গ্রাফিক্স ডিজাইনের যুগে একটি ছবিকে কত আঙ্গিকে কত ভঙ্গিমায় দেখানো যায়, তার নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা কেউ দিতে পারবেন না। এখন কমপিউটার গ্রাফিক্সে কারুকাজের কল্যাণে যে বস্ত্তর Perspective দৃশ্য দেখা সম্ভব হয়নি, তাও দেখে নেয়া সম্ভব হচ্ছে। একটি ছবিতে কোনো বস্ত্তর কাল্পনিক অবস্থান নির্ণয়েও গ্রাফিক্স ডিজাইনার পিছিয়ে নেই। ধরুন, অনেক উঁচু একটি মিনার। আপনার দেখে হঠাৎ মনে হতে পারে, এর ডিজাইনটি যে রকম আছে তা না হয়ে অন্যরকম হতে পারত। আপনি নিজেই হয়তো আর্কিটেক্সারাল ডিজাইন করতে চান ওই মিনারটির। কল্পনাশক্তি থাকলে এই অবাস্তবকেও বাস্তব করে তুলতে পারেন অ্যাডোবি ফটোশপের মাধ্যমে। এ রকম একটি কাজ আজ এই পর্বে দেখানো হয়েছে। এখানে একটি মিনারের কিছু অংশ ডিজাইন পরিবর্তন করে এর Perspective View পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছে। যারা বিভিন্ন আর্কিটেকচারে পড়াশোনা করছেন, তাদের এই লেখা উপকারে আসতে পারে।
চিত্র : ০১
চিত্র : ০২
প্রথমেই ছবি নির্বাচনের পালা। যে ছবিতে কাজ করা হবে, তা একটু বেশি রেজ্যুলেশনে তোলা হলে ভালো হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একটি যথাযথ সোর্স ঠিক করা। এখানে একটি মিনারের ছবি নির্বাচন করা হয়েছে যাকে একটু Perspective View থেকে Unwrapping করা হবে। চিত্র : ০১-এ একটি মিনারের ছবি দেখতে পাচ্ছেন। ছবির মিনারটি কালো-সাদা টুইস্টেড স্ট্রাইপ দেয়া আছে। এধরনের কোনো মিনারের ছবি যদি না থাকে, তাহলে সোজা মিনার দিয়েও কাজটি করতে পারেন। সেক্ষেত্রে নিজেকে এরকম টুইস্টেড স্ট্রাইপ তৈরি করে নিতে হবে। যারা নিজেদের পছন্দমতো মিনার খুঁজে পাচ্ছেন না, তারা ইন্টারনেটে Cape Hatters Light House দিয়ে ছবি সার্চ করলে পেয়ে যাবেন। এই ছবিটি লক্ষ করলে বুঝতে পারবেন, লাইট হাউজটির Ground Perspective থেকে ছবিটি তোলা, যাতে এর ব্যাকগ্রাউন্ড পুরোটাই আকাশ এসেছে। এতে ব্যাকগ্রাউন্ড এডিট করতে সুবিধা হবে। ছবির দিকে লক্ষ করলে এর কালো অংশ অদৃশ্য করার ব্যাপার মাথায় আসে এবং এর ভেতরে টুইস্টেড সিঁড়ি দেয়া যেতে পারে বলে মনে হয়। তাই এই ছবির জন্য একটি টুইস্টেড সিঁড়ির ছবি দরকার, যা চিত্র : ০২-এ দেখানো হলো। এরকম ছবির জন্য ইন্টারনেটে সার্চ করলে পেয়ে যাবেন।
