লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
আহমেদ ওয়াহিদ মাসুদ
মোট লেখা:৯৮
লেখা সম্পর্কিত
লেখার ধরণ:
অ্যাডোবি ফটোশপ
ফটোশপ টিপস
ছবি এডিটিংয়ের জগতে ফটোশপ একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে অ্যাডভান্সড এডিটিংয়ের জন্য ভালো সফটওয়্যার ব্যবহার করলেও কিছু সাধারণ টিপস জানা প্রয়োজন। এ লেখায় এমন কিছু প্রয়োজনীয় টিপস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যা প্রায় সব ধরনের এডিটিংয়ের জন্যই কমবেশি দরকার হয়।
অ্যাডভান্সড হেয়ার সিলেকশন
পোর্ট্রেট সাইজের ছবি এডিটিংয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যাটি হলো হেয়ার সিলেকশন। ছবিতে সম্পূর্ণ হেয়ার সিলেক্ট করা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কিছু অংশ কাটা পড়বেই। কারণ, চুলের যে অংশগুলো খুব সূক্ষ্ম থাকে তা ঠিকমতো সিলেক্ট করা যায় না। তাছাড়া এমন সূক্ষ্ম চুল যদি অসংখ্য থাকে, তাহলে তো সিলেকশন একরকম অসম্ভব হয়ে যায় অথবা সিলেক্ট করলেও সিলেকশনটি খুব একটা ভালো হয় না। তাই সাধারণ সিলেকশন টুল ব্যবহার করে এ ধরনের জটিল সিলেকশন করা সম্ভব নয়। এই টিউটরিয়ালে দেখানো হয়েছে কিভাবে মাস্ক টুল ব্যবহার করে সহজে এ ধরনের জটিল সিলেকশন করা সম্ভব।
এডিটিংয়ের জন্য চিত্র-১ নির্বাচন করা হয়েছে, যাতে চুলের অংশ বেশ জটিল এবং এটি সাধারণ সিলেকশন টুল দিয়ে ভালমতো সিলেক্ট করা সম্ভব নয়।
প্রথমে ছবিটি ফটোশপ দিয়ে ওপেন করুন। এখানে ফটোশপ সিএস-৬ ব্যবহার করা হয়েছে। এবার ক্যুইক সিলেকশন টুল ব্যবহার করে সম্পূর্ণ ছবিটি সিলেক্ট করুন। শুধু বডি চুলের একটি রাফ সিলেকশন হলেই চলবে। এবার উইন্ডো>মাস্ক ট্যাবে গেলে মাস্কের একটি উইন্ডো ওপেন হবে। এখানে পিক্সেল মাস্ক অপশনটি সিলেক্ট করুন (চিত্র-২)। ফলে সিলেক্টেড অংশ ছাড়া বাকি অংশ রিমুভ হয়ে যাবে। এবার মাস্ক এজ-এ ক্লিক করলে ছোট উইন্ডো ওপেন হবে। এখানে ভিউ মোড থাম্বনেইলে ক্লিক করে ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট সিলেক্ট করুন।
এই উইন্ডোতে এজ ডিটেকশন নামে একটি স্লাইড বারে নিজের পছন্দমতো এর মান ঠিক করুন। এজ ডিটেকশনের মানের ওপর নির্ভর করবে ছবির অ্যাডভান্সড হেয়ার সিলেকশন। তবে ডিটেকশনের মান খুব বেশি দেয়া ভালো নয়। কারণ, তাহলে চুলের সাথে সাথে অতিরিক্ত কিছু অংশও সিলেক্ট হতে পারে। যেহেতু বিভিন্ন ছবি অনুযায়ী এই ডিটেকশনের মান ভিন্ন ভিন্ন হয়, তাই এটি ইউজারের নিজেরই বের করতে হবে কোন পর্যায়ে সিলেকশন পারফেক্ট হচ্ছে। তবে ডিটেকশনের সাধারণ মান ৪০-৫০ পিক্সেলের মধ্যে হয়। এজ ডিটেকশন বারের ওপরে একটি চেকবক্স আছে স্মার্ট রেডিয়াস নামে, সেটি সিলেক্ট করলে চিত্র-৩-এর মতো একটি ছবি পাওয়া যাবে।
