লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
মোস্তফা আনোয়ার
মোট লেখা:৬
লেখা সম্পর্কিত
লেখার ধরণ:
থ্রিডি স্টুডিও ম্যাক্স
জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা হবে
সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার কাজটা এখন মানুষ ইন্টারনেটেই সারে। মাইস্পেস, লিঙ্কডইন কিংবা টুইটারের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত হয়েছে গুগল প্লাস, পিন্টারেস্ট কিংবা ইনস্টাগ্রামের মতো নতুন মাধ্যমে। এতকিছুর পরও কিন্তু ফেসবুকের জনপ্রিয়তা বিন্দুমাত্র কমেনি, বরং দিন যত যাচ্ছে, ব্যবহারকারীর সংখ্যা ততই বেড়ে চলেছে। ৭৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিন নাগরিক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার জন্য কোনো না কোনো সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেন। অপরদিকে শুধু ফেসবুক ব্যবহার করেন এমন নাগরিকের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে শতকরা ৭১ ভাগে। অন্যভাবে বলা যায়, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা মানুষের প্রায় সবাই ফেসবুক ব্যবহার করেন। পিও রিসার্চ সেন্টারের গবেষকেরা এমন তথ্যই দিয়েছেন সম্প্রতি প্রকাশ করা এক প্রতিবেদনে। মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের ব্যবহার বেড়ে যাওয়া সোশ্যাল নেটওয়ার্কের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়াতে উলেস্নখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে বলে এরা মনে করছেন।
শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি সোশ্যাল নেটওয়ার্ক হলো- লিঙ্কডইন, পিন্টারেস্ট, টুইটার ও ইনস্টাগ্রাম। জনপ্রিয়তা কম থাকায় গুগল প্লাস এ তালিকায় নেই, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। পিও রিসার্চ সেন্টারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এরা এদের জরিপের জন্য তৈরি করা প্রশ্নপত্রে গুগল প্লাসের কথা উল্লেখ করেনি।
চমকপ্রদ কিছু তথ্য উঠে এসেছে এ প্রতিবেদনে। প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানের মাঝে প্রায় ৪৯ শতাংশের ব্যবধান। দ্বিতীয় স্থানে থাকা পেশাদারি লোকদের জন্য তৈরি লিঙ্কডইনের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২২ শতাংশ, যা ২০১২ সালে ছিল শতকরা ২০ ভাগ। অপরদিকে আগের জরিপে চতুর্থ স্থানে থাকা পিন্টারেস্ট এবার টুইটারকে পেছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। আগের জরিপে এদের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১৫ শতাংশ, যা এবার ৬ শতাংশ বেড়েছে। সদ্য বিদায় নেয়া বছরটিতে অনেক নতুন সেবা চালু করেছিল টুইটার। বাজারে শেয়ার ছাড়া প্রসঙ্গে আলোচনার শীর্ষে ছিল বেশ কিছুদিন। এরপরও উল্লেখযোগ্য হারে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়াতে ব্যর্থ হয়েছে এরা। গত বছর ১৬ শতাংশ ব্যবহারকারী নিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা টুইটার এবার ১৮ শতাংশ ব্যবহারকারী নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে। ইনস্টাগ্রাম গত জরিপের মতো এবারও পঞ্চম স্থানে থাকলেও ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ শতাংশে।
যোগাযোগের জন্য একাধিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে এমন মানুষের সংখ্যা শতকরা ৪২ ভাগ। অপরদিকে ৩৬ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী জানান, এরা শুধু একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেন। বাকি ২২ শতাংশ এখানে উল্লিখিত পাঁচটি সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ভিন্ন অন্য কোনো নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেছেন বলে জানান। মোটামুটি সব দিক থেকে ফেসবুক এগিয়ে থাকলেও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার রয়েছে কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। যেমন : ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের মাঝে পিন্টারেস্ট ব্যবহারের ঝোঁক বেশি দেখা যায়। টুইটার ও ইনস্টাগ্রাম বেশি ব্যবহার করেন তরুণেরা। অপরদিকে লিঙ্কডইনের ব্যবহার মাঝবয়সী উচ্চ আয়ের মানুষের মাঝে বেশি। এ ধরনের আরও কিছু তথ্য উঠে এসেছে এ লেখায় যা নিচে উলেস্নখ করা হয়েছে।
