ফার্স্ট পারসন শুটার গেমের মধ্যে কল অব ডিউটি সিরিজের নাম আসে সবার প্রথমে। দুর্দান্ত অ্যাকশন ও অ্যাডভেঞ্চারে ভরা এ সিরিজের গেমগুলো শুটিং গেমভক্তদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। মডার্ন ওয়ারফেয়ার ৩ গেমটি কল অব ডিউটি গেম সিরিজের অষ্টম গেম। গেম সিরিজটির সাব সিরিজ হচ্ছে মডার্ন ওয়ারফেয়ার। এ সাব সিরিজে এ নিয়ে বের হলো তিনটি গেম। গেম তিনটিই একটি কাহিনীর ধারাবাহিকতায় রচনা করা হয়েছে। গেমটি ডেভেলপ করায় ইনফিনিটি ওয়ার্ড ও স্লেজহ্যামার গেমসের পাশাপাশি র্যাাভেন সফটওয়্যার নামের প্রতিষ্ঠানও সাহায্য করেছে। গেমটির মূল পাবলিশার অ্যাকটিভিশন, তবে জাপানে পাবলিশ করেছে স্কয়ার ইনিক্স। গেমটি বানাতে ব্যবহার করা হয়েছে এমডব্লিউথ্রি নামের গেম ইঞ্জিন। গেমটি মুক্তি পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বাজারে গেমটির ৬.৫ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে, যার মূল্যমান প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
নতুন গেমটি পূর্ববর্তী গেম মডার্ন ওয়ারফেয়ার ২-এর সিক্যুয়াল। যারা আগের গেম খেলেননি, তাদের জন্য কাহিনী বুঝতে সমস্যা হবে। মূলত গেমের কাহিনী বোঝার জন্য এ সাব সিরিজের প্রথম থেকেই খেলে আসতে হবে। ক্যাম্পেইন মোডে গেমপ্লেতে তেমন একটা পরিবর্তন আনা হয়নি। অনেক গেমার হতাশ হয়েছেন ক্যাম্পেইন মোডে গেমটি অনেক কম সময়ের বলে। কারণ গেমটি ৭-৮ ঘণ্টার মধ্যেই শেষ করা সম্ভব। চার ডিভিডির গেম যা প্রায় ১৬ গিগাবাইট জায়গা দখল করে সে গেম এত তাড়াতাড়ি শেষ হলে কার না মন খারাপ হবে? ক্যাম্পেইন মোডে আসলে তেমন একটা জোর না দিয়ে গেমটি ডেভেলপ করা হয়েছে মাল্টিপ্লেয়ার মোড ও কো-অপারেটিভ মোডকে জোর দিয়ে। কো-অপারেটিভ মোডটি নতুন সংযোজিত হয়েছে সারভাইভাল মোড নামে। সর্বোচ্চ দু’জন একসাথে খেলা যাবে এ মোডে। এ মোডে একেক পর এক শত্রু আসতেই থাকবে, তাদের সাথে লড়াই করতে হবে এবং প্রতি ওয়েভে শত্রুপক্ষ আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে। আগের গেম ওয়ার্ল্ড অ্যাট ওয়ারের নাৎসি জম্বি মোডের সাথে নতুন এ সারভাইভাল মোডের তুলনা করা যেতে পারে। কিন্তু আগের গেমে জম্বিরা কিছু নির্দিষ্ট পজিশন থেকে আক্রমণ করত, কিন্তু সারভাইভাল মোডে শত্রুপক্ষের ট্যাকটিক্যাল পজিশন ভালো করা হয়েছে। মাল্টিপ্লেয়ারে গেমটির আসল মজা লুকিয়ে রয়েছে। যাদের ইন্টারনেট কানেকশন নেই এবং মাল্টিপ্লেয়ার মোডে খেলতে পারবেন না তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া কিছুই করার নেই। মাল্টিপ্লেয়ারে দুটি নতুন মোড দেয়া হয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে কিল কনফার্মড, যাতে মৃত শত্রু সৈন্যের লাশ থেকে ডগ ট্যাগ সংগ্রহ করতে হবে এবং অপরটি হচ্ছে টিম ডিফেন্ডার, যাতে ফ্ল্যাগ সংগ্রহ করা নিয়ে যুদ্ধ করতে হবে।
গেমটির ভালো দিকের মধ্যে রয়েছে রোমহর্ষক গেমপ্লে, দুর্দান্ত অ্যাকশন, প্রাণবন্ত গ্রাফিক্স ও শব্দশৈলি এবং বেশ কয়েকটি মাল্টিপ্লেয়ার মোডের উপস্থিতি। গেমের ত্রুটিগুলোর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে গেমের গেমপ্লে আগের গেমের মতোই, যার ফলে গেমের গেমপ্লেতে কোনো নতুনত্ব নেই। সিঙ্গেল প্লেয়ার মোডে খেলার সময় কাহিনী বোঝার জটিলতা নতুন গেমারের জন্য বিরক্তির কারণ হতে পারে, তবে আগের দুটি গেম খেলে থাকলে সমস্যা হবে না। তবে যাই বলা হোক না কেনো, ফার্স্ট পারসন শুটিং গেমারদের কাছে গেমটি বেশ নাম করেছে, যার প্রমাণ গেমটির স্কোর রেটিংয়ে বিভিন্ন সমালোচক ও গেমারদের চোখে ৮০-৯০ ভাগ স্কোর করেছে।
সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট
প্রসেসর : ইন্টেল কোর টু ডুয়ো ই৪৩০০ ১.৮ গিগাহার্টজ বা এএমডি এথলন ৬৪ এক্সটু ডুয়াল কোর ৪০০০+, মেমরি : ২ গিগাবাইট, গ্রাফিক্স হার্ডওয়্যার : ২৫৬ মেগাবাইট মেমরির পিক্সেল শেডার ৩.০ সাপোর্টেড ভিডিও কার্ড (এনভিডিয়া জিফোর্স ৮৬০০জিটি/এটিআই রাডেওন এক্স১৯৫০) ও হার্ডডিস্ক স্পেস : ১৬ গিগাবাইট।
কজ ওয়েব