এবার আবার ভিউ মোডে যান এবং রিভিল লেয়ার অপশনটি সিলেক্ট করুন। সিলেকশনের কাজ প্রায় শেষ। ইউজার এ পর্যায়েই এডিটের কাজ শেষ করতে পারেন। তবে ছবির কিছুটা ফাইন এডিট করা বাকি আছে। ডিটেকশন বারের পাশে একটি ব্রাশের আইকন আছে, সেটি ক্লিক করুন এবং রিফাইন রেডিয়াস টুল সিলেক্ট করুন। আবার ছবিতে গিয়ে রিফাইন টুল দিয়ে কিছু বিশেষ জায়গা সিলেক্ট করতে হবে। রিফাইন টুল দিয়ে সিলেক্ট করার সময় মাউস বাটন চেপে রাখতে হবে। এই রিফাইন টুল দিয়ে ছবির চুল পেইন্ট করুন। সম্পূর্ণ চুল সবুজ না হওয়া পর্যন্ত পেইন্ট করুন। খেয়াল রাখবেন, যেন চুল ছাড়া অন্য কোনো অংশ পেইন্ট না হয়। আর পেইন্ট করা অবস্থায় যদি মাউস বাটন ভুলে ছেড়ে দেন তাহলে আবার শুরু থেকে পেইন্ট করতে হবে। সম্পূর্ণ চুল পেইন্ট করা হয়ে গেলে মাউস বাটন ছেড়ে দিন। তাহলে সবুজ কালারটি চলে যাবে। এতে চিন্তার কিছু নেই। কারণ আসল কাজ পেইন্ট করা, তা হয়ে গেছে। আবার মাস্ক উইন্ডোতে ফিরে যান এবং ভিউ মোডে ক্লিক করে অন লেয়ার অপশনটি সিলেক্ট করুন। এখন যে ছবিটি দেখা যাচ্ছে এটিই লেয়ারের মূল ভিউ। তবে ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখা যাবে, চুলের কিছু কিছু অংশ, মূলত এজের অংশগুলো অস্পষ্ট বা ট্রান্সপারেন্ট হয়ে আছে। অর্থাৎ আরও কিছুটা ফাইন এডিটিংয়ের কাজ করতে হবে। Ctrl+J চেপে বর্তমান লেয়ারের ডুপ্লিকেট তৈরি করুন। যতক্ষণ না পর্যন্ত মনমতো ছবি না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ডুপ্লিকেট করুন। তবে সাধারণত ২-৩ বারের বেশি ডুপ্লিকেট করার দরকার হয় না। এভাবে সম্পূর্ণ হেয়ারসহ যেকোনো ছবির অ্যাডভান্সড সিলেকশন করা সম্ভব (চিত্র-৪)। এখন মূল ছবির লেয়ারের আগে যদি অন্য একটি লেয়ার তৈরি করে কোনো ব্যাকগ্রাউন্ডে পেস্ট করা হয়, তাহলে তা মূল ছবির মতো দেখাবে, শুধু পেছনের ব্যাকগ্রাউন্ড ভিন্ন থাকবে।
কনটেন্ট অ্যাওয়ার মুভ/এক্সটেন্ড টুল
নতুন ফটোশপ সিএস-৬-এর সব ফিচারের মাঝে অন্যতম হলো কনটেন্ট অ্যাওয়ার মুভ/এক্সটেন্ড টুল। কনটেন্ট অ্যাওয়ার অপশন মূলত সিএস-৫-এ প্রথম দেখা যায়। এটি মূলত একটি অপশন, যার মাধ্যমে ছবিতে কোনো অবজেক্ট রিমুভ করে তার ব্যাকগ্রাউন্ড রিকভার করা হয়। যদিও এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অপশন। অনেক সময়ই এটি ঠিকভাবে কাজ করত না। সিএস-৬-এ এই অপশনটির আরও ডেভেলপ করা হয়েছে। এখানে এই টুল ব্যবহার করে কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণ পিক্সেল সিলেক্ট করে তা মুভ করানো যাবে অথবা ছবির অন্য স্থানে মুভ করানো যাবে, কিন্তু কোনো নতুন লেয়ার বা মাস্কের প্রয়োজন হবে না। এই টিউটরিয়ালের মাধ্যমে টুলটি কিভাবে কাজ করে, তা নিচে দেখানো হয়েছে।