ফেসবুক
মোট পুরুষ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৬৬ শতাংশ ফেসবুক ব্যবহার করেন। মহিলাদের ক্ষেত্রে এ পরিমাণটা ৭৬ শতাংশ। জরিপে দেখা গেছে, তরুণ-প্রাপ্তবয়স্কদের মাঝে ফেসবুক ব্যবহারের প্রবণতা বেশি। ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়স্ক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৮৪ শতাংশ ফেসবুক ব্যবহার করে। অপরদিকে ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৩ সালে ৬৫ বা তদূর্ধ্ব বয়সীদের মাঝে ফেসবুক ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে, ২০১২ সালে যা ছিল ৩৫ শতাংশ। ২০১৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ শতাংশে। শিক্ষা, আয় কিংবা বাসস্থানের তারতম্যের জন্য ফেসবুক ব্যবহারে তারতম্য খুব একটা দেখা যায়নি।
টুইটার
মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ১৮ শতাংশ টুইটার ব্যবহার করে। এদের মধ্যে পুরুষ ও মহিলার অনুপাত প্রায় সমান। যেখানে ১৭ শতাংশ পুরুষ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী টুইটার ব্যবহার করে, সেখানে মহিলা ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৮ শতাংশ। ফেসবুকের মতো টুইটারেও তরুণ-প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বেশি ব্যবহারকারী দেখা যায়। কিন্তু পঞ্চাশোর্ধ বয়স্কদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে ব্যবহারকারী কমার প্রবণতা আছে। ৫০ থেকে ৬৪ বছর বয়স্কদের ৯ শতাংশ ও ৬৫ বা তদূর্ধ্ব বয়স্কদের ৫ শতাংশ টুইটার ব্যবহার করে। শিক্ষা কিংবা আয়ের তারতম্যের জন্য টুইটার ব্যবহারে তারতম্য দেখা না গেলেও শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষ কম টুইটার ব্যবহার করেন। যেখানে শহরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ১৮ শতাংশ টুইটার ব্যবহার করে, সেখানে গ্রামে এর ব্যবহার ১১ শতাংশে সীমাবদ্ধ।
সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ফেসবুক টুইটার ইনস্টাগ্রাম পিন্টারেস্ট লিঙ্কডইন
ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৭১% ১৮% ১৭% ২১% ২২%
পুরম্নষ ৬৬% ১৭% ১৫% ৮% ২৪%
মহিলা ৭৬% ১৮% ২০% ৩৩% ১৯%
বয়স
১৮-২৯ ৮৪% ৩১% ৩৭% ২৭% ১৫%
৩০-৪৯ ৭৯% ১৯% ১৮% ২৪% ২৭%
৫০-৬৪ ৬০% ৯% ৬% ১৪% ২৪%
৬৫+ ৪৫% ৫% ১% ৯% ১৩%
শিক্ষা
ইন্টারমিডিয়েট ৭১% ১৭% ১৬% ১৭% ১২%
সণাতক ৭৫% ১৮% ২১% ২০% ১৬%
সণাতক+ ৬৮% ১৮% ১৫% ২৫% ৩৮%
বার্ষিক আয় (মার্কিন ডলার)
৩০,০০০ এর কম ৭৬% ১৭% ১৮% ১৫% ১২%
৩০,০০০ - ৪৯,৯৯৯ ৭৬% ১৮% ২০% ২১% ১৩%
৫০,০০০ - ৭৪,৯৯৯ ৬৮% ১৫% ১৫% ২১% ২২%
৭৫,০০০+ ৬৯% ১৯% ১৬% ২৭% ৩৮%
অবস্থান
শহর ৭৫% ১৮% ২২% ১৯% ২৩%
শহরতলি ৬৯% ১৯% ১৮% ২৩% ২৬%
গ্রাম ৭১% ১১% ৬% ১৭% ৮%
উৎস : পিও রিসার্চ সেন্টার। ২০১৩ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ১,৪৪৫ জন মার্কিন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ওপর জরিপ চালিয়ে এ তথ্য পাওয়া যায়।
ইনস্টাগ্রাম
