জেলা তথ্যবাতায়নে অবৈধ সাইবার আক্রমণ এবং তারপর...
এত দিন ক্রেডিট কার্ড হ্যাক করা, গুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্য আত্মসাত করা, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভান্ডারে হ্যাকারদের হামলার প্রভৃতি নানা ধরনের হ্যাকিংয়ের কথা বিভিন্ন পত্রিকায় দেখতাম, আর মনে মনে ভাবতাম আমরা তথ্যপ্রযুক্তিতে পিছিয়ে থেকে অন্তত এক্ষেত্রে অনেক ভালোই আছি। বিশেষ করে আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন খাতের কর্মকান্ড, ব্যাংক খাত, বীমা খাত প্রভৃতিসহ বিভিন্ন সংবেদনশীল গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে নিরাপত্তার ব্যাপারে শঙ্কিত হবার মতো তেমন নাজুক অবস্থায় আমরা উপনীত হইনি এত দিন। আমার সেই ধারণা এখন বদলে গেছে পুরোমাত্রায়। উন্নত বিশ্ব বা উন্নয়নশীল দেশের মতো আমাদের আইসিটি খাত যখন-তখন হ্যাকারের শিকার হতে পারে, তা প্রতিরোধে আমাদের প্রস্ত্ততি মোটেও নেই।
সম্প্রতি দেশের ২৮টি জেলা তথ্যবাতায়ন তথা ওয়েবপোর্টাল ২০ মার্চ মধ্য রাতে অবৈধ সাইবার আক্রমণের শিকার হয়। এ আক্রমণে ১৯টি জেলা তথ্যবাতায়ন সাময়িক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ৬৪ জেলার মধ্যে ১৯ জেলার পোর্টালই হ্যাক করে হ্যাকাররা সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর পোর্টালে তাদের একটি আপত্তিকর বার্তাও জুড়ে দেয়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল ক্ষেত্র হ্যাকারদের হামলার লক্ষ্যস্থল হিসেবে বিবেচিত। আর সে কারণেই নেয়া হয় বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। তার পরও হ্যাকারদের সুচতুর কৌশলের কাছে পরাভূত হতে দেখা যায় কখনো কখনো। আর সে কারণেই তারা হ্যাকারদের প্রতিরোধের জন্য নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করে ও তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাকে আপডেট করে।
বাংলাদেশের জেলা তথ্যবাতায়নে আমার জানা মতে এই প্রথম অবৈধ সাইবার হামলা হলো। এই সাইবার আক্রমণে তেমন ক্ষতি না হলেও ভবিষ্যতে যে আবার সাইবার হামলা হবে না, তার নিশ্চয়তা কে দিতে পারে? সুতরাং সাইবার হামলা প্রতিরোধ ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আরো বেশি গুরুত্ব দেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, তা আমাদের সবার প্রত্যাশা। জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো রকম আপোসমূলক আচরণ গ্রহণযোগ্য হবে না, গ্রহণযোগ্য হবে না কোনো রকম মিথ্যে অজুহাত। সুতরাং এ দায়িত্বে কারা নিয়োজিত ছিল এবং কাদের গাফিলতিতে সাইবার হামলা হয়েছে তার জন্য গতানুগতিক ধারার তদন্ত কমিশন গঠনের নামে কালপেক্ষণ না করে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু তাই নয়, তথ্যবাতায়ন তথা ওয়েবপোর্টালের উন্নয়ন কর্মকান্ডের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ বিষয়ের যোগ্যতা, দক্ষতা কেমন এবং এই ওয়েবপোর্টালের উন্নয়নের ধরন প্রকৃতি যাচাই করে দেখতে হবে এর গঠন প্রকৃতি কতটুকু সুদৃঢ়। সুতরাং বিষয়গুলো আইন হিসেবে অনুমোদন দিতে হবে। কারণ এর সাথে সংশ্লিষ্ট আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার ব্যাপারটি।
মো: কালাম
হুজরাপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
...........................................................................................................
কলসেন্টার ভিলেজ এবং আমাদের কিছু প্রত্যাশা
বাংলাদেশ সরকার কলসেন্টার ভিলেজ বা পল্লী গড়ে তোলার কথা ভাবছে সম্প্রতি এমনই একটি খবর দেখলাম কমপিউটার জগৎ-এর এপ্রিল ২০১০ সংখ্যায়। এ খবরটি আমাদের দেশের তরুণ সমাজের জন্য নিঃসন্দেহে এক সুখবর। যদিও প্রকাশিত সব খবরের বাস্তবায়ন আমরা অনেক সময় দেখতে পাই না বরং দেখতে পাই এসব প্রকাশিত খবরকে পুঁজি করে কিছু সুবিধাবাদী লোকের প্রতারণামূলক কর্মকান্ড। অতীতে এমনটি অনেক ঘটেছে। এবারও যে ঘটবে না তার নিশ্চয়তা নেই।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন তথা বিটিআরসি কলসেন্টার গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৩০০ কলসেন্টার লাইসেন্স দিয়েছিল কোনো রকম যাচাইবাছাই না করেই। এর ফলে বর্তমানে মাত্র ৫৮টি প্রতিষ্ঠান কলসেন্টারের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো বিধি অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু না করায় লাইসেন্স বাতিল করা হয়। অবশ্য এই কলসেন্টার লাইসেন্স বাতিল করা হয় বেশ দেরিতে। ফলে প্রতারণার শিকার হতে হয় অনেককেই।
ভবিষ্যতে অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের খাত হিসেবে কলসেন্টারকে বিকশিত করার যে পরিকল্পনা সরকার নিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে প্রসংশার দাবিদার। কলসেন্টার পল্লীর জন্য ঢাকার কয়েকটি স্থান পরিদর্শন করেছেন মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টজনেরা। সুতরাং, কলসেন্টার পল্লী গঠনের লক্ষ্যে বেশ তৎপরতা আপাতদৃষ্টিতে দেখা গেলেও আমার মনে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কেননা কলসেন্টার গঠনের লক্ষ্যে কোনো নীতিমালার কথা এখন পর্যন্ত আমাদের জানা নেই। বলা যেতে পারে কোনো নীতিমালাই প্রণীত হয়নি। যারা প্রশিক্ষণ নেবেন বা যারা প্রশিক্ষণ দেবেন, তাদের যোগ্যতা কেমন হবে? শিক্ষার্থীদের ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক কি না বা বাধ্যতামূলক হলে তার মান যাচাই কে করবে? ইত্যাদি অসংখ্য প্রশ্ন আমাদের সবারই মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। সুতরাং এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
শাওন
বাঁশেরপুল, ডেমরা
...........................................................................................................
মুঠোফোন কোম্পানির লোভনীয় অফারের ব্যাপারে সতর্ক হোন
মুঠোফোন কোম্পানি একটেল/রবি, গ্রামীণফোন, ওয়ারিদ, টেলিটক, সিটিসেল ও বাংলালিংক-এর কৌশলী বিজ্ঞাপনে ঠকছে দেশের সোয়া ৫ কোটিরও অধিক মুঠোফোন গ্রাহক।
‘সাবস্ক্রিপশন ফি অব টাকা ৭.১৯ হ্যাজ বিন ডিডাকটেড ফর ইওর রবি গুনগুন’ ‘ডিয়ার সাবস্ক্রাইবার অ্যানজয়’ ‘৫০০ এসএমএস অ্যাট টাকা ১৫ উইথ ৭ ডেজ ভেলিডিটি’ ‘অ্যানজয় ১৪০ এসএমএস অ্যাট টাকা ৭ উইথ ওয়ান ডেজ ভেলিডিটি’ ইত্যাদি নানা ধরনের এসএমএস অফার মোবাইল অপারেটররা গ্রাহকের ইনবক্সে নিয়মিতভাবে সেন্ড করে। গ্রাহকদের প্রশ্ন কিভাবে একজন গ্রাহক ১ দিন মেয়াদে কিংবা ৭ দিন মেয়াদে যথাক্রমে ৭ টাকা ও ১৫ টাকা গচ্ছা দিয়ে নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে কতজন বন্ধুকে মেসেজ পাঠায় বা সংশ্লিষ্ট গ্রাহক উক্ত সুযোগগুলো উপভোগ করতে পারে?
মূলত এগুলো মুঠোফোন কোম্পানিগুলোর চালাকি ছাড়া কিছুই নয়। তারা ছলে, বলে ও সুকৌশলে বিভিন্ন নামীয় লোভনীয় প্যাকেজ ও কৌশলী ট্যারিফ পরিবর্তনের ব্যানারে হাতিয়ে নিচ্ছে জনসাধারণের কষ্টার্জিত অর্থ। বিভিন্ন লোভনীয় অফার ঘোষণার মাধ্যমে মুঠোফোন কোম্পানিগুলো দেশের গ্রাহকদের অসচেতনতার সুযোগে দৈনিক কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমনিতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধগতি ঠেকাতে প্রায় অসহায় এবং অসাধু সিন্ডিকেটের কাছে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত আমাদের সরকার ও জনগণ। তার ওপর যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম মুঠোফোন কোম্পানিগুলোর দেশের অগণিত গ্রাহকের ওপর আর্থিক শোষণ ও নির্যাতন যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। সুতরাং মুঠোফোনের বিভিন্ন প্যাকেজ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অব্যাহত নজরদারি আমরা প্রত্যাশা করি।
আলমগীর নূর
কজ ওয়েব