চিত্র-৫-এ মূল ছবি এবং একই সাথে এডিট করা ছবি দেয়া হলো। এখানে একই লেয়ারে ছবির একটি অবজেক্টকে সরিয়ে আরেক জায়গায় নেয়া হয়েছে।
প্রথমে কনটেন্ট মুভ টুলের ব্যবহার দেখানো হয়েছে। এখানে মেয়েটির ছবিটি মূল ছবির ডান দিক থেকে মাঝখানে নেয়া হবে। এ জন্য প্রথমে মেয়েটিকে সিলেক্ট করতে হবে সুবিধামতো ল্যাসো টুল বা ক্যুইক সিলেকশন টুল ব্যবহার করে। এখানে ক্যুইক সিলেকশন টুল ব্যবহার করা হয়েছে। টুলের সেটিং হলোÑ সাইজ : ১৯ পিক্সেল, হার্ডনেস : ১০০%, স্পেসিং : ২৫%, অ্যাঙ্গেল : ০, রাউন্ডনেস : ১০০%, সাইজ : পেন প্রেসার। সিলেক্ট করার পর যদি কোনো অংশ বাদ পড়ে, তাহলে চিন্তার কিছু নেই। প্লাস (+) বাটন দিয়ে এক্সট্রা সিলেকশন যোগ করা যাবে, আর মাইনাস (-) বাটন দিয়ে অতিরিক্ত সিলেকশন বাদ দেয়া যাবে।
কনটেন্ট অ্যাওয়ার টুল ব্যবহার করতে হলে সবসময় অবজেক্টকে নিয়ে কাজ করতে হবে। তা সিলেক্ট করার সময় যেনো কিছু বাড়তি জায়গা নিয়ে সিলেক্ট করা হয়। কেননা, কনটেন্ট অ্যাওয়ার টুলের কাজই হলো অবজেক্ট মুভ করে তার জায়গায় ব্যাকগ্রাউন্ড জেনারেট করা। এখন ব্যাকগ্রাউন্ড ঠিক করার জন্যই এই বাড়তি সিলেকশন, যাতে সফটওয়্যারটি ক্যালকুলেট করতে পারে। এখানে অবজেক্টের অর্থাৎ মেয়েটির ধার ঘেঁষে সিলেক্ট করা হয়েছে। কিন্তু কিছু বাড়তি জায়গাসহ সিলেক্ট করতে হবে। এর জন্য সিলেক্টেড এরিয়াকে একটু এক্সপান্ড করলেই হবে। এজন্য অবজেক্ট সিলেক্টেড অবস্থায় সিলেক্ট>মডিফাই>এক্সপান্ড অপশনে যান। ফলে একটি এক্সপান্ড সিলেকশন ডায়ালগ বক্স ওপেন হবে। এখানে উল্লেখ করে দিতে পারবেন, বর্তমান সিলেকশন কতটুকু এক্সপান্ড করতে হবে। এই টিউটরিয়ালে ৫ পিক্সেল এক্সপান্ড করা হয়েছে। এক্সপান্ড করার ফলে সিলেকশনের এরিয়া আরেকটু (৫ পিক্সেল পরিমাণ) বেড়ে যাবে।
কনটেন্ট অ্যাওয়ার টুলের কাজ কোনো নির্দিষ্ট অবজেক্টকে মুভ/রিমুভ করা। এই টুলের দু’টি অপশন। একটি মুভ, আরেকটি এক্সটেন্ড। প্রথমে মুভ অপশনটির ব্যবহার দেখানো হবে। এজন্য কনটেন্ট অ্যাওয়ার টুল সিলেক্ট করে মুভ মোড সিলেক্ট করুন। অবজেক্ট সিলেক্টেড থাকা অবস্থায় তা টেনে ছবির মাঝ বরাবর নিয়ে আসুন। দেখবেন, ছবির মাঝখানে অবজেক্টটি চলে এসেছে। এখন কেউ যদি চান যে আগের অবস্থান এবং নতুন অবস্থান দুই জায়গায়ই অবজেক্ট থাকবে, অর্থাৎ ছবির মাঝখানে অবজেক্টের মাত্র একটি কপি তৈরি হবে, তাহলে কনটেন্ট অ্যাওয়ার টুলের মোড এক্সটেন্ডে সিলেক্ট করুন। এখন অবজেক্ট টেনে ছবির মাঝখানে আনলে আগের অবজেক্টেরও থাকবে একই সাথে পরের নতুন অবজেক্টও থাকবে।