ছেলেদের তুলনায় মেয়ে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি। মোট মহিলা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ২০ শতাংশ ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে। পুরুষদের ক্ষেত্রে এ পরিমাণ ১৫ শতাংশ। বয়সভেদে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর সংখ্যায় বেশ তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণ-প্রাপ্তবয়স্কদের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৩৭ শতাংশ ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে। ২০১২ সালে একই বয়স শ্রেণীর ক্ষেত্রে এ পরিমাণ ছিল শতকরা ২৮ ভাগ। যেখানে ৩০ থেকে ৪৯ বয়স শ্রেণীর মানুষের ক্ষেত্রে এ পরিমাণ ১৮ শতাংশ। অপরদিকে পঞ্চাশোর্ধ বয়সীদের মাত্র ৭ শতাংশ এ সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। আর ৬৫ বা তদূর্ধ্ব বয়সীদের ক্ষেত্রে এ পরিমাণ মাত্র ১ শতাংশ। সণাতক পড়ুয়া ছাত্র ও শহরে অবস্থানরতদের মধ্যে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারের ঝোঁক বেশি।
পিন্টারেস্ট
পিন্টারেস্ট ব্যবহারকারীদের মধ্যে মহিলাদের আধিপত্য উল্লেখযোগ্য হারে বেশি। যেখানে পুরুষ ব্যবহারকারীর সংখ্যা মাত্র ৮ শতাংশ সেখানে মহিলা ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩৩ শতাংশ। অর্থাৎ পুরুষের তুলনায় চারগুণেরও বেশি। আর বয়সের বিচারে, বয়স যত বেশি পিন্টারেস্ট ব্যবহারকারীর সংখ্যা তত কম পরিলক্ষিত হয়। আয়ের বিচারে উচ্চ আয়ের মানুষদের মাঝে এ নেটওয়ার্ক ব্যবহারের ঝোঁক বেশি। অপরদিকে যারা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত তাদের মধ্যেও পিন্টারেস্ট ব্যবহারকারীর পরিমাণ বেশি। শহর কিংবা গ্রামের তুলনায় শহরতলির মানুষের পিন্টারেস্টে আগ্রহ বেশি।
লিঙ্কডইন
প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক হিসেবে লিঙ্কডইনের আছে বিশেষ খ্যাতি। অনন্য কিছু বৈশিষ্ট্যও আছে এ মিডিয়ার। এটাই একমাত্র নেটওয়ার্ক, যেখানে ব্যবহারকারীদের মধ্যে তরুণ-প্রাপ্তবয়স্কদের আধিক্য নেই। বরং ৩০ থেকে ৬৪ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে লিঙ্কডইনের জনপ্রিয়তা বেশি, অর্থাৎ ক্যারিয়ারের শিখরে থাকার সময়টুকু। ৩০ থেকে ৪৯ বছর ও ৫০ থেকে ৬৪ বছর বয়স শ্রেণীর ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে লিঙ্কডইন ব্যবহারকারীর পরিমাণ যথাক্রমে ২৭ ও ২৪ শতাংশ। অপরদিকে ১৮ থেকে ২৯ বছর ও ৬৫ বা ততোধিক বছর বয়সী ব্যবহারকারীর সংখ্যা যথাক্রমে ১৫ ও ১৩ শতাংশ। আয়ের দিক থেকে উচ্চ আয়ের ও শিক্ষার দিক থেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিতদের মঙে্ধ্য লিঙ্কডইন ব্যবহারের প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
ব্যবহারের পৌনঃপুনিকতা
ব্যবহারের পৌনঃপুনিকতার দিক থেকেও এগিয়ে আছে ফেসবুক। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ৬৩ শতাংশ অমত্মত দিনে একবার ওয়েবসাইট ভিজিট করে। ৪০ শতাংশ দিনে একাধিকবার লগইন করে। অপরদিকে সপ্তাহে অন্তত একবার ভিজিট করে এমন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২২ শতাংশ। ১৪ শতাংশ সপ্তাহে একবারেরও কম ওয়েবসাইট ভিজিট করে।
এক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে আছে ইনস্টাগ্রাম। ৫৭ শতাংশ ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী দিনে অন্তত একবার অ্যাপ চালু করেন। ২০ শতাংশ ব্যবহারকারী সপ্তাহে অন্তত একবার ব্যবহার করেন, আর সপ্তাহে একবারের কম ব্যবহার করেন ২২ শতাংশ।
টুইটার ব্যবহারকারীর ৪৬ শতাংশ ওয়েবসাইট প্রতিদিন ব্যবহার করেন। পিন্টারেস্ট ও লিঙ্কডইনের ক্ষেত্রে এ সংধ্যা যথাক্রমে ২৩ ও ১৩ শতাংশ।
সুতরাং এটা স্পষ্ট, ব্যবহারকারীর সংখ্যার দিক থেকে লিঙ্কডইন দ্বিতীয় হলেও ব্যবহারের পৌনঃপুনিকতায় তালিকার একদম নিচে। প্রায় ৫২ শতাংশ লিঙ্কডইন ব্যবহারকারী সপ্তাহে একবারেরও কম ঢুঁ মারেন। অন্যদিকে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারের ধরনে সাদৃশ্য আছে। আর সম্ভবত এ কারণেই ২০১৩ সালের এপ্রিলে ইনস্টাগ্রাম কিনে নেয় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ । এসব সোশ্যাল নেটওয়ার্কের বেশিরভাগের আয়ের উৎস বিজ্ঞাপন। আর তাই ব্যবহারকারীদের ধরে রাখতে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক কর্তৃপক্ষ এত তৎপর।
