• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > সাঙ্কেতিক মুদ্রা উৎপাদনে গ্রাফিক্স কার্ডে টান
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: ইমদাদুল হক
মোট লেখা:৬২
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৮ - মার্চ
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
বিটকয়েন
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
সাঙ্কেতিক মুদ্রা উৎপাদনে গ্রাফিক্স কার্ডে টান
প্রযুক্তির পরশে বদলে যাচ্ছে পৃথিবী। বদলে যাচ্ছে বিনিময় পদ্ধতিও। অনেক আগেই ডিজিটাল ওয়ালেটে রূপান্তরিত হয়েছে মাটির ব্যাংক। কাগজের মুদ্রায় মূল্য পরিশোধ কিংবা লেনদেনে চেকের ব্যবহারও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। প্লাস্টিক মানি হিসেবে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে বিকাশ-রকেটের গতির সাথে পাল্লা দিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে আই-পে’র মতো ডিজিটাল ওয়ালেট। আর ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে ছাপা মুদ্রা। ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যেমনটা চিঠির কদর কমেছে, আগামী দিনগুলোতে হয়তো একইভাবে অর্থ-বাণিজ্যেও টাকার কদরটা কমতে চলেছে। ডলার-টাকা-রুপি সব যেন মিশে যেতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিটকয়েনের মতো নতুন স্রোতে। তৃতীয় পক্ষহীন গোপনীয় (এনক্রিপ্টেড) লেনদেন ব্যবস্থার ফলে এই কারেন্সি ব্যবহারে স্থানীয় বিধিনিষেধ থাকলেও অনেকটা সঙ্গোপনেই যেন বাড়তে শুরু করেছে এর পরিসর। লেনদেনের সাথে সাথে বিটকয়েন মাইনিংয়েও আগ্রহী হয়ে উঠছে টেক প্রজন্ম। ইন্টারনেট দুনিয়ার সংস্পর্শে এসে ঘরে বসেই সোনার খনি খোঁড়ার মতো বিকেন্দ্রীভূত প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত বিটকয়েন তৈরির পাঠ নিচ্ছেন সহজেই। মাঠ থেকে কমপিউটার গেমিংয়ে বুঁদ হওয়ার পর এদের কেউবা আবার নিজেদের নাম লেখাচ্ছেন বিটকয়েন খনির শ্রমিক হিসেবে। অস্তিত্বহীন ক্রিপ্টো কারেন্সি মুদ্রা তৈরির এই কাজে তারা এবার ঘরের পিসিকে সক্ষম করে তুলতে ভিড় করছেন কমপিউটার বাজারে। এর ফলে ইতোমধ্যেই গ্রাফিক্স কার্ডের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। চাহিদা জোগানের সূত্র অনুযায়ী দামও বাড়তে শুরু করেছে। আবার কোনো কোনো জিপিইউ থার্ড পার্টি বা অনলাইনে চড়া দামে পাওয়া গেলেও দোকানে মিলছে না। চাহিদা সামলাতে ইতোমধ্যে মাইনিং বোর্ড উৎপাদন শুরু করেছে উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো।

ক্রিপ্টো কারেন্সি বা সাঙ্কেতিক মুদ্রা কী?
