• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > কমিউনিক এশিয়ায় ফোর-কে প্রযুক্তির জয়জয়কার
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: হিটলার এ. হালিম
মোট লেখা:২২
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৪ - জুলাই
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
প্রযুক্তি
তথ্যসূত্র:
প্রযুক্তি
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
কমিউনিক এশিয়ায় ফোর-কে প্রযুক্তির জয়জয়কার
এশিয়ার বিজনেস হাব বলে পরিচিত সিঙ্গাপুরে বসেছিল বিশ্বের প্রযুক্তিপ্রেমীদের মিলনমেলা। সারা পৃথিবীর প্রযুক্তিবিদেরা এ সময়ের জন্য মুখিয়ে থাকেন। জুন মাস এলেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তারা আসতে শুরু করেন।

এ মেলা উপলক্ষে প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতারা নতুন নতুন পণ্য বাজারে ছাড়েন। আগামী দিনে কী কী পণ্য বাজারে আসবে তারও একটা আগাম ‘নমুনা’ প্রদর্শনীতে দেখানো হয়। এই মেলায় বাংলাদেশেরও উপস্থিতি থাকে সরব। বেশ কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
এবার মেরিনা বে স্যান্ডসে ১৭ জুন থেকে শুরু হয় এ অঞ্চলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় তথ্যপ্রযুক্তি মেলা ‘কমিউনিক এশিয়া ২০১৪’।
মেলায় ৫০টির বেশি দেশের দুই হাজার আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান তাদের নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তিসহ অংশ নেয়। আয়োজকেরা জানান, এবার সারা বিশ্ব থেকে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেয় মেলায়।

এই মেলাকে কমিউনিক এশিয়া বলা হলেও আসলে এটি একটি ছাতার নিচে তিনটি মেলা। এগুলো হলো কমিউনিক এশিয়া, এন্টারপ্রাইজ আইটি এবং ব্রডকাস্ট এশিয়া। মেলার এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‘স্মার্ট সলিউশন ফর স্মার্ট কমিউনিকেশন’।

রিভের নেটওয়ার্কিং পার্টি
বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান রিভ সিস্টেমস প্রায় এক দশক ধরে কাজ করছে সিঙ্গাপুরে। প্রতিবছরই অংশ নিচ্ছে মেলায়। এরই ধারাবাহিকতায় রিভ সিস্টেমস ‘রিভ নেটওয়ার্কিং পার্টি-২০১৪’ আয়োজন করে। এতে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। এ ছাড়া ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল), আন্তর্জাতিক কল ক্যারিয়ার নিয়ে যারা কাজ করেন, তারাও ছিলেন পার্টিতে। এ সম্পর্কিত হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার নিয়ে আলোচকেরা আলোচনা করেন।

প্রতিষ্ঠানটির গ্রুপ সিইও এম. রেজাউল হাসান বলেন, এটা আমাদের বার্ষিক আয়োজন। কমিউনিক এশিয়ার দ্বিতীয় দিন বিকেলে আমরা এই নেটওয়ার্কিং পার্টি আয়োজন করে থাকি। এবার পার্টিতে কারিগরি, সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

মোবাইল অ্যাপসের আধিপত্য আগামী দিনে
মোবাইল ফোনে ভয়েস নয়, আগামী দিনে আধিপত্য দেখাবে অ্যাপস। মানুষের জীবনযাপনের সব শাখায় ক্রমেই অ্যাপস জায়গা করে নিচ্ছে। কমিউনিক এশিয়া ঘুরে সেই চিত্রেরই সত্যতা মিলল। অচিরেই ভয়েস কল ফ্রি করে দিয়ে অপারেটরেরা অ্যাপসভিত্তিক সেবা দিয়ে চার্জ করবে। আর এভাবেই টিকে থাকবে অপারেটরগুলো। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ভয়েস কলের চার্জ নামতে নামতে এক সময় শূন্য হয়ে যাবে। সে সময় সেবা দিয়ে অপারেটরগুলোকে টিকে থাকতে হবে। অ্যাপস হবে সে সময়কার হাতিয়ার।