বাংলাদেশে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক
বাংলাদেশে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে ফেসবুকের একক আধিপত্য পরিলক্ষিত। মোট বাংলাদেশী ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩৩ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই বাংলাদেশেও তরুণদের মধ্যে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা বেশি। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট সোশ্যাল বেকার ডটকমের হিসাব মতে, ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী ব্যবহারকারী প্রায় ৫২.১ শতাংশ, ২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সী ব্যবহারকারী ২৬.৭ শতাংশ ও ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী ব্যবহারকারী ১৪ শতাংশ। ৩৫ বা তদূর্ধ্ব বছরের মধ্যে বয়স অনুসারে ধীরে ধীরে ফেসবুক ব্যবহারের প্রবণতা কমে যায়। মার্কিন ও বাংলাদেশী ফেসবুক ব্যবহারকারীর মধ্যে একটা জায়গায় সাদৃশ্যের অভাব রয়েছে। বাংলাদেশে মহিলা (২১ শতাংশ) ব্যবহারকারীর প্রায় চারগুণ পুরুষ (৭৯ শতাংশ) ব্যবহারকারী।
বাংলাদেশে মোট লিঙ্কডইন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬ লাখ ১০ হাজারের কিছু বেশি, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ০.৩৯ শতাংশ এবং মোট বাংলাদেশী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর প্রায় ১১.১০ শতাংশ। ব্যবহারকারীর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে ৫৪তম।
অন্যান্য সোশ্যাল নেটওয়ার্কে বাংলাদেশী ব্যবহারকারীদের ড. ইউনূস, অনলাইন পত্রিকা, মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর ও বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাথে সম্পৃক্ততা বেশি দেখা গেছে। বাংলাদেশ থেকে ইউটিউবে ভিজিটের সংখ্যা এদিক থেকে এগিয়ে আছে।
মোটামুটি সব সোশ্যাল নেটওয়ার্ক নির্দিষ্ট সময় অন্তর ব্যবহারকারীর বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ প্রতিবেদনগুলোতে ব্যবহারকারীর সংখ্যার ওপর নির্ভর করে শীর্ষ ১০ বা ১৫ দেশের তালিকা প্রকাশ করা হয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কোনো সোশ্যাল নেটওয়ার্কের শীর্ষ তালিকায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের নাম পাওয়া যায়নি। অপরদিকে বাংলাদেশে স্থানীয় পর্যায়ে কিছু অনলাইন কমিউনিটি তৈরির চেষ্টা হয়েছে। তবে ব্যাপক আকারে শুধু দেশীয় পর্যায়ে এমন কোনো উদ্যোগ এখনও দেখা যায়নি। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, বাংলাদেশে এ দিকটিতে উন্নয়নের বেশ সুযোগ আছে। ইন্টারন্যাশনাল ডাটা কর্পোরেশন ২০১৪ সালের আইটি জগতের ওপর বেশ কিছু ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, যেখানে আগামী বছরগুলোতে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবসায়ের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করা হয়েছে। অপরদিকে গুগলের চেয়ারম্যান হতাশা ব্যক্ত করে বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে যদি এরা অনেক আগে থেকে চেষ্টা করতেন তো এখন এরা শীর্ষ পর্যায়ে থাকতে পারতেন। কিন্তু তা না করে এরা অন্য অনেক বিষয়ে ব্যস্ত ছিলেন, যা এদের ভুল ছিল। সুতরাং সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব বুঝতে বাকি থাকার কথা নয়। বাংলাদেশের উচিত এ ক্ষেত্রে আরও অনেক এগিয়ে যাওয়া, বিশেষ করে শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়ের যোগাযোগে সীমাবদ্ধ না থেকে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর মাধ্যমে ভোক্তা বা সেবা গ্রাহকদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা ।
ফিডব্যাক : m_hasan@ovi.com