নতুন বছরে সবার প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে বহুল আলোচিত থার্ড পারসন অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার গেম অ্যাসাসিন’স ক্রিডের দ্বিতীয় পর্ব বাজারে এসেছে। ২০০৭ সালে বের হওয়া প্রথম গেমটির কাহিনীর ধারাবাহিকতায় নতুন গেমটি কনসোলে গত বছর মুক্তি পেয়েছিল এবং তা এ বছরে পিসির জন্য অবমুক্ত করেছে ইউবিসফট। গেমটি ডেভেলপ করেছে ইউবিসফট মনট্রেয়াল। গেমটি বানানো হয়েছে এনভিল গেম ইঞ্জিনের সাহায্যে।
প্লট
প্রথম গেমের কাহিনীতে প্রধান চরিত্র ডেসমন্ড মাইলস অ্যাবস্টারগো ইন্ডাস্ট্রির ল্যাবে বন্দী ছিল। অ্যানিমাস নামের মেশিনে তার স্মৃতি থেকে তার গুপ্ত আততায়ী পূর্বপুরুষদের কাজের ধারা জানার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। তার জেনেটিক মেমরি থেকে আগের গেমে তুলে ধরা হয়েছে জেরুজালেমের এক আততায়ী ও ডেসমন্ডের পূর্বপুরুষ আলতেয়ার ইবনে লাহাবের অভিযান। লুসি স্টিলম্যান নামের এক কর্মীর সহায়তায় ডেসমন্ড সেই ল্যাব থেকে পালাতে সক্ষম হবে, কিন্তু ঘটনাক্রমে সে সন্ধান পাবে অ্যানিমাসের চেয়ে আরো উন্নত এক মেশিনের। সে মেশিনের মাধ্যমে তার জেনেটিক মেমরির সাহায্যে তার আরেক পূর্বপুরুষের কথা মনে করতে পারবে। নতুন এ গেমে ডেসমন্ড পঞ্চদশ শতাব্দীর রেনেসাঁ যুগের ইতালির উচ্চবংশীয় ইজিও ওদিতোরে দ্য ফিরেঞ্জে নামের এক আততায়ীকে তার মেমরির সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করবে। এক বিশ্বাসঘাতক শত্রুর চক্রান্তে বাবা ও ভাইকে হারানোর পর ইজিও প্রতিশোধের নেশায় বেছে নেয় এ পথ। তাকে নিয়ে গেমারকে বিচরণ করতে হবে ইতালির বিভিন্ন স্থান ও নানান মিশন সম্পন্ন করতে হবে।
গেমপ্লে
গেমটির খেলার ধরন হচ্ছে ওপেন ওয়ার্ল্ড ও ননলিনিয়ারভিত্তিক। এতে বাধাধরা কোনো নিয়ম ও নির্দিষ্ট সময় নেই মিশন শেষ করার। তাই প্লেয়ারকে নিয়ে স্বাধীনভাবে বিচরণ করা যাবে ইতালির ভেনিস, ফ্লোরেন্স, টুসকানসহ বেশ কিছু স্থানে। গেমে বেশি আহত হলে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা সেবা নিতে হবে এবং ওষুধ কিনে খেতে হবে। ইজিওকে নিয়ে পানিতে সাঁতরানো, নৌকা চালানো, ঘোড়ার গাড়ি চালানো এবং কিশোর লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির বানানো ফ্লাইং মেশিনের সাহায্যে আকাশে ওড়াও যাবে। ইজিওর দুই হাতে লুকানো ব্লেড, বিষাক্ত ছুরি ও ছোট আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের পাশাপাশি সাধারণ তলোয়ার, কাটল্যাস (ছোট আকারের তলোয়ার), গদা, বর্শা, ড্যাগার (ধারালো ছোরা) ইত্যাদি কিনে তা ব্যবহার করা যাবে। পরিচয় গোপন করতে পোশাকের রঙের পরিবর্তন করা যাবে। মারামারির বেলায় আনা হয়েছে অভাবনীয় কিছু কৌশল। প্রাণবন্ত ও চোখ ধাঁধানো কিছু দৃশ্যের পটভূমি ও পরিবেশের সাথে মানানসই গানের সুর গেমারকে মোহিত করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।
নতুন ফিচারসমূহ
পুরনো গেমের চেয়ে এতে আনা হয়েছে বেশ নতুনত্ব। ইজিওকে দেয়া হয়েছে আরো বেশি অস্ত্র ও বর্ম। গেমের খোলা পরিবেশে মুক্তভাবে বিচরণ ও লোকজনের সাথে তার ইন্টার-অ্যাকশনের ওপরে বেশ জোর দেয়া হয়েছে এবং তা আগের চেয়ে অনেক উন্নত। অর্থের বিনিময়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, অস্ত্র ও বর্ম কেনার ব্যবস্থা নতুন সংযোজিত হয়েছে।
দুর্বলতা
কিছু কিছু স্থানে ক্যামেরা মুভমেন্টে সমস্যা ও কিছু ক্ষেত্রে প্লেয়ারকে কন্ট্রোল করার সামান্য সমস্যা ছাড়া গেমটিতে তেমন কোনো ত্রুটি নেই।
সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট
গেমটি খেলার জন্য লাগবে ইন্টেলের কোর টু ডুয়ো ১.৮ গিগাহার্টজ মানের প্রসেসর, এক্সপিতে খেলার জন্য ১.৫ গিগাবাইট র্যাুম ও ভিসতা/সেভেনের জন্য ২ গিগাবাইট র্যাসম, ৮ গিগাবাইট হার্ডডিস্ক স্পেস এবং পিক্সেল শ্রেডার ৩.০ সমর্থিত ২৫৬ মেমরির গ্রাফিক্স কার্ড। অনলাইন গেমিংয়ের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১২৮ কিলোবিট/সেকেন্ড (১৬ কিলোবাইট/সেকেন্ড) গতির নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট কানেকশন লাগবে।
কজ ওয়েব