ফেসিয়াল হিলিং (ক্লোন টুল)
ফেসিয়াল হিলিং খুবই জনপ্রিয় এবং বর্তমান সময়ের এডিটিংয়ের প্রধান ভাগগুলোর একটি। মডেলিং, মুভি প্রোডাকশন ইত্যাদিসহ সম্পূর্ণ মিডিয়া জগতে যত ধরনের এডিটিংয়ের প্রয়োজন হয়, তার একটি বড় অংশ হলো এই ফেসিয়াল হিলিং। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে চেহারা আরও সুন্দর করা যায়, ফেসিয়াল স্পট বা অন্য যেকোনো কিছু দূর করা যায়। তাছাড়া বয়স কমানোর জন্যও এটি খুবই উপযোগী একটি উপায়। সুতরাং দেখা যাচ্ছে ফেসিয়াল হিলিংয়ের মাধ্যমে অনেক কাজ করা সম্ভব। অবশ্যই একটি কথা মনে রাখা উচিত। ফেসিয়াল হিলিংয়ের প্রক্রিয়া কোনো একক এডিটিং নয়। এটি মূলত ফাইন এডিটিং অর্থাৎ কোনো ইমেজ এডিট করার পর যখন ফাইন এডিট করা হয় তখন ফেসিয়াল হিলিংয়ের মতো প্রক্রিয়াগুলো প্রয়োগ করা হয়।
মূল ছবি হিসেবে চিত্র-৬ সিলেক্ট করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে ছবিটি একজন বৃদ্ধের। আমরা জানি, ফেসিয়াল হিলিংয়ের প্রধান কাজ হলো রিটাচিং বা ফাইন এডিটিংয়ের কাজ। সুতরাং এখানে বৃদ্ধের ছবি রিটাচিংয়ের মাধ্যমে ফাইন করা হবে এবং বয়স কমিয়ে আনা হবে।
প্রথমে ফটোশপে ছবিটি ওপেন করুন। হিলিং ব্রাশ সিলেক্ট করে ফেস থেকে যতটুকু সম্ভব স্পট, রিংকেলস ইত্যাদি দূর করুন। এতে বয়স কমে যাবে না বা চেহারা সুন্দর হবে না। এতে শুধু স্পটগুলো দূর হবে অর্থাৎ ফেসটি একটু পরিষ্কার হবে, যা এডিটিংয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে পরে এ স্পটগুলোর জন্য অপ্রত্যাশিত ফল পাওয়া যেতে পারে। ক্লোন স্ট্যাম্প টুল ব্যবহার করে মসৃণ স্কিন ক্লোন করতে হবে। আগে ক্লোন টুলের ব্যবহার সম্পর্কে একটু বলে নেয়া যাক। যখন একই টেক্সচারের কোনো জায়গায় একরকম আবার অপর জায়গায় ভিন্ন রকম থাকে তখন ক্লোন টুল ব্যবহার করে সব জায়গায় একই রকম টেক্সচার তৈরি করা যায়। ভালোভাবে লক্ষ করলে দেখা যাবে, মুখের কোন কোন জায়গায় স্কিন খুব মসৃণ আবার কোন কোন জায়গায় স্কিনে বয়সের ছাপ পড়েছে। কিন্তু সম্পূর্ণ মুখেই যদি মসৃণ স্কিন আনার দরকার হয়, তখন ক্লোন টুল ব্যবহার করতে হবে। ক্লোন টুল ব্যবহার করে মসৃণ স্কিনকে ক্লোন করে, তা স্কিনের অন্যান্য জায়গায় পেস্ট করে দিলেই হবে।