কমিউনিক এশিয়ায় এবার উল্লেখযোগ্যসংখ্যক অ্যাপসভিত্তিক প্লাটফর্ম প্রদর্শিত হয়। রান্নাবান্না থেকে শুরু করে বাচ্চা সামলানো, শিশুদের কার্টুন ম্যানিয়া দূর করা, ডিজিটাল মার্কেটিং, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো কীভাবে ২৪ ঘণ্টা ব্যবহারকারীর সাথে থাকবে, জিপিএস ছাড়া অ্যাপস কীভাবে পথ নির্দেশ করতে পারে, সেসব অ্যাপসও দেখানো হয় প্রদর্শনীতে।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আরও কম খরচে (এমনকি বিনামূল্যে) কীভাবে একজন গ্রাহক অন্যের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, সেসব নিয়ে একটি মেসেজিং সেবা প্রদর্শন করে রিভ সিস্টেমস।
রিভ সিস্টেমসের গ্লোবাল সেলস বিভাগের প্রধান খন্দকার রায়হান হোসেন বলেন, এবারের কমিউনিক এশিয়ায় মোবাইল ভিওআইপিতে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং সেবার প্রতি দর্শনার্থীদের আগ্রহ বেশি দেখা গেছে। এটি মূলত ভাইবার বা হোয়াটসঅ্যাপসের মতো। অন্যদিকে পিএসটিএন অপারেটরদের (সরকারি ও বেসরকারি ল্যান্ডলাইন) জন্য মোবাইল অ্যাপস (সুইচ) এনেছে রিভ সিস্টেমস। এই অ্যাপস থাকলে কোথাও থেকে ফোন এলে সুইচটি একটি কল পাঠাবে ফোনে এবং একটি কল আসবে ব্যবহারকারীর মোবাইল অ্যাপসে। গ্রাহক বাসায় না থেকেও ফোন ধরার সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে কলটি ল্যান্ডলাইন এবং অ্যাপস দুই জায়গাতেই যাচ্ছে। গ্রাহক তার সুবিধামতো ফোনটি ধরতে পারছেন।
বিশ্বখ্যাত তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তোশিবা মোবাইল ফোনে সিমবিহীন যোগাযোগ পদ্ধতিতে উৎসাহী হয়েছে। যে পদ্ধতিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হবে, তা হবে নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে।

প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারীরা বললেন, এবার মেলার জৌলুস কমেছে, প্রতিষ্ঠান কমেছে, দর্শনার্থী কমেছে, এমনকি বড় বড় অনেক কোম্পানিই এবার অংশ নেয়নি। বাংলাদেশী মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব ছিল কমিউনিক এশিয়ায়।

ফোর-কে প্রযুক্তির জয়জয়কার
কমিউনিক এশিয়ায় এবার ফোর-কে প্রযুক্তি জয় করে নিল সবার মন। কী ভিডিও ক্যামেরা, কী স্থির ক্যামেরা বা টেলিভিশনের স্ক্রিন- সব জায়গায় এ প্রযুক্তির উপস্থিতি। যারা এতদিন হাই ডেফিনিশন (এইচডি) প্রযুক্তিকে সম্প্রচার বা প্রযুক্তি দুনিয়ার সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি হিসেবে জানতেন, তাদের জন্য নতুন তথ্য- আসছে বা ক্ষেত্রবিশেষে এসে গেছে ফোর-কে (আল্ট্রা হাই ডেফিনিশন) প্রযুক্তি।

কমিউনিক এশিয়ার ব্রডকাস্ট এশিয়া অংশে এবার সরব উপস্থিতি ছিল এই প্রযুক্তির। আর এই সরব উপস্থিতির মধ্য দিয়ে ২০ জুন শেষ হলো কমিউনিক এশিয়া ২০১৪। আগামী বছর সিঙ্গাপুরের একই জায়গায় (মেরিনা বে স্যান্ডস) জুন মাসের ২ থেকে ৫ তারিখে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
মেলায় ফোর-কে প্রযুক্তির ক্যামেরায় (স্ক্রিনের রেজ্যুলেশন ৪ হাজার পিক্সেল) ধারণ করা ভিডিওচিত্র সরাসরি সম্প্রচার করে চারটি প্রতিষ্ঠান। এতে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয় ইন্টেলস্যাট।

ক্যানন ক্যামেরার উচ্চপদস্থ অফিসাররা ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে ক্যানন থিয়েটার তৈরি করেন। সেখানে ক্যাননে ধারণ করা বিভিন্ন ছবি দেখানো হয়। সনি, তোশিবা, প্যানাসনিক, হুয়াওয়ে, স্যামসাং বিশাল প্যাভিলিয়নে ফোর-কে টেলিভিশন দেখায়। এসব প্যাভিলিয়নে সবসময় ছিল উপচেপড়া ভিড়।
বাংলাদেশ থেকে বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশনের কয়েকজন মালিক ও প্রধান মেলা দেখতে এসেছিলেন।
কমিউনিক এশিয়ার এবারের আয়োজনকে সব দিক থেকে সফল বলে উল্লেখ করেন রিভ সিস্টেমসের গ্রুপ সিইও এম. রেজাউল হাসান। তিনি জানান, আমরা কিছু সম্ভাবনাময় গ্রাহকের সন্ধান পেয়েছি। যারা রিভের প্যাভিলিয়নে এসে বিভিন্ন সেবা বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমাদের বড় বড় কয়েকটি চুক্তিও হয়েছে।

আলোহা আইশপের সিইও মোহাম্মদ আবু নাসের জানান, ফোর-কে ভিডিও আসছে। ক্যামেরার কল্যাণে বিশ্ব আরও রঙিন হয়ে উঠবে। তবে বাংলাদেশে এই প্রযুক্তির সুফল পেতে হলে আমাদের আরও অনেক দিন অপেক্ষা করতে হবে।

ফিডব্যাক : hitlar.halim@gmail.com

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৪ - জুলাই সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস
অনুরূপ লেখা