এবার প্রথমে লেয়ার প্যালেট থেকে মিনারের ছবির ডুপিকেট লেয়ার তৈরি করে নিন। মনে রাখবেন, যখনই কোনো ছবির ওপর এডিট করতে যাবেন, কখনোই অরিজিনাল লেয়ারের ওপর এডিট করতে যাবেন না। এতে মূল কপি নষ্ট হতে পারে। নতুন লেয়ারটির নাম White Stripes দিন। এবার ব্যাকগ্রাউন্ড লেয়ার অর্থাৎ মূল লেয়ার ডিজ্যাবল করুন। এটি করতে লেয়ার প্যালেটের লেয়ারের সামনে eye চিহ্নে ক্লিক করলে লেয়ারটির আর কিছু কার্যকারিতা থাকবে না। এ ছবির ক্ষেত্রে একটু লক্ষ করলে দেখতে পাবেন, সাদা ও কালো স্ট্রাইপের মাঝে স্পষ্ট ভাগ রয়েছে। সব মিলিয়ে পুরো ছবিটি যথেষ্ট কন্ট্রাস্টিভ। যার ফলে মিনারের সাথে পেছনের আকাশেরও যথেষ্ট সূক্ষ্ম সীমারেখা রয়েছে। এ কারণে এ ছবির ক্ষেত্রে Magic Word দিয়ে সিলেকশন করা যাবে। পুরো প্রক্রিয়াটিকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। Erase, Replace, Insert এবং Convert ধাপে ধাপে এই এডিটিং প্রসেস শেষ করা হয়েছে। প্রথমেই Erase অংশ নিয়ে কাজ করা হয়েছে। এ পর্যায়ে মিনারটির কালো স্ট্রাইপ মুছে ফেলতে হবে। যাদের কাছে এরকম আলাদা করে স্ট্রাইপ দেয়া মিনারের ছবি নেই, তারা নিজেদের মতো করে স্ট্রাইপ এঁকে নিতে পারেন। প্রয়োজনে সিলেকশন টুল দিয়ে পেঁচানোভাবে সিলেক্ট করে নিন।
]
চিত্র : ০৩
এবার যারা এ ধরনের মিনার নিয়ে কাজ করছেন, তাদের জন্য বলছি ম্যাজিক ওয়ান্ড টুল দিয়ে কালো স্ট্রাইপগুলো সিলেক্ট করতে হবে। Wand-এর Tolerance ক্ষমতা 15 পিক্সেল রাখলেই চলবে। এটি টুলবারের নিচেই দৃশ্যমান হবে। Tolerance বেশি দিলে কালো স্ট্রাইপের বাইরেও অনেকখানি সিলেক্ট হয়ে যাবে। একটি স্ট্রাইপ সিলেক্ট হয়ে গেলে বাকিগুলো একই সাথে সিলেক্ট করতে Shift Key চেপে সিলেক্ট করুন। সব কালো স্ট্রাইপ একসাথে সিলেক্ট করার সময় লক্ষ রাখবেন, স্ট্রাইপের কোনো অংশ যেন বাদ না পড়ে। তবে মিনারের একেবারে ওপরের গম্বুজ অংশ বাদ দিলে ভালো হবে। সিলেক্ট শেষে লেয়ার মাস্ক করতে হবে। এখানে সিলেক্টেড অংশ ছাড়া বাকি সব অংশ মাস্কিংয়ের আওতায় আনতে হবে। তাই Inverse Selection-এ যেতে হবে। এর জন্য Select ট্যাব থেকে Inverse-এ ক্লিক করুন। এবার ছবিটি দেখতে চিত্র : ০৩-এর মতো হয়েছে।
এবার লেয়ার প্যালেট থেকে Add Layer Mask-এ ক্লিক করুন, যা আপনার লেয়ার প্যালেটে White Stips লেয়ারের সাথে জুড়ে যাবে। সেখানে যে অংশটুকু মাস্ক আউট করা হয়েছে শুধু সে অংশে কালো দেখা যাবে, বাকিটা দৃশ্যমান হবে না। এবার মাস্কড লেয়ার সিলেক্ট রেখে ব্রাশ টুল সিলেক্ট করতে হবে। ব্রাশ প্রপার্টিজ থেকে এর Hardness 100% করুন। ব্রাশ সাইজ ছোট নিতে হবে। Foreground