ক্রিপ্টো কারেন্সি বা সাঙ্কেতিক মুদ্রা এক ধরনের অশরীরী ডিজিটাল মুদ্রা, যা ওপেন সোর্স ক্রিপ্টো গ্রাফিক প্রটোকলের মাধ্যমে লেনদেন হয়। এ ধরনের মুদ্রায় লেনদেনের জন্য কোনো ধরনের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বা নিকাশ ঘরের প্রয়োজন হয় না। এই কায়াহীন ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবস্থা ক্রিপ্টো মাইনিংয়ের শুরু দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধ থেকে। তখন দাম গোপন করে নিজের কাছে সংরক্ষিত সোনা অন্য দেশে বিক্রি করত এই ব্যবসায় জড়িতরা। এতে দেশে মুদ্রা বিনিময় হারের বাধাটা থাকত না। এজেন্টের মাধ্যমে চলত এই মুদ্রা বিনিময়। এই বিষয়টিই এখন ডিজিটাল কারেন্সিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ক্রিপ্টো কারেন্সিটি সোনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে বিটকয়েন। এর বাইরেও রয়েছে ইথিরিয়াম, টেলার, স্ট্যাটিস, সাগা কয়েন, শিয়া কয়েন, ডগি কয়েন, ফাস্ট কয়েন। আড়াই হাজারের ওপর ক্রিপ্টো কারেন্সি রয়েছে অনলাইনে। অনলাইন কেনাকটায় ব্যবহার হচ্ছে এই কারেন্সিগুলো।
যুগ-সন্ধিক্ষণে ক্রিপ্টো মুদ্রা

২০০৮ সালে বিটকয়েন নামে ক্রিপ্টো কারেন্সি মুদ্রাব্যবস্থার প্রচলন করেন সাতোশি নাকামোতো। তিনি এই মুদ্রাব্যবস্থাকে পিয়ার-টু-পিয়ার লেনদেন নামে অভিহিত করেন। এই লেনদেন প্রক্রিয়াটি বিটকয়েন মাইনার নামে একটি সার্ভার কর্তৃক সুরক্ষিত থাকে। পিয়ার-টু-পিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুক্ত থাকা একাধিক কমপিউটার বা স্মার্টফোনের মধ্যে বিটকয়েন লেনদেন হলে এর কেন্দ্রীয় সার্ভার ব্যবহারকারীর লেজার হালনাগাদ করে দেয়। একটি লেনদেন সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথে নতুন বিটকয়েন উৎপন্ন হয়। যেহেতু বিটকয়েনে লেনদেন সম্পন্ন করতে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন পড়ে না এবং এর লেনদেনের গতিবিধি কোনোভাবেই অনুসরণ করা যায় না, তাই বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিটকয়েন ক্রমান্বয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বৈধ পণ্য লেনদেন ছাড়াও মাদক চোরাচালান এবং অর্থ পাচার কাজেও বিটকয়েনের ব্যবহার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পায়। ফলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মুদ্রার বিপরীতে এর দর মারাত্মক ওঠানামা, দুষ্প্রাপ্যতা এবং ব্যবসায়ে সীমিত ব্যবহারের কারণে এর বৈধতা প্রশ্নের মুখে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে ২০১৪ সালে কানাডার ভ্যানকুভারে বিটকয়েনের প্রথম এটিএম মেশিন চালু হয়। মাদক, চোরাচালান অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা ও অন্যান্য বেআইনি ব্যবহার ঠেকানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র্র ও কানাডা সরকার বিটকয়েনের গ্রাহকদের নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসে।
লেনদেনে ক্রিপ্টো কারেন্সি