মূল ছবিতে স্কিনের কোন অংশকে ক্লোন করতে হবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খুব বেশি মসৃণ স্কিনকে যদি ক্লোন করা হয়, তাহলে ছবি রিয়েলিস্টিক হবে না। কারণ, মুখের একেক জায়গায় স্কিন একেক রকম। তবে সবচেয়ে ভালো হয় স্কিনের একটি মিডিয়াম জায়গা সিলেক্ট করা, যেটি মোটামুটি স্কিনের সব জায়গার সাথেই কমবেশি মিলে যায়। নাকের স্কিনে লোমকূপের সংখ্য তুলনামূলক বেশি। তাই এখানে স্কিন ক্লোন করলে তা মোটামুটি মুখের স্কিনের সব জায়গার সাথেই মানাবে। তবে এই ছবিতে নাকের স্কিনে লোমকূপ অনেক বেশি পরিমাণে আছে এবং বয়সের কারণে স্কিন এখানে অনেক বেশি অমসৃণ হয়ে গেছে। তাই চোখের নিচের স্কিন দিয়ে কাজ চালানো যায়। তবে এই জিনিসগুলো একেক ছবিতে একেক রকম হয়। তাই ইউজারের কাজ হলো ছবি থেকে ঠিকভাবে নির্বাচন করা স্কিনের কোন অংশ ক্লোন করলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যাবে। এবার নাকের স্কিনের টেক্সচার একটু মসৃণ করতে হবে। এজন্য একটি নতুন লেয়ার তৈরি করুন। স্কিনের কালারের সাথে মিলে যায় এরকম কালার স্যাম্পল নিন। এ কাজটি সহজে করার জন্য আইড্রপার টুল ব্যবহার করা যেতে পারে। কালার স্যাম্পল নেয়া হয়ে গেলে ব্রাশ টুল (সফট রাউন্ড ব্রাশ) ব্যবহার করে নাকের স্কিন হিল করুন। এবার লেয়ারগুলো সব মার্জ করুন। এটি করার সহজ উপায় হলো, ঈঃৎষ চেপে সব লেয়ার একসাথে সিলেক্ট করে রাইট বাটন ক্লিক করা, সেখানেই মার্জ করার অপশন থাকবে। জেনে রাখা ভালো একাধিক লেয়ারকে মার্জ করার মানে হলো ওই লেয়ারগুলোকে একটি লেয়ারে পরিণত করা।
এবার লেয়ারের ডুপ্লিকেট করুন। এখন এডিটিংয়ের কাজ এই ডুপ্লিকেট লেয়ারে করা হবে। পলিগনাল ল্যাসো টুল সিলেক্ট করুন এবং ছবিতে শুধু ফেসের অংশটুকু সিলেক্ট করুন (চিত্র-৭)। এবার সিলেক্ট>ইনভার্ট অপশন সিলেক্ট করলে সিলেকশন ইনভার্ট হয়ে যাবে। এবার ডিলিট বাটন চেপে সিলেক্টেড এরিয়া ডিলিট করুন। পরে একইভাবে চোখ এবং চেখের ওপরে ভ্রƒ সিলেক্ট করে ডিলিট করুন। এবার একটু ব্লার করতে হবে। এজন্য ফিল্টার>ব্লার>গশিয়ান ব্লার সিলেক্ট করুন। ব্লারের রেডিয়াস ৭ পিক্সেল রাখলেই হবে। এবার লেয়ার মোড পরিবর্তন করে সফট লাইট সিলেক্ট করলে দেখা যাবে ছবির কালার একটু পরিবর্তন হয়েছে। মূল যে পরিবর্তন হবে, তা হলো বৃদ্ধের বয়সের পরিবর্তন হবে না, কিন্তু মুখের স্কিনে কোনো স্পট বা রিংকেলস থাকবে না। এটি হিলিংয়ের প্রথম পর্যায়। এডিটিং এখানেই শেষ করা যায় অথবা বয়স কমানোর জন্য আরও কিছুটা এডিট করা যায়। সেজন্য প্রথমে কালার একটু পরিবর্তন করুন। ইমেজ>অ্যাডজাস্টমেন্ট>হিউ/স্যাচুরেশন অপশন সিলেক্ট করে হিউ +১২, স্যাচুরেশন -৩২ এবং লাইটনেস +১৮ সিলেক্ট করুন।
