• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > গণিতের অলিগলি পর্ব : ৯৬
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: গণিতদাদু
মোট লেখা:১৩৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৩ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গণিত
তথ্যসূত্র:
গণিতের অলিগলি
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
গণিতের অলিগলি পর্ব : ৯৬
কিথ নাম্বার
কিথ নাম্বারের (Keith Number) সংজ্ঞা দেয়ার আগে শুরুতেই এখানে নিচে দেয়া গাণিতিক প্রক্রিয়াগুলো মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করি। শুরু করা যাক তিন অঙ্কের সংখ্যা ১৯৭ নিয়ে :
১৯৭→১ + ৯ + ৭ = ১৭
৯ + ৭ + ১৭ = ৩৩
৭ + ১৭ + ৩৩ = ৫৭
১৭ + ৩৩ + ৫৭ = ১০৭
৩৩ + ৫৭ + ১০৭ = ১৯৭

লক্ষণীয়, তিন অঙ্কের সংখ্যা ১৯৭ নিয়ে শুরু করে নির্দিষ্ট একটি নিয়ম মেনে উপরের সিকুয়েন্স বা অনুক্রমটি তৈরি করে সবশেষে ১৯৭ সংখ্যাটিতেই পৌঁছেছি। এখানে যে নিয়ম মেনে অনুক্রমটি তৈরি করেছি, তা হলো- প্রতিটি পরবর্তী ধাপে শেষ তিনটি সংখ্যার যোগফল বের করেছি, কারণ, আমরা শুরু করেছি তিন অঙ্কের একটি সংখ্যা নিয়ে। আর এ সংখ্যাটি ছিল ১৯৭। আর সবশেষ পাওয়া সংখ্যাটিও ১৯৭। কিন্তু আমরা যদি দুই অঙ্কের কোনো সংখ্যা নিয়ে শুরু করতাম, তাহলে প্রতি ধাপে সবশেষ দু’টি সংখ্যার যোগফল বের করে সিকুয়েন্সটি তৈরির কাজ চালিয়ে যেতাম, যতক্ষণ না মূল সংখ্যাটিতে পৌঁছাই। দুই অঙ্কের সংখ্যা ১৪ নিয়ে দেখা যাক কী দাঁড়ায়।

১৪→১ + ৪ = ৫
৪ + ৫ = ৯
৫ + ৯ = ১৪

এখানে আমরা প্রতিটি থাপে সবশেষ দু’টি সংখ্যা যোগ করে এ সিকুয়েন্স তৈরি করে সবশেষে শুরম্নতে নেয়া ১৪ সংখ্যাটিতেই পৌঁছাতে পেরেছি। এবার চার অঙ্কের একটি সংখ্যা নিয়ে একই নিয়ম মেনে এর সিকুয়েন্স তৈরি করি। ধরি, এবার শুরু করা হলো চার অঙ্কের সংখ্যা ১১০৪ নিয়ে। মনে রাখতে হবে, এখানে নেয়া সংখ্যাটি চার অঙ্কের হওয়ায় সিকুয়েন্স তৈরির সময় প্রতিটি ধাপে সবশেষ চারটি সংখ্যা যোগ করে অনুক্রমটি এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, যতক্ষণ না শুরুতে নেয়া সংখ্যাটি পাই। তাহলে যে অনুক্রম বা সিকুয়েন্সটি পাব তা হলো :

১১০৪→১ + ১ + ০ + ৪ = ৬
১ + ০ + ৪ + ৬ = ১১
০ + ৪ + ৬ + ১১ = ২১
৪ + ৬ + ১১ + ২১ = ৪২
৬ + ১১ + ২১+ ৪২ = ৮০
১১ + ২১ + ৪২ + ৮০ = ১৫৪
২১ + ৪২ + ৮০ + ১৫৪ = ২৯৭
৪২ + ৮০ + ১৫৪ + ২৯৭ = ৫৭৩
৮০ + ১৫৪ + ২৯৭ + ৫৭৩ = ১১০৪