Color 100 Black সিলেক্ট করে কালো স্ট্রাইপগুলো মুছতে হবে। এ ক্ষেত্রে আকাশ এবং স্ট্রাইপের মাঝের অংশগুলো নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই। কিছুক্ষণের মাঝেই ঠিক করা যাবে। আর ওপরের অংশ মুছে গেলেও আনা যাবে, তাই বেশি সতর্কতার প্রয়োজন নেই। লেয়ার মাস্কিংয়ের এই সুবিধা যেকোনো মুহূর্তে মাস্ক আউট করা সম্ভব হয়। কালো অংশগুলো সম্পূর্ণ মুছে ফেলার পর সাদা ট্রান্সপারেন্ট অংশ বেরিয়ে আসবে। মুছে ফেলার পর যদি কিছু ধূসর অংশ দেখা যায়, তাহলে বুঝতে হবে Foreground Color সম্পূর্ণভাবে কালো নির্বাচন হয়নি। কাজ করার সময় একটু জুম করে পেইন্ট করলে ভালো করবেন। যেসব এরিয়া মাস্ক আউট করছেন, তা ছবি থেকে মুছতে শুরু করবে। এবার আকাশের সাথে কালোর যে কন্ট্রোস্ট অংশ রয়েছে, তা মুছতে হবে। এর জন্য ব্রাশের হার্ডনেস শতাংশে নামিয়ে আনলে মনে হবে ছবিটাকে মুছে ফেলা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এটি লেয়ার মাস্কের ওপর কাজ চলছে। আকাশের দিকে একটু বেশি করেই পেইন্ট ব্রাশ দিয়ে মুছে চলুন। কালো অংশের সীমানা ছাড়িয়ে আকাশের অনেকখানি মুছে ফেলুন। কারণ, আকাশের বেশ কিছু অংশ বেন্ড করতে হবে। যার জন্য কিছু বাড়তি জায়গা মুছে ফেলতে হচ্ছে।
চিত্র : ০৪
যাদের ম্যাজিক ওয়ান্ড সিলেকশন করার সময় উপরের গম্বুজ সিলেক্টড হয়ে গিয়েছিল, তারা তাদের ব্রাশের ফোরগ্রাউন্ড কালার একদম সাদা নির্বাচন করুন। ধীরে ধীরে গম্বুজের ওপর পেইন্ট করুন। এ সময় ব্রাশের হার্ডনেস বাড়িয়ে নিতে ভুলবেন না। দেখবেন গম্বুজটি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এবার দেখতে নিশ্চয়ই চিত্র : ০৪-এর মতো দেখাচ্ছে। লেয়ার মাস্কিংয়ের সময় সবসময় মনে রাখবেন ১০০% কালো রং হলো ছবির নির্দিষ্ট অংশ মুছে ফেলতে কাজ করবে। আর সম্পূর্ণ সাদা মুছে যাওয়া অংশ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। এবার Replace পর্বের কাজ শুরু করতে হবে।
চিত্র : ০৫
চিত্র : ০৬
প্রথমেই ব্যাকগ্রাউন্ডে মেঘ নিয়ে কাজ করতে হবে। এজন্য একটি নতুন লেয়ার খুলতে হবে, যেখানে ক্লোন করে নেয়া মেঘগুলো বসানো যাবে ইচ্ছেমতো। এখানে নতুন লেয়ার ব্যবহার করার কারণ হলো ক্লোন করা মেঘ যদি ঠিকমতো ম্যাচ না করে, তাহলে লেয়ারটি ফেলে দিয়ে নতুন করে আবার কাজ চালিয়ে যাওয়া যায়। Create New Layer-এ ক্লিক করে নতুন লেয়ার ওপেন করুন। লেয়ারের নাম Clouds দিতে পারেন। লেয়ারটিকে ড্র্যাগ করে White Stripes