এডিটিংয়ের মূল কাজ প্রায় সবই শেষ। কিন্তু ভালো করে লক্ষ করলে দেখা যাবে, ছবির অরিজিনাল অংশ এবং এডিট করা অংশের মাঝে একটি লেয়ার দেখা যাচ্ছে অর্থাৎ হাল্কা কালারের একটি বর্ডার দেখা যাচ্ছে। এই লেয়ারের জন্য ছবি রিয়েলিস্টিক মনে হচ্ছে না। এজন্য ইরেজার টুল সফট রাউন্ড ব্রাশসহ সিলেক্ট করুন এবং যেখানে লেয়ার বোঝা যাচ্ছে সেখানে কিছু পিক্সেল ইরেজ করে দিলে লেয়ারের মতো অংশটুকু মুছে যাবে। ইরেজ করার পরও লেয়ার বোঝা গেলে ব্লার টুল ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্লার টুলের সাইজ কমিয়ে নিয়ে হার্ডনেস বাড়িয়ে লেয়ারের বর্ডারের মতো জায়গায় কিছুটা ব্লার করে দিন। ব্লার টুলের সাইজ যেন ছোট থাকে সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, সাইজ বড় হলে এডিটেড অংশও ব্লার হয়ে যাবে, যেটি দেখতে বেমানান লাগবে।
এবার ফটো লেয়ারটি অর্থাৎ সবার নিচের লেয়ারটি ডুপ্লিকেট করে তা সবার ওপরে নিয়ে আসুন। ফিল্টার>আদার>হাই পাস সিলেক্ট করুন। রেশিয়াস ৪ পিক্সেলে রাখুন। এবার ছবির কন্ট্রাস্ট কিছুটা বাড়াতে হবে। তাই ইমেজ>অ্যাডজাস্টমেন্ট সিলেক্ট করুন এবং ব্রাইটনেস ০ ও কন্ট্রাস্ট ১০০-তে রাখুন। এবার এই লেয়ারের মোড পরিবর্তন করে দিন।
এখন ছবিটি অনেকটাই রিয়েল মনে হবে। তবে ছবিটি এডিটিংয়ের সময়, বিশেষ করে এ ধরনের ফেসিয়াল এডিটিংয়ের সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো চোখ। চোখ যদি উজ্জ্বল থাকে তাহলে ছবি দেখতে আরও বেশি রিয়েল ও জীবন্ত মনে হবে। এজন্য প্রথমে ছবি জুম করে ক্লোন টুল সিলেক্ট করুন। এবার চোখের নিচে কোনো কালো দাগ থাকলে তা সরিয়ে ফেলুন। চোখের ভেতরটা সাদা এবং উজ্জ্বল থাকাটাও প্রয়োজনীয়। তাই চোখের ভেতরে যদি কোনো ধরনের স্পট বা রক্তনালী বা অন্য যা কিছুই থাকুক না কেন, তা সরিয়ে ফেলতে হবে। কালার স্যাম্পল নিয়ে কাজটি সহজেই করা সম্ভব। কালার স্যাম্পল নেয়ার জন্য আইড্রপার টুল ব্যবহার করুন।
নতুন একটি লেয়ার তৈরি করুন। লেয়ারের ব্লেন্ডিং মোড ডার্কেন রাখুন এবং লেয়ারটির পজিশন সবার ওপরে রাখুন। এবার ব্রাশ টুল সিলেক্ট করুন (অপাসিটি ২০% এবং কালার ব্ল্যাক)। এবার ছবির যত জায়গায় দাড়ি-চুল ইত্যাদি থাকবে সবখানে পেইন্ট করুন। বয়স কমানোর এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এবার লেয়ারের অপাসিটি ৬০%-এ নিয়ে আসুন। সবার ওপরে আরেকটি লেয়ার তৈরি করুন এবং লেয়ারের মোড কালারে রাখুন। আগের মতো এখানেও একই প্রক্রিয়া চালিয়ে হেয়ার কালার করুন। তবে এবার ব্রাউন কালার (#৪৮৩৬২৬) ব্যবহার করতে হবে। আর এই লেয়ারটির অপাসিটি ৪৫%-এ রাখুন। এখন আরেকটি লেয়ার তৈরি করুন। আগের মতো এই লেয়ারেও একই প্রক্রিয়ায় কালার করুন। তবে এবার শুধু বৃদ্ধের দাড়িতে কালার করুন এবং কালার হিসেবে আগের ব্রাউন কালারই সিলেক্ট করুন। অপাসিটি ৬০%-এ রাখুন। তবে দাড়ির কালার যদি অন্যরকম রাখার দরকার হয়, তাহলে ইউজার নিজের পছন্দমতো কালার ব্যবহার করতে পারেন।
ফিডব্যাক : wahid_cseaust@yahoo.com