লক্ষণীয়, এখানেও আমরা শেষ পর্যন্ত শুরুতে নেয়া সংখ্যা ১১০৪ সংখ্যাটিই পেলাম। এখানে তিন অঙ্কের সংখ্যা ১৯৭, দুই অঙ্কের সংখ্যা ১৪ এবং চার অঙ্কের সংখ্যা ১১০৪ নিয়ে একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে আলাদা আলাদা তিনটি অনুক্রম বা সিকুয়েন্স তৈরি করে মূল সংখ্যায়ই ফিরে যেতে পেরেছি। এ ধরনের নিয়ম যেসব সংখ্যা মেনে চলে সেগুলোকেই আমরা বলি কিথ নাম্বার। এখানে ১৪ একটি দুই অঙ্কের কিথ নাম্বার, ১৯৭ একটি তিন অঙ্কের কিথ নাস্বার এবং ১১০৪ একটি চার অঙ্কের কিথ নাম্বার। এক অঙ্কের কোনো সংখ্যা নিয়ে এ ধরনের কোনো অনুক্রম বা সিকুয়েন্স তৈরি করা যাবে না। তাই মনে রাখতে হবে, প্রতিটি কিথ নাম্বার ৯-এর চেয়ে বড়। সোজা কথায় এক অঙ্কের কোনো কিথ নাম্বর নেই।

এবার আমরা কিথ নাম্বারের একটা সংজ্ঞা দাঁড় করার চেষ্টা করতে পারি। কিথ নম্বর ৯-এর চেয়ে বড় এমন একটি বিশেষ সংখ্যা, যে সংখ্যায় ফেবোনাচ্চি ধরনের একটি অনুক্রম বা সিকুয়েন্সের মতো প্রতি ধাপে এই সংখ্যার অঙ্কসংখ্যার সমান সবশেষ সংখ্যার যোগফল নিয়ে এমন একটি সিকুয়েন্স পাই, যাতে এক সময় শুরুর সংখ্যাটিই এসে যায়।

গণিতের ভাষায় : A Keith Number is n-digit integer N, where N is greater than 9, such that if a Fibonacci-like sequence (in which each term in the sequence is the sum of the n previous terms) is formed with the first n-terms taken as the decimal digits of the number N, then N itself occurs as a term in the sequence.

আমাদের কাছে কোনো সাধারণ কৌশল বা সূত্র এখনও নেই, যার সাহায্যে সহজেই আমরা জেনে নিতে পারি কোনটা কিথ নাম্বার, আর কোনটা নয়। এ ক্ষেত্রে পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যবেঙ্খন চালিয়েই জানতে হবে কিথ নাম্বারের পরিচয়। মৌলিক সংখ্যার তুলনায় কিথ নাম্বারের সংখ্যা কম। ছাবিবশ অঙ্কের চেয়ে কম অঙ্কের সংখ্যাগুলো খুঁজে দেখা গেছে, এসব সংখ্যার মধ্যে রয়েছে মাত্র ৮৪টি কিথ নাম্বার। প্রথম দিকের কয়েকটি কিথ নাম্বারের মধ্যে আছে : ১৪, ১৯, ২৮, ৪৭, ৬১, ৭৫, ১৯৭, ৭৪২, ১১০৪, ১৫৩৭, ২২০৮, ২৫৮০, ৩৬৮৪, ৪৭৮৮, ৭৩৮৫, ৭৬৪৭, ৭৯০৯, ...। ২০০৬ সালের মার্চ পর্যন্ত আমরা ৯৫টি কিথ নাম্বারের কথা জানতে পেরেছি।

দুই অঙ্ক থেকে শুরু করে চৌত্রিশ অঙ্কের বিভিন্ন কিথ সংখ্যাগুলো নিচে দেয়া হলো।

দুই অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১৪, ১৯, ২৮, ৪৭, ৬১ ও ৭৫।

তিন অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১৯৭ ও ৭৪২।

চার অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১১০৪, ১৫৩৭, ২২০৮, ২৫৮০, ৩৬৮৪, ৪৭৮৮, ৭৩৮৫, ৭৬৪৭ ও ৭৯০৯।

পাঁচ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
৩১৩৩১, ৩৪২৮৫, ৩৪৩৪৮, ৫৫৬০৪, ৬২৬৬২, ৮৬৯৩৫ ও ৯৩৯৯৩।

