• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > সম্পাদকীয়
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সম্পাদক
মোট লেখা:৩১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সম্পাদনা
তথ্যসূত্র:
সম্পাদকীয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
সম্পাদকীয়

এই মাসটিতেই আমরা জাতি হিসেবে পালন করতে যাচ্ছি আমাদের ৩৮তম বিজয় দিবস। এর সরল অর্থ আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের চার দশকের প্রায় শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছি। একটি জাতির সামগ্রিক অগ্রগতির জন্য চার দশক যেমনি খুব বেশি সময় নয়, তেমনি খুব একটা কম সময়ও নয়। স্বাধীনতা লাভের সময় যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম, তা এখনো অর্জন আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। তাই বলে জাতি হিসেবে আমরা এই সময়টায় একদম নিশ্চল ছিলাম, তাও বলা ঠিক হবে না। স্বাধীনতার এ চার দশকে আমরা কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করতে পারিনি সত্য, তবে এরই মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে আমরা কিছুটা হলেও অগ্রগতি অর্জন করেছি। এক্ষেত্রে প্রযুক্তি আমাদের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। এই অগ্রগতিতে আরো গতিশীলতা আনতে হলে প্রযুক্তিকেই আমাদের অনুষঙ্গ করতে হবে। প্রযুক্তি প্রয়োগে গতিশীলতা আনতে হবে। অতীতে আমরা যে গতিশীলতা আনতে ব্যর্থ হয়েছি, সেক্ষেত্রে সফলতা অর্জনের মোক্ষম সময় এটাই।

দেরিতে হলেও আমরা বুঝতে পেরেছি, প্রযুক্তিবান্ধব দেশ ও সমাজ গড়তে হবে। ফলে এখন আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা বলছি, এক্ষেত্রে কিছু উদ্যোগও আমরা নিতে যাচ্ছি। খবরে প্রকাশ বাংলাদেশের জন্য আরো দু’টি সাবমেরিন ক্যাবল লাইন এখন পাইপলাইনে আছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বাংলাদেশকে আরো দু’টি সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে সংযুক্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ একটি মাত্র সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত হওয়ায় মাঝেমধ্যেই এর ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে এ খাতের উদ্যোক্তারা একাধিক সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে বাংলাদেশের সংযুক্তি দাবি জানিয়ে আসছিল। আরো দু’টি সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে সংযুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের এ পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা যোগানো আমাদের পক্ষে সহজতর হবে।

অতিসম্প্রতি বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে আরো একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। সরকার বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পদক্ষেপ নিচ্ছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মাসিক কমপিউটার জগৎ বিগত দেড় দশক ধরে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন ও বিভিন্ন লেখালেখিসহ বিভিন্নভাবে স্পষ্ট দাবি জানিয়ে আসছে ‘বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট চাই’। সরকারের সাম্প্রতিক উদ্যোগের ফলে খুব শিগগিরই আমাদের এ দাবি বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে, এই প্রত্যাশা পোষণের পাশাপাশি সুখবোধও করছি।

জানা গেছে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে সরকার এই স্যাটেলাইট স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর কারিগরি দিক নিয়ে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু জার্মানি, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কথা বলেছেন। অন্য দেশের সহযোগিতায় এ স্যাটেলাইট স্থাপন করা হবে। ভারত ও চীনের সহযোগিতায় ৯টি কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি হয়েছে বলে মন্ত্রী সম্প্রতি জানিয়েছেন। দেশবাসীর প্রত্যাশা- খুব শিগগিরই আমরা নিজস্ব স্যাটেলাইট ব্যবহারের সুযোগ পাবো।

এদিকে অনলাইনে তথ্য বিনিময় ও ই-টেন্ডার চালুর লক্ষ্যে আগামী জুন থেকে ডিজিটাল স্বাক্ষর চালু করা হচ্ছে। ডিজিটাল স্বাক্ষর চালুর ফলে প্রশাসনে কাগুজে ফাইলের চাপ ও দাপট অনেকাংশে কমে যাবে। ফাইল পরিণত হবে ই-ফাইলে। বন্ধ হবে টেন্ডারবাজি। ঘরে বসে দ্রুততর সময়ে ফাইলের কাজ সম্পন্ন করা যাবে। কাউকে প্রয়োজনীয় দলিলপত্র নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। কিংবা ফাইল নিয়ে অফিসে অফিসে ঘুরতে হবে না। এ ব্যবস্থা চালু হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজ অনেকদূর এগিয়ে যাবে। পাশের দেশ ভারত, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়াসহ এশিয়ার অনেক দেশে এরই মধ্যে ডিজিটাল স্বাক্ষর ব্যবস্থা চালু হয়েছে।

এভাবে আমরা প্রযুক্তি প্রয়োগের ক্ষেত্রে ধীরগতিতে হলেও এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু স্বাধীনতার চার দশকে আমাদের জাতীয় জীবনে বিদ্যমান পশ্চাৎপদতা কাটিয়ে উঠতে প্রযুক্তি প্রয়োগে আরো গতিশীলতা আনতে হবে। তবেই যদি অবসান হয় আমাদের জাতীয় দারিদ্র্য ও পিছিয়ে থাকার বদনাম। আমাদের নীতিনির্ধারকরা সেটুকু মাথায় নিয়েই আগামী দিনের যাবতীয় পদক্ষেপ নেবেন, তাদের প্রতি রইল সে তাগিদ।

কজ ওয়েব
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস
অনুরূপ লেখা