩ = ৮৮৮৮৮৮
৯৮৭৬৫৪ ক্ম ৯ + ২ = ৮৮৮৮৮৮৮
৯৮৭৬৫৪৩ ক্ম ৯ + ১ = ৮৮৮৮৮৮৮৮
৯৮৭৬৫৪৩২ ক্ম ৯ + ০ = ৮৮৮৮৮৮৮৮৮
সংখ্যার আরেকটি মজা
১৩ + ৫৩ + ৩৩ = ১৫৩
১৬৩ + ৫০৩ + ৩৩৩ = ১৬৫০৩৩
১৬৬৩ + ৫০০৩ + ৩৩৩৩ = ১৬৬৫০০৩৩৩
১৬৬৬৩ + ৫০০০৩ + ৩৩৩৩৩ = ১৬৬৬৫০০০৩৩৩৩
১৬৬৬৬৩ + ৫০০০০৩ + ৩৩৩৩৩৩ = ১৬৬৬৬৫০০০০৩৩৩৩৩
১৬৬৬৬৬৩ + ৫০০০০০৩ + ৩৩৩৩৩৩৩ = ১৬৬৬৬৬৫০০০০০৩৩৩৩৩৩
.......................... এভাবে চলতেই থাকবে ....................................
গণিতদাদু
একটি সংখ্যাধাঁধা
নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন :
০১. আপনার বন্ধুকে এক টুকরা কাগজে আপনাকে না দেখিয়ে তিন অঙ্কের যেকোনো একটি সংখ্যা লিখতে বলুন। (ধরম্নন, আপনার বন্ধু লিখলেন ৫৪৩)।
০২. এ সংখ্যা থেকে ২ বিয়োগ করতে বলুন। (তাহলে বিয়োগফল দাঁড়াল ৫৪১)।
০৩. এই বিয়োগ ফলের একদম বামে ২ লিখেতে বলুন। (তাহলে সংখ্যাটি হবে ২৫৪১)।
০৪. তৃতীয় ধাপ শেষে সংখ্যাটি কত হলো, তা আপনি না দেখে বলে দিতে পারবেন। আসলে তৃতীয় ধাপে পাওয়া সংখ্যাটি হবে পাঁচটি সংখ্যার যোগফল (এখানে ২৫৪১ হবে পাঁচটি সংখ্যার যোগফল)। এই পাঁচটি সংখ্যা আপনাকে গাণিতিক কৌশলে জেনে নিতে হবে। এই পাঁচটি সংখ্যার প্রথম সংখ্যাটি হবে ১ নম্বর ধাপে বর্ণিত আপনার বন্ধুর নেয়া সংখ্যা ৫৪৩। দ্বিতীয় সংখ্যাটি হবে নিচের ৫ নম্বর ধাপে বর্ণিত আপনার বন্ধুর নেয়া তিন অঙ্কের আরেকটি সংখ্যা (২৩৮)। তৃতীয় সংখ্যাটি হবে নিচের ষষ্ঠ ধাপে বর্ণিত আপনার নেয়া ৯৯৯ ও বন্ধুর নেয়া ২৩৮-এর বিয়োগফল (৭৬১)। চতুর্থ সংখ্যা হবে নিচের সপ্তম ধাপে বর্ণিত আপনার বন্ধুর ইচ্ছেমতো নেয়া আরও একটি তিন অঙ্কের সংখ্যা (২০৫)। আর পঞ্চম সংখ্যাটি হবে অষ্টম ধাপে বর্ণিত ৯৯৯ ও এই ২০৫ সংখ্যার বিয়োগফল। এই বিয়োগফল দাঁড়ায় ৭৯৪। এই পাঁচটি সংখ্যার যোগফলই হলো তৃতীয় ধাপে পাওয়া সংখ্যা (২৫৪১)।
০৫. এরপর বন্ধুকে বলুন তিন অঙ্কের যেকোনো একটি সংখ্যা বসাতে। (ধরম্নন, আপনার বন্ধু বসালেন ২৩৮ সংখ্যাটি)।