ছয় অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১২০২৮৪, ১২৯১০৬, ১৪৭৬৪০, ১৫৬১৪৬, ১৭৪৬৮০, ১৮৩১৮৬, ২৯৮৩২০, ৩৫৫৪১৯, ৬৯৪২৮০ ও ৯২৫৯৯৩।

সাত অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১০৮৪০৫১ ও ৭৯১৩৮৩৭।

আট অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১১৪৩৬১৭১, ৩৩৪৪৫৭৫৫ ও ৪৪১২১৬০৭।

নয় অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১২৯৫৭২০০৮ ও ২৫১১৩৩২৯৭।

দশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা : একটিও নেই।
এগারো অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
২৪৭৬৯২৮৬৪১১ ও ৯৬১৮৯১৭০১৫৫।

বারো অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১৭১৫৭০১৫৯০৭০, ২০২৩৬৬৩০৭৭৫৮, ২৩৯১৪৩৬০৭৭৮৯ ও ২৯৬৬৫৮৮৩৯৭৩৮।

তেরো অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১৯৩৪১৯৭৫০৬৫৫৫ ও ৮৭৫৬৯৬৩৬৪৯১৫২।

চৌদ্দ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
৪৩৫২০৯৯৯৭৯৮৭৪৭, ৭৪৫৯৬৮৯৩৭৩০৪২৭ ও
৯৭২৯৫৮৪৯৯৫৮৬৬৯।

পনেরো অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১২০৯৮৪৮৩৩০৯১৫৩১, ২৭০৫৮৫৫০৯০৩২৫৮৬ ও
৭৫৪৭৮৮৭৫৩৫৯০৮৯৭।

ষোল অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
৩৬২১৩৪৪০৮৮০৭৪০৪১, ৩৭৫৬৯১৫২৪০২২২৫৪ ও
৪৩৬২৮২৭৪২২৫০৮২৭৪।

সতেরো অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১১৮১২৬৬৫৩৮৮৮৮৬৬৭২, ১৪৫০৮১৩৭৩১২৪০৪৩৪৪, ১৬৪০২৫৮২০৫৪২৭১৩৭৪, ৬৯৯৫৩২৫০৩২২০১৮১৯৪ ও ৭৩৫৮৩৭০৯৮৫৩৩০৩০৬১।

আঠারো অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১১৯১১৫৪৪০২৪১৪৩৩৪৬২, ১৬৬৩০৮৭২১৯১৯৪৬২৩১৮ ও
৩০১২৭৩৪৭৮৫৮১৩২২১৪৮।

উনিশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১৩৬২৩৫৩৭৭৭২৯০০৮১১৭৬, ৩৩৮৯০৪১৭৪৭৮৭৮৩৮৪৬৬২,
৫৭১০৫৯৪৪৯৭২৬৫৮০২১৯০, ৫৭৭৬৭৫০৩৭০৯৪৪৬২৪০৬৪ ও
৬১৯৫৬৩৭৫৫৬০৯৫৭৬৪০১৬।

বিশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১২৭৬৩৩১৪৪৭৯৪৬১৩৮৪২৭৯, ২৭৮৪৭৬৫২৫৭৭৯০৫৭৯৩৪১৩ ও
৪৫৪১৯২৬৬৪১৪০৯৫৬০১৯০৩।

একুশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
৮৫৫১৯১৩২৪৩৩০৮০২৩৯৭৯৮৯।
বাইশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
৭৬৫৭২৩০৮৮২২৫৯৫৪৮৭২৩৫৯৩।
তেইশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
২৬৮৪২৯৯৪৪২২৬৩৭১১২৫২৩৩৩৭,
৩৬৮৯৯২৭৭৫৯৩৮৫২৬০৯৯৯৭৪০৩ও
৬১৩৩৩৮৫৩৬০২১২৯৮১৯১৮৯৬৬৮।

চবিবশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
২২৯১৪৬৪১৩১৩৬৫৮৫৫৫৮৪৬১২২৭।

পঁচিশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
৯৮৩৮৬৭৮৬৮৭৯১৫১৯৮৫৯৯২০০৬০৪।

ছাবিবশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১৮৩৫৪৯৭২৫৮৫২২৫৩৫৮০৬৭৭১৮২৬৬,
১৯৮৭৬২৩৪৯২৬৪৫৭২৮৮৫১১৯৪৭৯৪৫ ও
৯৮৯৩৮১৯১২১৪২২০৭১৮০৫০৩০১৩১২।

সাতাশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১৫৩৬৬৯৩৫৪৪৫৫৪৮২৫৬০৫৮৭১৭৮৩৪২,
১৫৪৬৭৭৮৮১৪০১০০৭৭৯৯৯৭৪৫৬৪৩৩৬,
১৩৩১১৮৪১১১৭৪০৫৯৬৮৮৩৯১০৪৫৯৫৫,
১৫৪১৪০২৭৫৪২৮৩৩৯৯৪৯৮৯৯৯২২৬৫০,
২৯৫৭৬৮২৩৭৩৬১২৯১৭০৮৬৪৫২২৭৪৭৪,
৯৫৬৬৩৩৭২০৪৬৪১১৪৫১৫৮৯০৩১৮৪১০ ও
৯৮৮২৪৩২১০৩৯৩৮৬০৩৯০০৬৬৯১১৪১৪।

আটাশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
৯৪৯৩৯৭৬৮৪০৩৯০২৬৫৮৬৮৫২২০৬৭২০০।

ঊনত্রিশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
৪১৭৯৬২০৫৭৬৫১৪৭৪২৬৯৭৪৭০৪৭৯১৫২৮ ও
৭০২৬৭৩৭৫৫১০২০৭৮৮৫২৪২২১৮৮৩৭৪০৪।

ত্রিশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১২৭৩০৪১৪৬১২৩৮৮৪৪২০৯৩২১২৩২৪৮৩১৭,
৩৮৯৯৩৯৫৪৮৯৩৩৮৪৬০৬৫৭৬৩৭৭২৮৩৩৭৫৩,
৩৪৪৬৬৯৭১৯৫৬৪১৮৮০৫৪১৭০৪৯৬১৫০৬৭৭,
৭৫৬৬৭২২৭৬৫৮৭৪৪৭৫০৪৮২৬৯৩২৯৯৪৩৬৬ও
৫৩৪১৩৯৮০৭৫২৬৩৬১৯১৭৭১০২৬৮২৩২০১০।

একত্রিশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১৫৯৮১৮৭৪৮৩৪২৭৯৬৪৬৭৯০৯২০৭৪৮৫৩৮৩৮ ও
২৪০৫৬২০১৩০৮৭০৫৫৩৬৭২৬৪০০৫৮৯৭৫৪৩৭।

বত্রিশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
৪১০৩০৩০৬৫৭৯৭২০৫০৫৬০৯০৯৯১৯৫৪৯৪১৪,
৪৭৮২৪৪০৪২৪৬৮৯৯৭৪২৫০৮২১৬৬৭৯১৪৯৩৯৩৯২,
৪২৩৩৯৪১৯৫৯৯২২২৩৮১৮৩৪৩৯০৫০২৮৪১০ও
৮৯৯৮০৮১৫১৩৪০৫১৮৮৭৬১২৯৯৩১০১৬১৫৮৫৮।

তেত্রিশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১৭২৪৫১১৪২৬৪৬৮৩৭৭২৮৩৩৬৪১২৯৪৩২০৪২৯৯,
১৯৩৯৬২৬৩৯৪৩৯০২৬০৯৬৩৮০৮৩৪৪৭৮৩১০৫৯,
৩৮১৯৩৩০০৮৯০১২৯৬৮৭৯৫৬৫৬৫৮১৩০৭৫০৭৫৬,
৩৫৯২৫৩৫৯৮২৪৮১৩৭১৪৭৬৬৬০০৭৩৫৫৬২৩২১৮,
৩০৩২৯৪১১৭১০৪০২৭৪৯০০০৭১২৬৪৯৪৮৪২৮২ও
৩১২৭৩৬১১০৮২১৮৫৮৩২১৩০৫৯১৭৩৮৬১৪৫৪৩৪।

চৌত্রিশ অঙ্কের কিথ সংখ্যা :
১৮৭৬১৭৮৪৬৭৮৮৪৮৮৪৮৮৩৫৫৯৯৮৫০৫৩৬৩৫৯৬৩৪৩৭,
২৭৮৭৬৭৪৮৪০৩০৪৫১০১২৯৩৯৮১৭৬৪১১১১১৯৬৬ ও
৫৭৫২০৯০৯৯৪০৫৮৭১০৮৪১৬৭০৩৬১৬৫৩৭৩ ১৫১৯।