ফরেক্সের মতো ক্রিপ্টো কারেন্সি ট্রেডিং পদ্ধতিতে বিটকয়েন, লাইটকয়েনে ফান্ডের সাপেক্ষে বাই এবং সেল করা যায়। অবশ্য এজন্য মাইনিংয়ের প্রয়োজন পড়ে না। জোড় প্রযুক্তির (পিয়ার-টু-পিয়ার) মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা রাষ্ট্রীয় নজরদারি ও পরিচালনা ছাড়া সম্পূর্ণ বিকেন্দ্রীভূতভাবে এই লেনদেন সম্পন্ন হয়। এখানে বিকাশ/রকেটের টাকা পাঠানো ও উত্তোলনের জন্য তৃতীয় পক্ষ বা এজেন্টের প্রয়োজন হয় না। বøকচেইনের মাধ্যমেই তা সম্পাদিত হয়। এই ডিজিটাল লেজার বা খতিয়ানেই লেনদেন সম্পন্ন করেন ব্যবহারকারীরা। অপরদিকে পৃথকীভূত উইটনেস এবং লাইটনিং নেটওয়ার্কসহ আরো নানা সুবিধায় বিটকয়েনের মতো লাইটকয়েনও ক্রিপ্টো কারেন্সি দুনিয়ায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। স্মার্ট কন্টাক্ট সুবিধাসহ ‘যদি-অতঃপর’ চুক্তির ব্যবস্থার ফলে বিটকয়েনের পরের অবস্থানটি দখল করেছে ইথেরিয়াম। অনলাইন ওয়ালেট ব্যবহারকারী তার স্মার্টফোন কিংবা কমপিউটারের মাধ্যমে ব্যবহার করছেন। এই পুরো প্রক্রিয়াটিই সম্পন্ন হচ্ছে অনলাইনে একটি উন্মুক্ত সোর্স সফটওয়্যারের মাধ্যমে।

এদিকে ২০১৪ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বিটকয়েন ফাউন্ডেশনে অন্তর্ভুক্ত হলেও এর ঠিক এক মাসের মধ্যেই এই লেনদেনের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংক নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে বলা হয়, বিটকয়েন বা বিটকয়েনের ন্যায় বা অন্য কোনো কৃত্রিম মুদ্রায় লেনদেন বাংলাদেশ ব্যাংক বা বাংলাদেশ সরকারের কোনো সংস্থা দ্বারা স্বীকৃত নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্য কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনবহির্ভূত এসব লেনদেন বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৪৭ এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। আইনি শাসনের কারণে দেশে ক্রিপ্টো কারেন্সি বা সাঙ্কেতিক মুদ্রায় লেনদেন না হলেও এর উৎপাদন প্রযুক্তির সাথে অনেক তরুণই আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কেউ কেউ বেশ আগ্রহ নিয়েই এই মুদ্রা উৎপাদনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। নিকট সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বøকচেইন নিয়ে আলোচনা বাড়ার সাথে সাথে ডাটা মাইনিংয়ের মাধ্যমে সাঙ্কেতিক মুদ্রা উৎপাদন চলছে। অনলাইন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বেশ কিছু অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিকাশ ও রকেটে উৎপাদিত ক্রিপ্টো কারেন্সি বিশেষ করে বিটকয়েন স্থানান্তরও করা যাচ্ছে। অবশ্য পুরো ঘটনাটিই চলছে পর্দার অন্তরালে। একটি ঘোষণা ছাড়া এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এ ধরনের প্রযুক্তিকে মোকাবেলায় সংশ্লিষ্টদের সক্ষমতা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, ক্রিপ্টো কারেন্সি যেহেতু বিশে^র অনেক উন্নত দেশেই চলছে এবং এর উৎপাদন ও লেনদেন যেহেতু স্বতন্ত্র বিষয়, সেক্ষেত্রে এই প্রযুক্তিটি নিয়ে খাত-সংশ্লিষ্টদের একটি টেক-সই নীতিমালা সময়ের দাবি। মানি লন্ডারিং ইস্যুতে লেনদেন বন্ধ রেখে এর উৎপাদন প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় আয়ের একটি পথও খুলে দেয়া যেতে পারে বলে অভিমত জানিয়েছেন এর সাথে জড়িতরা। নিরাপত্তা ইস্যুতে যারা এ কাজ করবেন তাদের নিবন্ধনের আওতায় এনে গোপনে চলমান এই প্রক্রিয়াটিকে প্রযুক্তির অর্থনীতির মূলধারায় নিয়ে আসার দাবি তাদের। প্রযুক্তিবিদরা মনে করেন, শুধু আইন দিয়ে যেমন প্রযুক্তিকে বশে রাখা যায় না, তেমনি নতুন প্রযুক্তিকে যাচাই না করেও হাতছাড়া করাটা ঠিক হবে না। এটা করা না হলেও এই ক্রিপ্টো কারেন্সি দেশে আরেকটি অবৈধ ভিওআইপি মহামারীর মতো হতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।