লেয়ারের নিচে নিয়ে আসুন। এতে মূল ছবির পরে এই অংশ দেখা যাবে। অর্থাৎ এই মাস্কড লেয়ারের মাঝে যে অংশ মুছে ফেলা হয়েছে, তার মধ্য দিয়ে মেঘের লেয়ার দেখা যাবে। এবার লেয়ার White Stripes থেকে মেঘের ক্লোন করতে হবে। Colon Stamp Tool-এর সাহায্যে প্রথমে সোর্স সিলেক্ট করুন। এবার Clouds Layer সিলেক্ট করে ক্লোন পেস্ট করুন। ছবিটা বড় করে নিন যাতে ডিটেইল পাবেন। ব্রাশের সাইজ ১৫ থেকে ২০ পিক্সেল হবে। ব্রাশ Properties থেকে এর Hardness শতাংশের কাছাকাছি নিয়ে আসুন। ক্লোনিং করার সময় টেক্সচার ও বেজ-এর দিকে লক্ষ রাখবেন। সীমানার দিকগুলোতে সবচেয়ে সতর্ক অবস্থান অবলম্বন করতে হবে। কারণ, সবার চোখ প্রথমেই সেই অংশগুলোতেই পড়বে। এই ছবির ক্ষেত্রে ডান দিকের আকাশে কিছু আঙ্গুলের মতো মেঘের পোজ রয়েছে সেগুলোকে যদি বাড়িয়ে দেয়া যায়, তাহলে আরো ভালো লাগবে দেখতে। চিত্র : ০৫-এ কোন কোন জায়গায়গুলোতে সতর্কভাবে ক্লোনিং করতে হবে, তা দেখানো হচ্ছে। ক্লোনিং করার সময় তাড়াহুড়ো করবেন না। প্রয়োজনে ২০০% জুম করে ক্লোন করুন, দেখবেন আলাদা করে ধরাই যাচ্ছে না। ক্লোন করার সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে সোর্স ঠিক করে নিতে পারেন। যেমন বামের অংশ পেইন্ট করতে বামের মেঘ এবং আকাশকে ক্লোন করুন। ডান দিকের অংশ করার সময় ডানের মেঘগুলোকে কপি করুন। এভাবে ধীরে ধীরে যত্নের সাথে প্রান্তগুলো পুরো জুম ইন করে ক্লোন করুন। মাঝের দিকে কোনো আলাদা লাইন যেন না বোঝা যায় সে দিকে লক্ষ রাখবেন। কারণ, ডান ও বামের আকাশ মেশাতে গিয়ে মাঝখানে একটু ভিন্ন টেক্সচার ধারণ করতে পারে। যাতে এরকম না হয় তার জন্য ছোট সফট ব্রাশ দিয়ে কিনারাগুলো মিলিয়ে নিন। এ ক্ষেত্রে হঠাৎ হঠাৎ জুম আউট ও জুম ইন করে দেখে নিতে পারেন। তাতে টেক্সচার মেলাতে সুবিধা হবে। এবার ছবিটা দেখতে নিশ্চয়ই চিত্র : ০৬-এর মতো হয়েছে। ছবিতে এখন সবই ঠিক আছে শুধু সাদা স্ট্রাইপটির উল্টো দিক ছাড়া। যেহেতু স্ট্রাইপটি পেঁচানো তাই এই স্টাইপের পেছনে আরো একটি স্ট্রাইপ আঁকতে হবে, যাতে এটি দেখতে Spiral শেপ-এর হয়।
চিত্র : ০৭
চিত্র : ০৮
একটি নতুন লেয়ার খুলুন Hidden Stripes নাম দিয়ে। এটিকে Clouds Layer এবং White Stripes Layer-এর মাঝে তৈরি করুন। যাতে মেঘের ওপরে থাকে এবং মূল Strips গুলোর নিচে থাকতে পারে। এবার স্ট্রাইপ তৈরি করতে গ্রাডিয়েন্ট টুলের ব্যবহার করতে হবে। গ্রাডিয়ান্ট টুলের সাব সেকশন হিসেবে Paint Bucket টুল রয়েছে। গ্রাডিয়েন্টের ওপর ক্লিক করলেই মেনুর মতো দেখা যাবে। এবার একটু সাদা স্ট্রাইপগুলোর দিকে লক্ষ করুন। প্রতিটি স্ট্রাইপ মাঝখান দিয়ে একটু উজ্জ্বল রঙের এবং কিনারাগুলোতে একটু ডার্ক। এই উজ্জ্বলতা একটি বস্ত্তর ডেপথ নির্দিষ্ট করে। যেহেতু এই মিনারটির আকৃতি একটি সিলিন্ডারের মতো। তাই এর বাকি স্ট্রাইপগুলো এমনভাবে আঁকতে হবে, যাতে করে এটিকে অনেকটা রাউন্ড বলে মনে হবে। প্রথমে কালার পিলারের সাহায্যে সাদা স্ট্রাইপের রঙটা নির্বাচন করতে হবে। পারতপক্ষে মাঝের উজ্জ্বল অংশ থেকে রঙ নির্বাচন না করাই শ্রেয়। মাঝের উজ্জ্বল রঙ থেকে একটু গাঢ় রঙ নির্বাচন করুন। এবার ব্যাকগ্রাউন্ড কালার নির্বাচন করতে কালার ড্রপলারের সাহায্যে স্ট্রাইপের কিনারার রঙ নির্বাচন করুন। যেহেতু এটি ভেতরের দিকের অংশ হবে সেখানে আলো ততটা উজ্জ্বল হয়ে পড়বে না। তাই প্রতিটা রঙ একটু গাঢ় করে নিন। গ্রাডিয়েন্টটি এবার দেখতে মনে হবে হালকা ধূসর থেকে গাঢ় ধূসরে পরিণত হয়েছে। গ্রাডিয়েন্ট বার থেকে এর চতুর্থ ক্রাইটেরিয়া সিলেক্ট করুন। এটিকে Reflected Gradient বলে। এর পরের কাজগুলো একটু জটিল। তাই সাবধানে Hidden Stripes সিলেক্ট রেখে গ্রাডিয়েন্ট টুল ব্যবহার করে মিনারের মাঝখান থেকে বাম দিকে ড্র্যাগ করুন। দেখবেন চিত্র : ০৭-এর মতো গ্রাডিয়েন্টের প্রভাবে মিনারটির ফাঁকা অংশ সিলিন্ডারের মতো রঙে পরিণত হয়েছে। মাঝখান থেকে ড্র্যাগ করার ফলে মাঝখানটুকু উজ্জ্বল রঙ এবং বাকি দুই পাশে গাঢ় রঙ এসেছে। এটি বেশি এলাকাজুড়ে ড্র্যাগ করলে উজ্জ্বল ভাব বেশি ছড়িয়ে যাবে। রঙটা মনমতো না হলে ঠিক করে নিন। এবার আবার লেয়ার মাস্ক তৈরি করতে হবে। Hidden Stripe সিলেক্ট রেখে Layer Mask খুলতে হবে। পুরো মাস্কটি ১০০% কালো দিয়ে পূরণ করলে গ্রাডিয়েন্টটি অদৃশ্য হয়ে যাবে। এটিকে কিছু নির্দিষ্ট স্থানে ফুটিয়ে তুলতে হবে। Hidden Stripes-এর লেয়ার সিলেক্ট রেখে 100% Hard ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। ব্রাশের কালার সম্পূর্ণ সাদা করে নিতে হবে। এবার পেঁচানো অংশটি আঁকতে শুরু করুন, যা প্রকৃতপক্ষে Unmasking হতে থাকবে। চিত্র : ০৮-এর মতো করে সুন্দরভাবে সূক্ষ্মভাবে Unmask করুন। পেছনে গ্রাডিয়েন্ট থাকার কারণে আপনা থেকেই পেছনের অংশ সিলিন্ডারের ভেতরের অংশ বলে মনে হবে। প্রয়োজন হলে সম্পূর্ণ কালো রঙ সিলেক্ট করে পেইন্ট করলে অপ্রয়োজনীয় গ্রাডিয়েন্ট মুছে যাবে।
এবার সবার শেষ অংশ হিসেবে সিঁড়িটাকে ভেতরে স্থাপন করতে হবে। যাতে করে মনে হয় সিঁড়ি দিয়ে মিনারের ওপরের গম্বুজে ওঠা যায়। প্রথমে সেই সিঁড়ির ছবিটা ফটোশপে ওপেন করুন। এবার ম্যাজিক ওয়ান্ড টুল দিয়ে এটিকে সিলেক্ট করুন। এখানে টলারেন্স ৬৫ রাখা হয়েছে। তবে ইচ্ছে করলে টলারেন্স কমিয়ে-বাড়িয়ে চেষ্টা করতে পারেন। অতিরিক্ত অংশ সিলেক্ট হয়ে গেলে টলারেন্স কমিয়ে দিতে হবে। আবার পুরো অংশ সিলেক্টেড না হলে টলারেন্স বাড়িয়ে দিতে হয়। এটি যে রঙ সিলেক্ট করতে দিচ্ছেন তার সাথে ছবির বাকি রঙের কন্ট্রোস্ট কতটুকু তার ওপর নির্ভর করে। এবার পুরো সিঁড়িটা সিলেক্ট করে কপি দিয়ে মিনারের ছবির ওপর স্থাপন করুন। এটি ছবির নির্দিষ্ট সাইজের তুলনায় বড় হয়ে গেলে আকৃতি কমিয়ে আনতে হবে। এর জন্য Edit>Free Transform-এ ক্লিক করুন। প্রয়োজন অনুযায়ী একে রিসাইজ করুন। এবার শুধু সিঁড়ির প্রয়োজনীয় অংশ অর্থাৎ সিঁড়ির কপিগুলো রেখে বাকি অংশ মুছে ফেলতে হবে। এর জন্য এই Stair Layer-এর সাথে মাস্ক জুড়ে দিতে হবে। মাস্কিংয়ের মাধ্যমে আগের মতো করেই মুছে ফেলতে হবে সিঁড়ির অপ্রয়োজনীয় অংশ।
চিত্র : ০৯
চিত্র : ১০
এবার সিঁড়িটার দৈর্ঘ্য বাড়াতে হবে। এখানে শুধু অর্ধেক মোড় রেখে বাকিটা মুছে ফেলা হয়েছিল। এই সিঁড়িটুকুকে Perspective ভাবে লম্বা বানিয়ে দেখাতে হবে। এর জন্য এটিকে প্রথমে কপি করতে হবে। কপি অংশটিকে উল্টে দিতে Edit>Transform>File Horizontal-এ ক্লিক করলে এটি উল্টে যাবে। এবার এটিকে Original সিঁড়ির সাথে যোগ করে দিন। এভাবে যতগুলো টুইস্ট রয়েছে ততগুলো সিঁড়ি যোগ করে লম্বা বানাতে হবে। এই ছবিতে মোট আটটি সিঁড়ি একত্রীভূত করা হয়েছে। এবার এই সিঁড়ির লেয়ারটিকে আরো ছোট করতে হবে। এজন্য Edit>Transform>Scale থেকে এর পার্সেন্টেজ কমিয়ে দিতে হবে। পরিপূর্ণভাবে সিঁড়িটি তৈরি হয়ে গেলে চিত্র : ০৯-এর মতো দেখাবে। এবার একে মিনারের ঠিক মাঝখান বরাবর বসাতে হবে। এখানে প্রথমে মিনারটির সামনে সিঁড়িটি বসান প্রয়োজনে এটিকে রিসাইজ করে নিতে পারেন। এর জন্য Edit>Transform>Scale-এ ক্লিক করুন। যখন সিঁড়িটি এর নির্দিষ্ট Perspective-এ সামঞ্জস্যতা পাবে, তখন সিঁড়িটিকে White Stripes এবং Hidden Stripes লেয়ারের মাঝে ড্র্যাগ করে বসিয়ে দিলে ছবিটিও চিত্র : ১০-এর মতো হয়েছে।
এরকম আরো আনন্দময় ও সৃজনশীল কাজ দেখতে চাইলে চোখ রাখুন কমপিউটার জগৎ-এর গ্রাফিক্সের পাতায়।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : ashraf.icab@gmail.com