এখনও জানা যায়নি অসীমসংখ্যক কিথ সংখ্যা আছে কি না। তবে আমাদের মৌলিক কিথ সংখ্যার মধ্যে আছে : ১৯, ৪৭, ৬১, ১৯৭, ১০৮৪০৫১, ৭৪৫৯৬৮৯৩৭৩০৪২৭, ...। ছাবিবশ অঙ্কের কিথ নাম্বার ৯৮৯৩৮১৯১২১৪২২০৭১৮০৫০৩০১৩১২-এর সন্ধান ২০০৪ সালে আমাদের দেন D. Lichtblau। তিনি তা বের করতে ইন্টিজার লিনিয়ার প্রোগ্রামিং ব্যবহার করে সমাধান করেন গণিতের সংশ্লিষ্ট ডায়োপেন্টাইন ইকুয়েশন। D. Lichtblau ২০০৯ সালের ২৩ জুন ত্রিশ ও একত্রিশ অঙ্কের সব কিথ সংখ্যা খুঁজে বের করেন। এর কয়েক মাস পর ২৬ আগস্ট বের করেন বত্রিশ, তেত্রিশ ও চৌত্রিশ অঙ্কের কিথ সংখ্যাগুলোও। আগস্ট ২০০৯ পর্যন্ত সময়ে আমাদের জানা সবচেয়ে বড় কিথ সংখ্যা হলো- ৫৭৫২০৯০৯৯৪০৫৮৭১০৮৪১৬৭০৩৬১৬৫৩৭৩১৫১৯ ।
এ তো গেল কিথ নাম্বারের কথা। কিন্তু গণিতবিদেরা আমাদের জানিয়েছেন আরেক ধরনের কিথ নাম্বারের কথা। এরা এর নাম দিয়েছেন ‘রিভার্স কিথ নাম্বার’ অথবা revrepfigit (reverse replicating Fibonacci-like digit)। বাংলায় আমরা এর নাম দিতে পারি উল্টো কিথ নাম্বার। যেমন ১২ ও ৩৪১ হচ্ছে যথাক্রমে দুই ও তিন অঙ্কের দু’টি উল্টো কিথ নাম্বার। ১২ নিয়ে আগের নিয়মে অনুক্রম তৈরি করলে আমরা পাব : ১২→১ + ২ = ৩, ২ + ৩ = ৫, ৩ + ৫ = ৮, ৫ + ৮ = ১৩, ৮ + ১৩ = ২১। এখানে ১২ দিয়ে শুরু করে সবশেষে পেলাম ২১, যা পাওয়া যায় ১২-এর অঙ্কগুলো উল্টো করে লিখে। তাই ১২-কে বলা হচ্ছে উল্টো কিথ সংখ্যা/রিভার্স কিথ নাম্বার/ রেভরেপফিজিট। একইভাবে ৩৪১ একটি উল্টো কিথ সংখ্যা। কারণ, ৩৪১→৩ + ৪ + ১ =৮, ৪ + ১ + ৮ = ১৩, ১ + ৮ + ১৩ = ২২, ৮ + ১৩ + ২২ = ৪৩, ১৩ + ২২ + ৪৩ = ৭৮, ২২ + ৪৩ + ৭৮ = ১৪৩। এখানে আমরা ৩৪১ সংখ্যাটি নিয়ে শুরু করে সবশেষে পেলাম ১৪৩, যা প্রথম সংখ্যাটির অঙ্কগুলো উল্টিয়ে লিখে পাওয়া যায়। অতএব ৩৪১ একটি তিন অঙ্কের রিভার্স কিথ নাম্বার।