ক্রিপ্টো কারেন্সি উৎপাদন
মাইনারের মাধ্যমে যেকেউ ক্রিপ্টো কারেন্সি উৎপন্ন করতে পারে। বিশেষ পদ্ধতিতে উৎপন্ন হওয়ার প্রক্রিয়াটা সব সময় অনুমানযোগ্য এবং সীমিত। সাঙ্কেতিক মুদ্রা বিটকয়েন উৎপন্ন হওয়ার সাথে সাথে এটি গ্রাহকের ডিজিটাল ওয়ালেটে সংরক্ষিত থাকে। এই সংরক্ষিত বিটকয়েন যদি গ্রাহক কর্তৃক অন্য কারও অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়, তাহলে এই লেনদেনের জন্য একটি স্বতন্ত্র ইলেকট্রনিক সিগনেচার তৈরি হয়ে যায়, যা অন্যান্য মাইনার কর্তৃক নিরীক্ষিত হয় এবং নেটওয়ার্কের মধ্যে গোপন অথচ সুরক্ষিতভাবে সংরক্ষিত হয়। একই সাথে গ্রাহকদের বর্তমান লেজার কেন্দ্রীয় তথ্যভাÐারে হালনাগাদ হয়। বিটকয়েনে কোনো পণ্য কেনা হলে তা বিক্রেতার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয় এবং বিক্রেতা পরবর্তীতে সেই সাঙ্কেতিক মুদ্রা দিয়ে পুনরায় পণ্য কিনতে পারেন। অপরদিকে সমান পরিমাণ বিটকয়েন ক্রেতার লেজার থেকে কমিয়ে দেয়া হয়। প্রত্যেক চার বছর পরপর বিটকয়েনের মোট সংখ্যা পুনর্নির্ধারণ করা হয়, যাতে বাস্তব মুদ্রার সাথে সামঞ্জস্য রাখা যায়। ক্রিপ্টো কারেন্সি গবেষকদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২১৪০ সাল পর্যন্ত নতুন সৃষ্ট বিটকয়েনগুলো প্রত্যেক চার বছর পরপর অর্ধেকে নেমে আসবে। ২১৪০ সালের পর ২১ মিলিয়ন বিটকয়েন তৈরি হয়ে গেলে আর কোনো নতুন বিটকয়েন তৈরি করা হবে না। এ কারণেই বিশ^জুড়ে এই কারেন্সি উৎপাদনে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মাইনারেরা। প্রযুক্তি ভাবনায় এগিয়ে বাংলাদেশের অনেক তরুণও শামিল হয়েছেন ক্রিপ্টো কারেন্সি তথা বিটকয়েন উৎপাদন বা মাইনিং কর্মযজ্ঞে। এর প্রভাব দেখা গেছে দেশের প্রযুক্তিবাজারে। সেখানে গ্রাফিক্স কার্ডের চাহিদা বেড়েই চলেছে।
মাইনিং ও গ্রাফিক্স কার্ডে টান

কাগজ যেমন প্রচলিত মুদ্রার তৈরির একমাত্র উপায়, তেমনি ‘বিটকয়েন’ শুধু ‘মাইনিং’-এর মাধ্যমে ভার্চুয়ালি তৈরি হয়। সিপিইউ, জিপিইউ, এফপিজিএ ও আসিক (অ্যাপ্লিকেশন স্পেসিফিক ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট)Ñ এই চারটি পদ্ধতিতে কয়েন মাইনিং করে থাকেন মাইনারেরা। মাইনারেরা মূলত এই সাঙ্কেতিক মুদ্রার লেনদেনগুলো প্রক্রিয়াকরণ ও অ্যাপ্রæভ করেন। এ কাজটি তারা কয়েনবেজ ও বøকচেইন ওয়ালেটে করে থাকেন। এজন্য প্রয়োজন হয় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমপিউটার। কমপিউটারের সিপিইউ ও জিপিইউ ব্যবহার করে জটিল কিছু গাণিতিক অ্যালগরিদমের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এজন্য প্রচুর বিদ্যুৎ শক্তিরও প্রয়োজন হয়। একটি বিটকয়েন ট্র্যানজেকশন প্রসেস এবং অ্যাপ্রæভ করতে হলে যে কমপিউটার বা যে হার্ডওয়্যার বা যে মেশিনে এই কাজটি করা হবে, ওই মেশিনটির যথেষ্ট প্রসেসিং পাওয়ার থাকার প্রয়োজন হয় এবং অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়। বিটকয়েন মাইনিং ও ম্যাথ প্রবলেম সলভ করার জন্য প্রসেসরের থেকে হাই-এন্ড জিপিইউ অনেক বেশি উপযোগী। তাই এখন বিটকয়েন মাইনিংয়ের কাজে প্রধানত জিপিইউ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে দরকার হবে যথেষ্ট পাওয়ারফুল একটি জিপিইউ। এছাড়া বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি বিটকয়েন মাইনিং করার জন্য স্পেশাল হার্ডওয়্যার তৈরি করে থাকে। যেমন আসিক (Application-Specific Integrated Circuit Chip) স্পেশালি বিটকয়েন মাইনিং করার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের মাইনারেরা এখনও জিপিইউ প্রক্রিয়া বেশি ব্যবহার করছেন। তারা নিসহ্যাশ মাইনার সফটওয়্যার ব্যবহার করে মাইনিং করছেন। বিশ^জুড়ে তাই টান পড়েছে গ্রাফিক্স কার্ডের বাজারে। এই ধাক্কা লেগেছে কমপিউটার যন্ত্রাংশের বাজারেও। অবশ্য এই ধাক্কা কিন্তু হঠাৎ করে আসেনি। মাস ছয়েক আগে থেকেই এই শঙ্কা ব্যক্ত করছিলেন প্রযুক্তিবাজার বিশ্লেষকরা। এক বøগ পোস্টে বাজার বিশেষজ্ঞ ক্রিস কানিংহাম মাইনিংয়ে গ্রাফিক্স কার্ডের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং বাজার চাহিদা ঘাটতির কথা জানিয়েছিলেন। জিপিইউর দর ও ঘাটতি শীর্ষক ওই বøগপোস্টে তিনি জানিয়েছিলেন, গ্রাফিক্স কার্ডের চাহিদা বহুগুণ বেড়ে চলেছে। বাজারে গ্রাফিক্স কার্ডের সরবরাহ কমে যাচ্ছে। দাম নাটকীয়ভাবে বাড়ছে। তবে এন্ট্রিলেভেল ও মিডলেভেল রেঞ্জের গ্রাফিক্স কার্ডের বাজার এখনও স্থিতিশীল রয়েছে। রাডেওন আরএক্স ৫৭০ এবং এনভিডিয়া জিটিএক্সের মূল্য সত্যি নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাই পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগে সবাইকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি শুধু ক্রিপ্টো কারেন্সি মাইনিংয়ে গ্রাফিক্স কার্ডের ব্যবহার বাড়াকে মেনে নিতে পারেননি। পুরো বিষয়টি বুঝতে ২০১৭ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের বাজারে নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। বলেছেন, ঐতিহ্য অনুযায়ী বøাক ফ্রাইডে, সাইবার মানডে এবং এরপর ক্রিসমাসের ছুটিতে খুচরা বিক্রেতারা কিন্তু মুনাফা করতে জোরালো ছিলেন। পরিস্থিতিটি আঁচ কওে বা নিশ্চিত হয়েই তারা স্টক নিশ্চিত করেছিলেন। বছরের শেষে ঐতিহ্যবাহী ছুটির কারণে চীনের উৎপাদকেরা বাড়তি চাহিদা মেটানোর মতো গ্রাফিক্স কার্ড উৎপাদন করতে না পারায় ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাজারে সরবরাহ ঘাটতি দেখা দেয়। সেই ঘাটতির জের এখনও টানতে হচ্ছে।

বাজার পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, আরএক্স ৫৭০ গ্রাফিক্স কার্ড অবমুক্তির তিন মাসের মাথায় ১৮৯ ডলার থেকে এক লাফে ৬৬০ ডলারে গিয়ে ঠেকে। এই দাম ক্রমাগত বাড়ছেই। অবশ্য নভেম্বরের বøাক ফ্রাইডেতে এর দাম ৪৯০ ডলারে নেমে এলেও এখন পর্যন্ত এই গ্রাফিক্স কার্ডের দাম ১৫৯ শতাংশ বেড়েছে। শুধু একটি মডেলেই যে দাম বেড়েছে তা নয়, এমএসআই আরএক্স ৫৭০ ৪ জিবি গেমিং এক্সের অভিষেক মূল্য ছিল ১৯০ ডলার। এই গ্রাফিক্স কার্ডটির দাম এখন ২১৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯৪ ডলারে। অথচ যখন পর্যন্ত নিউএগ অনলাইনের স্টকে ছিল তখনও এটি বিক্রি হয়েছে ২১০ ডলারে।