০৬. আপনার বন্ধুর লেখা (২৩৮) সংখ্যাটি ও ৯৯৯-এর বিয়োগফল বের করম্নন। (এখানে এ বিযোগফল দাঁড়াল ৭৬১)।
০৭. আবার বন্ধুটিকে বলুন আরেকটি তিন অঙ্কের সংখ্যা লিখতে। ধরম্নন, তিনি লিখলেন ২০৫।
০৮. এবার আপনি ৯৯৯ ও ২০৫-এর বিয়োগফল বের করতে বন্ধুকে বলুন। (এখানে বিয়োগফল হবে ৭৯৪)।
প্রথম সংখ্যা : ৫৪৩ (বন্ধুর নেয়া সংখ্যা)।
দ্বিতীয় সংখ্যা : ২৩৮ (বন্ধুর নেয়া সংখ্যা)।
তৃতীয় সংখ্যা : ৭৬১ ( আপনার নেয়া সংখ্যা)।
চতুর্থ সংখ্যা : ২০৫ (বন্ধুর নেয়া সংখ্যা)।
পঞ্চম সংখ্যা : ৭৯৪ (আপনার নেয়া সংখ্যা)।
এই পাঁচটি সংখ্যার যোগফল হবে সবসময় তৃতীয় ধাপ শেষে পাওয়া সংখ্যাটি (এ ক্ষেত্রে ২৫৪১)। প্রথমে আপনার বন্ধু তিন অঙ্কের ৫৪৩ সংখ্যাটি না নিয়ে তিন অঙ্কের অন্য কোনো সংখ্যা নিলে পাঁচটি সংখ্যার যোগফল ২৫৪১ না হয়ে হতো ভিন্ন কোনো সংখ্যা। এভাবে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা নিয়ে উল্লিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করে দেখুন এর ব্যতিক্রম হবে না।
সংখ্যা ৯-এর একটি মজা
আমরা ২৫ ও ৩২-এর মতো যেকোনো দু’টি দুই অঙ্কের সংখ্যা নিয়ে নিচের মতো করে চারভাবে লিখতে পারি :
২৫ * ৩২ = ৮০০
২৫ * ২৩ = ৫৭৫
এবং
৫২ * ২৩ = ১১৯৬
৫২ * ৩২ = ১৬৬৪
এখন আমাদের পাওয়া ওপরের দুই জোড়া গুণফলের বড় সংখ্যা থেকে ছোট সংখ্যা বিয়োগ করলে যেসব বিয়োগফল পাব, তাতে রয়েছে ৯-এর বিস্ময়কর মজা।
১৬৬৪ - ১১৯৬ = ৪৬৮, এবং ৪ + ৬ + ৮ = ১৮, আর ১ + ৮ = ৯
১৬৬৪ - ৫৭৫ = ১০৮৯, এবং ১ + ০ + ৮ + ৯ = ১৮, আর ১ + ৮ = ৯
১৬৬৪ - ৮০০ = ৮৬৪, এবং ৮ + ৬ + ৪ = ১৮, আর ১ + ৮ = ৯
১১৯৬ - ৮০০ = ৩৯৬, এবং ৩ + ৯ + ৬ = ১৮, আর ১ + ৮ = ৯
১১৯৬ - ৫৭৫ = ৬২১, এবং ৬ + ২ + ১ = ৯
৮০০ - ৫৭৫ = ২২৫, এবং ২+ ২ + ৫ = ৯
এখানে দুই অঙ্কের দু’টি সংখ্যা নিয়ে দেখা গেছে, বিয়োগফলগুলোর অঙ্কগুলোর যোগফল হয় ৯ কিংবা ৯-এর গুণিতক হয়। আবার ৯-এর গুণিতক সংখ্যাগুলোর অঙ্কগুলোর যোগফল কিন্তু আবার ৯ হয়। শুধু দুই অঙ্কের দু’টি সংখ্যার ক্ষেত্রে নয়, যেকোনো অঙ্কের দু’টি সংখ্যার ক্ষেত্রেও তা সত্য।
গণিতদাদু