এ পর্যমত্ম আমাদের জানা রিভার্স কিথ নাম্বারগুলো হলো : ১২, ২৪, ৩৬, ৪৮, ৫২, ৭১, ৩৪১, ৬৮২, ১২৮৫, ৫৫৩২, ৮১৬৬, ১৭৫৯৩, ২৮৪২১, ৭৪৭৩৩, ৯০৭১১, ৭৫৯৬৬৪, ৯০১৯২১, ৭২৬৯৩৩১, ৫৭৮৯৯৯০২, ৩২০৭৭৬১২৪৪, ৪১৫৬২২২১০৩, ৫৪২৬৭০৫০৬৪,৫৭৮৫৭৬৬৯৭৩, ৬৩৩৬৬৫৭০৬২, ৪৮৯৮০৭৪০৯৭২, ৫১১৪৯৭২৫৩৫৪, ৮৩৬২৬২৮৪৩০২, ৯৪১৮৩৬০০০৮১, ৯৮৬৬৫১৭৫৩০৫, ১৯৩৫৩৯১০৯৫৮৬৮, ৬০০২১৮১২৬৮০৩৫, ৬৩৩৪৭০৮৮০৬২৭১, ১২৩৪৮৯২৪২৩৫৮৫৬, ২৭৪৮৮১৮০৬৯৪৬৮১, ৭৬৩৬৫৫৯১৯৩৯৮৮৮, ৩০৯২১৭৫০৯৩০৬৬৭৩২, ৩৫২০৬২০৮০৩৭৬৮১২, ৭১৪৬৯২০৬২৩২৫৭৩২, ৭২৩৭৩৫৫৩৭২৬৯৩৩১, ২৪৩৭৩৫৮৮৮২১৮০০০১, ৬৭৯২০৭৯২৮০৭০৪৩০১, ৬২২৪৪৪২৪৮০২৫৬২০৫৬, ২০৩৪১৪১৯৩৮৯৪২৬৮৫৬১, ২১৭০৪৯১৩২৯৪৬৪০৮৮০৩, ৪২৫৪৯৯৫৬৩৪৮৮১৮৯৬০৪, ৫৬১৬২৪৬৬৫৯৫৩১৬৭১৭১, ...।

লক্ষ্য করি, কোনো রিভার্স কিথ নাম্বারের শেষে শূন্য (০) অঙ্কটি নেই। কিথ রিভার্স নাম্বারের শেষে শূন্য (০) অঙ্কটি অনুমোদনযোগ্য নয়, কারণ সংখ্যাটি উল্টালে বামে চলে যাওয়া শূন্য অর্থহীন হয়ে যাবে। আরেকটি বিষয় জানিয়ে রাখি, কিথ নাম্বারের মতো রিভার্স কিথ নাম্বারের সংখ্যা অসীম না সসীম তা এখনও জানা যায়নি।
কিথ নাম্বার নিয়ে গণিতবিদেরা আরেকটি বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেছেন। ১৪ ও ২৮ হলো দুই অঙ্কের কিথ নাম্বার। ১৪-এর অঙ্ক দু’টিকে দ্বিগুণ করলে পাই ২৮। এ সম্পর্ক বিবেচনায় ১৪ ও ২৮-কে একসাথে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে একগুচ্ছ কিথ নাম্বার, যা লেখা হয় এভাবে (১৪, ২৮)। ঠিক একইভাবে লক্ষ্য করা গেছে, ১১০৪ সংখ্যাটির প্রতিটি অঙ্ক দ্বিগুণ করে আমরা পাই ২২০৮ এবং এ সংখ্যা দু’টিই চার অঙ্কের কিথ নাম্বার। এ দু’টি সংখ্যা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে আরেক গুচ্ছ কিথ নাম্বার (১১০৪, ২২০৮)। একইভাবে কিথ নাম্বার ৩১৩৩১-এর প্রতিটি দ্বিগুণ ও তিনগুণ করে পাই যথাক্রমে ৬২৬৬২ ও ৯৩৯৯৩। নতুন এ সংখ্যা দু’টিও কিথ নম্বার। অতএব এখানে আমরা পাই আরেকটি কিথ নাম্বার গুচ্ছ (৩১৩৩১, ৬২৬৬২, ৯৩৯৯৩)।
গণিতবিদেরা এর নাম দিয়েছেন কিথ নাম্বার ক্লাশ্চার। গণিতবিদদের স্থির বিশ্বাস, উল্লিখিত তিনটি কিথ নাম্বার গুচ্ছ বা ক্লাশ্চার ছাড়া আর কোনো কিথ নাম্বার গুচ্ছ নেই। কিন্তু এরা এখনও তা গাণিতিকভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হননি।
গণিতদাদু
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস