ছোটবেলায় দাদা-দাদির কোলে শুয়ে আমরা অনেকেই শুনেছি ভূত-প্রেত, রাক্ষস-খোক্ষস, দৈত্য-দানব, জাদুকর-ডাইনি, পিশাচ-নরখাদক ইত্যাদি কত কিছুর কাহিনী। কাহিনী শুনতে শুনতে কেউ ভয়ে জড়সড়, আবার কেউ ঘুমের অতলে তলিয়ে গেছি। সেই কল্পকাহিনী এখন আর দাদা-দাদির মুখের বুলি বা ঠাকুরমার ঝুলির ভেতরে নেই, প্রযুক্তির কল্যাণে তা উঠে এসেছে চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে মনিটরের স্ক্রিনে। কাল্পনিক কাহিনী বা ফ্যান্টাসিনির্ভর এ গেমগুলো মনে করিয়ে দেয় ছোটবেলায় শোনা নানা গল্পের কথা। ফ্যান্টাসিনির্ভর গেমগুলোর বেশিরভাগই হয়ে থাকে রোল প্লেয়িং ধাঁচের। অর্থাৎ এতে একটি নির্দিষ্ট প্লেয়ারকে কন্ট্রোল করতে হয় এবং নানারকম মিশন সম্পন্ন করতে হয়। অ্যাকশন বা অ্যাডভেঞ্চার গেমগুলোতে কথা কম, কাজ বেশি, কিন্তু রোল প্লেয়িং গেমে ডায়ালগ বেশ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তার ভিত্তিতেই গেমে এগিয়ে যাওয়ার সূত্র পাওয়া যায়। তাই রোল প্লেয়িং গেমগুলোতে কথোপকথন বেশ মনোযোগের সাথে শুনতে হয়, তা না হলে গেমে এগিয়ে যাওয়া বেশ মুশকিল হয়। অনেকের কাছে এ ধরনের গেম ভালো লাগে না, বেশ বিরক্তিকর লাগে। আবার অনেকের কাছে তা বেশ ভালো লাগে, কারণ তা ধৈর্যশক্তি পরীক্ষার গেম এবং ধীরেসুস্থে খেলার গেম। এ দুই ধরনের গেমারের কথা মাথায় রেখে বানানো হয়েছে নতুন গেম ড্রাগন এজ ২। কারণ এ গেমে কথাও রয়েছে এবং সমানতালে অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চারও রাখা হয়েছে, যা গেমটির একঘেয়েমির মাত্রা অনেকটা দূর করে দিয়েছে। গেমটি ডেভেলপ করেছে বায়োওয়্যার এবং পাবলিশ করেছে ইলেকট্রনিক্স আর্টস। গেমটি কম্পোজ করেছে ইনোন জুর। গেমটি বানাতে ব্যবহার করা হয়েছে লাইসিয়াম নামের গেম ইঞ্জিন।
গেমের প্রথম পর্ব ড্রাগন এজ অরিজিনালসের মিথিক্যাল বা কাল্পনিক জগতটিই নতুন গেমে রাখা হয়েছে। গেমে প্লেয়ারকে কন্ট্রোল করতে হবে হাউকে নামের চরিত্রকে। চরিত্রটি ছেলে বা মেয়ে হতে পারে। খেলা শুরুর আগে তা পছন্দ করে নিতে হবে। তাকে গেমের জগতে আবির্ভূত করার আগে তার ক্লাস নির্ধারণ করে দিতে হবে। গেমে মাত্র তিনটি ক্লাস রাখা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে-ওয়ারিয়র, মেজ ও রৌগ। পৈশাচিক শক্তির হাতে নিজ শহর ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় পরিবারসহ হাউকে রিফুজি হিসেবে যাত্রা করতে হবে সিটি অব ক্রিকওয়ালের উদ্দেশে। পরে সে ভাগ্যের সূত্রের গতিপথ বদলে রাজনৈতিক ও সামাজিক বাধা ঠেলে হয়ে উঠবে লিজেন্ডারি চ্যাম্পিয়ন। গেমে তার সহযোগী হিসেবে থাকবে ভেরিক ও কাসান্ড্রা।
গেমটি নন-লিনিয়ার ধাঁচের। কারণ এতে গেমের কাহিনীর নির্দিষ্ট ধারা বজায় রাখা হয়নি, তা ইচ্ছেমতো বদলে নেয়া যাবে গেমারের মর্জিমতো। কারণ গেমে প্রতিটি কাজ করার আগে তিন রকমের অপশন দেয়া হবে। এ অপশনগুলোর ব্যবহার প্লেয়ারের প্রকৃতি শান্ত, মাঝারি না রাগী গোছের তা নির্ধারণ করে দেবে। গেমে নিজের মর্জিমাফিক চলা যাবে বলে গেমটি সবার কাছে বেশ ভালো লাগবে। যারা রোল প্লেয়িং গেম পছন্দ করেন না তারাও গেমটি পছন্দ করবেন। নতুন জাদুমন্ত্রের ব্যবহার, বেশ কিছু নতুন ধরনের অস্ত্র এবং যুদ্ধ-কৌশল গেমটিকে সমৃদ্ধ করে তুলেছে। গেমটি চালাতে ১.৮ গিগাহার্টজের কোর টু ডুয়ো প্রসেসর, ১ গিগাবাইট র্যা্ম, ২৫৬ মেগাবাইট মেমরির পিক্সেল শেডার ৩.০ সমর্থিত গ্রাফিক্স কার্ড ও ৭ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক স্পেস লাগবে।
কজ ওয়েব