এদিকে উৎপাদকের কাছে এই গ্রাফিক্স কার্ডের সরবরাহ না থাকলেও বাজারে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে চড়া মূল্যে মিলছে মাইনিংয়ে ব্যবহৃত গ্রাফিক্স কার্ড। সব ধরনের এনভিডিয়া গ্রাফিক্স কার্ড জিটিএক্স ১০৮০ টিআই (১১ জিবি), জিটিএক্স ১০৮০ (৮ জিবি), জিটিএক্স ১০৭০ টিআই, জিটিএক্স ১০৭০, জিটিএক্স ১০৬০ ৬ জিবি, জিটিএক্স ১০৬০ ৩ জিবি, জিটিএক্স ১০৫০টিআই এবং এএমডির আরএক্স ভেগা ৬৪, আরএক্স ভেগা ৫৬, আরএক্স ৫৮০, আরএক্স ৫৭০, আরএক্স ৫৬০, আরএক্স ৫৫০, জিটিএক্স ৯৭০, আর৯ ৩৯০, আর৯ ৩৮০ বিশ^বাজারেই চড়া মূল্যে বিকিকিনি হচ্ছে।
গেমারদের পাশাপাশি মাইনারদের নতুন এই চাহিদা মেটাতে ইতোমধ্যেই শুধু মাইনের জন্য বিশেষায়িত গ্রাফিক্স কার্ড বাজারে ছেড়েছে। এর মধ্যে এএমডি আরএক্স ভেগা ৫৯০, শাফেয়ার, এসরক, জোটাক অন্যতম। এর বাইরে এনভিডিয়া জিফোর্স, এএমডি রাডেওন এই কাজে ব্যবহার হচ্ছে। এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাজারে মাইনিং মাদারবোর্ড আনতে যাচ্ছে এমএসআই। গিগাবাইটের পি১০৬-১০০ ৬জি, পি১০৪-১০০ ৪জি মডেলের গ্রাফিক্স কার্ড বিশ^বাজারে সমাদৃত হয়েছে।

টান পড়েছে বাংলাদেশের বাজারেও
দেশে ক্রিপ্টো কারেন্সিতে লেনদেন বন্ধ হলেও গেমিং খেলতে খেলতে মূলত গুগল কয়েন, বিটকয়েন উৎপাদন শুরু করেছেন উঠতি বয়সী তরুণেরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬ সালের মে থেকে বাংলাদেশে ক্রিপ্টো কারেন্সি মাইনিং শুরু হয়। ২০১৭ সালের জুন-জুলাই থেকে ঢাকার বাইরেও ক্রিপ্টো কারেন্সি মাইনিং শুরু করেন কেউ কেউ। এখন ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ও যশোরে মাইনিং চলছে। এর প্রভাবে জুন-জুলাইয়ের পর থেকেই গ্রাফিক্স কার্ড বাজারে চলছে দারুণ খরা। অপরদিকে সরবরাহের ঘাটতিতে হার্ডকোর গেমারেরা পড়েছেন বিপাকে। আর এই ঘাটতি এই বছর জুড়েই চলতে পারে বলে জানিয়েছেন ভেন্ডরেরা। অন্যদিকে ২০টি গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করে পিসি আপডেট করে মাসে অনন্ত ৩০-৪০ হাজার টাকা আয় করছেন মাইনারেরা।

এ বিষয়ে ডাটা মাইনিং প্রযুক্তি সম্পর্কে অভিজ্ঞ তরুণ গেমার আহনাফ শাহাদ নিয়ন বলেন, প্রতিযোগিতাপূর্ণ ব্যবসায় হওয়ার কারণে ‘বিটকয়েন’ ব্যবহারকারীদের মধ্যে তুলনামূলক অল্পসংখ্যকই এই মাইনিংয়ের সাথে জড়িত। মাটি খুঁড়ে সোনা উত্তোলনের মতোই কঠিন এই কাজটি করতে বিশেষায়িত (স্পেশালাইজড) হার্ডওয়্যারে চালানো কমপিউটার প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয়। সেখানেই যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) নকশায় সিকিউরড হ্যাশ অ্যালগরিদম-২৫৬ ফাংশন ব্যবহার করে একটা একটা করে বøক জুড়ে একটি একাঙ্কিক বøকচেইন তৈরি করে (বিশেষ প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে কঠিন গাণিতিক সমস্যা সমাধান করে) বিটকয়েন তৈরি করা হয়। এজন্য অবলম্বন করা হয় ব্রæট ফোর্স মেথড। এর ফলে একটি ইনপুটের বিপরীতে শুধু একটি আউটপুটই তৈরি হয়। আর এ কাজের জন্য প্রয়োজন হয় শক্তিশালী গ্রাফিক্যাল প্রসেসিং ইউনিট। ইউনিটটি সাধারণ গ্রাফিক্সের চেয়ে অন্তত ৫০-১০০ গুণ অধিক দ্রæততর কাজ করতে সক্ষম হতে হয়। একই সাথে প্রতি একক কাজের জন্য যেন সর্বনি¤œ শক্তি খরচ করে সে বিষয়টির ওপরও খেয়াল রাখে। আর এই গুণগুলো এনভিডিয়া জিটিএক্স ১০৬০ ও ১০৮০ টিআই মডেলে বিদ্যমান থাকায় বিশ^বাজারে এই গ্রাফিক্স কার্ডের দাম ইতোমধ্যেই ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ৪ জিবি-৬ জিবি মেমরি ব্যান্ডউইডথ হলেই মাইনিং করা যায়। তাই কিছুদিন আগেও বিটকয়েন কেনাবেচায় আগ্রহ থাকলেও এখন বিটকয়েন মাইনিংয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেকেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশেও হঠাৎ করেই গ্রাফিক্স কার্ডের বাজারে টান পড়েছে। বাজার চাহিদা মেটাতে ইতোমধ্যে এএমডির ভেগা জিপিইউসহ ইন্টেল মোবাইল ৩৮৫৫ইউ মডেলের সিপিইউ বিল্টইন একটি সম্পূর্ণ রাইজারবিহীন মাদারবোর্ড বাজারে এনেছে অক্টোমাইনার (ঙপঃড়সরহবৎ)। অ্যাসরক ব্র্যান্ডের মাইনিং বোর্ড ‘এইচ১১০ প্রো বিটিসি+’ মডেল দেশের বাজারে এনেছে কমপিউটার সিটি টেকনোলজিস লিমিটেড। ষষ্ঠ ও সপ্তম প্রজন্মের ইন্টেল প্রসেসর সাপোর্টেড এই মাদারবোর্ডটি ভার্চুয়াল মুদ্রা বিটকয়েন মাইনিংয়ের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত। এর ১৩টি পিসিআই এক্সপ্রেস ¯øটে ১৩টি গ্রাফিক্স কার্ড (সর্বোচ্চ ৫টি এনভিডিয়া ও ৮টি এএমডি) ইনস্টল করা যায়, যা কয়েন মাইনিংয়ের গতিকে দ্রæততর করে। এছাড়া এতে রয়েছে তিনটি অতিরিক্ত পাওয়ার কানেক্টর, যা মাইনিংয়ের সময় সিস্টেমকে স্থির রাখে। মাদারবোর্ডটি বিটকয়েন ছাড়াও ইথেরিয়াম, জেডক্যাশ, মোনেরোসহ অন্যান্য জিপিইউ মাইনিং কয়েন সাপোর্ট করে। তিন বছরের ওয়ারেন্টিসহ মাদারবোর্ডটির দাম ১৬,৫০০ টাকা।

অবশ্য মাইনারেরা বলেছেন, ৩২৩২ বিটের রাডেওন এইচডি ৫৯৭০ মাইনিং কাজে শুরুর দিকে সেরা ছিল। এখন এই জায়গাটা দখল করেছে অরাস ১০৮০ টিআই। তাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে এনভিডিয়া জিটিএক্স ১০৭০, জিটিএক্স ১০৮০ ও এএমডি রাডেওন।

বিষয়টি নিয়ে গিগাবাইটের বিপণন ব্যবস্থাপক গাজী রহমান বললেন, ডাটা মাইনিং চাহিদা মেটাতে গিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে গ্রাফিক্স কার্ডের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও গ্রাফিক্স কার্ডের বিক্রি বেড়েছে। হাই-এন্ডের গ্রাফিক্স কার্ডে টান পড়েছে। এখন বার্ষিক চাহিদার ৬০ শতাংশ মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ওয়ারেন্টি ছাড়াই একেকজন ৭-৮টি গ্রাফিক্স কার্ড কিনছেন। এসব দেখে বুঝতে পারছি, গেমারদের পাশাপাশি ডাটা মাইনিং করতেই হয়তো এরা সেলেরন কিংবা ইন্টেল কোর টু ডুয়ো পিসি আপডেট করছেন।

অপরদিকে এমএসআই বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি মো: হুমায়ুন কবীর বলেন, গুগল কয়েন মাইনিংয়ের প্রভাবে বিশ^বাজারে এমএসআই এনভিডিয়া জিফোর্স গ্রাফিক্স কার্ডের কদর বেড়েছে। বাংলাদেশের অনেক গেমারই তাদের পিসির গ্রাফিক্স ক্ষমতা উন্নয়ন করে মাইনিং করছেন। গত বছর জুন-জুলাই থেকেই আমাদের স্থানীয় চাহিদা ৪০-৫০ শতাংশ বেড়েছে। চাহিদা মেটাতে এমএসআই বাংলাদেশে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত সরবরাহ বাড়িয়েছে। তাই এখনও ঘাটতি রয়েই গেছে। এই বছর জুড়েই এই চাহিদা আরও বাড়বে জানিয়ে তিনি বলেন, গত বছর চিপসেট ও মেমরি ঘাটতির কারণে গ্রাফিক্স কার্ড উৎপাদন কিছুটা কমে যায়। এই ঘাটতি মেটাতে এমএসআই ইতোমধ্যেই বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। জুন-জুলাই নাগাদ বাংলাদেশে আরও ২০ শতাংশ সরবরাহ বাড়াবে। এছাড়া গেমারেরা যেন বিপাকে না পড়েন, এজন্য শুধু মাইনিংয়ের জন্য মাইনিং বোর্ড বাজারে আনতে যাচ্ছে। যতদূর জেনেছি, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এটি বিশ^বাজারে অবমুক্ত করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে হুমায়ুন বলেন, বাংলাদেশের বাজারে এনভিডিয়া ১০৭০, ১০৬০, রাডেওন আর ৫৮০, ৫৭০ চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এই মডেলগুলো আনার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে। উচ্চমূল্যে হলেও এনভিডিয়া ১০৮০ মডেলের জন্য অনেক মাইনারই এখন অপেক্ষা করছেন।
বাজার পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশের বাজারে গিগাবাইট, আসুস, এমএআই, জোটাক, শাফেয়ার, গ্যালাক্স, এফএক্স এখন দুর্দান্ত ব্যবসায় করছে। গিগাবাইটের দেড় লাখ টাকায় অরাস ১০৮০ টিআই থেকে শুরু করে অরাস জিফোর্স ১০৭০ (৮ জিবি) ও ১০৬০ এবং আরএক্স ৫৮০-এর চাহিদা বেড়েছে। ব্যাপক চাহিদা থাকায় মাইনিং কাজে বিশেষ পারঙ্গম শাফেয়ারের রাডেওন আরএক্স ভেগা ৬৪ এবং এমএসআই জিটিএক্স ১০৮০ টিআই ও জোটাকের জিফোর্স জিটিএক্স ১০৮০ টিআই সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ডগুলো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। পরিবেশক প্রতিষ্ঠান ইউসিসির ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা গেছে, সেখানে মাইনিংয়ের জন্য বিশেষভাবে তৈরি গ্রাফিক্স কার্ডগুলো বিক্রি হয়ে গেছে। তাদের স্টক এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত খালি ছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউসিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সারওয়ার মাহমুদ খান বলেন, ক্রিপ্টো কারেন্সি মাইনিং নিয়ে আমার ততটা ধারণা নেই। আমাদের যে গেমিং টিম রয়েছে তাদের কাছ থেকেও গেমারদের মাইনিংয়ে জড়িয়ে যাওয়া সম্পর্কে এখনও অবহিত হইনি। আমি যতদূর শুনেছি, এএমডি কার্ডগুলো মাইনিংয়ে ভালো সাপোর্ট দেয়। এ বিষয়ে আইনে ধোঁয়াশা থাকায় আমরা এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ধারণা পাচ্ছি না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বৈশি^কভাবেই উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন গ্রাফিক্স কার্ডের ঘাটতি চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে হাই-এন্ডের গেমিং গ্রাফিক্স কার্ডের চাহিদা ৩০০ থেকে ৪০০ শতাংশ বেড়েছে। স্থানীয়ভাবে ৬০ শতাংশের মতো চাহিদা মেটাতে পারছে না। দামও বেড়েছে ৫০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত। এখন এমন একটা অবস্থা যে, আমাদের হাতে গ্রাফিক্স কার্ড আসা মাত্রই তা অনেকটা নিলামের মতো সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৮ - মার্চ সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস